বাংলাদেশ ব্যাংক সার্কুলার

ঋণের বিপরীতে সুদ আয়খাতে স্থানান্তরকরণ এবং প্রভিশন সংরক্ষণ

খেলাপি ঋণ কমাতে গ্রাহকের ঋণ পরিশোধে বিশেষ ছাড় দিয়েছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এবার ব্যাংকগুলোর জন্য ছাড় দেওয়া হয়েছে। চলতি বছর মাত্র ২৫ শতাংশ পরিশোধ করে নিয়মিত দেখানো ঋণের বিপরীতেও পুরো সুদ আয়খাতে নিতে পারবে ব্যাংক। তবে বিশেষ সুবিধায় নিয়মিত দেখানো এ ঋণের বিপরীতে অতিরিক্ত ২ শতাংশ প্রভিশন রাখতে হবে।

মঙ্গলবার (১৪ ডিসেম্বর, ২০২১) বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার (বিআরপিডি সার্কুলার লেটার নং-৫০) জারি করে বাংলাদেশে কার্যরত তফসিলি ব্যাংকসমূহের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী (সিইও) কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো হয়েছে।

নতুন সার্কুলারে বলা হয়েছে, ওই নির্দেশনার আওতায় সুবিধা পাওয়া ঋণের আদায় ঝুঁকি বিবেচনায় নিয়ে ২০২১ সালে আরোপিত সুদ আয়খাতে স্থানান্তর করা যাবে। তবে গ্রাহকের প্রদেয় কিস্তির ২৫ শতাংশ ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে পরিশোধে ব্যর্থ হলে এ সুবিধা বাতিল করে যথানিয়মে শ্রেণিকরণ করতে হবে। আর এ ধরনের সুবিধা পাওয়া ঋণের বিপরীতে বিদ্যমান নীতিমালার আওতায় যে সাধারণ প্রভিশন রাখা হয় তার অতিরিক্ত ২ শতাংশ অতিরিক্ত নিরাপত্তা সঞ্চিতি সংরক্ষণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই সঞ্চিতির নাম দেওয়া হয়েছে ‘স্পেশাল জেনারেল প্রভিশন কোভিড-১৯।’

আগামী ৩১ ডিসেম্বর অর্থ বছরের চূড়ান্ত করার সময়ে এই সঞ্চিতি সংরক্ষণ করতে হবে। পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত এই হিসাবে রক্ষিত প্রভিশন অন্য কোনো খাতে স্থানান্তর করা যাবে না। এর ফলে এবার ব্যাংকের চূড়ান্ত মুনাফায় প্রভাব পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

ব্যাংক, ব্যাংকার, ব্যাংকিং, অর্থনীতি ও ফাইন্যান্স বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ খবর, প্রতিবেদন, বিশেষ কলাম, বিনিয়োগ/ লোন, ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, ফিনটেক, ব্যাংকের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারগুলোর আপডেট পেতে আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ 'ব্যাংকিং নিউজ', ফেসবুক গ্রুপ 'ব্যাংকিং ইনফরমেশন', 'লিংকডইন', 'টেলিগ্রাম চ্যানেল', 'ইন্সটাগ্রাম', 'টুইটার', 'ইউটিউব', 'হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেল' এবং 'গুগল নিউজ'-এ যুক্ত হয়ে সাথে থাকুন।

এর আগে, ২০২০ সালে করোনার কারণে বিশেষ সুযোগ নিয়ে বছরজুড়ে কিস্তি না দিয়েও যেসব ঋণ খেলাপি হওয়ার হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে, ওই সুবিধার আওতায় নিয়মিত দেখানো ঋণে অতিরিক্ত ১ শতাংশ প্রভিশন রাখার বাধ্যবাধকতা ছিল। তবে সুবিধা নেওয়া যেসব ঋণ নগদ আদায়ের মাধ্যমে সম্পূর্ণ সমন্বয় হয়েছে তার বিপরীতে গতবছর সংরক্ষণ করা অতিরিক্ত ১ শতাংশ প্রভিশন আয়খাতে নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়েছে।

আর চলতি বছরের আগস্টে সার্কুলারের আওতায় সুবিধা পাওয়া ঋণের প্রয়োজনীয় তথ্য যেমন- ঋণগ্রহীতার নাম, ঋণ স্থিতি, আরোপিত সুদ, আয়খাত ও ইন্টারেস্ট সাসপেন্স হিসেবে স্থানান্তরিত সুদ, অতিরিক্ত প্রভিশনের পরিমাণ সংশ্লিষ্ট শাখায় এবং প্রধান কার্যালয়ের সংশ্লিষ্ট বিভাগে সংরক্ষণ করতে হবে। এছাড়া ২০১৫ সালে বিশেষ সুবিধায় পুনর্গঠন ও ২০১৯ সালে এককালীন এক্সিট সুবিধাসহ যেসব ঋণের ক্ষেত্রে সুদ আয়খাতে স্থানান্তরে বিধিনিষেধ রয়েছে, নগদ আদায় ছাড়া কোনোভাবেই তা আয় দেখানো যাবে না।

এর আগে পুরো ঋণ আদায় না করেই ব্যাংকগুলোর আয় বেশি দেখানোর এমন বিশেষ ছাড় দেওয়া হলেও গত ১ সেপ্টেম্বর ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানে শুধু যে পরিমাণ ঋণ আদায় হবে তার বিপরীতে সুদ আয় খাতে নেওয়ার নির্দেশ দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। আর আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে চলতি বছর যে পরিমাণ ঋণ পরিশোধ করার কথা অন্তত ৫০ শতাংশ পরিশোধ করলে খেলাপি না করার নির্দেশনা রয়েছে।

করোনার কারণে গতবছর কেউ এক টাকাও পরিশোধ না করলেও তাকে খেলাপি করতে পারেনি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো। চলতি বছরের শুরুতে বাংলাদেশ ব্যাংক সার্কুলার দিয়ে জানিয়েছিল এবার ঋণ পরিশোধে বিশেষ সুবিধা দেওয়া হবে না। তবে গ্রাহকের ওপর যেন ঋণ পরিশোধের বাড়তি চাপ তৈরি না হয় সে জন্য অনাদায়ী ঋণ পরিশোধে বাড়তি সময় দেওয়া হয়।

আরও দেখুন:
বাংলাদেশ ব্যাংকের বিভিন্ন সার্কুলার

এরপর বিভিন্ন পক্ষের চাপে গত ২৭ আগস্ট একটি সার্কুলার জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক। সেখানে বলা হয়, চলতি বছর কেউ ২৫ শতাংশ পরিশোধ করলে তাকে আর খেলাপি করা যাবে না। এই সুবিধা পাওয়া ঋণের ওপর আরোপিত সুদ আয় খাতে স্থানান্তর বিষয়ে পরে নির্দেশনা দেওয়ার কথা বলা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

রিলেটেড লেখা

Back to top button