বিবিধ

প্রাইজবন্ড সম্পর্কিত সকল প্রশ্নের জবাব

মোঃ ফরিদুল ইসলামঃ প্রাইজবন্ড ড্র নিয়ে একটা পোস্ট দেবার পর অসংখ্য প্রশ্ন জমা হয়েছে ইনবক্সে ও কমেন্ট সেকশনে। তাই সকলের সুবিধার জন্য এই পোস্ট। আশা করি সকল প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন।

প্রাইজবন্ড কি?
প্রাইজবন্ড অনেকটা লটারির মত। কিন্তু এটা লটারি না। লটারি যেমন একবার ড্র হয়ে গেলে সেটার আর মেয়াদ থাকেনা এবং লটারিটির মূল্যও থাকেনা। অর্থাৎ লটারিতে না জিতলে পুরো টাকাটা আপনার লস। এদিকে প্রাইজবন্ড এর ড্র হয়ে যাওয়ার পরও এর মেয়াদ শেষ হয়না। পরবর্তী ড্র এর সময়ও এর মেয়াদ থাকে। অর্থাৎ প্রাইজবন্ড এর মেয়াদ শেষ হয়না। আর সবচেয়ে মজার বিষয় হল প্রাইজবন্ড এর কয়েকবার ড্র হওয়ার পরও, আপনি চাইলে সেগুলো ভাঙ্গিয়ে আবার টাকা নিয়ে আসতে পারবেন। অর্থাৎ আপনার ভাগ্য ভাল হলে প্রাইজ পেতে পারেন। আর না পেলেও আপনার লস হবে না।

আরও দেখুন:
 নতুন নিয়মে সঞ্চয়পত্র ক্রয় করতে যা করতে হবে

প্রাইজবন্ডের দাম কত?
একটি প্রাইজবন্ডের দাম ১০০ টাকা। বর্তমানে ১০০ টাকা মূল্যমানের প্রাইজবন্ড চালু আছে।

ব্যাংক, ব্যাংকার, ব্যাংকিং, অর্থনীতি ও ফাইন্যান্স বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ খবর, প্রতিবেদন, বিশেষ কলাম, বিনিয়োগ/ লোন, ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, ফিনটেক, ব্যাংকের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারগুলোর আপডেট পেতে আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ 'ব্যাংকিং নিউজ', ফেসবুক গ্রুপ 'ব্যাংকিং ইনফরমেশন', 'লিংকডইন', 'টেলিগ্রাম চ্যানেল', 'ইন্সটাগ্রাম', 'টুইটার', 'ইউটিউব', 'হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেল' এবং 'গুগল নিউজ'-এ যুক্ত হয়ে সাথে থাকুন।

কোথায় কিনতে পাওয়া যায়?
বাংলাদেশ ব্যাংকের সব শাখা অফিস(ময়মনসিংহ অফিসবাদে), সব বাণিজ্যিক ব্যাংক (শরিয়াহভিত্তিকগুলো বাদে), জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের অধীন সারাদেশে ৭১টি সঞ্চয় ব্যুরো অফিস এবং পোস্ট অফিস থেকে প্রাইজবন্ড কেনা ও ভাঙানো যায়।

প্রাইজবন্ড কিনতে কি ডকুমেন্ট লাগে?
প্রাইজবন্ড কিনতে জাতীয় পরিচয়পত্র বা অন্য কোন কাগজপত্র লাগে না। শুধুমাত্র টাকার বিনিময়ে সরাসরি প্রাইজবন্ড কেনা যায়। যেহেতু প্রাইজবন্ড কিনতে কোন ধরনের কাগজ পত্র লাগে না, কোন আইডি কার্ড লাগে না, সরকারের কোন ধরনের ট্রাকিং থাকে না কার কাছে কতগুলো প্রাইজবন্ড বিক্রয় করেছে। একজন গ্রাহক চাইলে যেকোনো পরিমাণের ১০০ টাকা মূল্যমানের প্রাইজবন্ড নগদ টাকায় কিনতে পারবেন।

ড্র কবে অনুষ্ঠিত হয়?
বছরে চারবার বা তিন মাস পরপর প্রাইজবন্ডের ড্র (draw) অনুষ্ঠিত হয়, তারিখগুলো হল:
• ৩১ জানুয়ারি
• ৩০ এপ্রিল
• ৩১ জুলাই
• ৩১ অক্টোবর
তবে উক্ত তারিখগুলোর কোনটিতে কোন সাপ্তাহিক ছুটি (বর্তমানে শুক্র ও শনিবার) বা সরকারি ছুটি (সাধারণ/নির্বাহী আদেশে/ঐচ্ছিক), অথবা অন্য কোন কারণে প্রাইজবন্ডের ভাগ্যপরীক্ষা অনুষ্ঠিত হতে না পারলে পরবর্তী কার্যদিবসে তা সম্পন্ন করা হয়। (করোনাকালীন সময়ে সঠিক সময়ে হয়নি)

প্রাইজবন্ড কেনার লিমিট কত?
সাধানরত একজন ব্যক্তি ৪৫ লাখ টাকার সমপরিমান প্রাইজবন্ড কিনতে পারেন।

প্রাইজ বন্ড কে কে কিনতে পারে?
শিশুসহ যেকোন বাংলাদেশী এই বন্ড কিনতে পারবেন।

কিভাবে পুরস্কারের টাকা পাবো?
ড্র হবার পর দুই বছর পর্যন্ত প্রাইজবন্ডের পুরস্কারের অর্থ দাবি করতে হয়, অন্যথায় এ অর্থ তামাদি হয়ে সরকারি কোষাগারে ফেরত যায়। জেতার পর মূল প্রাইজবন্ডসহ সরকারের নির্ধারিত ফরমে আবেদন করলে সর্বোচ্চ দুই মাসের মধ্যে বিজয়ীকে পে-অর্ডারের মাধ্যমে অর্থ দেওয়া হয়।

প্রাইজবন্ডের পুরস্কারের টাকাতে কর দিতে হবে কিনা?
প্রাইজবন্ডের পুরস্কারের অর্থ করমুক্ত নয় পুরস্কারের অর্থের ওপর সরকারকে ২০ শতাংশ হারে কর প্রদান করতে হয়।

জীবনে পুরস্কার পেলাম না, এটা ভুয়া কিনা? কাউকে পুরস্কার পেতে দেখলাম না জীবনে!
বর্তমানে বাজারে ৫ কোটি ৬৬ লাখ ৬৯ হাজার ৮৯৪টি প্রাইজবন্ড রয়েছে। ফলে গ্রাহকেরা ৫৬৬ কোটি টাকার এ বন্ড কিনেছেন। তাই আপনার কাছে দু চারটি প্রাইজবন্ড আসলে কিছুই না। অল্প কিছু কিনলে সারাজীবনে নাও পুরস্কার বাঁধতে পারে। তাই সঠিক তথ্য না জেনে এটা ভুয়া বলা ঠিক নয়। প্রাইজবন্ডের ড্র করে থাকে ঢাকার বিভাগীয় কমিশনারকে চেয়ারম্যান করে গঠিত কমিটি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন অতিরিক্ত পরিচালক ও প্রাইজ বন্ড শাখার কর্মকর্তা ও গনমাধ্যমের উপস্থিতে সম্পূর্ণ স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষভাবে। যেহেতু কেনার সময় ক্রেতার কোন ডকুমেন্ট রাখা হয়না তাই কারা পাই সেটা মিডিয়াতে প্রকাশ পায়না। ধন্যবাদ সবাইকে।

লেখকঃ মোঃ ফরিদুল ইসলাম: সহকারী পরিচালক, সঞ্চয়পত্র শাখা,বাংলাদেশ ব্যাংক, মতিঝিল, ঢাকা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

রিলেটেড লেখা

Back to top button