
বাংলাদেশে ব্যাংক প্রতিষ্ঠার সংক্ষিপ্ত ইতিহাস – ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের পর বাংলাদেশ সরকার ঢাকায় অবস্থিত স্টেট ব্যাংক অফ পাকিস্তানের ঢাকা শাখাকে বাংলাদেশ ব্যাংক নাম দিয়ে বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক হিসেবে প্রতিষ্ঠা করে। বাংলাদেশ ব্যাংক আধ্যাদেশ ১৯৭২ পাশ হওয়ার পর বাংলাদেশ ব্যাংক ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর থেকে কার্যকর বলে ঘোষনা করা হয়।
১৯৭১ সালে মুজিব সরকার সমাজতান্ত্রিক ব্যাবস্থার আদলে অর্থনীতিকে গড়ে তোলার লক্ষে এবং যুদ্ধ-বিদ্ধস্ত দেশের উন্নয়নার্থে পর্যাপ্ত তহবিল সরবরাহের উদ্দেশ্যে সকল ব্যাংককে জাতীয়করন করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।
আরও দেখুন:
◾ ব্যাংক ব্যবস্থার ক্রমবিকাশ
বাংলাদেশ ব্যাংকের কার্যনির্বাহী প্রধানের নামকরণ হয় গভর্নর। বাংলাদেশ ব্যাংক একটি রেগুলেরি হিসেবে কাজ শুরু করে। মূলত ব্যাংকগুলোর ব্যাংক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে। রাষ্ট্রের পক্ষে এটি দেশের ব্যাংকিংখাতকে নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। দেশের মুদ্রানীতি কি হবে তা বাংলাদেশ ব্যাংক নির্ধারণ করে। এর পাশাপাশি দেশের বৈদেশিক মুদ্রার তহবিল সংরক্ষণ করে থাকে।
| ব্যাংক, ব্যাংকার, ব্যাংকিং, অর্থনীতি ও ফাইন্যান্স বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ খবর, প্রতিবেদন, বিশেষ কলাম, বিনিয়োগ/ লোন, ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, ফিনটেক, ব্যাংকের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারগুলোর আপডেট পেতে আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ 'ব্যাংকিং নিউজ', ফেসবুক গ্রুপ 'ব্যাংকিং ইনফরমেশন', 'লিংকডইন', 'ইউটিউব', 'হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেল' এবং 'গুগল নিউজ'-এ যুক্ত হয়ে সাথে থাকুন। |
এছাড়াও এটি বৈদেশিক মুদ্রার বিপরীতে বাংলাদেশি টাকার বিনিময়হার নির্ধারণ করে। ১ টাকা ও ২ টাকার কাগুজে নোট ছাড়া সব কাগুজে নোট ছাপায়। একই সঙ্গে বাজারে ছাড়ে। এই বাংলাদেশ ব্যাংকের অন্যতম দায়িত্ব হচ্ছে, সরকারের কোষাগার হিসেবে সুষ্ঠুভাবে দায়িত্ব পালন করা।
এরপর ১৯৭২ সালে জাতীয়করণ আদেশ জারি করে বিদেশি ব্যাংকগুলো ছাড়া অন্যান্য বানিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে জাতীয়করণ করা হয় এবং পৃথক ও স্বতন্ত্র রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক সৃষ্টি করা হয়।
১৯৭২ সালে জাতীয়করণকৃত ৬টি ব্যাংকঃ
১৯৭২ সালে পূর্বের যে সকল ব্যাংক জাতীয়করণ করা হয় সে গুলো নিম্নে তুলে ধরা হলো-
| পুরনো নাম | রাষ্ট্রায়ত্ত হওয়ার পর নাম |
| ১. ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান ২. দি প্রিমিয়ার ব্যাংক লিমিটেড ৩. দি ব্যাংক অব ভাওয়ালপুর | ১. সোনালী ব্যাংক পিএলসি |
| ১. দি হাবিব ব্যাংক লিমিটেড ২. দি কমার্স ব্যাংক লিমিটেড | ২. অগ্রণী ব্যাংক পিএলসি |
| ১. দি ইউনাইটেড ব্যাংক লিমিটেড ২. দি ইউনিয়ন ব্যাংক লিমিটেড | ৩. জনতা ব্যাংক পিএলসি |
| ১. দি মুসলিম কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেড ২. দি স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক লিমিটেড ৩. দি অস্ট্রেলেশিয়া ব্যাংক লিমিটেড | ৪. রূপালী ব্যাংক পিএলসি |
| ১. দি ইস্টার্ণ মার্কেন্টাইল ব্যাংক লিমিটেড | ৫. পূবালী ব্যাংক পিএলসি |
| ১. দি ইস্টার্ণ ব্যাংকিং কর্পোরেশন লিমিটেড | ৬. উত্তরা ব্যাংক পিএলসি |
জাতীয়করনের পর সকল ব্যাংকের নিয়ন্ত্রন সরকারের হাতে চলে গেলে সরকার সেগুলোকে সঠিকভাবে দিকনির্দেশনা দিতে ব্যর্থ হয়। ফলশ্রুতিতে ব্যাংকগুলো মাত্রাতিরীক্ত পরিমাণ তহবিল কোনপ্রকার বানিজ্যিক বিবেচনা ছাড়াই বিতরন করে এবং স্বাভাবিক ভাবেই এই ঋণগুলো সময়মত পরিশোধ হয়নি। ব্যাপক পরিমাণ অপরিশোধিত ঋন নিয়ন্ত্রনের জন্য সরকার কোনপ্রকার লোন মনিটরি পলিসিও চালু করতে ব্যার্থ হয়েছিল। এরই ধারাবাহিকতায় অধিকাংশ ব্যাংক মূলধন স্বল্পতায় পড়ে গিয়েছিল।
১৯৮২ সালে বাংলাদেশ সরকার ব্যাংকিং ব্যাবস্থার প্রথম পূনর্গঠন শুরু করে। এই পূনর্গঠনের আওতায় ছয়টি রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাংককে বিজাতীয়করন করে এবং তৎকালীন সরকারি ব্যাংকগুলোর সাথে সুস্থ প্রতিযোগিতা সৃষ্টির লক্ষে বেসরকারী ব্যাংক প্রতিষ্ঠার অনুমোদন দেয়। ব্যাংকিং খাতকে পূনর্গঠন, খেলাপি ঋণ নিয়ন্ত্রন এবং বেসরকারী পর্যায়ে বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠা ও নিয়ন্ত্রনের লক্ষে ১৯৮৬ সালে ন্যাশনাল কমিশন অন মানি, ব্যাংকিং এন্ড ক্রেডিট নামে একটি কমিশন গঠন করা হয়। এর পরেও এর পরেও ব্যাংকিং খাত দক্ষ ও কার্যকর হয়ে উঠতে সক্ষম হয়নি।








বাংলাদেশে ব্যাংক প্রতিষ্ঠার সংক্ষিপ্ত ইতিহাস
ব্যাংক প্রতিষ্ঠার সংক্ষিপ্ত ইতিহাস