বিভিন্ন প্রকার ব্যাংক নোটের বৈশিষ্ট্য

আমাদের সহকর্মীদের মধ্যে যারা ক্যাশ ডিপার্টমেন্ট এ কাজ করেন, তাদের অনেকেই অভিযোগ করেন যে তাদের জন্য নাকি আমি কোন লেখাই লেখি না। তো আজকের এই লেখাটি ‘বিশেষ করে’ তাদের জন্য। ‘বিশেষ করে’ বলছি কারণ বিষয়গুলো আসলে সবারই জানা থাকা প্রয়োজন। কারণ ব্যাংকে চাকরী করছেন এটা জানলেই মানুষের সাধারণ একটা পারসেপশন হলো যে, ব্যাংকার মানেই নোট চিনতে পারে। তো আজকের লেখাটি এই কাগুজে নোট নিয়েই এবং এই লেখাটি বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সার্কুলার এর অনুকরণে লেখা।
অপ্রচলনযোগ্য বা নন ইস্যু, ত্রুটিপূর্ণ বা মিউটিলেটেড ও দাবীযোগ্য বা ক্লেইমস এর নোট এই শব্দগুলো আমরা প্রায়শই শুনে থাকি। তো এই শব্দগুলোর বৈশিষ্ট্যসমূহ কি আমরা সবাই জানি? এই লেখার মাধ্যমে অপ্রচলনযোগ্য, মিউটিলেটেড ও দাবীযোগ্য নোটের বৈশিষ্ট্যগুলো আজকে আমরা জানার চেষ্টা করবো। উল্লেখিত নোটের বৈশিষ্ট্যগুলো উল্লেখ করে বাংলাদেশ ব্যাংক একটা সার্কুলার ইস্যু করেছিল ২০১৫ সালের ৭ ডিসেম্বর। বাংলাদেশ ব্যাংক এর ডিপার্টমেন্ট অব কারেন্সী ম্যানেজমেন্ট এর সেই ডিসিএম সার্কুলার নং ১৪/২০১৫ তে উল্লেখিত অপ্রচলনযোগ্য, মিউটিলেটেড ও দাবীযোগ্য নোটের বৈশিষ্ট্যগুলো তাদের ২১ মে, ২০১৯ তারিখের ডিসিএম সার্কুলার নং ০৩/২০১৯ এর মাধ্যমে কিছুটা সংশোধন করেছে। তো কথা না বাড়িয়ে সেই সংশোধিত বৈশিষ্ট্যগুলো জেনে নেই চলুন-
১. ‘অপ্রটলনযোগ্য (Non-Issuable) নোট’ এর বৈশিষ্ট্যসমূহ
● অত্যধিক ময়লাযুক্ত নোট। অর্থাৎ এক্ষেত্রে ময়লার জন্য নোটে এক বা একাধিত নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য অষ্পষ্ট থাকবে।
● নোটে অল্প মরিচার চিহ্ন, অল্প রং লাগানো নোট। এক্ষেত্রে অল্প রং বলতে এটা বুঝানো হয়েছে যে, যদি অল্প রং এর জন্য আসল নোটের বৈশিষ্ট্য যাচাই করতে কোন সমস্যা না হয়।
● নোটের উপর অত্যধিক লেখা, একাধিক সিল, অধিক অনুস্বাক্ষর/ স্বাক্ষর বা দাগ যার ফলে নোটের এক বা একাধিক নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য অষ্পষ্ট/ বিকৃত হলে।
● সামান্য ছেঁড়া/ ক্ষুদ্র ছিদ্রযুক্ত নোট। অর্থাৎ যদি ছেঁড়া/ ছিদ্র এরূপ থাকে যার ফলে নোটের কোন নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য ক্ষুণ্ন না হয়।
২. ‘ত্রুটিপূর্ণ (Mutilated) নোট’ এর বৈশিষ্ট্যসমূহ
● ছেঁড়া/ টেপযুক্ত নোট। অর্থাৎ নোটের পরিমাপ ঠিক রেখে ছেঁড়া অংশে নোটের পিছনের দিকে লাগানো সরু টেপ/ সাদা কাগজযুক্ত নোট যাতে আসল নোটের বৈশিষ্ট্য যাচাই করতে কোন সমস্যা না হয়।
● দুই খন্ডে খন্ডিত নোট। যেমনঃ টেপ বা সাদা কাগজ লাগানো নোট তবে এক্ষেত্রে উভয় অংশ সন্দেহাতীতভাবে একই নোটের অংশ বলে বিবেচিত হতে হবে।
● বড় ছিদ্রযুক্ত নোট। তবে ছিদ্রের ফলে নোটের অনুপস্থিতির পরিমাণ নোটের আয়তনের ১০% এর কম হতে হবে।
● নোটের কোন অংশ অনুপস্থিত, তেলযুক্ত নোট।
ব্যাংক, ব্যাংকার, ব্যাংকিং, অর্থনীতি ও ফাইন্যান্স বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ খবর, প্রতিবেদন, বিশেষ কলাম, বিনিয়োগ/ লোন, ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, ফিনটেক, ব্যাংকের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারগুলোর আপডেট পেতে আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ 'ব্যাংকিং নিউজ', ফেসবুক গ্রুপ 'ব্যাংকিং ইনফরমেশন', 'লিংকডইন', 'টেলিগ্রাম চ্যানেল', 'ইন্সটাগ্রাম', 'টুইটার', 'ইউটিউব', 'হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেল' এবং 'গুগল নিউজ'-এ যুক্ত হয়ে সাথে থাকুন। |
৩. ‘দাবিযোগ্য (Claims) নোট’ এর বৈশিষ্ট্যসমূহ
● দুই এর অধিক খন্ডে খন্ডিত নোট, নোটের কোন অংশ অনুপস্থিত যার পরিমাণ নোটের আয়তনের ১০% বা এর বেশি, আগুনে পোড়া/ আগুনের আঁচ লাগানো নোট, ড্যাম্প/ অত্যধিক নরম/ অত্যধিক মরিচাযুক্ত নোট।
● নোটে বেশি রং লাগানো এবং রং এর জন্য আসল নোটের বৈশিষ্ট্য যাচাই করতে সমস্যা হলে।
৪. ‘পুনঃপ্রচলনযোগ্য (Re-Issueable) নোট’ এর বৈশিষ্ট্যসমূহ
● উপরে বর্ণিত (অপ্রচলনযোগ্য, ত্রুটিপূর্ণ ও দাবীযোগ্য) নোট ব্যতিত যে সকল নোট পুনরায় প্রচলনে দেওয়ার উপযোগী সে সকল নোট পুনঃপ্রচলনযোগ্য নোট হিসেবে গণ্য হবে।
আজ তাহলে এ পর্যন্তই। লেখায় কোন ভুল থাকলে ধরিয়ে দিবেন আশা করছি। তাতে করে আমার সাথে সাথে সবারই উপকার হবে।
কার্টেসিঃ প্রনব চৌধুরী