বাংলাদেশ ব্যাংক সার্কুলার

‘ডিজিটাল ক্ষুদ্র ঋণ’ সুবিধা প্রদানে পুনঃঅর্থায়ন স্কিম

বাংলাদেশের অর্থনীতি দ্রুত বিকশিত হচ্ছে। আর বিকাশমান এ অর্থনীতিতে আর্থিক খাত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। অর্থনৈতিক বৈষম্য হ্রাস করে অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই আর্থিক খাত উন্নয়নের লক্ষ্যে সুবিধাবঞ্চিত ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর প্রয়োজনকে বিবেচনায় নিয়ে আর্থিক পণ্য বা সেবা বহুমুখীকরণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ গঠনের লক্ষ্যে ক্ষুদ্র ঋণের সহজলভ্যতা, ব্যাংকসমূহকে উৎসাহ প্রদান ও ব্যাংকের তহবিল ব্যয় হ্রাস করে স্বল্প সুদ/ মুনাফায় ডিজিটাল ক্ষুদ্র ঋণ/ বিনিয়োগ প্রদানের লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক ১০০.০০ (একশত) কোটি টাকার একটি পুনঃঅর্থায়ন স্কিম গঠন করা হয়েছে। এখন থেকে ঋণ পাবেন মোবাইল ব্যাংকিং গ্রাহকরা। সর্বনিম্ন ৫০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত এ ঋণ দেওয়া হবে। সুবিধাবঞ্চিত ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর প্রয়োজনকে বিবেচনায় নিয়ে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (০২ জুন, ২০২২) বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার (বিআরপিডি সার্কুলার নং-১১) জারি করে বাংলাদেশে কার্যরত তফসিলি ব্যাংকসমূহের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী (সিইও) কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো হয়েছে।

বিকাশ, রকেট, এমক্যাশ ও উপায়সহ দেশে বর্তমানে ১৩টি প্রতিষ্ঠান মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে আর্থিক সেবা দিচ্ছে। এসব প্রতিষ্ঠানের গ্রাহকরা পাবেন এই ঋণ। তবে ‘নগদ’ থেকে এখনো এই ঋণ নেওয়া যাবে না।

ব্যাংক, ব্যাংকার, ব্যাংকিং, অর্থনীতি ও ফাইন্যান্স বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ খবর, প্রতিবেদন, বিশেষ কলাম, বিনিয়োগ/ লোন, ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, ফিনটেক, ব্যাংকের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারগুলোর আপডেট পেতে আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ 'ব্যাংকিং নিউজ', ফেসবুক গ্রুপ 'ব্যাংকিং ইনফরমেশন', 'লিংকডইন', 'টেলিগ্রাম চ্যানেল', 'ইন্সটাগ্রাম', 'টুইটার', 'ইউটিউব', 'হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেল' এবং 'গুগল নিউজ'-এ যুক্ত হয়ে সাথে থাকুন।

আরও দেখুন:
বাংলাদেশ ব্যাংকের বিভিন্ন সার্কুলার

তহবিলের উৎস
এ স্কিমের নাম দেওয়া হয়েছে ‘ডিজিটাল ক্ষুদ্র ঋণ’। বাংলাদেশ ব্যাংকের নিজস্ব তহবিল থেকে এর অর্থায়ন হবে। এ জন্য ১০০ কোটি টাকার একটি পুনঃঅর্থায়ন স্কিম গঠন করা হয়েছে।

এ স্কিম হতে প্রথম পর্যায়ে ৫০ কোটি টাকা বিতরণ হবে। এর সুষ্ঠু ব্যবহার হলে দ্বিতীয় পর্যায়ে আরও ৫০ কোটি টাকা পুনঃঅর্থায়ন হবে। ভবিষ্যতে চাহিদা বিবেচনায় বাড়ানো হবে এ অর্থায়নের পরিমাণ। এ স্কিমের আওতায় তহবিলের মেয়াদ হবে তিন বছর।

সুদের হার ও মেয়াদ
গ্রাহক পর্যায়ে সুদের হার হবে সর্বোচ্চ ৯ শতাংশ। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সব তফসিলি ব্যাংক কর্তৃক গৃহীত পুনঃঅর্থায়ন সুবিধার ওপর ১ শতাংশ হারে সুদ আরোপ হবে। ব্যাংক এবং গ্রাহক উভয় পর্যায়ে ঋণের মেয়াদ হবে সর্বোচ্চ ছয় মাস।

ঋণ প্রসেসিং থেকে শুরু করে ঋণ আদায় পর্যন্ত সব কিছু ডিজিটাল পদ্ধতিতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংক সময়ে সময়ে গ্রাহক পর্যায়ে ঋণের পরিমাণ কমাতে বা বাড়াতে পারবে।

ঋণ সংক্রান্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনের লক্ষ্যে ক্ষুদ্র ঋণের সহজলভ্যতা ও ব্যাংকের তহবিল ব্যয় হ্রাস করে ‘ডিজিটাল ক্ষুদ্র ঋণ’ প্রদানে এই স্কিম গঠন করা হয়েছে। ব্যাংক-কোম্পানি আইন, ১৯৯১ এর ৪৫ ধারার আওতায় এ নির্দেশনা জারি করা হলো। যা কার্যকর হবে অবিলম্বে।

‘ডিজিটাল ক্ষুদ্র ঋণ’ হচ্ছে- ইন্টারনেট ব্যাংকিং, মোবাইল অ্যাপ, মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস (এমএফএস), ই-ওয়ালেট ইত্যাদি ব্যবহার করে তফসিলি ব্যাংক থেকে ক্ষুদ্র ঋণ প্রদান করা।

‘ডিজিটাল ক্ষুদ্র ঋণ’ বিতরণকারী সব তফসিলি ব্যাংক এ সুবিধা গ্রহণের যোগ্য বলে বিবেচিত হবে। পুনঃঅর্থায়ন গ্রহণে আগ্রহী ব্যাংককে বাংলাদেশ ব্যাংকের ফাইন্যান্সিয়াল ইনক্লুশন ডিপার্টমেন্টের (এফআইডি) সঙ্গে একটি চুক্তি করতে হবে।

এদিকে চলতি বছরের (২০২২ সাল) মার্চ মাস পর্যন্ত মোবাইল ব্যাংকিং-এ নিবন্ধিতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১০ কোটি ৯১ লাখ ৩০ হাজার ৪০৫টি। আর ১১ লাখ ৫১ হাজার ২১৩টি এজেন্টের সংখ্যা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

রিলেটেড লেখা

Back to top button