ব্যাংক হিসাব

সঞ্চয়ী হিসাব খোলার নিয়ম

সঞ্চয়ী (Savings) হিসাবে আপনি আপনার আয়ের একটি অংশ জমা রাখতে পারেন। আপনার একাউন্টে যেকোনো পরিমান অর্থ জমা করতে পারবেন এবং জমাকৃত টাকা চাইলেই উত্তোলন করতে পারবেন। যে কেউ এই হিসাব খুলতে পারে। সাধারণত বার্ষিক ৪% থেকে ৬% সুদ প্রদান করা হয়। লাভজনক অলাভজনক প্রতিষ্ঠান যেমন স্কুল/কলেজ ইত্যাদি সঞ্চয়ী হিসাব খুলতে পারবে। কোন বিশেষ পেশাজীবি যেমন আইনজীবি/ডাক্তার তার নিজের নামে সঞ্চয়ী হিসাব খুলতে পারবেন। চাকুরীজীবি/গৃহিনী/কৃষক/ছাত্র কেবল সঞ্চয়ী হিসাব খুলতে পারবেন।

এই একাউন্ট হতে টাকা উত্তোলনের নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম-নীতি রয়েছে। গ্রাহক যে কোনো সময়ে যে কোনো পরিমাণ টাকা উত্তোলন করতে পারে না। বরং তার জন্য কিছু নিয়ম রয়েছে। যেমন একদিনে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণের বেশি টাকা উত্তোলন করা যায় না, মোটা অংকের টাকা উত্তোলন করতে হলে ব্যাংককে আগাম নোটিশ প্রদান করতে হয়, একসাথে সব টাকা উত্তোলন করা যায় না ইত্যাদি।

যেকোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নামে সেভিংস/সঞ্চয়ী হিসাব খুলে ব্যাংকগুলো বিভিন্ন ধরনের সেবা দিয়ে থাকে। আসুন জেনে নেই বিভিন্ন ব্যাংকে সেভিংস/সঞ্চয়ী হিসাব খুললে কি সুবিধা পাওয়া যায় এবং কি কি কাগজপত্র লাগে?

সঞ্চয়ী হিসাবের বৈশিষ্ট্য
১. আকর্ষনীয় সুদ/মুনাফা পাওয়া যায়।
২. এই হিসাবের বিপরীতে চেকবই ইস্যু করা হয়।
৩. এটিএম বুথ থেকে টাকা উত্তোলনের জন্য ডেবিট কার্ড ইস্যু করা হয়।
৪. ইন্টারনেট ব্যাংকিং, এসএমএস ব্যাংকিং ইত্যাদি সুবিধা পাওয়া যায়।
৫. সঞ্চয়ী হিসাব হতে ব্যাংকগুলো সার্ভিজ চার্জ কেটে রাখে যার পরিমাণ ব্যাংকভেদে ভিন্ন ধরণের হয়ে থাকে। এছাড়াও অন্যান্য সুবিধা প্রদানের বিপরীতে (যেমন ইন্টারনেট ব্যাংকিং, এসএমএস ব্যাংকিং ইত্যাদি) ব্যাংক সার্ভিস চার্জ আরোপ করে থাকে (একাউন্ট খোলার পূর্বে ব্যাংক কর্মকর্তাদের সাথে সার্ভিস চার্জের বিষয়ে আলোচনা করে জেনে নিতে পারেন)।
৬. যেকোন শাখা থেকে টাকা জমা দেওয়া যায় কিংবা টাকা উত্তোলন করা যায়।
৭. ষান্মাসিক মুনাফা/সুদ পাওয়া যায়।
৮. বছরে দুই বার একাউন্ট স্টেটমেন্ট এবং ব্যালেন্স কনফার্মেশন সার্টিফিকেট পাওয়া যায়।
৯. নিজ নামে কিংবা যৌথ নামে এই একাউন্ট খোলা যায়। তিনজন কিংবা তার চেয়ে বেশী লোক যৌথ নামে একাউন্ট খোলা যায়।

ব্যাংক, ব্যাংকার, ব্যাংকিং, অর্থনীতি ও ফাইন্যান্স বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ খবর, প্রতিবেদন, বিশেষ কলাম, বিনিয়োগ/ লোন, ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, ফিনটেক, ব্যাংকের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারগুলোর আপডেট পেতে আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ 'ব্যাংকিং নিউজ', ফেসবুক গ্রুপ 'ব্যাংকিং ইনফরমেশন', 'লিংকডইন', 'টেলিগ্রাম চ্যানেল', 'ইন্সটাগ্রাম', 'টুইটার', 'ইউটিউব', 'হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেল' এবং 'গুগল নিউজ'-এ যুক্ত হয়ে সাথে থাকুন।

কারা এই হিসাব খুলতে পারে
যেকোন ব্যক্তি/ব্যক্তিবর্গ সেভিংস/সঞ্চয়ী হিসাব খুলতে পারবেন। এই ধরনের হিসাবে ইচ্ছামত অর্থাৎ যতবার ইচ্ছা লেনদেন করা যায়না। সিমিত আকারে লেনদেন করা যায়। সেভিংস/সঞ্চয়ী হিসাবে সুদ/মুনাফা দেয়া হয়।

সেভিংস/সঞ্চয়ী হিসাবের সুবিধা
• এই হিসাবের বিপরীতে চেক ইস্যু করা হয়।
• এই হিসাবে ডেবিট কার্ড ইস্যু করা হয়।
• ইন্টারনেট ব্যাংকিং সুবিধা পাওয়া যায়।
• এসএমএস ব্যাংকিং সুবিধা পাওয়া যায়।
• অনলাইন সুবিধা পাওয়া যাবে।
• RTGS ও BEFTN সুবিধা পাওয়া যাবে।
• অন্য শাখায় ফান্ড স্থানান্তর করা যায়।

হিসাব খোলার নিয়মাবলী
নিম্নে সেভিংস/সঞ্চয়ী হিসাব খোলার নিয়মাবলী তুলে ধরা হলো-
১. হিসাব খোলার আবেদন পত্র যা আবেদনকারী/আবেদনকারীগণকে পূরণ ও স্বাক্ষর করতে হবে (যা ব্যাংক সরবরাহ করবে)।
২. টিপি (TP) ও কেওয়াইসি (KYC) ফরম পূরণ করতে হবে (যা ব্যাংক সরবরাহ করবে)।
৩. পরিচয় প্রদানকারী কর্তৃক সত্যায়িত আবেদনকারী/আবেদনকারীগণের সম্প্রতি তোলা ২ (দুই) কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি।
৪. জাতীয় পরিচয় পত্র/ বৈধ পাসপোর্ট/ড্রাইভিং লাইসেন্স/নাগরিকত্ব সনদ অথবা অন্যান্য ছবি সম্বলিত পরিচয় পত্রের অনুলিপি।
৫. ব্যাংকের যে কোন চলতি/সঞ্চয়ী হিসাবধারী কর্তৃক পরিচিতি প্রদান [পরিচয়দানকারীর হিসাবটি নিয়মিত হবে এবং কমপক্ষে ৬ মাস ধরে হিসাব পরিচালনা করতে হবে]।
৬. নমিনী বা নমিনীগণের বিস্তারিত বিবরণ ও আবেদনকারী কর্তৃক সত্যায়িত প্রত্যেকের ১ (এক) কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি।
৭. হিসাব ঠিকানার স্বপক্ষে সাম্প্রতিক ইউটিলিটি বিল (গ্যাস, বিদ্যুৎ, ওয়াসা, টেলিফোন) এর অনুলিপি (যদি থাকে)।
৮. নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা জমা দিতে হবে।
৯. হালনাগাদ টিআইএন (TIN) সার্টিফিকেটের অনুলিপি (যদি থাকে)।

প্রতিষ্ঠান ট্রাস্ট হলে (For Trusty Firm)
১. ট্রাস্ট দলিল।
২. আবেদন পত্রে সকল ট্রাস্টির স্বাক্ষর থাকতে হবে।

প্রতিষ্ঠান স্কুল/কলেজ/মাদ্রাসা/বিশ্ববিদ্যালয় হলে (For School/College/Madrasah/University)
১. ম্যানেজিং কমিটির রেজুলেশন।

প্রতিষ্ঠান ক্লাব ও সোসাইটি হলে (For Club & Society)
১. কনস্টিটিউশন/বাই-লজ (Constitution/bye-laws)।
২. অফিস বেয়ারারদের তালিকা (ঠিকানাসহ)।
৩. অনুমোদিত ব্যক্তি/ব্যক্তিগণ কর্তৃক হিসাবটি খোলা ও পরিচালিত হবে এই মর্মে যথাযথ কর্তৃপক্ষের গৃহীত সিদ্ধান্তের অনুলিপি।

স্থানীয় কর্তৃপক্ষ, সিটি কর্পোরেশন, জেলা পরিষদ, পৌরসভা ইত্যাদি (Local authority, City Corporation, Zila Parishad Pourashava etc)
১. যে আইন বা বিধানের মাধ্যমে আবেদনকারী প্রতিষ্ঠান সংগঠিত হয়েছে তার অনুলিপি।

বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ
আপনি যদি আয়কর প্রদানকারী হয়ে থাকেন এবং আপনার যদি E-TIN নাম্বার থেকে থাকে এবং ব্যাংক হিসাব খোলার সময় যদি TIN সার্টিফিকেট এর ফটোকপি জমা দেন তাহলে ব্যাংক আপনাকে যে সুদ/মুনাফা প্রদান করবে তার উপর (আপনার জমাকৃত টাকার উপর নয়) ১০% হারে আয়কর কেটে নিবে অন্যথায় ব্যাংক আপনার প্রাপ্য সুদ/মুনাফার উপর ১৫% হারে আয়কর কেটে নিবে।

২ মন্তব্য

    1. প্রতিষ্ঠান ক্লাব ও সোসাইটি
      ১. কনস্টিটিউশন/বাই-লজ (Constitution/bye-laws)।
      ২. অফিস বেয়ারারদের তালিকা (ঠিকানাসহ)।
      ৩. অনুমোদিত ব্যক্তি/ব্যক্তিগণ কর্তৃক হিসাবটি খোলা ও পরিচালিত হবে এই মর্মে যথাযথ কর্তৃপক্ষের গৃহীত সিদ্ধান্তের অনুলিপি।

Leave a Reply to মারুফ Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

রিলেটেড লেখা

Back to top button