বীমা

বীমা খাতে পরিচালক নিয়োগে ৩ বিধি-প্রবিধি

বেসরকারি বীমা কোম্পানির পরিচালক নিয়োগের ক্ষেত্রে তিন বিধি-প্রবিধির খসড়া প্রকাশ করা হয়েছে। বিধি-প্রবিধির খসড়ায় পরিশোধিত মূলধনের ন্যূনতম ২ শতাংশ শেয়ার থাকলে সাধারণ শেয়ার হোল্ডাররা যে কোনো বেসরকারি বীমা কোম্পানির পরিচালক হতে পারবেন। তবে নির্বাচনের কমপক্ষে এক বছর আগে শেয়ার-হোল্ডার হতে হবে।

জানা যায়, বেসরকারি বীমা কোম্পানিতে উদ্যোক্তা শেয়ার হোল্ডাররা তাদের নিজেদের মধ্য থেকে এক-তৃতীয়াংশ এবং সাধারণ শেয়ার হোল্ডাররা তাদের নিজেদের মধ্য থেকে এক-তৃতীয়াংশ পরিচালক নির্বাচন করতে পারবেন। পরিচালনা পর্ষদে এক-তৃতীয়াংশের বেশি পরিচালক নিয়োগ বা নির্বাচনের ক্ষেত্রে ‘বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ’- এর পূর্বানুমোদন নিতে হবে। ‘বীমাকারীর পরিচালক নির্বাচন বিধিমালা ২০২১’-এর খসড়ায় এ ধরনের বিধান যুক্ত করা হয়েছে।

সম্প্রতি বীমা খাতের তিনটি বিধিমালার খসড়া প্রণয়ন করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের ‘আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ’। এই বিধিমালার অপর দুটি বিধিমালা হচ্ছে ‘বিশেষ নিরীক্ষা প্রবিধানমালা ২০২১’ ও ‘বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (লাইফ বীমাকারীর উদ্বৃত্ত বণ্টন) প্রবিধানমালা ২০২১’।

‘বীমাকারীর পরিচালক নির্বাচন বিধিমালা ২০২১’- এর খসড়া বিধিমালায় বলা হয়েছে, বীমা কোম্পানির প্রত্যেক বার্ষিক সাধারণ সভায় উদ্যোক্তা-পরিচালকদের এক-তৃতীয়াংশ এবং জনগণের অংশের শেয়ার-হোল্ডারদের পরিচালকদের এক-তৃতীয়াংশ অবসর নেবে।

ব্যাংক, ব্যাংকার, ব্যাংকিং, অর্থনীতি ও ফাইন্যান্স বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ খবর, প্রতিবেদন, বিশেষ কলাম, বিনিয়োগ/ লোন, ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, ফিনটেক, ব্যাংকের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারগুলোর আপডেট পেতে আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ 'ব্যাংকিং নিউজ', ফেসবুক গ্রুপ 'ব্যাংকিং ইনফরমেশন', 'লিংকডইন', 'টেলিগ্রাম চ্যানেল', 'ইন্সটাগ্রাম', 'টুইটার', 'ইউটিউব', 'হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেল' এবং 'গুগল নিউজ'-এ যুক্ত হয়ে সাথে থাকুন।

এছাড়া বীমা কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদে নিরপেক্ষ পরিচালক নিয়োগের ক্ষেত্রে সেটি বার্ষিক সাধারণ সভায় অনুমোদিত হতে হবে। খসড়া বিধিমালা অনুযায়ী, যে কোনো একজন সাধারণ শেয়ার-হোল্ডারের ভোটের অধিকার সব শেয়ার-হোল্ডারের ভোটের অধিকারের ১০ শতাংশের বেশি হবে না।

‘বিশেষ নিরীক্ষা প্রবিধানমালা ২০২১’-এর খসড়ায় বলা হয়েছে, কোনো বীমা কোম্পানিতে নিয়োগকৃত এক বা একাধিক নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বিশেষ নিরীক্ষা করা যাবে। নিরীক্ষক আইন ও এর অধীন প্রণীত বিধি-প্রবিধানসহ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক সময়ে সময়ে জারিকৃত নির্দেশনার আলোকে বীমা কোম্পানির হিসাব ও ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত যে কোনো বিষয়ে নিরীক্ষা-পূর্বক কর্তৃপক্ষের কাছে পর্যবেক্ষণ ও সুপারিশসহ প্রতিবেদন পেশ করবে।

খসড়া বিধিমালায় নিরীক্ষকের যোগ্যতা ও নিয়োগের বিষয়ে বলা হয়েছে— ‘বাংলাদেশ চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্টস অর্ডার ১৯৭৩’- এ সংজ্ঞায়িত চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্টদের মাধ্যমে গঠিত নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান হতে হবে। ‘কোম্পানি আইন ১৯৯৪’-এর ধারা ২১২-এর বিধান অনুযায়ী যোগ্যতাসম্পন্ন হতে হবে।

নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠানে দুই বা ততোধিক অভিজ্ঞ অংশীদার থাকতে হবে। নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠানকে ‘দি ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্টস অব বাংলাদেশ’ (আইসিএবি) এবং বীমা কর্তৃপক্ষ কর্তৃক তালিকাভূক্ত হতে হবে। নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠানে উপযুক্ত যোগ্যতাসম্পন্ন নিরীক্ষক থাকতে হবে।

নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠানের কোনো অংশীদার বীমা কোম্পানির উদ্যোক্তা, পরিচালক, উপদেষ্টা বা কোনো লাভজনক দায়িত্বে সংশ্লিষ্ট থাকতে পারবে না। নিরীক্ষা কাজে নিরীক্ষক প্রতিষ্ঠানের ন্যূনতম সাত বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।

এছাড়া বীমা কর্তৃপক্ষ কর্তৃক পরিচালিত বিশেষ নিরীক্ষা কাজে কোনো বীমা কোম্পানি কোনো ধরনের অসহযোগিতা করলে সংশ্লিষ্ট বীমা কোম্পানির বিরুদ্ধে আইনের বিধান মোতাবেক যথাযথ ব্যবস্থা নিতে পারবে বীমা কর্তৃপক্ষ।

এ বিষয়ে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেছেন, ‘এই তিনটি বিধিমালা খসড়া আমরা উন্মুক্ত করে এর ওপরে জনসাধারণের মতামত আহ্বান করেছি। এ জন্য ১৫ দিন করে সময়ও বেঁধে দেওয়া হয়েছে। মতামত পাওয়ার পর তা আমরা মূল্যায়ন করে দেখব। উপযোগী মনে হলে এ সব মতামতের কয়েকটি আবার খসড়ায় সন্নিবেশ করা হবে। এর পর বিধিমালা তিনটি আমরা চূড়ান্ত করে প্রকাশ করব। এ জন্য আরও ২/১ মাস সময় লাগতে পারে।’

তিনি বলেন, ‘দেশে বীমাখাত নিয়ে নানা অভিযোগ রয়েছে। এখাতে যে সব অনিয়ম গ্রাহদের কাছ থেকে পাওয়া গেছে, তার ওপর ভিত্তি করে বীমা আইনের কিছু কিছু বিষয়ের উপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। আইনে বিষয়গুলো সংযোজিত হওয়ার পর আশা করা যাচ্ছে বীমা খাতের ওপর দীর্ঘদিনের আস্থাহীনতা দূর হবে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

রিলেটেড লেখা

Back to top button