ডিপ্লোমা ইন ইসলামিক ব্যাংকিং (DIB)ব্যাংকিং প্রফেশনাল এক্সাম

ব্যাংকিং ডিপ্লোমা প্রস্তুতি নিবেন যেভাবে

নাজমুল হুদাঃ ব্যাংকিং ডিপ্লোমা প্রস্তুতি নিবেন যেভাবে- যে বিষয়েই স্নাতক সম্পন্ন করেন না কেন ব্যাংকিং ক্যারিয়ারে কাঙ্ক্ষিত পদোন্নতি, আর্থিক প্রণোদনা বা পেশাগত উৎকর্ষ সাধনের জন্য ব্যাংকসংশ্লিষ্ট কিছু বিষয়ে অল্পবিস্তর ধারণা থাকতেই হবে। বিশেষ করে ব্যাংক ব্যবস্থাপনা, বিপণন, আইন, অর্থনীতি, ব্যবসায় যোগাযোগ, তথ্যপ্রযুক্তি, সংগঠন, অর্থ ও হিসাব, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও মুদ্রা বিনিময়, ঋণের ঝুঁকি প্রশমনের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়াবলি। ব্যাংক পরিচালনার জন্য এ রকম দরকারি ১২টি বিষয় দুই পর্বে (পার্ট-১ ও পার্ট-২) নিয়ে বছরে দুবার আয়োজন করা হয় ব্যাংকিং ডিপ্লোমা পরীক্ষা।

প্রথম পর্ব এবং দ্বিতীয় পর্বে পাস করা পরীক্ষার্থীদের যথাক্রমে Junior Associate of the Institute of Bankers, Bangladesh (JAIBB) ও Diplomaed Associate of the Institute of Bankers, Bangladesh (DAIBB) সনদ প্রদান করা হয়। বিশেষ কৃতিত্বের জন্য সনদের সঙ্গে রয়েছে আলাদা পুরস্কার (অ্যাওয়ার্ড)। তা ছাড়া, স্ব স্ব ব্যাংকে ডিপ্লোমা পাসের সনদ জমা দিলেই পাওয়া যায় এককালীন আর্থিক পুরস্কার বা প্রণোদনা। কোনো কোনো ব্যাংকে পদোন্নতি দেওয়ার ক্ষেত্রেও বিবেচনা করা হয় ডিপ্লোমা পাসের সনদ।

পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংকার্স, বাংলাদেশ (আইবিবি)-এর সর্বশেষ বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, ঢাকা মহানগরীসহ দেশের নির্ধারিত জেলা সদরে অনুষ্ঠিত হয় ব্যাংকিং ডিপ্লোমা পরীক্ষা। রাজধানী ঢাকাসহ বিভাগীয় এবং নির্ধারিত জেলা শহরে একযোগে এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। যাঁরা ইতিমধ্যে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করেছেন তাঁরা স্বল্প সময়ে যথার্থ প্রস্তুতির জন্য জেনে নিতে পারেন কিছু কার্যকর কৌশল।

১. বিগত পরীক্ষার প্রশ্ন সমাধান দিয়ে প্রস্তুতি শুরু করা ভালো। এতে, পুরো সিলেবাসের অন্তত ৬০-৭০ শতাংশ বিষয় সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা হয়ে যাবে। যেহেতু ব্যাংকিং ডিপ্লোমা কোনো প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা নয়, প্রফেশনাল কোর্স। স্বভাবতই এ পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী সবাই ব্যস্ততার কারণে খুব আগে থেকে পড়াশোনা করতে পারেন না। তাই শুরুতেই কয়েক বছরের প্রশ্ন সমাধান করে ধারণা নিতে পারলে পড়াশোনা সহজ হয়ে যাবে। তা ছাড়া, ব্যাংকে কাজ করার সুবাদে কিছু বাস্তবিক ধারণা তো আছেই। এগুলোই উত্তর করার সময় কাজে দেবে।

ব্যাংক, ব্যাংকার, ব্যাংকিং, অর্থনীতি ও ফাইন্যান্স বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ খবর, প্রতিবেদন, বিশেষ কলাম, বিনিয়োগ/ লোন, ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, ফিনটেক, ব্যাংকের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারগুলোর আপডেট পেতে আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ 'ব্যাংকিং নিউজ', ফেসবুক গ্রুপ 'ব্যাংকিং ইনফরমেশন', 'লিংকডইন', 'টেলিগ্রাম চ্যানেল', 'ইন্সটাগ্রাম', 'টুইটার', 'ইউটিউব', 'হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেল' এবং 'গুগল নিউজ'-এ যুক্ত হয়ে সাথে থাকুন।

২. হলে টিকে থাকলে নম্বর আসবেই। পাসের জন্য প্রয়োজন মাত্র ৫০। শুক্রবার সকালে ও বিকেলে তিন ঘণ্টা করে মোট ছয় ঘণ্টায় দুইটা পরীক্ষা দিতে হবে। মাঝে মাত্র এক ঘণ্টার বিরতি। দীর্ঘদিন বিরতির পর হাতে লেখার অভ্যাসটা একবার পরখ করে নিন। যা হোক, পরীক্ষার সময় ও নিজের সামর্থ্যের দিকে নজর রাখতেই হবে।

৩. বাংলা ইংরেজি যেকোনো ভাষায় প্রশ্নের উত্তর করা যায়। তবে ইংরেজিতে লেখা ভালো। এতে প্রশ্নানুসারে উত্তর দেওয়াও সহজ। বাজারে যেসব সহায়ক গাইড পাওয়া যায় তা পড়ে দেখতে পারেন। তবে টপিক ধরে ইনভেস্টোপিডিয়া বা উইকিপিডিয়ার মতো সাইটগুলো থেকে বিস্তারিত পড়া থাকলে ভালোভাবে উত্তর করা যায়। তা ছাড়া একাধিক খাতায় হুবহু একই ধরনের উত্তর পেলে পরীক্ষকের কাছে নেতিবাচক মনে হতে পারে। তাই সব প্রশ্নের গাইডভিত্তিক উত্তর করার নাছোড়বান্দা মনোভাব পরীক্ষার্থীর জন্য আত্মঘাতী হতে পারে।

৪. ব্যাংকিং ডিপ্লোমা পরীক্ষায় ভালো নম্বর পাওয়ার ক্ষেত্রে পরিচ্ছন্ন হাতের লেখা, ভিন্ন আঙ্গিকে উপস্থাপনা, সহজ ছোট বাক্যে লেখার অভ্যাস বেশ কার্যকর। ভিন্ন ভিন্ন বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রিধারী ব্যাংকাররা যেহেতু একই প্রশ্নের পরীক্ষায় অংশ নেন, সুতরাং উত্তরের ভিন্নতা ও বাস্তবিক কাজের ভিত্তিতে নিজস্ব বিশ্লেষণ ইতিবাচকভাবেই দেখা হয়। তা ছাড়া চার্ট, টেবিল ও গ্রাফের মাধ্যমে প্রাসঙ্গিক পরিসংখ্যান ও তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপন করতে পারলে বাড়তি নম্বর পাওয়ার আশা করা যায়।

৫. চাকরির শুরুতেই ব্যাংকিং ডিপ্লোমা সম্পূর্ণ করে নিজেকে এগিয়ে রাখতে পারলে বিভিন্ন সুবিধা পাওয়া যায়। অন্তত ডিপ্লোমা প্রথম পর্ব পাস করতে পারলেও কিছুটা চাপমুক্ত থাকা যায়। তাই একাধিকবার পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ থাকলেও যত দ্রুত সম্ভব সব কটি পরীক্ষা দিয়ে ফেলতে পারলে টপকে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আরও ভালো প্রস্তুতির আশায় একবারে সব পরীক্ষা না দেওয়া কখনোই ভালো সিদ্ধান্ত নয়। পড়াশোনা যতটুকুই হোক আত্মবিশ্বাস রেখে পরীক্ষা দিলে ভালো ফল আসবেই।

লেখকঃ নাজমুল হুদা, সহকারী পরিচালক, বাংলাদেশ ব্যাংক

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

রিলেটেড লেখা

Back to top button