বিবিধ

২০২৪ সালের রমজান মাসের সেহরী ও ইফতারের সময়সূচি

২০২৪ সালের রমজান মাসের সেহরী ও ইফতারের সময়সূচি- পবিত্র রমজান হলো সংযমের মাস। এই মাসে বিশ্বব্যাপী মুসলিমগণ সাওম পালন করে থাকেন। রমজান মাসে সাওম বা রোজা পালন ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে অন্যতম। সাহরি ও ইফতারের সময়সূচী (হিজরী ১৪৪৫, ইংরেজি ২০২৪) তুলে ধরা হলো। প্রদত্ত ২০২৪ সালের রমজান মাসের সাহরি ও ইফতারের সময়সূচি শুধুমাত্র ঢাকা জেলার জন্য প্রযোজ্য।

বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলার সাথে ঢাকা জেলার সময়ের কিছুটা পার্থক্য আছে। ঢাকার সময়ের সাথে কিছু সময় যোগ বা বিয়োগ করে অন্যান্য কতিপয় জেলার সেহরি ও ইফতারের সময়সূচী নিম্নে দেয়া হয়েছে। সেক্ষেত্রে, ঢাকার সময়ের সাথে কত মিনিট যোগ বা বিয়োগ করলে অন্য জেলার সেহরি ও ইফতারের সময় পাওয়া যাবে তা জানতে নিচে দেখুন।

রমজানমার্চ/এপ্রিলবারসাহরীর শেষ সময়ইফতারের সময়
রহমতের ১০ দিন
০১১২ মার্চমঙ্গল৪:৫১৬:১০
০২১৩ মার্চবুধ৪:৫০৬:১০
০৩১৪ মার্চবৃহস্পতি৪:৪৯৬:১১
০৪১৫ মার্চশুক্র৪:৪৮৬:১১
০৫১৬ মার্চশনি৪:৪৭৬:১২
০৬১৭ মার্চরবি৪:৪৬৬:১২
০৭১৮ মার্চসোম৪:৪৫৬:১২
০৮১৯ মার্চমঙ্গল৪:৪৪৬:১৩
০৯২০ মার্চবুধ৪:৪৩৬:১৩
১০২১ মার্চবৃহস্পতি৪:৪২৬:১৩
মাগফিরাতের ১০ দিন
১১২২ মার্চশুক্র৪:৪১৬:১৪
১২২৩ মার্চশনি৪:৪০৬:১৪
১৩২৪ মার্চরবি৪:৩৯৬:১৪
১৪২৫ মার্চসোম৪:৩৮৬:১৫
১৫২৬ মার্চমঙ্গল৪:৩৬৬:১৫
১৬২৭ মার্চবুধ৪:৩৫৬:১৬
১৭২৮ মার্চবৃহস্পতি৪:৩৪৬:১৬
১৮২৯ মার্চশুক্র৪:৩৩৬:১৭
১৯৩০ মার্চশনি৪:৩১৬:১৭
২০৩১ মার্চরবি৪:৩০৬:১৮
নাজাতের ১০ দিন
২১০১ এপ্রিলসোম৪:২৯৬:১৮
২২০২ এপ্রিলমঙ্গল৪:২৮৬:১৯
২৩০৩ এপ্রিলবুধ৪:২৭৬:১৯
২৪০৪ এপ্রিলবৃহস্পতি৪:২৬৬:১৯
২৫০৫ এপ্রিলশুক্র৪:২৪৬:২০
২৬০৬ এপ্রিলশনি৪:২৪৬:২০
২৭০৭ এপ্রিলরবি৪:২৩৬:২১
২৮০৮ এপ্রিলসোম৪:২২৬:২১
২৯০৯ এপ্রিলমঙ্গল৪:২১৬:২১
৩০১০ এপ্রিলবুধ৪:২০৬:২২

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের নামাজের সময়সূচি নির্ধারণ কমিটি কর্তৃক প্রদত্ত তথ্যানুযায়ী ১৪৪৫ হিজরী (২০২৪ খ্রি.) সাহরী ও ইফতার এর ক্ষেত্রে ঢাকার সময়ের সাথে অন্যান্য জেলার সময়ের পার্থক্যঃ

সাহরী ও ইফতারঃ– ঢাকার সময়ের সাথে একই হবে-
সাহরী: নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ ও ভোলা।
ইফতার: গাজীপুর, মাদারীপুর, ময়মনসিংহ, শরীয়তপুর, বরগুনা, ঝালকাঠি, বরিশালপটুয়াখালী

ব্যাংক, ব্যাংকার, ব্যাংকিং, অর্থনীতি ও ফাইন্যান্স বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ খবর, প্রতিবেদন, বিশেষ কলাম, বিনিয়োগ/ লোন, ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, ফিনটেক, ব্যাংকের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারগুলোর আপডেট পেতে আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ 'ব্যাংকিং নিউজ', ফেসবুক গ্রুপ 'ব্যাংকিং ইনফরমেশন', 'লিংকডইন', 'টেলিগ্রাম চ্যানেল', 'ইন্সটাগ্রাম', 'টুইটার', 'ইউটিউব', 'হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেল' এবং 'গুগল নিউজ'-এ যুক্ত হয়ে সাথে থাকুন।
2024 Roja

মাহে রমজান আগমন
আহলান সাহলান মাহে রমজান মোবারক। খোশ আমদেদ, অভিনন্দন পবিত্র রোজার মাস রমজানকে। এ মাসের আগমন আমাদেরকে সৌভাগ্যবান করেছে। এই মাস রহমত, বরকত ও নাজাতের দরজা খুলে দিয়েছে। ‘সওম’ শব্দটি আরবি, এর অর্থ বিরত থাকা; বহুবচন হলো ‘সিয়াম’। ফারসি, উর্দু, হিন্দি ও বাংলায় সওমকে ‘রোজা’ বলা হয়। মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন-
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُواْ كُتِبَ عَلَيْكُمُ الصِّيَامُ كَمَا كُتِبَ عَلَى الَّذِينَ مِن قَبْلِكُمْ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُونَ
অর্থ: ‘হে ঈমানদারগণ! তোমাদের উপর রোজা ফরয করা হয়েছে, যেরূপ ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তী লোকদের উপর, যেন তোমরা পরহেযগারী অর্জন করতে পার।’ (সুরা- বাকারা, আয়াত: ১৮৩)।

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন, মহানবী হজরত মুহাম্মদ (স.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি ইমানের সহিত সওয়াবের নিয়তে রমাদান মাসে সওম পালন করবে, তার অতীতের সব গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে।’ (বুখারি, প্রথম খণ্ড- হাদিস: ৩৭)।
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন: যখন রমাদান মাস আসে, তখন জান্নাতের দরজা খুলে দেওয়া হয়, জাহান্নামের দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়; শয়তানকে শৃঙ্খলিত করা হয়। (বুখারি, তৃতীয় খণ্ড- হাদিস: ১,৭৭৮)।

‘রমজান’ শব্দটি ‘রমজুন’ শব্দ মূল থেকে এসেছে। যার অর্থ দগ্ধ করা, জ্বালিয়ে ভস্মীভূত করা। রমজান মানুষের কুপ্রবৃত্তিকে জ্বালিয়ে ভস্মীভূত করে অন্তরকে কলুষতা মুক্ত করে। মহান আল্লাহ তায়ালা এই মাসে বেশি বেশি আমল করে আমাদের হৃদয় পরিবর্তনের তাওফিক দান করুন। আমিন।

রোজা রাখার নিয়তঃ
نَوَيْتُ اَنْ اُصُوْمَ غَدًا مِّنْ شَهْرِ رَمْضَانَ الْمُبَارَكِ فَرْضَا لَكَ يَا اللهُ فَتَقَبَّل مِنِّى اِنَّكَ اَنْتَ السَّمِيْعُ الْعَلِيْم
বাংলা উচ্চারণ: নাওয়াইতু আন আছুমা গাদাম মিং শাহরি রমাদ্বানাল মুবারকি ফারদ্বল্লাকা ইয়া আল্লাহু ফাতাক্বব্বাল মিন্নী ইন্নাকা আংতাস সামীউল আলীম।
অর্থ: হে আল্লাহ! আগামীকাল পবিত্র রমযান মাসে তোমার পক্ষ হতে ফরয করা রোজা রাখার নিয়ত করলাম, অতএব তুমি আমার পক্ষ হতে কবুল কর, নিশ্চয়ই তুমি সর্বশ্রোতা ও সর্বজ্ঞানী।

ইফতারের দোয়াঃ
ইফতারের আগ মুহূর্তে বেশি বেশি ইসতেগফার পড়া
اَسْتَغْفِرُ اللهَ الْعَظِيْم – اَلَّذِىْ لَا اِلَهَ اِلَّا هُوَ اَلْحَيُّ الْقَيُّوْمُ وَ اَتُوْبُ اِلَيْهِ لَا حَوْلَ وَ لَا قُوَّةَ اِلَّا بِاللَّهِ الْعَلِىِّ الْعَظِيْم
বাংলা উচ্চারণ: আসতাগফিরুল্লাহাল আজিম, আল্লাজি লা ইলাহা ইল্লাহু আল-হাইয়্যুল ক্বাইয়্যুম, ওয়া আতুবু ইলাইহি লা হাওলা ওয়ালা কুয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহিল আলিয়্যিল আজিম।
ইফতারের সময় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দোয়া পড়ে ইফতার করা
اَللَّهُمَّ لَكَ صُمْتُ وَ عَلَى رِزْقِكَ وَ اَفْطَرْتُ بِرَحْمَتِكَ يَا اَرْحَمَ الرَّاحِيْمِيْن
বাংলা উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা লাকা ছুমতু ওয়া আলা রিযক্বিকা ওয়া আফতারতু বিরাহমাতিকা ইয়া আরহামার রাহিমিন।
অর্থ: হে আল্লাহ! আমি তোমারই সন্তুষ্টির জন্য রোজা রেখেছি এবং তোমারই দেয়া রিযিক্বের মাধ্যমে ইফতার করছি।
ইফতারের পর আল্লাহর শোকরিয়া আদায় করে দোয়া পড়া
হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন ইফতার করতেন তখন বলতেন-
ذَهَبَ الظَّمَاءُ وَابْتَلَتِ الْعُرُوْقُ وَ ثَبَتَ الْأَجْرُ اِنْ شَاءَ اللهُ
বাংলা উচ্চারণ: ‘জাহাবাজ জামাউ; ওয়াবতালাতিল উ’রুকু; ওয়া ছাবাতাল আঝরূ ইনশাআল্লাহ।’
অর্থ: ‘ (ইফতারের মাধ্যমে) পিপাসা দূর হলো, শিরা-উপসিরা সিক্ত হলো এবং যদি আল্লাহ চান সাওয়াবও স্থির হলো ‘ (আবু দাউদ, মিশকাত)।

রোজা ভঙ্গের কারণঃ
০১. ইচ্ছাকৃত পানাহার করলে।
০২. স্ত্রী সহবাস করলে।
০৩. কুলি করার সময় হলকের নিচে পানি চলে গেলে (অবশ্য রোজার কথা স্মরণ না থাকলে রোজা ভাঙবে না)।
০৪. ইচ্ছকৃত মুখভরে বমি করলে।
০৫. নস্য গ্রহণ করা, নাকে বা কানে ওষুধ বা তেল প্রবেশ করালে।
০৬. জবরদস্তি করে কেউ রোজা ভাঙালে।
০৭. ইনজেকশান বা স্যালাইনের মাধ্যমে দেহে ওষুধ পৌঁছালে।
০৮. কংকর, পাথর বা ফলের বিচি গিলে ফেললে।
০৯. সূর্যাস্ত হয়েছে মনে করে ইফতার করার পর দেখা গেল সূর্যাস্ত হয়নি।
১০. পুরা রমজান মাস রোজার নিয়ত না করলে।
১১. দাঁত থেকে ছোলা পরিমান খাদ্যদ্রব্য গিলে ফেললে।
১২. ধূমপান করা, ইচ্ছাকৃত লোবান বা আগরবাতি জ্বালিয়ে ধোঁয়া গ্রহণ করলে।
১৩. মুখ ভর্তি বমি গিলে ফেললে।
১৪. রাত আছে মনে করে সুবহে সাদিকের পর পানাহার করলে।
১৫. মুখে পান রেখে ঘুমিয়ে পড়ে সুবহে সাদিকের পর জাগরিত হলে।

রোজার মাকরুহঃ
০১. অনাবশ্যক কোনো জিনিস চিবানো বা চাখা।
০২. কোনো দ্রব্য মুখে দিয়ে রাখা।
০৩. গড়গড়া করা বা নাকের ভেতর পানি টেনে নেয়া। কিন্তু পানি যদি নাক দিয়ে গলায় পৌঁছে যায়, তাহলে রোজা ভেঙে যাবে।

তারাবীহ নামাজের নিয়ত, দোয়া ও মোনাজাত
তারাবীহ শব্দটি বহুবচন। এর একবচন হলো তারবীহ। এর আভিধানিক অর্থ হলো বিশ্রাম, স্বস্তি, শান্তি ও প্রশান্তি। রমজান মাসে ঈশার নামাজের পর যে সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ ২০ রাকাত নামাজ আদায় করা হয়, তাকে তারাবীহ নামাজ বলে (Taraweeh prayer)।

তারাবীহ নামাজের ফজিলতঃ
রমজান মাসে তারাবীহ নামাজের ফজিলত ও মর্যাদা সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি ইমান ও আত্মবিশ্লেষণের সঙ্গে পুণ্য লাভের আশায় রোজা রাখেন, তারাবীহ নামাজ পড়েন এবং কদরের রাতে জাগ্রত থেকে আল্লাহর ইবাদত করেন, তাঁর জীবনের পূর্বের সব গুনাহ মাফ করা হবে।’ (বুখারি ও মুসলিম)

তারাবীহ নামাজ ৮ না ২০ রাকাতঃ
তারাবীহ নামাজ এক ধরনের নফল ইবাদত। এটির নির্দিষ্ট কোনো রাকাতের কথা বলা হয়নি, দুই রাকাত করে ৮ রাকাত, ১০ রাকাত, ১২ রাকাত, ১৬ রাকাত, ২০ রাকাত পড়া যায়। কত রাকাত হবে, রাসুলুল্লাহ (স.) তা নির্ধারণ করে যাননি।
পুরুষদের তারাবীহ নামাজ মসজিদে জামাতের সঙ্গে আদায় করা সুন্নত। তারাবীহ নামাজে কোরআন শরিফ খতম করা সুন্নত। নারীদের জন্যও ২০ রাকাত সুন্নত। তারাবীহ নামাজের সময় হলো ঈশার নামাজের পর থেকে ফজরের নামাজের আগ পর্যন্ত।

তারাবীহ নামাজের সহীহ নিয়মঃ
ঈশা’র চার রাকাত ফরজ নামাজ ও ২ রাকাত সুন্নত আদায় করার পর এবং বিতর নামাজের আগে ২০ রাকাত তারাবীহ নামাজ আদায় করতে হয়।

তারাবীহ নামাজের নিয়তঃ
نويت ان اصلى لله تعالى ركعتى صلوة التراويح سنة رسول الله تعالى متوجها الى جهة الكعبة الشريفة الله اكبر
বাংলা উচ্চারণ: (নাওয়াইতু আন উসাল্লিয়া লিল্লাহি তাআলা রাকয়াতাই সলাতিৎ তারাবীহী সুন্নাতু রাসূলিল্লাহি তাআলা মুতাওয়াজিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।) (* যদি জামাআ’তের সাথে নামাজ হয় তবে- ইক্বতাদাইতু বি হাজাল ইমাম বলতে হবে।)
অর্থ: আমি কিবলামুখী হয়ে দুই রাকাআ’ত তারাবিহ সুন্নাত নামাজ আল্লাহর জন্য আদায়ের নিয়ত করছি, আল্লাহু আকবার। (* যদি জামাআ’তের সাথে হয় তবে- এই ইমামের ইমামতিতে জামাআ’তের সাথে।)
– যাদের আরবী উচ্চারণ করতে সমস্যা হয় অথবা পড়তে পারেন না, তারা বাংলায় নিয়ত করতে পারবেন।

তারাবীহ নামাজের দোয়াঃ
سُبْحانَ ذِي الْمُلْكِ وَالْمَلَكُوتِ سُبْحانَ ذِي الْعِزَّةِ وَالْعَظْمَةِ وَالْهَيْبَةِ وَالْقُدْرَةِ وَالْكِبْرِيَاءِ وَالْجَبَرُوْتِ سُبْحَانَ الْمَلِكِ الْحَيِّ الَّذِيْ لَا يَنَامُ وَلَا يَمُوْتُ اَبَدًا اَبَدَ سُبُّوْحٌ قُدُّوْسٌ رَبُّنا وَرَبُّ المْلائِكَةِ وَالرُّوْحِ
বাংলা উচ্চারণ: (সুবহানা জিল মুলকি ওয়াল মালাকুতি সুবহানা জিল্ ইজ্জাতি ওয়াল আজমাতি ওয়াল হায়বাতি ওয়াল কুদরাতি ওয়াল কিবরিয়ায়ি ওয়াল জাবারুতি সুবহানাল মালিকিল হাইয়্যিল্লাজি লা ইয়ানামু ওয়ালা ইয়ামুতু আবাদান আবাদান সুব্বুহুন কুদ্দুসুন রাব্বানা ওয়া রাব্বুল মালা-ইকাতি ওয়াররুহ।)
(প্রত্যেক চার রাকয়াত নামাজের পর এই মোনাজাত করতে হবে।)

তারাবীহ নামাজের মোনাজাতঃ
অনেকেই ৪ রাকাআত পর পর মুনাজাত করে থাকে। আবার অনেকে পুরো নামাজ শেষ করে মুনাজাত করে থাকে। তবে নামাজ শেষ করে বিতর পড়ে মুনাজাত দেয়াই উত্তম। মুনাজাতের ক্ষেত্রেও একটি দোয়া ব্যাপকভাবে ব্যবহার হয়ে আসছে। এ মুনাজাতটিকেও অনেকে আবশ্যক মনে করে। কেউ কেউ এমনও মনে করে যে, এ দোয়াটি ছাড়া তারাবীহ নামাজের মুনাজাত হবে না। এটি মোটেও ঠিক নয়। তবে এ দোয়ায় মুনাজাত দিলে গোনাহ হবে তা নয়। মুনাজাতটি হলো-
اَللَهُمَّ اِنَّا نَسْئَالُكَ الْجَنَّةَ وَ نَعُوْذُبِكَ مِنَ النَّارِ يَا خَالِقَ الْجَنَّةَ وَالنَّارِ- بِرَحْمَتِكَ يَاعَزِيْزُ يَا غَفَّارُ يَا كَرِيْمُ يَا سَتَّارُ يَا رَحِيْمُ يَاجَبَّارُ يَاخَالِقُ يَابَارُّ – اَللَّهُمَّ اَجِرْنَا مِنَ النَّارِ يَا مُجِيْرُ يَا مُجِيْرُ يَا مُجِيْرُ- بِرَحْمَتِكَ يَا اَرْحَمَ الرَّحِمِيْنَ
বাংলা উচ্চারণ: (আল্লাহুম্মা ইন্না নাস আলুকাল্ জান্নাতা ওয়া নাউজুবিকা মিনান্নারি ইয়া খালিকাল জান্নাতা ওয়ান্নারি বিরাহমাতিকা ইয়া আজীজু, ইয়া গাফ্ফারু, ইয়া কারীমু, ইয়া সাত্তারু, ইয়া রাহিমু ,ইয়া জাব্বারু ইয়া খালেকু, ইয়া রাররূ, আল্লাহুমা আজির না মিনান্নারি, ইয়া মূজিরু ইয়া মুজিরু, বিরাহ্মাতিকা ইয়া আরহামার রাহিমীন।)

উল্লেখ্য, রমজান জুড়ে বিশ্বনবীর এ দোয়াগুলো বেশি বেশি করা জরুরি। আর তা হলো-
– اَﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺇﻧَّﻚَ ﻋَﻔُﻮٌّ ﺗُﺤِﺐُّ اﻟْﻌَﻔْﻮَ ﻓَﺎﻋْﻒُ ﻋَﻨِّﻲ
বাংলা উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুওউন, তুহিব্বুল আফওয়া, ফা’ফু আ’ন্নি।
তাছাড়া তারাবীহ নামাজের পর সাইয়্যিদুল ইসতেগফারও পড়া যেতে পারে-
– اللَّهُمَّ أَنْتَ رَبِّي لَا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ خَلَقْتَنِي وَأَنَا عَبْدُكَ وَأَنَا عَلَى عَهْدِكَ وَوَعْدِكَ مَا اسْتَطَعْتُ أَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ مَا صَنَعْتُ أَبُوءُ لَكَ بِنِعْمَتِكَ عَلَيَّ وَأَبُوءُ بِذَنْبِي فَاغْفِرْ لِي فَإِنَّهُ لَا يَغْفِرُ الذُّنُوبَ إِلَّا أَنْتَ
বাংলা উচ্চারণ: ‘আল্লাহুম্মা আনতা রাব্বি লা ইলাহা ইল্লা আনতা খালাক্বতানি; ওয়া আনা আ’বদুকা ওয়া আনা আ’লা আ’হদিকা ওয়া ওয়া’দিকা মাসতাত্বা’তু, আউজুবিকা মিন শাররি মা সানা’তু আবুউলাকা বিনি’মাতিকা আলাইয়া; ওয়া আবুউ বিজামবি ফাগফিরলি ফা ইন্নাহু লা ইয়াগফিরুজ জুনুবা ইল্লা আনতা।’

তারাবীহ নামাজ বিষয়ক প্রশ্ন-উত্তর
প্রশ্ন: তারাবীহ নামাজ কত রাকাত?
উত্তর: তারাবীহ সালাত দুই রাকআত দুই রাকআত করে যেকোনো সংখ্যক রাকআত পড়া হয়। তারাবীহ নামাজের রাকআত নির্দিষ্ট করা হয়নি। হানাফি, শাফিয়ি ও হাম্বলি ফিকহের অনুসারীগণ ২০ রাকআত, মালিকি ফিকহের অনুসারীগণ ৩৬ রাকআত এবং আহলে হাদীসরা ৮ রাকআত তারাবীহ পড়েন।
প্রশ্ন: তারাবীহ নামাজ কি সুন্নত না নফল?
উত্তর: তারাবীহ নামায নারী-পুরুষ সকলের জন্য সুন্নতে মুয়াক্কাদা।
প্রশ্ন: খতম তারাবীহ এবং সূরা তারাবীহ কি?
উত্তর: বাংলাদেশে তারাবীহর নামাজের দুটি পদ্ধতি প্রচলিত। একটি খতম তারাবীহ আর অন্যটি সূরা তারাবীহ। খতম তারাবীহর ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ কুরআন পাঠ করা হয়। খতম তারাবীহর জন্য কুরআনের হাফিযগণ ইমামতি করেন। সূরা তারাবীহর জন্য যেকোন সূরা বা আয়াত পাঠের মাধ্যমে সূরা তারাবীহ আদায় করা হয়।

রমজানের শিক্ষাঃ
১. নিজেকে আল্লাহর একজন একনিষ্ঠ বান্দা হিসেবে গণ্য করার চেষ্টা করা।
২. আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন ছাড়া জীবনের দ্বিতীয় কোনো লক্ষ্য থাকবে না।
৩. যে কোনো পরিস্থিতিতে যে কোনো সময় আল্লাহর হুকুম মেনে চলার জন্য প্রস্তুত থাকা।
৪. আল্লাহ সর্বত্র বিরাজমান। তিনি সবকিছু শুনেন, দেখেন ও জানেন এই অনুভূতি সর্বদাই অন্তরে জাগ্রত রাখা।
৫. আল্লাহ ছাড়া দুনিয়ার সবকিছুর কৃতিত্ব অস্বীকার করা এবং নিজের ও আশেপাশের সবকিছুর ওপর আল্লাহর হুকুমের কৃতিত্ব প্রতিষ্ঠা করা।
৬. বান্দা ও আল্লাহর মধ্যে একটি একনিষ্ঠ সম্পর্কের সূত্রপাত হয়।

সত্যিকারের রোজার সুফল পেতে হলে সব কথায় কাজে সর্ব অবস্থায় আল্লাহর আদেশ নিষেধ পালন করতে হবে। আল্লাহর নিষিদ্ধ কাজ দুনিয়াতে যত লাভের হোক তা বর্জন করতে হবে আবার আল্লাহর আদেশ পালন দুনিয়ার জন্য যত ক্ষতির কারণ হোক না কেন তা পালন করতে হবে।

সাহাবি হজরত সালমান ফারসি (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, শাবান মাসের শেষ দিন রাসূল (সা.) আমাদের উদ্দেশ্যে ভাষণদান কালে বলেন, ‘হে লোক সকল তোমাদের নিকট সমুপস্থিত একটি মর্যাদাপূর্ণ এবং বরকতপূর্ণ মাস। এতে রয়েছে এমন একটি রাত যা হাজার মাসের চেয়ে উত্তম। এ মাসে আল্লাহ সাওম ফরজ করেছেন এবং রাতে দীর্ঘ সালাত নফল করেছেন। যে ব্যক্তি এ মাসে ১টি ফরজ আদায় করলো সে যেন অন্য মাসে সত্তরটি ফরজ আদায় করলো। যে ব্যক্তি এ মাসে ১টি নফল কাজ করলো সে যেন অন্য কোন মাসের ফরজ কাজ করলো। এ মাস ধৈর্যের মাস। ধৈর্যের বিনিময় হচ্ছে জান্নাত। এ মাস সহানুভূতি প্রদর্শনের মাস। -মিশকাত শরিফ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

রিলেটেড লেখা

Back to top button