অর্থ ব্যবস্থাপনার পাঁচ পরামর্শ
উদ্যোক্তা হওয়ার সবচেয়ে কঠিন দিক হচ্ছে, জুতা সেলাই থেকে চণ্ডীপাঠ—সবই একা সামলাতে হয়। তবে সব কাজের মধ্যে সবচেয়ে কঠিন কাজ হচ্ছে অর্থ ব্যবস্থাপনা। অন্য অনেক ভুলের মাশুল দিয়ে দেওয়া যায়, কিন্তু অর্থ ব্যবস্থাপনায় ভুল হলে ঘুরে দাঁড়ানো কঠিন হয়ে যায়।
নতুন ব্যবসায় যেহেতু অর্থ ব্যবস্থাপনার জন্য বিশেষজ্ঞ নিয়োগ দেওয়া খরচ সাপেক্ষ, তাই উদ্যোক্তাদের জন্য অর্থ ব্যবস্থাপনার পাঁচটি পরামর্শ দিয়েছে উদ্যোক্তাদের দক্ষতা বৃদ্ধির ওয়েবসাইট এন্ট্রাপ্রেনিউর ডট কম।
১. আর্থিক লেনদেনের নথি রাখা
ধরুন, আপনার ব্যবসায় মাসে এক কোটি টাকা নাড়াচাড়া করা হয়, কিন্তু এর কোনো সঠিক নথি রাখা হয় না। তাই যদি হয়, ব্যবসা যত ভালোই চলুক, ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ পাওয়া কষ্টকর হবে। এমনকি নতুন উদ্যোক্তা হিসেবে কোনো তহবিলও পাওয়ার সম্ভাবনা কমে যাবে। এর কারণ হচ্ছে যখন কেউ ব্যবসায় অর্থ বিনিয়োগ করেন তাঁরা জানতে চান ব্যবসাটা কত ভালোভাবে চলার সক্ষমতা রাখে। এই সক্ষমতা দেখানোর উপায় হচ্ছে আর্থিক লেনদেনের নথি রাখা।
চেষ্টা করতে হবে আর্থিক লেনদেন ব্যাংকের মাধ্যমে করার। কোনো ঋণ নেওয়া থাকলে ঋণমান ঠিক রাখাতে হবে। এমনকি ফোন বিলের মতো খরচের হিসাবও নথিভুক্ত করতে হবে। এভাবে শুধু যে ব্যবসার হিসাব–নিকাশ সহজ হয় তা–ই নয়, ব্যবসার মানও বাড়ানো যায়।
ব্যাংক, ব্যাংকার, ব্যাংকিং, অর্থনীতি ও ফাইন্যান্স বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ খবর, প্রতিবেদন, বিশেষ কলাম, বিনিয়োগ/ লোন, ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, ফিনটেক, ব্যাংকের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারগুলোর আপডেট পেতে আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ 'ব্যাংকিং নিউজ', ফেসবুক গ্রুপ 'ব্যাংকিং ইনফরমেশন', 'লিংকডইন', 'টেলিগ্রাম চ্যানেল', 'ইন্সটাগ্রাম', 'টুইটার', 'ইউটিউব', 'হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেল' এবং 'গুগল নিউজ'-এ যুক্ত হয়ে সাথে থাকুন। |
২. ব্যক্তিগত তহবিল দক্ষতার সঙ্গে ব্যবহার
সাধারণত নতুন উদ্যোগ ব্যক্তিগত টাকা থেকেই শুরু হয়। বেশির ভাগ উদ্যোক্তা ব্যক্তিগত ব্যবস্থাপনাতেই বড় অঙ্কের অর্থ লেনদেন করেন। এতে সার্ভিস চার্জসহ অন্যান্য খরচ বেশি হয়। এই খরচগুলো অকারণ বোঝা। সবচেয়ে ভালো হয়, সংশ্লিষ্ট ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলোচনা করে, তারা কোন শর্তে কী ছাড় দেয়, তা জেনে নিলে। এভাবে কিছুটা ছাড় পাওয়ারও সম্ভাবনা থাকে।
৩. বাজেট তৈরি করা
আর্থিক ব্যবস্থাপনা গুছিয়ে রাখার সহজতম উপায় হচ্ছে একটা বাজেট তৈরি করা। বাজেট আর্থিক ব্যবস্থাপনাকে অনেক দক্ষ রাখবে। ব্যবসার ধরন বুঝে বাজেট নানান রকমের হতে পারে। আবার একই ব্যবসার আলাদা কাজের জন্য আলাদা বাজেট থাকতে পারে। সবকিছুর একটা হিসাব-নিকাশ করে রাখা যায়। তখন আর প্রতিবার হিসাব করে বের করতে হবে না। একনজরেই বোঝা যাবে, ব্যবসা আয়ের দিকে যাচ্ছে নাকি ব্যয়ের দিকে।
৪. জরুরি তহবিল তৈরি
করোনার অতিমারি খুব ভালোভাবে বুঝিয়েছে, শুধু দিনের বা বছরের হিসাবই ব্যবসার শেষ কথা নয়। এখানে অনেক লুকানো ঝুঁকি থাকে, যার হিসাব আগে থেকে ধারণা করাও কঠিন। করোনায় বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন নবীন উদ্যোক্তারা, আবার নতুন বলে প্রণোদনা পেতেও সমস্যা হয়েছে তাঁদের। তাই এ রকম পরিস্থিতির জন্য আগে থেকেই তৈরি থাকতে হবে।
নবীনেরা হয়তো বড় অঙ্ক খারাপ দিনের জন্য তুলে রাখতে পারবেন না। তা–ও যতটা পারা যায় খারাপ দিনের জন্য প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে হবে। এভাবে খারাপ দিনেও লড়ার জন্য কিছুটা শক্তি বেঁচে থাকবে।
৫. করের নিয়ম জানা
ব্যবসা ছোট হলেও সেটা ব্যবসা, আর কম হলেও কর দেওয়াটা জরুরি। করের মারপ্যাঁচে আটকে গিয়ে অনেকে বিশেষজ্ঞ নিয়োগ করেন, এতে খরচ আরও বাড়ে। আবার ছোট অবস্থায় কর দেওয়ার ক্ষেত্রে অবহেলা করলে পরে বড় অঙ্কের মাশুল দিতে হয়। এ থেকে মুক্তির একমাত্র উপায় হচ্ছে কর সম্পর্কে লেখাপড়া করে নেওয়া।
আরও দেখুন:
◾ ব্যাংকের বাকিতে প্রভিশন সংরক্ষণের অনুমোদন
◾ ব্যাংকগুলো প্রতিবেদন তৈরিতে ৩০ জুন পর্যন্ত সময় পাচ্ছে
◾ ন্যাশনাল ব্যাংক সৈয়দ আব্দুল বারীকে এমডি হিসেবে চায়
◾ করোনা মোকাবেলায় ব্যাংকগুলোকে সিএসআরে বরাদ্দের নির্দেশ
◾ তফসিলি ব্যাংকগুলো কর্তৃক নিজস্ব ‘স্টার্ট-আপ ফান্ড’ গঠনের নির্দেশ