বিবিধ

ইসলামে প্রাইজ বন্ড কি হালাল নাকি হারাম?

প্রাইজ বন্ড ক্রয় করা ও ড্র এর মাধ্যমে পাওয়া পুরস্কারের টাকা ব্যবহার করা হালাল হবে কি না? এ ব্যাপারে আলেমদের মধ্যে মত বিরোধ রয়েছে। কতিপয় আলেমের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী বর্তমান প্রচলিত প্রাইজ বন্ড ও ড্র পদ্ধতিতে সুদ ও জুয়া শামিল হওয়ায় তা ক্রয় করা ও লাভ নেয়া জায়েজ নয়। আবার কতিপয় আলেমের মতে এটি জায়েজ।

বিশিষ্ট আলেম ড. মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ এর মতে-
প্রাইজ বন্ড এবং এর ড্র থেকে যে অর্থ আসে তার মৌলিক প্রক্রিয়া ইসলামে বৈধ। কিন্তু এই টাকা ব্যাংক বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ করে ও ঋণ দেয়। ফলে সেখান থেকে ব্যাংক সুদ নেয়। সার্বিক বিবেচনায় সরাসরি বললে অবৈধ। অর্থাৎ, মন্দের ভালো। তবে লটারি থেকে প্রাইজ বন্ড অনেক অনেক গুন ভালো। কারণ, লটারি জুয়া খেলার সমান। এক্ষেত্রে একজন অন্যজনদের নিঃস্ব করে লাভবান হয়।

প্রশ্ন: বাংলাদেশ ব্যাংকের ইস্যু করা প্রাইজবন্ডের পুরস্কারের অর্থ কি গ্রহণযোগ্য?
উত্তর: প্রাইজবন্ডের বিষয়টি হচ্ছে, যারা প্রাইজবন্ড কিনেছেন, তাঁরা প্রত্যেকেই কিন্তু এই টাকাটি ফেরত পাবেন, কেউ বঞ্চিত হবেন না। কিন্তু বছর শেষে ধরে নেওয়া যাক এক লাখ লোক প্রাইজবন্ড কিনেছেন, সবাইকে তো আর পুরস্কার দেওয়া যাবে না। হয়তো ১০ জনকে পুরস্কৃত করা হবে, তখন লটারির মাধ্যমে এটি নির্ধারণ করা হয়।

এইভাবে লটারির মাধ্যমে যেই পুরস্কারটি গ্রহণ করা হয়ে থাকে বা দেওয়া হয়ে থাকে, সেটি দেওয়াও জায়েজ এবং গ্রহণ করাও জায়েজ। কারণ এখানে জুয়ার কোনো সুযোগ নেই। যেহেতু যারা অংশগ্রহণ করছে, তাঁদের কাছ থেকে যে টাকা নেওয়া হচ্ছে, সেই টাকা ফেরত দেওয়া হচ্ছে বা তাঁরা পেয়ে যাচ্ছে, সেহেতু এটি জায়েজ।

ব্যাংক, ব্যাংকার, ব্যাংকিং, অর্থনীতি ও ফাইন্যান্স বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ খবর, প্রতিবেদন, বিশেষ কলাম, বিনিয়োগ/ লোন, ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, ফিনটেক, ব্যাংকের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারগুলোর আপডেট পেতে আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ 'ব্যাংকিং নিউজ', ফেসবুক গ্রুপ 'ব্যাংকিং ইনফরমেশন', 'লিংকডইন', 'টেলিগ্রাম চ্যানেল', 'ইন্সটাগ্রাম', 'টুইটার', 'ইউটিউব', 'হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেল' এবং 'গুগল নিউজ'-এ যুক্ত হয়ে সাথে থাকুন।
ব্যাংকিং নিউজ বাংলাদেশ (Banking News Bangladesh. A Platform for Bankers Community.) প্রিয় পাঠকঃ ব্যাংকিং বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ খবরগুলো নিয়মিত আপডেট পেতে আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ ব্যাংকিং নিউজ বাংলাদেশ এ লাইক দিয়ে আমাদের সাথেই থাকুন।

প্রশ্ন: বাংলাদেশের প্রাইজ বন্ডের লটারির টাকা হালাল নাকি হারাম?
উত্তর: প্রাইজ বন্ড সম্পর্কে ইসলামের বিধান সম্পর্কে জানার জন্য সর্বপ্রথম জানা প্রয়োজন প্রাইজ বন্ড কি? বাংলাদেশ সরকার বর্তমানে ১০০ টাকা দরে প্রাইজ বন্ড নামক এক প্রকার ‘কাগুজে মুদ্রা’ বিক্রয় করে। আর জনগণ যার যত খুশি সেগুলো ক্রয় করে। তারপর সরকার কর্তৃক প্রায় তিন মাস পরপর পর বছরে ৪বার এগুলোর উপর লটারি ড্র করে এবং বিজয়ীদেরকে প্রায় ৬ লাখ, ৩ লাখ, ১ লাখ, ৫০ হাজার, ১০ হাজার ইত্যাদি বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে পুরস্কার দেয়া হয়। মানুষ মূলত: এ সব পুরষ্কার পাওয়ার লোভে এ সব ক্রয় করে থাকে।

উল্লেখ্য যে, লটারীতে বিজয়ী হোক অথবা না হোক প্রাইজবন্ডধারীরা যে কোন সময় সরকারি ব্যাংক, বানিজ্যিক ব্যাংক, জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের সঞ্চয় ব্যুরো অফিস অথবা পোস্ট অফিসের মাধ্যমে প্রাইজ বন্ড ভাঙ্গিয়ে তার সমপরিমাণ টাকা উঠিয়ে নিতে পারবে। অর্থাৎ সকলেই তাদের মূল টাকা ফেরত পাবে।

প্রশ্ন: শরীয়তের দৃষ্টিতে প্রাইজ বন্ড এর লটারী হারাম কেন?
উত্তর: আমরা উপরের আলোচনা থেকে বুঝলাম, প্রাইজ বন্ড সরকার কর্তৃক সাধারণ জনগণ থেকে ঋণ দেয়ার একটি সিস্টেম। মানুষ সেগুলো ক্রয় করার মাধ্যমে মূলত: সরকারকে ঋণ দেয়। সরকার আবার সেগুলো তাদের নিকট থেকে ক্রয় করে ঋণ পরিশোধ করে। এই ঋণ লেনদেন প্রক্রিয়ার মাঝখানে লটারির মাধ্যমে কতিপয় মানুষকে পুরষ্কার প্রদান করা হয়। এই পুরস্কারটাই রিবা বা সুদ। কেননা, ইসলামের দৃষ্টিতে ঋণের কারণে যদি অতিরিক্ত কিছু ফায়দা দেয়া হয় তাহলে সেটাই সুদ। আর ইসলামে সুদ ভয়াবহ অপরাধ। সুতরাং আমরা এ সিদ্ধান্তে উপণিত হতে পারি যে, প্রাইজবন্ড এর লটারী সিস্টেমটা একটি হারাম সিস্টেম। সুতরাং এতে অংশ গ্রহণ করা বৈধ নয়। অন্যথায় সুদের সাথে জড়িত হওয়ার কারণে গুনাহগার হতে হবে।

উত্তর প্রদানে: আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার, সৌদি আরব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

রিলেটেড লেখা

Back to top button