এটিএম সার্ভিস

সব ব্যাংকের এটিএম বুথে জীবাণুনাশক নেই

করোনাভাইরাসের কারণে ব্যাংকগুলোর স্বাভাবিক কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। ফলে নগদ টাকার চাহিদা মেটাতে এটিএম বুথই এখন অন্যতম ভরসা। এদিকে অনেক এটিএম বুথ ব্যবহার নিয়ে গ্রাহকদের মধ্যে উৎকণ্ঠা রয়েছে। কারণ, বুথগুলোতে হ্যান্ড স্যানিটাইজার বা জীবাণুনাশক রাখার কথা থাকলেও রাজধানীতে অনেক ক্ষেত্রেই সেই উদ্যোগ-আয়োজন নেই।

জীবাণুনাশক শেষ হয়ে যাওয়ার অজুহাত দিতেও দেখা গেছে অনেক বুথের নিরাপত্তাকর্মীকে। গ্রাহকের হাতের স্পর্শ লেগে বুথ থেকে যাতে ভাইরাস ছড়াতে না পারে, সে জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক ইতিপূর্বে ব্যাংকগুলোকে ব্যবস্থা নিতে পরামর্শ দিয়েছিল। সে অনুযায়ী অনেক ব্যাংকের এটিএম বুথের ব্যবস্থাপকেরা এ নিয়ে খুবই সতর্ক আছেন, তাঁদের আয়োজনও ভালো। আবার গ্রাহকদের মধ্যেও দেখা গেছে মিশ্র প্রবণতা। অনেক গ্রাহক যেমন খুবই সতর্কতার সঙ্গে বুথ ব্যবহার করছেন, আবার অনেকে কিছুই তোয়াক্কা করছেন না।

গত শুক্র ও শনিবার রাজধানীর কয়েকটি এলাকার এটিএম বুথগুলো ঘুরে এসব চিত্র দেখা গেছে। তবে এটিএম ব্যবহারকারীর সংখ্যা হাতে গোনা। শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় রাজধানীর মহাখালীতে অবস্থিত আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্রের (আইসিডিডিআরবি) সামনে ব্র্যাক ব্যাংকের এটিএম বুথে দেখা যায় এক দম্পতি টাকা তোলার জন্য এসেছেন। টাকা তোলার পর নিরাপত্তাকর্মী জীবাণুনাশক এগিয়ে দিলে শফিকুর রহমান তা ব্যবহার করেন। এ বিষয়ে শফিকুর রহমান বলেন, এখন সবাই সচেতন। এটিএম বুথে জীবাণুনাশক রাখায় ভালো হয়েছে। এতে সবাই আরও সতর্ক হবেন।

অনেক এটিএম বুথে জীবাণুনাশক নেই
আবার গ্রাহকদেরও অনেকেই তা ব্যবহার করছেন না। রাত পৌনে আটটায় নাবিস্কো মোড়ের ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের ফাস্ট ট্র্যাকের এটিএমেও জীবাণুনাশক ব্যবহার করতে দেখা গেল। রাত আটটায় নাখালপাড়ায় যমুনা ব্যাংকের এটিএম বুথে জীবাণুনাশক নেই।

ব্যাংক, ব্যাংকার, ব্যাংকিং, অর্থনীতি ও ফাইন্যান্স বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ খবর, প্রতিবেদন, বিশেষ কলাম, বিনিয়োগ/ লোন, ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, ফিনটেক, ব্যাংকের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারগুলোর আপডেট পেতে আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ 'ব্যাংকিং নিউজ', ফেসবুক গ্রুপ 'ব্যাংকিং ইনফরমেশন', 'লিংকডইন', 'ইউটিউব', 'হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেল' এবং 'গুগল নিউজ'-এ যুক্ত হয়ে সাথে থাকুন।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পাশে ট্রাস্ট ব্যাংকের এটিএম বুথেও জীবাণুনাশক মিলল। তবে রাত সাড়ে আটটায় লুকাস মোড়ে ডাচ্‌-বাংলা ব্যাংকের ফাস্ট ট্র্যাকে জীবাণুনাশক দেখা যায়নি। পাশের এবি ব্যাংকের এটিএম বুথেও জীবাণুনাশক পাননি এক গ্রাহক। কর্তব্যরত দারোয়ান জানালেন, জীবাণুনাশক ছিল, শেষ হয়ে গেছে। নতুন করে দেওয়া হয়নি।

তবে গতকাল শনিবার দুপুরে গুলশানের এটিএম বুথগুলো ঘুরে জীবাণুনাশক দেখা গেছে। যদিও এটিএমগুলোতে গ্রাহক নেই বললেই চলে। গুলশান-১ এলাকায় প্রাইম ব্যাংকের বুথে ঝোলানো রয়েছে ‘সাময়িক দূরত্ব, সামাজিক দায়িত্ব’ লেখা ব্যানার। পাশেই ঢাকা ব্যাংকের বুথেও পাওয়া গেল জীবাণুনাশক। লিংক রোডের সিটি ব্যাংকের বুথেও জীবাণুনাশক ছিল। আবার কিছু বুথে কোনো কোনো গ্রাহককে জীবাণুনাশক ব্যবহারে অনীহা দেখিয়ে চলে যেতেও দেখা গেছে।

জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বলেন, ব্যাংকগুলোকে কর্মীর পাশাপাশি গ্রাহকদের নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনার কথা বলা হয়েছে। জীবাণুনাশক রাখার দায়িত্বটি ব্যাংকগুলোর। বর্তমান পরিস্থিতিতে এটা তাদের নিশ্চিত করতে হবে।

বেড়েছে উত্তোলন সীমা, মাশুলও মওকুফ
করোনাভাইরাসের কারণে গ্রাহকেরা যাতে টাকা তোলার জন্য ব্যাংকে ভিড় না করেন, এ জন্য অনেক ব্যাংক এটিএম বুথ থেকে টাকা উত্তোলনের সীমা বাড়িয়েছে। আবার অন্য ব্যাংকের বুথ থেকে টাকা উত্তোলনে ১৫ টাকা মাশুল কাটাও বন্ধ করেছে অনেক ব্যাংক।

জানা গেছে, ব্র্যাক ব্যাংক এসএমই ও রিটেইল গ্রাহকদের দৈনিক উত্তোলনসীমা বাড়িয়ে এক লাখ ও প্রিমিয়াম গ্রাহকদের সীমা বাড়িয়ে দুই লাখ টাকা করেছে। প্রাইম ব্যাংক সাধারণ গ্রাহকদের উত্তোলনসীমা বাড়িয়ে এক লাখ টাকা ও মনার্ক (বিশেষ) গ্রাহকদের জন্য দুই লাখ টাকা করেছে। আইএফআইসি ব্যাংক এক লাখ টাকা ও পয়েন্ট অব সেলসে দুই লাখ টাকা উত্তোলনের সুযোগ দিয়েছে। আরও কয়েকটি ব্যাংক সীমা বাড়িয়ে দিয়েছে।

আবার কয়েকটি ব্যাংক বিনা মাশুলে অন্য যেকোনো ব্যাংকের এটিএম বুথ থেকে টাকা উত্তোলনের সুযোগ দিয়েছে। যেকোনো বুথ থেকে টাকা উত্তোলন করেন ‘আপনার খরচ আমরাই বহন করব’, এমন স্লোগানে ব্যাংকগুলো এ সেবা দিচ্ছে। বেসরকারি খাতের ঢাকা, শাহজালাল ইসলামী, মিউচুয়াল ট্রাস্ট, দি সিটি, আইএফআইসিসহ আরও কয়েকটি ব্যাংক গ্রাহকদের এ সুযোগ দিয়েছে। এনআরবি ব্যাংকের গ্রাহকেরা আগে থেকেই এ সুবিধা পেয়ে আসছেন।

এদিকে ডাচ্-বাংলা ব্যাংক আগামী ৪ এপ্রিল পর্যন্ত সকাল ৬টা থেকে রাত সাড়ে ১২টা পর্যন্ত এটিএম বুথ চালু রাখার কথা জানিয়েছে। আর ফাস্ট ট্র্যাক সকাল ১০টা থেকে বেলা দেড়টা পর্যন্ত খোলা থাকে বলে জানানো হয়েছে।

মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, গ্রাহকদের সুবিধার্থে ব্যাংকগুলো বিনা মাশুলে টাকা তোলার সুযোগ দিয়েছে। ব্যাংকগুলো নিজেরাই এ খরচ বহন করছে।

সোর্সঃ প্রথম আলো

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

রিলেটেড লেখা

Back to top button