ব্যাংকার

বিআইবিএমের গবেষণা ৩৫% ব্যাংকার অতিরিক্ত চাপে ভোগেন

এক-তৃতীয়াংশের বেশি ব্যাংক কর্মী তীব্র মানসিক চাপে ভোগেন। চাপে থাকা কর্মীদের শরীরেও এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। চাপমুক্ত হতে তারা ওষুধ সেবন ও থেরাপি নিচ্ছেন। যারা দীর্ঘদিন ধরে এ ধরনের চাপে ভুগছেন, তাদের অবস্থা এরই মধ্যে বিপজ্জনক পর্যায়ে পৌঁছে গেছে।

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম) গবেষণায় এ তথ্য পাওয়া গেছে। গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বেশকিছু কারণে চাপে ভোগেন ব্যাংক কর্মীরা। এর মধ্যে চাকরির অনিরাপত্তা, ঊর্ধ্বতনের বাড়তি চাপ ও সহায়তার অভাব, সময়ের চাপ, ঊর্ধ্বতনের সঙ্গে অস্বস্তিকর সম্পর্ক, পরিবার ও কর্মস্থলের মধ্যে অসামঞ্জস্য, বদলি, পদোন্নতিতে দেরি, রাজনৈতিক, সরকারি সংস্থা ইত্যাদির পক্ষ থেকে বাহ্যিক চাপ, অন্যের সঙ্গে তুলনায় বৈষম্য ও হীনম্মন্যতার বোধ অন্যতম।

গবেষণায় দেখা গেছে, ব্যাংক কর্মীদের ৯৯ শতাংশই কোনো না কোনো পর্যায়ের চাপে ভোগেন। এর মধ্যে ১৯ শতাংশ কর্মী ভোগেন বিপজ্জনক চাপে। সহনীয় মাত্রার চাপে ভোগেন ৩৩ শতাংশ, স্বল্প চাপে ভোগেন ১২ শতাংশ এবং তুলনামূলক চাপমুক্তভাবে কাজ করেন ১ শতাংশ কর্মী।

এ সমস্যা পঞ্চাশোর্ধ্ব কর্মীদের মধ্যে বেশি। তাদের ৪০ শতাংশই তীব্র চাপে ভোগেন। এর মধ্যে বিপজ্জনক মাত্রার চাপে ভোগেন ১০ শতাংশ। আবার উপমহাব্যবস্থাপক বা এর উপরের পদমর্যাদার কর্মীদের ৬০ শতাংশ বিপজ্জনক মাত্রার চাপে ভোগেন। এর নিচের ধাপের কর্মীদের মধ্যেও এ হার প্রায় একই।

ব্যাংক, ব্যাংকার, ব্যাংকিং, অর্থনীতি ও ফাইন্যান্স বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ খবর, প্রতিবেদন, বিশেষ কলাম, বিনিয়োগ/ লোন, ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, ফিনটেক, ব্যাংকের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারগুলোর আপডেট পেতে আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ 'ব্যাংকিং নিউজ', ফেসবুক গ্রুপ 'ব্যাংকিং ইনফরমেশন', 'লিংকডইন', 'টেলিগ্রাম চ্যানেল', 'ইন্সটাগ্রাম', 'টুইটার', 'ইউটিউব', 'হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেল' এবং 'গুগল নিউজ'-এ যুক্ত হয়ে সাথে থাকুন।

অপেক্ষাকৃত তরুণ কর্মীদের (৩৫ থেকে ৪৪ বছর) মধ্যেও ৩৫ শতাংশ তীব্র চাপে ও ২৫ শতাংশ বিপজ্জনক চাপে ভোগেন বলে বিআইবিএমের গবেষণায় উল্লেখ করা হয়েছে। নতুন যোগ দেয়া কর্মীরাও চাপমুক্ত থাকতে পারেন না। তাদের ১৩ শতাংশ বিপজ্জনক চাপে ভোগেন।

জরিপে অংশগ্রহণকারীদের ৮৮ শতাংশই স্বীকার করেছেন, অতিরিক্ত চাপের কারণে তাদের কাজের পারফরম্যান্স খারাপ হয়। গতকাল রাজধানীর মিরপুরে অবস্থিত বিআইবিএম অডিটোরিয়ামে ‘অকুপেশনাল স্ট্রেস অ্যান্ড জব পারফরম্যান্স অব এমপ্লয়িজ ইন ব্যাংকস: বাংলাদেশ পারসপেকটিভ’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করা হয়।

গবেষণা দলে ছিলেন বিআইবিএমের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, বিআইবিএমের প্রভাষক আনিলা আলী, আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডের মানবসম্পদ বিভাগের প্রধান মো. মাজহারুল ইসলাম, ডাচ্-বাংলা ব্যাংক লিমিটেডের মানবসম্পদ বিভাগের প্রধান মো. মোশাররেফ হোসেন ও এক্সিম ব্যাংক লিমিটেডের ফার্স্ট অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. মোরশেদ আনোয়ার।

এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর ও বিআইবিএমের নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান এসএম মনিরুজ্জামান। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিআইবিএমের পরিচালক ড. প্রশান্ত কুমার ব্যানার্জ্জী। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিআইবিএমের মহাপরিচালক ড. মো. আখতারুজ্জামান।

এছাড়া আরো উপস্থিত ছিলেন বিআইবিএমের ড. মোজাফফর আহমদ চেয়ার অধ্যাপক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. বরকত-এ-খোদা, পূবালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বিআইবিএমের সুপারনিউমারারি অধ্যাপক হেলাল আহমদ চৌধুরী, বিআইবিএমের সাবেক সুপারনিউমারারি অধ্যাপক মো. ইয়াছিন আলি, সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডের চেয়ারম্যান ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আনোয়ারুল আজিম আরিফ, রূপালী ব্যাংক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ এবং ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী মো. মাহবুব-উল-আলম।

বক্তারা বলেন, নির্দিষ্ট কিছু কর্মীর ওপর শীর্ষ ব্যবস্থাপনার অতি নির্ভরশীলতা অনেক সময় চাপ সৃষ্টি করে। কর্মীদের ওপর চাপ কমাতে সঠিক মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনার ওপর জোর দেন তারা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

রিলেটেড লেখা

Back to top button