ব্যাংক গ্রাহক

আসল টাকা ফেরত পাওয়ার নিশ্চয়তাটা খুব জরুরি

ব্যাংকঋণের সুদহার ৯ শতাংশ নির্ধারণ করে দেওয়ায় আমানতের সুদহারও কমতে শুরু করেছে। এর ফলে আমানতকারীরা যেখানে বেশি সুদ পাচ্ছেন, সেখানেই ছুটছেন। এক ব্যাংক থেকে টাকা তুলে অন্য ব্যাংকে রাখছেন।

শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্বের অনেক দেশে করোনাভাইরাসের কারণে মহামারি চলছে। মানুষ চাকরি হারাচ্ছে, কর্মসংস্থানও কমছে। এই সময় অনেক মানুষের পক্ষে নিজের দৈনন্দিন খরচ মেটানো কঠিন হয়ে পড়েছে। তারপরও সুযোগ থাকলে যতটা সম্ভব সঞ্চয় করা উচিত। কারণ, ভবিষ্যতে আরও কঠিন দিন আসতে পারে।

সরকার ব্যবসায়ীদের সুবিধার কথা চিন্তা করে ব্যাংকঋণের সুদহারে হস্তক্ষেপ করেছে। এর ফলে আমানতকারীরা ব্যাংকে টাকা রেখে তেমন কিছুই পাচ্ছেন না। যে সুদ দেওয়া হচ্ছে, তা মূল্যস্ফীতির চেয়ে কম। ফলে সুদের টাকায় যাঁরা জীবিকা নির্বাহ করেন, সেসব আমানতকারীরা সমস্যায় পড়ে গেছেন। নিশ্চয়ই সরকার ভালো উদ্দেশ্যে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ব্যাংকে আমানতের সুদহার কমলেও এখনো ভালো মুনাফা পাওয়া যাচ্ছে সঞ্চয়পত্র থেকে। এখানেও সরকার নিয়মকানুন ও সীমা বেঁধে দেওয়ায় একজন গ্রাহকের পক্ষে খুব বেশি বিনিয়োগ করার সুযোগ নেই। তাই অনেকেই এখন বেশি মুনাফার আশায় শেয়ারবাজারে ঝুঁকছেন।

ব্যাংকিং নিউজ বাংলাদেশ (Banking News Bangladesh. A Platform for Bankers Community.) প্রিয় পাঠকঃ ব্যাংকিং বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ খবরগুলো নিয়মিত আপডেট পেতে আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ ব্যাংকিং নিউজ বাংলাদেশ এ লাইক দিয়ে আমাদের সাথেই থাকুন।

তবে বাংলাদেশের শেয়ারবাজারে বড় ঝুঁকি রয়েছে। হঠাৎ করেই বড় ধরনের পতন ঘটে। অনেক সময় বড় ধরনের কারসাজি হয়। অনেকেই আইন মেনে চলতে চায় না। আবার কারও শাস্তিও হয় না। একটি পক্ষ সব সময় সুবিধা পেয়ে থাকে। তাই শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করলে খুব বুঝেশুনে করতে হবে।

ব্যাংক, ব্যাংকার, ব্যাংকিং, অর্থনীতি ও ফাইন্যান্স বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ খবর, প্রতিবেদন, বিশেষ কলাম, বিনিয়োগ/ লোন, ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, ফিনটেক, ব্যাংকের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারগুলোর আপডেট পেতে আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ 'ব্যাংকিং নিউজ', ফেসবুক গ্রুপ 'ব্যাংকিং ইনফরমেশন', 'লিংকডইন', 'টেলিগ্রাম চ্যানেল', 'ইন্সটাগ্রাম', 'টুইটার', 'ইউটিউব', 'হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেল' এবং 'গুগল নিউজ'-এ যুক্ত হয়ে সাথে থাকুন।

সাধারণ মানুষের সঞ্চয়ের জন্য এখনো নিরাপদ ব্যাংক খাত। তবে গত কয়েক বছরে বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও ব্যাংকে টাকা জমা রেখে সময়মতো তা ফেরত না পাওয়ার অভিজ্ঞতা হয়েছে বহু গ্রাহকের। এ কারণে ব্যাংকে টাকা রাখার ক্ষেত্রেও অনেকের মধ্যে ভয় কাজ করে। বর্তমান বাস্তবতায় কোনো ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে টাকা রাখার আগে ওই প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে ভালোভাবে খোঁজখবর নিতে হবে। এ জন্য সাধারণ মানুষ যেই ব্যাংক বা প্রতিষ্ঠানে টাকা জমা রাখতে চায়, সেই প্রতিষ্ঠানের আর্থিক প্রতিবেদন পড়ে দেখতে পারেন। সংশ্লিষ্ট ব্যাংক ও প্রতিষ্ঠানের সম্পদের অবস্থা কী, আয় কেমন, মূলধন কেমন—এসব বিবেচনা করা যেতে পারে। আবার ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদে কারা আছেন, তা–ও বিবেচনা করতে পারেন গ্রাহকেরা। কারণ, একটি ব্যাংকের পরিচালকদের ওপর অনেক কিছু নির্ভর করে। আবার অনেক সময় দুর্বল ভিত্তির ব্যাংক বেশি সুদ দিয়ে টাকা নেয়, এটিও খেয়াল রাখার বিষয়।

ব্যাংক সম্পর্কে এখন অনেক আলোচনা-সমালোচনা হয়, সেগুলোও আমলে নেওয়া যেতে পারে। কারণ, সাধারণ মানুষের জন্য ভালো সুদের পাশাপাশি আসল টাকা ফেরত পাওয়ার নিশ্চয়তাটা খুব জরুরি। গ্রাহকের আমানত যাতে সুরক্ষিত থাকে, এই বিষয়ে সব ব্যাংকের সক্রিয় থাকা প্রয়োজন। কারণ, মানুষ কষ্টের টাকা ব্যাংকে জমা রাখে। টাকা জমার রাখার ক্ষেত্রে পারিপার্শ্বিক জ্ঞান কাজে লাগানো যেতে পারে। এটা খুব জরুরি। যদিও বাংলাদেশের মানুষের আর্থিক জ্ঞান অনেক কম।

কার্টেসিঃ নিলঞ্জন কুমার সাহা, সহযোগী অধ্যাপক, ফাইন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়। [প্রকাশিত এই লেখাটি লেখকের একান্তই নিজস্ব। ব্যাংকিং নিউজ বাংলাদেশ লেখকের মতাদর্শ ও লেখার প্রতি শ্রদ্ধাশীল। প্রকাশিত লেখা ও মতামতের জন্য ব্যাংকিং নিউজ বাংলাদেশ দায়ী নয়।]

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

রিলেটেড লেখা

Back to top button