ব্যাংক ক্যারিয়ার

সুদী ব্যাংকে চাকরির বিধান-১

ড. মাহফুজুর রহমানঃ ইসলামে সুদী কারবার করা কাবীরা গুনাহ বা বড় পাপ। এ মর্মে কুরআন-হাদীসে বহু সর্তকবাণী উচ্চারিত হয়েছে। সুতরাং সুদ সংশ্লিষ্ট সব কিছু থেকে সম্পর্ক ছিন্ন করা মুসলিমের জন্য আবশ্যক। সুদী ব্যাংকে চাকরি করার ব্যাপারে আলেমদের মোট চারটি অভিমত পাওয়া যায়। মতামতগুলো নিম্নরূপ:

প্রথম অভিমত:
সুদী ব্যাংকে চাকরি করা হারাম। এটি সাউদি আরবের ‘আল্ লাজনা আদ্দায়েমা লিল ইফতা’ এর অভিমত। তারা তাদের ফাতওয়ায় সুদী কারবার হারাম হওয়া এবং ﻭَ ﻟَﺎ ﺗَﻌَﺎﻭَﻧُﻮۡﺍ ﻋَﻠَﯽ ﺍﻟۡﺎِﺛۡﻢِ ﻭَ ﺍﻟۡﻌُﺪۡﻭَﺍﻥِ “আর অন্যায় ও মন্দ কাজে সহযোগিতা করো না।” (সূরা ৫; মায়েদা ২) আয়াতটিকে দলিল হিসেবে ব্যবহার করেছেন।

দ্বিতীয় অভিমত:
সুদি ব্যাংকে চাকরি করা বৈধ। এটি কিছু কিছু আযহারী আলেমের অভিমত। তাদের মতে ব্যাংকের লেলদেন সুদী লেনদেন নয়।

তৃতীয় অভিমত:
যাদের সুদি ব্যাংক ছাড়া অন্য কোথাও চাকরি করার সুযোগ নেই তাদের জন্য তাতে চাকরি করা বৈধ। কারণ, তা তার ক্ষেত্রে জরুরতের পর্যায়ে পড়ে, যা অবৈধকে বৈধ করে দেয়। এটি আল্লামা ইউসুফ আল কারযাভীর অভিমত। তিনি তার এ অভিমত ইসলামী শারীয়তের সাধারণ প্রয়োজন ও জরুরত প্রাসঙ্গিক রীতিনীতি এবং ﻓَﻤَﻦِ ﺍﺿۡﻄُﺮَّ ﻏَﯿۡﺮَ ﺑَﺎﻍٍ ﻭَّ ﻟَﺎ ﻋَﺎﺩٍ ﻓَﻠَﺎۤ ﺍِﺛۡﻢَ ﻋَﻠَﯿۡﮧِ “তবে যে ব্যক্তি নিরুপায় হয়ে অবাধ্য ও সীমালঙ্ঘনকারী না হয়ে তা গ্রহণে বাধ্য হয়েছে, তার কোনো পাপ হয় না।” আয়াতের উপর ভিত্তি করে প্রদান করেছেন।

ব্যাংক, ব্যাংকার, ব্যাংকিং, অর্থনীতি ও ফাইন্যান্স বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ খবর, প্রতিবেদন, বিশেষ কলাম, বিনিয়োগ/ লোন, ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, ফিনটেক, ব্যাংকের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারগুলোর আপডেট পেতে আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ 'ব্যাংকিং নিউজ', ফেসবুক গ্রুপ 'ব্যাংকিং ইনফরমেশন', 'লিংকডইন', 'টেলিগ্রাম চ্যানেল', 'ইন্সটাগ্রাম', 'টুইটার', 'ইউটিউব', 'হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেল' এবং 'গুগল নিউজ'-এ যুক্ত হয়ে সাথে থাকুন।

চতুর্থ অভিমত:
সুদি ব্যাংকে চাকরি করা নিষিদ্ধ সেসব লোকদের জন্য যারা সুদ খায়, সুদ দেয়, সুদের লেখক হয়, সুদী কারবারের সাক্ষী হয় তাদের জন্য। আর যারা এসব করে না তাদের জন্য সুদি ব্যাংকে চাকরি করা বৈধ। এ বক্তব্যের দলিল হলো, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সে হাদীস যাতে তিনি কেবল, ‘সুদখোর, সুদদাতা, সুদী করবারের লেখক ও সুদী কারবারের সাক্ষীদেরকে লা’নত করেছেন, আরো বলেছেন তারা সকলে সমান অপরাধী’। [ইন্টারনেট, মাকতাবাতুল ফাতওয়া, ফাতওয়া নং-০৮, তা: ২ মার্চ, ২০০৮ খ্রিস্টাব্দ।]

আমি মনে করি যাদের সুদি ব্যাংক ছাড়া অন্য কোথাও চাকরি করার সুযোগ নেই তাদের জন্য তাতে চাকরি করা ততদিন পর্ন্ত বৈধ যতদিন হালালভাবে আয় রোজগার করার বিকল্প কোনো সুযোগ হচ্ছে না।

লেখকঃ ড. মাহফুজুর রহমান, অধ্যাপক, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া।

আরও দেখুন:
ব্যাংকের সুদ ও রিবা কি এক জিনিস?
সুদ কী? ইসলামে সুদের ভয়াবহতা!
রিবা বা সুদের তাৎপর্য

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

রিলেটেড লেখা

Back to top button