ব্যাংকার

রাষ্ট্রের সুষম উন্নয়নে ব্যাংকারদের ভূমিকা

দীপক আঢ্যঃ শিক্ষার সার্বজনীন উদ্দেশ্য হচেছ শান্তি আনোয়ন। কিন্তু আজ গতিশীলতার যুগে আমরা যে শিক্ষা গ্রহন করছি তাতে প্রকৃত শান্তির পথ খুজে পাওয়া দুরহ। মূলত বিধাতার ভাল গুণ ও শয়তানের খারাপ গুণ বিশ্লেষন করাই হচেছ শিক্ষার প্রকৃত উদ্দেশ্য। আর সকল অন্ধকারের শেষে কিছু আলোক ধারা থাকে, যে সেটাকে ধরতে পারে সেই ভাগ্যবান।

মূলত শিক্ষা, শান্তি এবং উন্নয়ন একটা আরেকটার সাথে ওতোপ্রতোভাবে জড়িত। আর জনগনের সুশিক্ষার উপর উন্নয়নের গতি প্রকৃতি নির্ভর করে। বস্তুত পক্ষে যে শিক্ষা আমাদের ভিতরের আত্নসত্তাকে জাগ্রত করে না যে শিক্ষা আত্নার উন্নয়ন ঘটায় না সে শিক্ষা কখনও শান্তি ও উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে পারে না।

আরও দেখুন:
ব্যাংকারদের লেন‌দেন সময় ও টা‌র্গেট ক‌মা‌নো উচিত

সুতরাং রাষ্ট্রের টেকশই উন্নয়ন ঘটাতে হলে প্রকৃত শিক্ষা তথা গঠনমূলক শিক্ষার বিকাশ ঘটাতে হবে। যতদিন না গঠনমূলক শিক্ষার বিকাশ না ঘটছে ততদিন সে শিক্ষা কখনও রাষ্ট্রের সুষম উন্নয়ন করতে পারে না।

ব্যাংক, ব্যাংকার, ব্যাংকিং, অর্থনীতি ও ফাইন্যান্স বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ খবর, প্রতিবেদন, বিশেষ কলাম, বিনিয়োগ/ লোন, ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, ফিনটেক, ব্যাংকের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারগুলোর আপডেট পেতে আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ 'ব্যাংকিং নিউজ', ফেসবুক গ্রুপ 'ব্যাংকিং ইনফরমেশন', 'লিংকডইন', 'টেলিগ্রাম চ্যানেল', 'ইন্সটাগ্রাম', 'টুইটার', 'ইউটিউব', 'হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেল' এবং 'গুগল নিউজ'-এ যুক্ত হয়ে সাথে থাকুন।

শিক্ষা, শান্তি ও উন্নয়ন সম্পর্কে কতিপয় ব্যক্তির কিছু বানী তুলে ধরা হলো:
1. “The aspect of education is enriched with reason that aim at having peace which is the precondition of any kind of development both in concrete and abstract sphere of life.”—(Ref: Abul Kalam Azad- India wins Freedom)
2. The slogan of education peace and development is very pragmatic as the paradigm form the way to change suitable to human civilization.—(Ref: St. Thomas Aquinas-The ity of God)
3. Education is the most constituent information that grows the way to peace. (Ref: B. Russell- Education and Social Order)

সুতরাং শিক্ষা, শান্তি ও উন্নয়ন এই তিন paradigms বিশ্বকে আদিম যুগের অসভ্য যুগ থেকে সভ্যতার বিকাশে সহায়তা করেছে। শিক্ষার উদ্দেশ্য হলো পরিনামদর্শিতা, বিচক্ষনতা এবং কোন কিছুর কারনকে উৎঘাটন করা। অর্থাৎ শান্তি প্রতিষ্ঠায় শিক্ষার প্রকৃত উদ্দেশ্য। অন্যভাবে বলতে গেলে বলতে হয়- উন্নয়ন যদি শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে না পারে তবে সে উন্নয়ন বেশিদিন স্থায়ী হয় না। এক্ষেত্রে কার্লমার্ক্স এর revolution ছিল ব্যতিক্রম।

এক্ষেত্রে বলা যায়- “There must have a constitutional change in the state in which dominants of peace must be given preference to get a melioration indeed peace is mandatory to have development in the state in the world.” – Karl Marx

শিক্ষা, শান্তি ও উন্নয়নের স্বাভাবিক সূত্র:
শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য যদি শান্তি বলি তবে সে শিক্ষার মাঝে অবশ্যই আনন্দের গন্ধ থাকতে হবে। তবেই সে শিক্ষা প্রকৃত শান্তি দিতে পারবে। ভারতের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি এ.পি.জে আবুল কালাম বলেন-
যেখানে হদয়ে ন্যায়পরায়নতা থাকে
সেখানে চরিত্রে মাধুর্য থাকে
যখন চরিত্রে মাধুর্য় থাকে
তখন গৃহে সম্প্রীতি থাকে
আর দেশে থাকে শৃঙ্খলা
যখন দেশে শৃখলা থাকে
তখন বিশ্বে শান্তি বিরাজ করে।

উপরিউক্ত কথাগুলো হচেছ রাষ্ট্র উন্নয়নের তাত্বিক দিক। মোটাদাগে বলতে গেলে রাষ্ট্রের সুষম উন্নয়নে সকল মানুষের সমান ভূমিকা রয়েছে। এখানে একজন আমলার যে ভূমিকা রয়েছে তেমনি একজন কৃষকের সমান ভূমিকা রয়েছে। সেই সাথে ডাক্তার, উকিল, শিক্ষক, ছাত্র, ব্যাংকার, বুদ্বিজীবি, ব্যবসায়ী, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে রাষ্ট্রের সুষম উন্নয়ন নির্ভর করে। সেজন্য গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে শুধুমাত্র সরকারের একার পক্ষে রাষ্ট্রের উন্নয়ন সম্ভব নয়। বিশেষ করে পুঁজিবাদী ব্যবস্থায় অর্থনীতির চাকা মূলত মোড়ল বণিক শ্রেণীর হাতে থাকে।

সেজন্য পুঁজিবাদী বিশ্বব্যবস্থায় ব্যবসায়ী তথা বণিক শ্রেণী রাষ্ট্র পরিচালনায় উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছে। আর ব্যবসার জণ্য ব্যাংক হচ্ছে প্রধান হাতিয়ার। সেজন্য রাষ্ট্রের সুষম উন্নয়নে ব্যাংকারদের ভুমিকা অগ্রগণ্য। রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে ব্যাংকার হচ্ছে প্রধান চালিকাশক্তি। বিশেষ করে আজ করোনা মহামারীর সময় ব্যাংকার সম্মুখ যোদ্ধা হিসাবে রাষ্ট্রের অর্থনীতির চাকা সচল রেখেছে। সুতরাং রাষ্ট্রের সুষম উন্নয়নে ব্যাংকাররা যে ভূমিকা রেখে চলেছে সেটাকে সঠিকভাবে মূল্যায়ন করতে হবে।

ব্যাংকারদের বাংলাদেশে সামাজিকভাবে মূল্যায়ন করা হয় না। অথচ ঘুম থেকে উঠলেই আমাদের বিভিন্ন প্রয়োজনে ব্যাংকের দারস্থ হতে হয়। ব্যাংকাররা যে পরিশ্রম করে একজন আমলার থেকে কোন অংশে কম নয়। অথচ আমাদের কামলার সাথে তুলনা করা হয়। একজন আমলা যে পরিমান মেধা ব্যয় করে বরং অনেক ক্ষেত্রে ব্যাংকাররা তার থেকে বেশি মেধা ব্যয় করে। সুতরাং রাস্ট্রের সুষম উন্নয়নে ব্যাংকারদের যে সমান গুরুত্ব রয়েছে এটা সকলকে অনুধাবন করতে হবে। আর আধুনিক রাষ্ট্রব্যবস্থা তথা ডিজিটাল রাষ্ট্রব্যবস্থা ব্যাংক ছাড়া অচল। একজন ব্যাংকার রাষ্ট্রের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে প্রধান সেনাপতির ভুমিকা পালন করে।

সুতরাং রাষ্ট্রের সুষম উন্নয়নে ব্যাংকাররা পুজিবাজারকে গতিশীল রাখতে যে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে তাদের অবদানকে খাটো করে দেখার কোন অবকাশ নেই। শিক্ষক যেমন মানুষ গড়ার কারিগর, তেমনি ব্যাংকার হচ্ছে অর্থনীতির গতি সচল রাখার কারিগর। সেজন্য ব্যাংকারদের সামাজিক মূল্যায়ন একান্ত আবশ্যক।

এপিজে আব্দুল কালামের কিছু বক্তব্য দিয়ে শেষ করবো-
হে আমার সহ-নাগরিক বন্ধু
তুমি দিয়ে দেহমনে অশেষ আনন্দ পাও
যদি তোমার জ্ঞান থাকে কন্টন করো
যদি তোমার সংস্থান থাকে, নি:স্বকে দান করো
হৃদয় আর মস্তিষ্ক ব্যবহার করে
পীড়িতের যন্ত্রণা দূর করো
ব্যথিত হৃদয়কে উৎফুল্ল করো
দেবার বদলে পাবে আনন্দ অপার
সৃষ্টিকর্তি তোমার সমস্ত কর্মোদ্যেগ আশীবাদ করবেন।

লেখকঃ দীপক আঢ্য- ব্যাংকার, জনতা ব্যাংক লিমিটেড।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

রিলেটেড লেখা

Back to top button