এনজিওর সঞ্চয় দৌরাত্ম ব্যাংকিং সিস্টেমের সম্পূর্ন পরিপন্থি
অবৈধ মাইক্রো ক্রেডিটের জালে জড়িয়ে নিঃস্ব হচ্ছে মানুষ। এনজিও কিংবা সমিতির বৈদেশিক সহায়তা কমে আসায় তারা ব্যাংক থেকে ঋন নিয়ে চড়া সুদে ব্যবসা শুরু করেছে। দারিদ্র বিমোচনের কথা বলে এনজিও ও সমিতির নামে গঠিত প্রতিষ্ঠানগুলো বিভিন্ন ব্যাংকিং কার্যক্রম চালিয়ে ৩০ থেকে ৩৬ শতাংশ সুদ গ্রহণ করে সাধারণ মানুষকে সর্বস্বান্ত করছে এবং ১৫ থেকে ২০ শতাংশ সুদের বিপরীতে আমানত সংগ্রহ করে যাচ্ছে যাতে নিয়মনীতির কোন বালাই নেই।
এদিকে এই খাত থেকে সরকার হারাচ্ছে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব। এ সকল সমিতি বা এনজিও এখন প্রায় শত কোটি টাকার পুঁজি নিয়ে মাঠে কাজ করছে। এ সকল সংস্থার ৭০ শতাংশেরই এনজিও ব্যুরো বা সমাজ সেবা অধিদফতরের অনুমোদন নেই।
কোন কোন এনজিও বা সমিতি টাকা হাতিয়ে নিয়ে লাপাত্তা হচ্ছে। সূত্রমতে, আয় বৈষম্য থাকা স্বত্ত্বেও বাংলাদেশ এখন ঘোষিত মধ্যম আয়ের দেশ। ফলে এনজিওগুলোকে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠির জন্য দাতারা বৈদেশিক সাহায্য সহযোগিতা দিচ্ছে না।
মূলত: ১৯৭৮ সাল থেকে সৃষ্ট প্রাকৃতিক দুর্যোগ তথা ১৯৮৮ সালের ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়, সিডর, আইলা, মহসেনসহ জলোচ্ছ্বাস, ঘূর্ণিঝড়ের পর ত্রাণ সহায়তায় এগিয়ে এসেছে এনজিওগুলো।
ব্যাংক, ব্যাংকার, ব্যাংকিং, অর্থনীতি ও ফাইন্যান্স বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ খবর, প্রতিবেদন, বিশেষ কলাম, বিনিয়োগ/ লোন, ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, ফিনটেক, ব্যাংকের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারগুলোর আপডেট পেতে আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ 'ব্যাংকিং নিউজ', ফেসবুক গ্রুপ 'ব্যাংকিং ইনফরমেশন', 'লিংকডইন', 'টেলিগ্রাম চ্যানেল', 'ইন্সটাগ্রাম', 'টুইটার', 'ইউটিউব', 'হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেল' এবং 'গুগল নিউজ'-এ যুক্ত হয়ে সাথে থাকুন। |
সরকারের বেশকিছু জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচির সহায়তা দিতেও এনজিওগুলো কাজ করেছে তৃণমুল পর্যায়ে। এছাড়া স্বাস্থ্য স্যানিটেশন, সোস্যাল মোবিলাইজেশন, পরিবার পরিকল্পনা, মানবাধিকার সুরক্ষা ও শিক্ষা সম্প্রসারণে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে এনজিওরা।
বৈদেশিক সাহায্য সহযোগিতা বা ফান্ড না পেয়ে এনজিওগুলো স্থানীয়ভাবে পুঁজি সংগ্রহ করে ঋণ কর্মসূচি চালু করেছে। যা ব্যাংকিং সিস্টেমের সম্পূর্ন পরিপন্থি। এর ফলে ব্যাংকগুলো প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর আমানত হারাচ্ছে এবং ব্যাংকগুলোর সংশ্লিষ্ট ঋণ কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।
ব্যাংক ব্যবসা হয়ে পড়ছে অলাভজনক। ব্যাংকার হিসাবে আমার মতামত, প্রথমত এই সমস্ত এনজিও প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রমের সুনির্দিষ্ট নিয়মনীতি নির্ধারণ করা। দারিদ্র বিমোচনের কথা বলে ব্যাংকিং কার্যক্রমের মতো আমানত সংগ্রহের অনুমোদন না দেওয়া এবং এনজিও প্রতিষ্ঠানগুলিতে উচ্চনির্বাহী পর্যায়ে সরকারি আমলা নিয়োগের মাধ্যমে কার্যক্রম পর্যবেক্ষণের আওতায় আনা।
এনজিও প্রতিষ্ঠানগুলোর চড়া সূদে ঋণ বিতরণ এবং লোভনীয় সুদের বিপরীতে আমানত সংগ্রহ কার্যক্রম পর্যবেক্ষণের আওতায় আনা হলেই সরকারের নির্ধারিত ঋণের সুদের হার নিশ্চিত করে সুনির্দিষ্ট হারে ব্যাংকগুলি আমানত সংগ্রহের মাধ্যমে লাভবান হতে পারে।
লেখকঃ মিনহাজুল আবেদিন
এসিট্যান্ট রিলেশনশিপ অফিসার
ফিন্যান্সিয়াল ইনক্লুশন এন্ড ফিন্যান্সিয়াল লিটারেসি ডিপার্টমেন্ট
ব্যাংক এশিয়া, পটুয়াখালী