ব্যাংকিং আইন

সংশোধীত ব্যাংক কোম্পানী আইন-২০২৩, কী আছে এতে?

মোঃ খায়রুল হাসান, সিএসএএ: সম্প্রতি বাংলাদেশ সরকার ব্যাংক কোম্পানী আইন-১৯৯১ সংশোধন করেছে। গত ২৬ জুন, ২০২৩ বাংলাদেশ গেজেটের অতিরিক্ত সংখ্যায় ব্যাংক কোম্পানী (সংশোধন) আইন, ২০২৩ প্রকাশিত হয়েছে। সংশোধীত এ আইনের সারসংক্ষেপ পাঠকদের জন্য আলোচনা করা হলো:

“ইচ্ছাকৃত খেলাপী ঋণগ্রহীতা” সম্পর্কে বলা হয়েছে, কোনো খেলাপী ঋণগ্রহীতা ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানী যিনি বা যা নিজের, তার পরিবারের সদস্যের, স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানীর অনুকূলে কোন ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান হতে গৃহীত ঋণ, অগ্রিম, বিনিয়োগ বা অন্য কোন আর্থিক সুবিধা বা এর উপর আরোপিত সুদ বা মুনাফা তার সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও পরিশোধ করে না। একইভাবে কোন ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান হতে জালিয়াতি, প্রতারণা বা মিথ্যা তথ্য প্রদানের মাধ্যমে তার নিজের, পরিবারের সদস্যের, স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানীর নামে ঋণ, অগ্রিম, বিনিয়োগ বা কোন আর্থিক সুবিধা গ্রহণ করে; বা কোন ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান হতে যে উদ্দেশ্যে ঋণ, অগ্রিম, বিনিয়োগ বা আর্থিক সুবিধা গ্রহণ করে সেই উদ্দেশ্য ব্যতীত অন্য কোন উদ্দেশ্যে উক্ত ঋণ, অগ্রিম, বিনিয়োগ বা আর্থিক সুবিধা বা উহার অংশ ব্যবহার করে; বা ঋণ বা অগ্রিম-এর বিপরীতে প্রদত্ত জামানত ঋণ বা অগ্রিম প্রদানকারী কোন ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের লিখিত পূর্বানুমতি ছাড়া হস্তান্তর বা স্থানান্তর করেছে।

“নিয়ন্ত্রণাধীন প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানী”-এর সংজ্ঞায় বলা হয়েছে, কোন ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানীর এইরূপ কোন প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানী যাতে উক্ত ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানী উল্লেখযোগ্য শেয়ার ধারণ করে বা অন্য কোন উপায়ে নিয়ন্ত্রণ করে; বা উক্ত ব্যক্তি বা তার পরিবারের সদস্য পরিচালক অথবা উক্ত প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানী পরিচালক অথবা উক্ত প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানীর কোন সাবসিডিয়ারী কোম্পানী পরিচালক হয়; বা এর সাথে সম্পাদিত চুক্তি বা অন্য কোন উপায়ে পরিচালক নিয়োগ বা অপসারণের অধিকার সংরক্ষণ করে অথবা এর পরিচালনা বা ব্যবস্থাপনার উপর নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা সংরক্ষণ করে।

সংশোধীত এ আইনে, ব্যাংকের শেয়ার ক্রয়ের বিষয়ে বলা হয়েছে, কোন ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান, কোম্পানী বা একই পরিবারের সদস্যদের মধ্যে ব্যাংকের শেয়ার কেন্দ্রীভূত করতে পারবে না এবং কোন ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান, কোম্পানী বা পরিবারের সদস্যগণ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে একক বা অন্যের সাথে যৌথভাবে বা উভয়ভাবে কোন ব্যাংকের ১০ শতাংশের বেশি শেয়ার ক্রয় করতে পারবে না।

ব্যাংক, ব্যাংকার, ব্যাংকিং, অর্থনীতি ও ফাইন্যান্স বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ খবর, প্রতিবেদন, বিশেষ কলাম, বিনিয়োগ/ লোন, ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, ফিনটেক, ব্যাংকের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারগুলোর আপডেট পেতে আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ 'ব্যাংকিং নিউজ', ফেসবুক গ্রুপ 'ব্যাংকিং ইনফরমেশন', 'লিংকডইন', 'টেলিগ্রাম চ্যানেল', 'ইন্সটাগ্রাম', 'টুইটার', 'ইউটিউব', 'হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেল' এবং 'গুগল নিউজ'-এ যুক্ত হয়ে সাথে থাকুন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের পূর্বানুমোদন ছাড়া, কোন ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান, কোম্পানী বা কোন পরিবারের সদস্যগণ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে একক বা অন্যের সাথে যৌথভাবে বা উভয়ভাবে কোন ব্যাংকের ৫ শতাংশের অধিক শেয়ারধারক হতে পারবে না।

“পরিবার বা পরিবারের সদস্য” বলতে বুঝানো হয়েছে- কোন ব্যক্তির স্ত্রী, স্বামী, পিতা, মাতা, পুত্র, কন্যা, ভাই, বোন এবং উক্ত ব্যক্তির উপর নির্ভরশীল কোন ব্যক্তি। একক পরিবার থেকে পরিচালক হওয়ার বিষয়ে বলা হয়েছে, বলবৎ অন্য কোন আইন অথবা কোন ব্যাংক-কোম্পানীর সংঘ/স্মারক বা সংঘবিধিতে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, কোন একক পরিবার হতে ৩ জনের অধিক সদস্য একই সময় কোন ব্যাংকের পরিচালক পদে থাকতে পারবে না।

পরিচালক পদের মেয়াদ সম্পর্কে বলা হয়েছে, এই আইন কার্যকর হবার পর কোন ব্যক্তি কোন ব্যাংকের পরিচালক পদে একটানা ১২ বছরের অধিক অধিষ্ঠিত থাকতে পারবে না। নিরবচ্ছিন্ন ১২ বছর কোন ব্যাংকের পরিচালক পদে অধিষ্ঠিত থাকলে উক্ত মেয়াদ শেষ হবার পর ৩ বছর অতিবাহিত না হওয়া পর্যন্ত তিনি উক্ত ব্যাংকের পরিচালক পদে পুনঃনিযুক্ত হবার যোগ্য হবেন না।

কোন ব্যাংকের কোন পরিচালকের কেবল বাংলাদেশ হতে বিদেশে অন্যূন ৩ মাস নিরবচ্ছিন্ন অবস্থানজনিত অনুপস্থিতির কারণে উক্ত ব্যাংকে কোন বিকল্প পরিচালক নিয়োগের প্রয়োজন হলে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ উক্ত মূল পরিচালকের বিপরীতে বছরে সর্বোচ্চ ১ বার টানা ৩ মাসের জন্য ১ জন বিকল্প পরিচালক নিযুক্ত করতে পারবে।

পরিচালক নিয়োগে নিষেধাজ্ঞা সম্পর্কে বলা হয়েছে, কোন ব্যক্তি কোন ব্যাংকের পরিচালক হিসেবে নিয়োজিত হলে একই সময়ে তিনি অন্য কোন ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বীমা কোম্পানী বা অনুরূপ কোম্পানীসমূহের কোন সাবসিডিয়ারী কোম্পানীর বা বাংলাদেশ ব্যাংকের বিবেচনায় এরূপ কোন কোম্পানী বা প্রতিষ্ঠান যা উক্ত ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বা বীমা কোম্পানীর উপর নিয়ন্ত্রণ, যৌথ নিয়ন্ত্রণ বা উল্লেখযোগ্য প্রস্তাব বিস্তার করে এরূপ কোম্পানী বা প্রতিষ্ঠানের পরিচালক থাকতে পারবেন না।

কেনো ব্যাংকের বিদ্যমান বহিঃহিসাব নিরীক্ষক, আইন উপদেষ্টা, উপদেষ্টা, পরামর্শক বা লাভজনক কোনো পদের দায়িত্বে নিয়োজিত ব্যক্তিগণ সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের পরিচালক হতে পারবেন না। একইভাবে কোন ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বীমা কোম্পানীর বা উক্তরূপ কোম্পানীসমূহের কোন সাবসিডিয়ারী কোম্পানীর বা বাংলাদেশ ব্যাংকের বিবেচনায় এরূপ কোন কোম্পানী বা প্রতিষ্ঠান যা সংশ্লিষ্ট ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বা বীমা কোম্পানীর উপর নিয়ন্ত্রণ বা উল্লেখযোগ্য প্রভাব বিস্তার করে এমন কোম্পানী বা প্রতিষ্ঠানের উপদেষ্টা, পরামর্শক বা লাভজনক পদে নিয়োজিতরাও সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের পরিচালক হতে পারবেন না।

“ব্যাংক সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান”- প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, কোন ব্যাংকের পরিচালক, ব্যবস্থাপনা পরিচালক বা প্রধান নির্বাহী, উল্লেখযোগ্য শেয়ারধারক বা তাদের পরিবারের সদস্য বা বাংলাদেশ ব্যাংকের বিবেচনায় এমন ব্যক্তি যিনি উক্ত ব্যাংকের উপর নিয়ন্ত্রণ, যৌথ নিয়ন্ত্রণ বা উল্লেখযোগ্য প্রভাব বিস্তার করে।

পরিচালক বা তাদের পরিবারের সদস্যদের ঋণ/বিনিয়োগ/অগ্রিম অনুমোদনের বিষয়ে বলা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের পরিচালককে বা তাদের পরিবারের সদস্যকে জামানতী ঋণ বা অগ্রিম ব্যতীত অন্য কোনরূপ ঋণ বা অগ্রিম মঞ্জুর করবে না বা ইহার কোন পরিচালক বা পরিবারের সদস্য কর্তৃক দায় গ্রহণের ভিত্তিতে জামানতী ঋণ/অগ্রিম ব্যতীত ঋণ, অগ্রিম, গ্যারান্টি বা অন্য কোন আর্থিক সুবিধা প্রদান করবে না। এদের নিয়ন্ত্রণাধীনে পরিচালিত প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানীতেও অনুরূপ ঋণ/অগ্রিম মঞ্জুর করবে না।

দেনাদার কোম্পানী/প্রতিষ্ঠানের পরিচালক বা পরিচালনা কর্তৃপক্ষের সদস্যের উপর বিধিনিষেধ আরোপ প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, ঋণদাতা ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালক পর্ষদ বা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ব্যতীত কোন দেনাদার কোম্পানী বা প্রতিষ্ঠানের কোন পরিচালক বা পরিচালনা কর্তৃপক্ষের কোন সদস্যের পদত্যাগ কার্যকর হবে না এবং কোন পরিচালক তার শেয়ার হস্তান্তর বা বিক্রয় করতে পারবেন না।

ইচ্ছাকৃত খেলাপী ঋণ গ্রহীতা সম্পর্কে বলা হয়েছে, কোন খেলাপী ঋণ গ্রহীতার অনুকূলে কোন ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান কোন ধরণের ঋণ সুবিধা প্রদান করবে না। প্রত্যেক ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান ইচ্ছাকৃত খেলাপী ঋণগ্রহীতার তালিকা প্রস্তুত করে বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রেরণ করবে এবং বাংলাদেশ ব্যাংক সেগুলো দেশের সকল ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে প্রেরণ করবে।

ইচ্ছাকৃত খেলাপী ঋণগ্রহীতা হিসাবে তালিকাভূক্ত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান উক্ত তালিকা হইতে অব্যাহতি প্রাপ্তির পর বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক নির্ধারিত সময়, যা ৫ বছরের অধিক হইবে না, অতিবাহিত না হওয়া পর্যন্ত কোন ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালক হবার যোগ্য হবেন না। কোন ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালক ইচ্ছাকৃত খেলাপী ঋণ গ্রহীতা হিসেবে তালিকাভূক্ত হলে, বাংলাদেশ ব্যাংক তার পরিচালক পদ শূন্য ঘোষণা করবে।

নোটিশ প্রাপ্তির ২ মাসের মধ্যে ইচ্ছাকৃত খেলাপী ঋণ গ্রহীতা তার নিকট প্রাপ্য টাকা পরিশোধ করতে ব্যর্থ হইলে, সংশ্লিষ্ট ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান বা এর পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদনক্রমে তার বিরুদ্ধে ফৌজদারী মামলা দায়ের করবে এবং এই মামলা সংশ্লিষ্ট ঋণ/অগ্রিম/পাওনা আদায়ের ক্ষেত্রে অর্থ ঋণ আদালতের কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত করবে না।

যদি কোন ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান এই ধারার বিধান লঙ্ঘন করে, অথবা যদি বাংলাদেশ ব্যাংক এমন বিবেচনা করে যে, কোন ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান জ্ঞাতসারে বা ইচ্ছাকৃতভাবে এই ধারার বিধান লঙ্ঘন করেছে, তাহলে উক্ত লঙ্ঘনের জন্য উক্ত ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের উপর অন্যূন ৫০ লক্ষ টাকা এবং অনধিক ১ কোটি টাকা জরিমানা আরোপিত হবে এবং যদি উক্ত লঙ্ঘন অব্যাহত থাকে, তাহলে উক্ত লঙ্ঘনের প্রথম দিনের পর প্রত্যেক দিনের জন্য অতিরিক্ত অনূর্ধ্ব ১ লক্ষ টাকা জরিমানা আরোপিত হবে।

সুদ/মুনাফা মওকুফ বিষয়ে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের পূর্বানুমোদন ছাড়া কোন ব্যাংক তার নিকট থেকে নিম্নবর্ণিত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক গৃহীত ঋণ বা বিনিয়োগের উপর আরোপিত বা অনারোপিত সুদ/মুনাফা মওকুফ করবে না। যেমন সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের কোন পরিচালক এবং তাহার পরিবারের সদস্যগণ; এমন কোন প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানী যাতে উক্ত ব্যাংক বা উহার কোন পরিচালক বা তাদের পরিবারের সদস্য, উল্লেখযোগ্য শেয়ারধারক, জামিনদার, ম্যানেজিং এজেন্ট, মালিক বা অংশীদার বা যাহা উক্ত ব্যাংক বা এর কোন পরিচালক বা তাদের পরিবারের সদস্য কর্তৃক কোনভাবে নিয়ন্ত্রিত বা প্রভাবিত হয়; এমন ব্যক্তি যার সাথে উক্ত ব্যাংকের কোন পরিচালক, অংশীদার বা জামিনদার হিসেবে স্বার্থ সংশ্লিষ্ট রয়েছে।

এই বিধান লঙ্ঘন করে কোনরূপ মওকুফ করা হলে তা অবৈধ হবে, এবং অনুরূপ মওকুফের জন্য সংশ্লিষ্ট পরিচালক বা কর্মকর্তাগণ প্রত্যেকে উক্ত লঙ্ঘনের জন্য দোষী বলে গণ্য হবেন এবং অনূর্ধ্ব ৩ বৎসর কারাদন্ড বা অনূর্ধ্ব ৩ লক্ষ টাকা অর্থদন্ড বা উভয় দন্ডে দন্ডনীয় হবেন।

চেয়ারম্যান, পরিচালক ও প্রধান নির্বাহীর অপসারণ সম্পর্কে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংক যদি এই মর্মে সস্তুষ্ট হয় যে, কোন ব্যাংকের চেয়ারম্যান, পরিচালক বা প্রধান নির্বাহী কর্তৃক কোন ব্যাংক বা এর আমানতকারীদের জন্য ক্ষতিকর কার্যকলাপ বা স্বার্থ সংশ্লিষ্ট লেনদেনের মাধ্যমে ব্যাংকের তহবিলের অপব্যবহার বা মানিলন্ডারিং বা সন্ত্রাসী কার্যে অর্থায়ন সংক্রান্ত অপরাধ রোধকল্পে বা জনস্বার্থে উক্ত ব্যাংকের যথাযথ ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে উক্ত চেয়ারম্যান, পরিচালক বা প্রধান নির্বাহীকে অপসারণ করা প্রয়োজন, তাহলে বাংলাদেশ ব্যাংক, তার কারণ লিখে আদেশের মাধ্যমে উক্ত চেয়ারম্যান, পরিচালক, প্রধান নির্বাহীকে তার পদ হতে অপসারণ করতে পারবে।

যদি কোন ব্যাংকের চেয়ারম্যান, পরিচালক বা প্রধান নির্বাহী অপসারিত হন, তাহলে তিনি উক্ত ব্যাংকের চেয়ারম্যান বা পরিচালক বা প্রধান নির্বাহী পদে বহাল থাকবেন না। তিনি এ আদেশের তারিখ হতে পরবর্তী ৩ বছর উক্ত ব্যাংকের বা অন্য কোন ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনায় প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সংযুক্ত হবেন না বা অংশগ্রহণ করতে পারবেন না।

অপসারিত চেয়ারম্যান, পরিচালক বা প্রধান নির্বাহীর ক্ষতিকর কার্যকলাপের কারণে কোন ব্যাংকের আর্থিক ক্ষতি হলে, তার নিকট ক্ষতিপূরণ বাবদ প্রাপ্য টাকা আদায়ের লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবে এবং এমন গৃহীত ব্যবস্থা সংশ্লিষ্ট ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংককে অবহিত করবে।

ব্যাংক বহির্ভূত অন্য কোন সমিতি, প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানী এই আইন লঙ্ঘন করে তাদের নামের অংশ হিসাবে “ব্যাংক” শব্দ অথবা তা হতে উদ্ভ‚ত অন্য কোন শব্দ ব্যবহার করে থাকে যাতে একে ব্যাংক হিসেবে বিবেচনা করার সম্ভাবনা থাকে, তাহলে উক্ত সমিতি, প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানী এবং এর ব্যবস্থাপনার সাথে সংশ্লিষ্ট পরিচালকগণ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক বা প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, উক্ত লঙ্ঘনের জন্য তাদের প্রত্যেকে অনধিক ৫০ লক্ষ টাকা অর্থদন্ড বা অনধিক ৭ বছর কারাদন্ড বা উভয় দন্ডে দন্ডনীয় হবেন এবং উক্ত লঙ্ঘন অব্যাহত থাকলে প্রত্যেক দিনের জন্য অনধিক ১ লক্ষ টাকা জরিমানা আরোপিত হবে।

লেখক: ইসলামিক ব্যাংকার ও সার্টিফায়েড শরিয়াহ অ্যাডভাইজার অ্যান্ড অডিটর (সিএসএএ)।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

রিলেটেড লেখা

Back to top button