বাংলাদেশ ব্যাংকব্যাংকিং আইন

কুরিয়ার সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের ব্যাংকিং চ্যানেলে লেনদেন গাইডলাইন

দেশে কার্যরত কুরিয়ার সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো বিভিন্ন ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান, ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা ও অনলাইন ক্রয়-বিক্রয় প্ল্যাটফর্মের বিক্রয়কৃত পণ্য ক্যাশ অন ডেলিভারি ব্যবস্থায় ক্রেতার নিকট পৌঁছে দিচ্ছে এবং তাঁর বিপরীতে পণ্যমূল্য সংগ্রহপূর্বক তা বিক্রেতাকে প্রদান করছে। পাশাপাশি এক ব্যবসায়ী হতে অন্য ব্যবসায়ীর নিকট মূল্য ঘোষিত পার্সেল বিতরণ ও কন্ডিশন বুকিং ব্যবস্থা কার্যকর রয়েছে, যা হতে উদ্ভূত লেনদেনের নগদ অর্থ কুরিয়ার প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে স্থানান্তরিত হয়ে আসছে।

অর্থাৎ কুরিয়ার সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো মাশুলের বিনিময়ে ক্রেতাকে পণ্য বিতরণপূর্বক আদায়কৃত পণ্যমূল্য বিক্রেতার নিকট পৌঁছানোর যে কর্মকান্ডে নিয়োজিত, তা ব্যাংক ব্যবস্থার মাধ্যমে পরিচালনার নিমিত্তে এবং এ ধরনের লেনদেন একটি নীতি কাঠামোর আওতায় আনয়নের লক্ষ্যে “কুরিয়ার সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের মূল্য ঘোষিত পণ্য/ পার্সেল বিতরন হতে উদ্ভূত নগদ অর্থ ব্যাংকিং চ্যানেলে লেনদেন পদ্ধতি” শীর্ষক গাইডলাইন প্রস্তুত করা হয়েছে, যা অনুসরণপূর্বক সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানসমূহ তাঁদের লেনদেনের জন্য ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০ তারিখে জারিকৃত বিআরপিডি সার্কুলার নং-০২ এর ২ (খ) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী হিসাব খোলার মাধ্যমে ব্যাংকিং সেবা গ্রহণ করতে পারবে।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশে কার্যরত কুরিয়ার সার্ভিস সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানসমূহ এতদ্ব্যতীত অন্য কোনরূপ আর্থিক সেবা প্রদান করতে পারবে না এবং এরূপ ক্ষেত্রে কোনরূপ ব্যাংকিং সেবা প্রাপ্য হবে না। বর্ণিত লেনদেন পদ্ধতি মোতাবেক কুরিয়ার সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রয়োজনীয় ব্যাংকিং সেবা প্রদানের জন্য ব্যাংক-কোম্পানী আইন, ১৯৯১ এর ৪৯(১)ঙ ধারার আওতায় বাংলাদেশে কার্যরত সকল তফসিলি ব্যাংককে নির্দেশ প্রদান করা যাচ্ছে। এ নির্দেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।

কুরিয়ার সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের মূল্য ঘোষিত পণ্য/পার্সেল বিতরণ বা ক্যাশ অন ডেলিভারী হতে প্রাপ্ত নগদ অর্থ ব্যাংকিং চ্যানেলে লেনদেন পদ্ধতি
বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক জারিকৃত কুরিয়ার সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের মূল্য ঘোষিত পণ্য/পার্সেল বিতরণ বা ক্যাশ অন ডেলিভারী হতে প্রাপ্ত নগদ অর্থ ব্যাংকিং চ্যানেলে লেনদেন পদ্ধতি সমূহ নিম্নে তুলে ধরা হলো-

ব্যাংক, ব্যাংকার, ব্যাংকিং, অর্থনীতি ও ফাইন্যান্স বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ খবর, প্রতিবেদন, বিশেষ কলাম, বিনিয়োগ/ লোন, ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, ফিনটেক, ব্যাংকের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারগুলোর আপডেট পেতে আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ 'ব্যাংকিং নিউজ', ফেসবুক গ্রুপ 'ব্যাংকিং ইনফরমেশন', 'লিংকডইন', 'টেলিগ্রাম চ্যানেল', 'ইন্সটাগ্রাম', 'টুইটার', 'ইউটিউব', 'হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেল' এবং 'গুগল নিউজ'-এ যুক্ত হয়ে সাথে থাকুন।

১। প্রেক্ষাপটঃ
আভ্যন্তরীণ কুরিয়ার সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো বিভিন্ন ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান, ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা ও অনলাইন ক্রয় বিক্রয় প্ল্যাটফর্মের বিক্রয়কৃত পণ্য ক্যাশ অন ডেলিভারি ও মূল্য ঘোষিত পণ্য বা কন্ডিশন বুকিংয়ের মাধ্যমে ক্রেতাকে সরবরাহ করে পণ্যের মূল্য হিসেবে সংগৃহীত নগদ অর্থ বিক্রেতার নিকট পৌঁছে দিচ্ছে। কিন্তু বিক্রেতার নিকট হস্তান্তরের নিমিত্তে পণ্যের ডেলিভারীর বিপরীতে সংগৃহীত পণ্যমূল্য কুরিয়ার সার্ভিসসমূহের নিজম্ব ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে স্থানান্তরিত হলে কুরিয়ার সার্ভিসসমূহের আয় সনাক্তের ক্ষেত্রে (রেভিনিউ রিকগনিশন) সমস্যার সৃষ্টি হয়।

ফলে কুরিয়ার সার্ভিসসমূহ এ সকল লেনদেন নগদে পরিচালনা করছে এবং বিভিন্ন রকমের ঝুঁকির সম্মুখীন হচ্ছে। কুরিয়ার প্রতিষ্ঠানের পণ্য স্থানান্তর ও বিতরণ কার্যক্রম হতে পণ্য মূল্যের বিপরীতে প্রাপ্ত নগদ অর্থের লেনদেন প্রকৃতপক্ষে পরিশোধ কার্যক্রমের আওতাভুক্ত। দেশের অভ্যন্তরে পরিচালিত সকল পরিশোধ কার্যক্রম বাংলাদেশ ব্যাংক অর্ডার, ১৯৭২ এর ৭(এ)ই ধারা অনুসারে বাংলাদেশ ব্যাংকের কার্যপরিধির আওতাধীন বিধায় উক্ত ধারার ক্ষমতাবলে কুরিয়ার সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের মূল্য ঘোষিত পণ্য/পার্সেল বিতরণ হতে প্রাপ্ত পণ্যমূল্যের অর্থ ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে লেনদেনের জন্য এই গাইডলাইন্স জারি করা হলো।

২। উদ্দেশ্যঃ
(১) “ক্যাশ অন ডেলিভারি” ও “কন্ডিশন বুকিং” সেবাদানকারী কুরিয়ার প্রতিষ্ঠান কর্তৃক ক্রেতার নিকট হতে পণ্যমূল্য বাবদ সংগৃহীত নগদ অর্থ তফসিলি ব্যাংকে “সেটেলমেন্ট অ্যাকাউন্ট” পরিচালনার মাধ্যমে বিক্রেতার নিকট পৌঁছানো;
(২) কুরিয়ার সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান কর্তৃক পণ্য ও অর্থ লেনদেন সেবা প্রদানে প্রযুক্তি-নির্ভর ব্যবস্থা অনুসরণ;
(৩) কুরিয়ার সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের “ক্যাশ অন ডেলিভারি” ও “কন্ডিশন বুকিং” এর বিপরীতে সংঘটিত আর্থিক লেনদেনে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা আনয়ন।

৩। সংজ্ঞাঃ
(১) ক্যাশ অন ডেলিভারিঃ কুরিয়ার সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান কর্তৃক বিক্রেতার (ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান বা অনলাইন ক্রয়-বিক্রয় প্ল্যাটফর্ম) নিকট হতে সংগৃহীত ঘোষিত মূল্যের কোন পণ্য ক্রেতাকে সরবরাহ এবং তাঁর বিপরীতে ক্রেতার নিকট হতে সংগৃহীত পণ্যমূল্য বিক্রেতাকে পৌঁছে দেয়া;
(২) কন্ডিশন বুকিংঃ কুরিয়ার সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান কর্তৃক বিক্রেতার (ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান) নিকট হতে সংগৃহীত ঘোষিত মূল্যের কোন পণ্য ক্রেতাকে (অপর ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান) সরবরাহ এবং ক্রেতার নিকট হতে সংগৃহীত পণ্যমূল্য বিক্রেতাকে পৌঁছে দেয়া;
(৩) সেটেলমেন্ট অ্যাকাউন্টঃ কুরিয়ার সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব, যা শুধুমাত্র ক্যাশ অন ডেলিভারি/ কন্ডিশন বুকিং এর বিপরীতে সংগৃহীত পণ্যমূল্য জমা, পণ্য পরিবহনের কুরিয়ার ফি, বিক্রেতার পক্ষে অর্থ গ্রহণ ও তাকে স্থানান্তর বাবদ সার্ভিস চার্জ এবং বিক্রেতাকে অর্থ পরিশোধের জন্য ব্যবহারযোগ্য।
(৪) ব্যাংকঃ কুরিয়ার সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের সেটেলমেন্ট ব্যাংক।

৪। সেটেলমেন্ট অ্যাকাউন্ট পরিচালনার যোগ্যতাঃ
বাংলাদেশে কার্যরত সকল তফসিলি ব্যাংক ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০ তারিখে জারিকৃত বিআরপিডি সার্কুলার নং-০২ এর ২ (খ) অনুচ্ছেদ অনুসরণকরতঃ ও AML/CFT/KYC Standards পরিপালনসহ যথাযথ পন্থা অনুসরণপূর্বক নিম্নোক্ত যোগ্যতা সম্পন্ন কুরিয়ার সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানসমূহের অনুকুলে সেটেলমেন্ট অ্যাকাউন্ট খোলা ও পরিচালনা সেবা প্রদান করতে পারবেঃ
(১) হিসাব পরিচালনাকারী কুরিয়ার সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানকে বাংলাদেশ সরকারের ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ হতে লাইসেন্সপ্রাপ্ত হতে হবে।
(২) সংশ্লিষ্ট কুরিয়ার সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানকে কুরিয়ার সার্ভিসেস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (সিএসএবি) এর সদস্য হতে হবে।
(৩) সংশ্লিষ্ট কুরিয়ার সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের ক্যাশ অন ডেলিভারি এবং কন্ডিশন বুকিংয়ের মাধ্যমে মূল্য ঘোষিত পণ্য/পার্সেল বিতরণ কার্যক্রম হতে উদ্ভূত অর্থ সংগ্রহ ও পরিশোধ প্রক্রিয়ার প্রতিটি ধাপের প্রয়োজনীয় তথ্য সংরক্ষণের জন্য সেন্ট্রাল ডাটা সিস্টেম চালু থাকতে হবে, যা (সেন্ট্রাল ডাটা সিস্টেম) সিএসএবি কর্তৃক প্রত্যায়িত হতে হবে।

৫। ক্যাশ অন ডেলিভারি/কন্ডিশন বুকিং কার্যক্রম এবং উদ্ভূত অর্থের পরিচালন প্রক্রিয়াঃ
কুরিয়ার সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান কর্তৃক বিক্রেতার নিকট হতে পণ্য গ্রহণ, পণ্যের ঘোষিত মূল্য সংরক্ষণ, ক্রেতাকে পণ্য সরবরাহ, ক্রেতার নিকট হতে পণ্যের মূল্য সংগ্রহ, সংগৃহীত অর্থ সেটেলমেন্ট অ্যাকাউন্টে জমা প্রদান এবং বিক্রেতাকে পণ্যমূল্য পৌঁছে দেয়ার ক্ষেত্রে নিম্নরূপ প্রক্রিয়া অনুসৃত হবেঃ
(১) বিক্রেতা (ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান বা অনলাইন ক্রয় বিক্রয় প্ল্যাটফর্ম) ক্রেতার নিকট বিতরণযোগ্য মূল্য ঘোষিত পণ্য কুরিয়ার সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের স্থানীয় অফিস/এজেন্টের নিকট ক্যাশ অন ডেলিভারি/কন্ডিশন বুকিংয়ের শর্তে হস্তান্তর করবে;
(২) কুরিয়ার সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান বিক্রেতার নিকট হতে প্রাপ্ত পণ্যের প্রেরক ও প্রাপকের নাম ঠিকানা, মোবাইল নম্বর, এনআইডি নম্বর, পণ্যের বিবরণ, পণ্যমূল্যসহ প্রয়োজনীয় সকল তথ্য তাদের এ সংক্রান্ত সেন্ট্রাল ডাটা সিস্টেমে ইনপুট দিয়ে ভাউচার/ইনভয়েস প্রস্তুত করবে এবং ভাউচারসহ পণ্যটি গন্তব্যে প্রেরণের জন্যে আঞ্চলিক অফিস/ডেলিভারি ডিপোতে পাঠাবে;
(৩) আঞ্চলিক অফিস/ডেলিভারি ডিপো সংশ্লিষ্ট পণ্যের ভাউচার/ইনভয়েস এর বিপরীতে ডেলিভারি স্লিপ প্রস্তুত করবে এবং ডেলিভারি স্লিপসহ পণ্যটি সরাসরি ক্রেতাকে বিতরণ করবে বা ক্রেতাকে বিতরণের জন্য ডেলিভারি কর্মীর নিকট পাঠাবে;

(৪) আঞ্চলিক অফিস/ডেলিভারি ডিপো বা ডেলিভারি কর্মী ডেলিভারি স্লিপের বিপরীতে বিতরণকৃত পণ্যের ঘোষিত মূল্য ক্রেতার নিকট হতে সংগ্রহ করবে এবং বিতরণকৃত সকল পণ্যের বিপরীতে সংগৃহীত অর্থ ব্যাংকে রক্ষিত নিজস্ব সেটেলমেন্ট অ্যাকাউন্টে জমা দিবে এবং এ সংক্রান্ত তথ্যাদি তাদের সিস্টেমে ইনভয়েস এর বিপরীতে সংরক্ষণ করবে;
(৫) স্থানীয় ব্যাংক শাখা কুরিয়ার সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের আঞ্চলিক অফিস/ডেলিভারি ডিপো বা ডেলিভারি কর্মীর মাধ্যমে জমাকৃত অর্থ সংশ্লিষ্ট কুরিয়ার প্রতিষ্ঠানের সেটেলমেন্ট অ্যাকাউন্টে জমা করবে;
(৬) ব্যাংক সংশ্লিষ্ট কুরিয়ার সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের সেটেলমেন্ট হিসাবে রক্ষিত অর্থ হতে প্রাপ্যতা অনুসারে কুরিয়ার সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের নির্দেশমত অর্থ পণ্যের বিক্রেতার (ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান বা অনলাইন ক্রয়-বিক্রয় প্ল্যাটফর্ম) ব্যাংক/এমএফএস/পিএসপি অ্যাকাউন্টে পরিশোধ/স্থানান্তর করবে;
(৭) যে সকল পণ্য বিক্রেতার ব্যাংক হিসাব নেই, তাঁদের ক্ষেত্রে ব্যাংক সংশ্লিষ্ট কুরিয়ার প্রতিষ্ঠানের সেটেলমেন্ট অ্যাকাউন্টে জমাকৃত অর্থ হতে ইনভয়েসের বিপরীতে বিক্রেতার প্রাপ্য পণ্যমূল্য কুরিয়ার প্রতিষ্ঠানকে নগদে প্রদান করবে, যা কুরিয়ার প্রতিষ্ঠান পরবর্তী দুই কার্যদিবসের মধ্যে বিক্রেতাকে নিশ্চিত করবে।

৬। ক্যাশ অন ডেলিভারি/কন্ডিশন বুকিং পরিচালনার ছকঃ

৭। সেটেলমেন্ট অ্যাকাউন্ট ব্যবস্থাপনাঃ
(১) ক্যাশ অন ডেলিভারি ও কন্ডিশন বুকিংয়ের মাধ্যমে পণ্য বিতরণ কার্যক্রম হতে উদ্ভূত অর্থ ব্যতিরেকে অন্য কোন উৎস হতে প্রাপ্ত অর্থ সংশ্লিষ্ট কুরিয়ার সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের সেটেলমেন্ট অ্যাকাউন্টে জমা করা যাবে না।
(২) ক্যাশ অন ডেলিভারি ও কন্ডিশন বুকিংয়ের মাধ্যমে পণ্য বিতরণ কার্যক্রম হতে উদ্ভূত যে পরিমাণ অর্থ সেটেলমেন্ট অ্যাকাউন্টে জমা হবে, তার বিপরীতে পণ্যের ঘোষিত মূল্যের সামষ্টিক ভাউচার সংশ্লিষ্ট কুরিয়ার সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের সেন্ট্রাল ডাটা সিস্টেমে ক্সদনিক ভিত্তিতে সংরক্ষণ করবে, যা সেটেলমেন্ট হিসাবধারী ব্যাংক বা বাংলাদেশ ব্যাংক প্রয়োজনবোধে যাচাই করতে পারবে।
(৩) ব্যাংকের সেটেলমেন্ট অ্যাকাউন্টে জমাকৃত অর্থ হতে সংশ্লিষ্ট কুরিয়ার সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান ক্রেতাকে বিতরণকৃত পণ্যের ঘোষিত মূল্য বিক্রেতার ব্যাংক/এমএফএস/পিএসপি অ্যাকাউন্টে পরবর্তী কার্যদিবসের মধ্যে স্থানান্তরের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

(৪) পণ্য বিক্রেতার ব্যাংক/এমএফএস হিসাব না থাকলে বিক্রয়কৃত পণ্যের ঘোষিত মুল্য অনুযায়ী বিক্রেতাদের প্রাপ্য অর্থের তালিকা ব্যাংকে জমা প্রদানপূর্বক সংশ্লিষ্ট কুরিয়ার সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান বিক্রেতার পক্ষে নগদ অর্থ নিজেদের সেটেলমেন্ট অ্যাকাউন্ট হতে উত্তোলন করে সংশ্লিষ্ট বিক্রেতাকে প্রদান করতে পারবে; তবে এ নগদ উত্তোলনের পরিমাণ কোনভাবেই একক পণ্যমূল্য বাবদ ৫০০০ টাকার অধিক হতে পারবে না। কুরিয়ার প্রতিষ্ঠানগুলো এজাতীয় উত্তোলন কমিয়ে সম্পূর্ণরূপে ক্যাশলেস ব্যবস্থা প্রবর্তনে সর্বদা সচেষ্ট থাকবে।
(৫) সেটেলমেন্ট অ্যাকাউন্টে জমাকৃত অর্থ হতে পণ্য পরিবহনের কুরিয়ার ফি, বিক্রেতার পক্ষে অর্থ গ্রহণ ও তাকে স্থানান্তর বাবদ সার্ভিস চার্জ প্রভৃতি বাবদ অর্থ কুরিয়ার সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো তাঁদের পৃথক ব্যাংক অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করতে পারবে।
(৬) সেটেলমেন্ট অ্যাকাউন্টে জমাকৃত অর্থ কোনক্রমেই কোন খাতে বিনিয়োগ করা যাবে না এবং এ অর্থের বিপরীতে কোন প্রকার ঋণ সুবিধা প্রদান করা যাবে না।

৮। অর্থের হিসাব সংরক্ষণঃ
(১) কুরিয়ার সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান ক্যাশ অন ডেলিভারি ও কন্ডিশন বুকিংয়ের মাধ্যমে ক্রেতার নিকট বিতরণ ও পণ্যের বিপরীতে আদায়যোগ্য ঘোষিত মূল্য তালিকা, ক্রেতাকে পণ্য বিতরণপূর্বক সংগৃহীত অর্থ, পণ্যের বিক্রেতাকে ব্যাংক/এমএফএস/পিএসপি অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ও নগদে পরিশোধিত অর্থের হিসাব, চার্জ ও ফি বাবদ পৃথক ব্যাংক অ্যাকাউন্টে স্থানান্তরিত অর্থের হিসাব ক্সদনিক ভিত্তিতে নিজস্ব সেন্ট্রাল ডাটা সিস্টেমে সংরক্ষণ করবে।
(২) সেটেলমেন্ট অ্যাকাউন্টের মাসিক লেনদেন ও স্থিতি কুরিয়ার সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের সংরক্ষিত ভাউচার ও ইনভয়েসের সাথে পরবর্তী মাসের প্রথম ১৫ দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট কুরিয়ার সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান ব্যাংকের সাথে রিকনসাইল করবে এবং উক্ত রিকনসিলিয়েশন প্রতিবেদন ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে ব্যাংক ও বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রেরণ করবে।
(৩) কুরিয়ার সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের সেটেলমেন্ট অ্যাকাউন্ট বা একই ব্যাংকে পরিচালিত নিজস্ব পৃথক ব্যাংক অ্যাকাউন্টের লেনদেন পরিবীক্ষণের প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক ও বাংলাদেশ ব্যাংক (১) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সংরক্ষিত তথ্য যাচাই করতে পারবে।

৯। বিরোধ নিষ্পত্তিঃ
(১) কুরিয়ার সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব বিরোধ নিষ্পত্তি বিধিমালা থাকতে হবে, যার উপর ভিত্তি করে তারা দ্রুততম সময়ে সকল পক্ষের পণ্য ও অর্থ সংক্রান্ত বিরোধের নিষ্পত্তি করবে।
(২) ক্যাশ অন ডেলিভারি ও কন্ডিশন বুকিং কার্যক্রম হতে অর্থ সংক্রান্ত বিরোধের উৎপত্তি হলে সংশ্লিষ্ট কুরিয়ার সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান সর্বোচ্চ ১৫ (পনের) দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট বিরোধের নিষ্পত্তি করবে।
(৩) বিরোধ নিষ্পত্তি কার্যক্রম নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সম্পন্নের বিষয়ে কুরিয়ার সার্ভিসেস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ সংশ্লিষ্ট কুরিয়ার সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানকে তাগিদ দিতে পারবে।

১০। পরিপালনীয় নির্দেশনাঃ
(১) ব্যাংক বিদ্যমান লেনদেন বিধিবিধান ও AML/CFT/KYC Standards পরিপালনসহ যথাযথ পন্থা অনুসরণপূর্বক বাংলাদেশ ব্যাংকে রিপোর্ট করবে।
(২) কুরিয়ার সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান প্রতিদিন ব্যাংকের সেটেলমেন্ট অ্যাকাউন্টে যে নগদ অর্থ জমা দিবে, তার বিপরীতে পণ্যের ঘোষিত মূল্য তাদের সেন্ট্রাল ডাটা সিস্টেমে সংরক্ষণ করবে; প্রয়োজনে ব্যাংক/বাংলাদেশ ব্যাংক উক্ত সংরক্ষিত ঘোষিত মূল্যের তালিকা যাচাই করতে পারবে; এতে অসঙ্গতি বা অস্বাভাবিকতা পরিলক্ষিত হলে ব্যাংক স্বপ্রণোদিত হয়ে বা বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশে সংশ্লিষ্ট কুরিয়ার সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের সেটেলমেন্ট অ্যাকাউন্ট স্থগিত বা বন্ধ করে দিতে পারবে।
(৩) কোনো ব্যাংকে কোনো কুরিয়ার সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের অনুকুলে সেটেলমেন্ট হিসাব খোলা হলে, সংশ্লিষ্ট ব্যাংক এতদ্সংক্রান্ত তথ্য পরবর্তী ১৫(পনের) দিনের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংককে অবহিত করবে।

(৪) কুরিয়ার সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানকে ক্যাশ অন ডেলিভারি বা কন্ডিশন বুকিং হতে উদ্ভূত অর্থের লেনদেনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট নির্দেশনা, বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) এর প্রচলিত নির্দেশনা এবং অন্যান্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থার এতদ্সম্পর্কিত নির্দেশনা পরিপালন করতে হবে; ব্যর্থতায় সংশ্লিষ্ট কুরিয়ার প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে।
(৫) বাংলাদেশ ব্যাংক এবং বাংলাদেশ সরকারের ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ, প্রযোজ্য ক্ষেত্রে, কুরিয়ার সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের ক্যাশ অন ডেলিভারি বা কন্ডিশন বুকিং পরিচালন প্রক্রিয়া সরেজমিনে পরিদর্শন করতে পারবে এবং প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করতে পারবে।

সূত্রঃ পেমেন্ট সিস্টেমস্ ডিপার্টমেন্ট, বাংলাদেশ ব্যাংক
✓ পিএসডি সার্কুলার নংঃ ০৭, তারিখঃ ০৬ মে, ২০২১

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

রিলেটেড লেখা

Back to top button