ব্যাংকিং ডিপ্লোমা

ব্যাংকিং ডিপ্লোমা নিয়ে কিছু কথা

আল ইমরানঃ ব্যাংকিং সেক্টরকে যাঁরা ক্যারিয়ার হিসেবে নিয়েছেন, তাঁদের জন্য ব্যাংকিং ডিপ্লোমা পাশ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ পরীক্ষার মাধ্যমে অর্জিত জ্ঞান পেশাগত জীবনে একজন ব্যাংকারকে অন্যদের চেয়ে এগিয়ে যেতে সাহায্য করে।

আপনি যে বিষয়েই স্নাতক সম্পন্ন করেন না কেন ব্যাংকিং ক্যারিয়ারে কাঙ্ক্ষিত পদোন্নতি, আর্থিক প্রণোদনা বা পেশাগত উৎকর্ষ সাধনের জন্য ব্যাংকসংশ্লিষ্ট কিছু বিষয়ে অল্পবিস্তর ধারণা থাকতেই হবে। বিশেষ করে ব্যাংক ব্যবস্থাপনা, বিপণন, আইন, অর্থনীতি, ব্যবসায় যোগাযোগ, তথ্যপ্রযুক্তি, সংগঠন, অর্থ ও হিসাব, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও মুদ্রা বিনিময়, ঋণের ঝুঁকি প্রশমনের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়াবলি। ব্যাংক পরিচালনার জন্য এ রকম দরকারি ১২টি বিষয় দুই পর্বে (পার্ট-১ ও পার্ট-২) নিয়ে বছরে দুবার আয়োজন করা হয় ব্যাংকিং ডিপ্লোমা পরীক্ষা।

প্রথম পর্ব এবং দ্বিতীয় পর্বে পাস করা পরীক্ষার্থীদের যথাক্রমে Junior Associate of the Institute of Bankers, Bangladesh (JAIBB) ও Diplomaed Associate of the Institute of Bankers, Bangladesh (DAIBB) সনদ প্রদান করা হয়। বিশেষ কৃতিত্বের জন্য সনদের সঙ্গে রয়েছে আলাদা পুরস্কার (অ্যাওয়ার্ড)। তা ছাড়া, স্ব স্ব ব্যাংকে ডিপ্লোমা পাসের সনদ জমা দিলেই পাওয়া যায় এককালীন আর্থিক পুরস্কার বা প্রণোদনা। কোনো কোনো ব্যাংকে পদোন্নতি দেওয়ার‌ ক্ষেত্রেও বিবেচনা করা হয় ডিপ্লোমা পাসের সনদ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের জন্য ব্যাংকিং ডিপ্লোমা পাশ করা আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কারণ যোগদানের প্রথম বছর শেষে বেতন বৃদ্ধি হলেও ব্যাংকিং ডিপ্লোমা পার্ট ওয়ান পাশ না করলে পরবর্তী বছরগুলোতে বেতন বাড়ে না। যদিও পাশ করা হলে বকেয়াসহ বেতন পরিশোধ করা হয়। প্রায় সব ব্যাংকেই ব্যাংকিং ডিপ্লোমা পাশ করলে মেলে এককালীন আর্থিক পুরস্কার।

ব্যাংক, ব্যাংকার, ব্যাংকিং, অর্থনীতি ও ফাইন্যান্স বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ খবর, প্রতিবেদন, বিশেষ কলাম, বিনিয়োগ/ লোন, ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, ফিনটেক, ব্যাংকের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারগুলোর আপডেট পেতে আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ 'ব্যাংকিং নিউজ', ফেসবুক গ্রুপ 'ব্যাংকিং ইনফরমেশন', 'লিংকডইন', 'টেলিগ্রাম চ্যানেল', 'ইন্সটাগ্রাম', 'টুইটার', 'ইউটিউব', 'হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেল' এবং 'গুগল নিউজ'-এ যুক্ত হয়ে সাথে থাকুন।

* অনেকবার পরীক্ষা দিয়েও সব বিষয়ে পাশ করতে পারেন না অনেকে, অনেকের বাজিমাত একবারই।

পরীক্ষা পদ্ধতি
ব্যাংকিং ডিপ্লোমার জন্য দুই পার্টে (ধাপ) (৬+৬)=১২টি বিষয়ে পরীক্ষা নেওয়া হয়। বছরে দুবার (সাধারণত জুন ও ডিসেম্বর) পরীক্ষা হয়, যার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত সাধারণত এপ্রিল ও সেপ্টেম্বরে)। পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংকার্স, বাংলাদেশ (আইবিবি)। ব্যাংকিং ডিপ্লোমা পরীক্ষার বিষয়সহ পূর্ণাঙ্গ সিলেবাস পাওয়া যাবে প্রতিষ্ঠানটির নিজস্ব ওয়েবসাইটে। প্রতিটি বিষয়ের জন্য আলাদা পাশ নম্বর ৫০।

কোনো বিষয়ে অনন্য কৃতিত্ব দেখাতে পারলে তার জন্য রয়েছে পুরস্কারের ব্যবস্থাও। আইবিবি বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে পরীক্ষা ও নিবন্ধনের তারিখ ঘোষণা করে। প্রতিটি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়েও পরীক্ষার নোটিশ দেওয়া হয়। আইবিবির ওয়েবসাইটে পরীক্ষার আবেদনের ফর্‌ম পাওয়া যায়। পরীক্ষায় অংশগ্রহণ ফি ১৫০০/- (এক হাজার পাঁচশত) টাকা। পে অর্ডারের মাধ্যমে পরীক্ষার ফি জমা দিয়ে চাকরিরত প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে আবেদন করতে হয়। পরীক্ষা হয় শুক্রবার সকালে ও বিকেলে।

সিলেবাস দেখে প্রস্তুতি
ব্যাংকিং ডিপ্লোমা কোনো প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা নয়। এটি একটি প্রফেশনাল কোর্স। এ পরীক্ষার পরীক্ষার্থীরা সবাই চাকুরিজীবী। ফলে এ পরীক্ষার জন্য খুব বেশি প্রস্তুতি নেওয়া অনেকের পক্ষেই সম্ভব হয় না। পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর কমপক্ষে দুই মাস সময় পাওয়া যায় প্রস্তুতির জন্য। প্রথমে ১০০/-(একশত) টাকার বিনিময়ে সিলেবাসটি সংগ্রহ করে নিন।

সিলেবাসের বিষয়গুলো সম্পর্কে প্রথমে একটি সম্যক ধারণা নিন। ইন্টানেটে সার্চ দিয়েও অনেক তথ্য পেতে পারেন। ব্যাংকিং ডিপ্লোমা পরীক্ষার সহায়ক বই পাওয়া যায় বাজারে। এসব বইয়ের সহায়তা নিতে পারেন। ইংরেজি মাধ্যমে প্রস্তুতির জন্য সহায়ক হতে পারে সেটি।

সেখান থেকে বিভিন্ন তথ্য সংবলিত গুরুত্বপূর্ণ সহায়িকা সংগ্রহ করতে পারেন। বিগত সালের প্রশ্নগুলো সংগ্রহ করে নিন। সিলেবাস ও বিগত বছরের প্রশ্নের আলোকে সাজেশন তৈরি করে পড়া শুরু করে দিন। পাশ করা কঠিন হবে না।

লেখার নিয়ম
বাংলা বা ইংরেজি যেকোনো মাধ্যমেই পরীক্ষায় উত্তর করা যায়। তবে ইংরেজি মাধ্যমে উত্তর করাটা বেশি নম্বর পেতে সহায়তা করে বলে মনে করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের যগ্ম পরিচালক ইশরাফুল আউলিয়া চৌধুরী। তিনি জানান, ইংরেজি বাক্য গঠন সঠিক রেখে সহজ ভাষায় প্রশ্নের উত্তর করতে পারলেই ভালো নম্বর পাওয়া যায়। তবে ইংরেজি মাধ্যমে ভালো দক্ষতা না থাকলে বাংলায় উত্তর করাই ভালো। প্রশ্নে যা জানতে চেয়েছে উত্তরে তা সুস্পষ্টভাবে তুলে ধরতে হবে। কোনো বিষয়ে ধারণা না থাকলে লিখে এলে পরীক্ষকের মনে পরীক্ষার্থী সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা তৈরি হতে পারে।

লেখকঃ আল ইমরান, ব্যাংকার।

আরও দেখুন:
৯২তম (গ্রীষ্মকালীন) ব্যাংকিং ডিপ্লোমা পরীক্ষা, জুলাই-আগস্ট ২০২১
সার্কুলার, সময়সূচি, সিলেবাস, রেজাল্ট, বিগত সালের প্রশ্ন ও সাজেশন
৯২তম (গ্রীষ্মকালীন) ব্যাংকিং ডিপ্লোমা পরীক্ষার সময়সূচী, জুলাই-আগস্ট ২০২১
আইবিবি ব্যাংকিং ডিপ্লোমা সার্টিফিকেট উত্তোলন করবেন যেভাবে
আইবিবি ব্যাংকিং ডিপ্লোমা মার্কশিট উত্তোলন করবেন যেভাবে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

রিলেটেড লেখা

Back to top button