সাম্প্রতিক ব্যাংক নিউজ

ব্যাংকের পরিচালন মুনাফা ২০২৪

মুনাফা বেড়েছে বেশির ভাগ ব্যাংকের

ব্যাংকের পরিচালন মুনাফা ২০২৪ – ২০২৪ সালের বিভিন্ন সময়ে দেশের নয়টি ব্যাংক গ্রাহকদের চাহিদা অনুযায়ী টাকা দিতে পারেনি। এসব ব্যাংকের চলতি হিসেবে ঘাটতি ১৮ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। বিতর্কিত ব্যবসায়ী গোষ্ঠী এস আলমের দখলমুক্ত ব্যাংকগুলোর গ্রাহকদেরই বেশি ঝামেলা পোহাতে হয়েছে। দেশের ব্যাংকখাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ অতীতের সব রেকর্ড ভেঙেছে ২০২৪। চলতি বছর মার্চ প্রান্তিক শেষে ব্যাংকখাতের খেলাপি ঋণ ১ লাখ ৮২ হাজার ২৯৫ কোটি টাকা ছিল, যা মোট বিতরণের ১১ দশমিক ১১ শতাংশ ছিল। বছরের পরের প্রান্তিক জুন শেষে তা ছিল ২ লাখ ১১ হাজার ৩৯২ কোটি টাকা বা মোট বিতরণ করা ঋণের ১২ দশমিক ৫৬ শতাংশ খেলাপি। তবে সব কিছু ছাপিয়ে যায় সবশেষ সেপ্টেম্বর প্রান্তিক। সেপ্টেম্বর শেষে রেকর্ড ২ লাখ ৮৪ হাজার ৯৭৭ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে খেলাপি ঋণ। এটি ব্যাংকগুলোর বিতরণ করা ঋণের প্রায় ১৭ শতাংশই খেলাপি। দেশের ইতিহাসে এত পরিমাণ খেলাপি ঋণ অতীতে কখনো দেখা যায়নি। মাত্র তিন মাসেই ব্যাংকগুলোয় ৭৩ হাজার ৫৮৬ কোটি টাকার খেলাপি ঋণ বেড়েছে সব শেষ প্রান্তিকে।

অর্থনীতির টালমাটাল পরিস্থিতির মধ্যেও দেশের ব্যাংকগুলোতে মুনাফার সূচকে ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে। ব্যবসা-বাণিজ্যের অবনতির পরেও ২০২৪ শেষে কর-পূর্ববর্তী মুনাফা বেড়েছে বেশির ভাগ ব্যাংকের। আয় থেকে ব্যয় বাদ দিয়ে যে মুনাফা থাকে, সেটিই কোনো ব্যাংকের পরিচালন মুনাফা। পরিচালন মুনাফা কোনো ব্যাংকের প্রকৃত মুনাফা নয়। এ মুনাফা থেকে খেলাপি ঋণ ও অন্যান্য সম্পদের বিপরীতে প্রভিশন (নিরাপত্তা সঞ্চিতি) সংরক্ষণ এবং সরকারকে কর পরিশোধ করতে হয়। প্রভিশন সংরক্ষণ ও কর-পরবর্তী মুনাফাই হলো একটি ব্যাংকের প্রকৃত বা নিট মুনাফা। প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সাল শেষে ব্যাংকগুলোর মুনাফা (টাকা কোটিতে) তুলে ধরা হলোঃ

আরও দেখুন:
ব্যাংক হলিডেঃ একটি পর্যালোচনা

ব্যাংকের নাম২০২৪২০২৩২০২২
সোনালী ব্যাংক৫,৬৩৪৩,৭২৭২,৫২০
ইসলামী ব্যাংক৩,৪০০২,৭৮১২,৬৪৬
ব্র্যাক ব্যাংক২,৪০০১,৩৯৩
জনতা ব্যাংক১,০২৩৯২৮
ডাচ্বাংলা ব্যাংক২,২৮৫১,৪১৩১,২০০
পূবালী ব্যাংক২,৩৭৫১,৫৬৬১,৪১৫
সিটি ব্যাংক২,২৮৭১,৩৪৯
ইউসিবি
ইস্টার্ন ব্যাংক১,৬৭৫১,১৪৫১,০৫০
ট্রাস্ট ব্যাংক
সাইথইস্ট ব্যাংক৯০০১,০২৮
ব্যাংক এশিয়া১,৭০০১,১৫৩
প্রিমিয়ার ব্যাংক৮৫০৯১৪
অগ্রণী ব্যাংক১,৩০০
এক্সিম ব্যাংক৯৭৫৭৩৬৭৫০
আইএফআইসি ব্যাংক
আলআরাফাহ ইসলামী ব্যাংক৮৪০৮১০
যমুনা ব্যাংক১,০০২৮৩০
এবি ব্যাংক৫৫০৫৪৫
প্রাইম ব্যাংক১,৫০০৯৩৭
মার্কেন্টাইল ব্যাংক৬৪৪৫৫৮৮৪৫
ঢাকা ব্যাংক
এনসিসি ব্যাংক
শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক১,০৫০৮৮৮
ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক৭৪২৭০৫
উত্তরা ব্যাংক৬৯৫
মিউচুয়াল ট্রাষ্ট ব্যাংক১,১১০৭৩১
সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক৬০০৫২০
এনআরবিসি ব্যাংক৪১৯৩৭৪৪৫৫
ইউনিয়ন ব্যাংক৭৫৪৪০৪১৫
স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক২০৭১৬০
গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক
ন্যাশনাল ব্যাংক
মধুমতি ব্যাংক৩৩৮২১৩১৮৮
এসবিএসি ব্যাংক৩০৪২২৪২০০
মিডল্যান্ড ব্যাংক২১০১৭৪১৮০
রূপালী ব্যাংক৫৭৫৫৬০১২৬
মেঘনা ব্যাংক২০৫১৬৫৭৫
ওয়ান ব্যাংক৮৩০৩৬১
এনআরবি ব্যাংক২০২১৪৩১৩০
বেসিক ব্যাংক৩৫০৩৭১
বিডিবিএল২৫২৫
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক৭৪৯৫৬১
সিটিজেনস ব্যাংক.৫৪

ব্যাংকগুলোর মধ্যে কেবল প্রিমিয়ার ব্যাংকের পরিচালন মুনাফা আগের বছরের তুলনায় কিছুটা কমেছে। বাকি সবক’টি ব্যাংকেরই মুনাফা বাড়ার তথ্য পাওয়া গেছে। তবে পরিচালন মুনাফার এসব তথ্য পরে কিছুটা বাড়তে বা কমতে পারে। কেননা কিছু ব্যাংক গতকালও ২০২৪ সালের হিসাব-নিকাশ চূড়ান্ত করতে পারেনি। এসব ব্যাংক থেকে পাওয়া সম্ভাব্য মুনাফার তথ্য এখানে উল্লেখ করা হয়েছে। আয় থেকে ব্যয় বাদ দিয়ে যে মুনাফা থাকে সেটিকেই বলা হয় পরিচালন মুনাফা। তবে এটি কোনো ব্যাংকেরই প্রকৃত মুনাফা নয়। পরিচালন মুনাফা থেকে খেলাপি ঋণ ও অন্যান্য সম্পদের বিপরীতে প্রভিশন (নিরাপত্তা সঞ্চিতি) সংরক্ষণ এবং সরকারকে কর পরিশোধ করতে হয়। প্রভিশন ও কর-পরবর্তী এ মুনাফাকেই বলা হয় ব্যাংকের প্রকৃত বা নিট মুনাফা।

ব্যাংক, ব্যাংকার, ব্যাংকিং, অর্থনীতি ও ফাইন্যান্স বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ খবর, প্রতিবেদন, বিশেষ কলাম, বিনিয়োগ/ লোন, ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, ফিনটেক, ব্যাংকের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারগুলোর আপডেট পেতে আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ 'ব্যাংকিং নিউজ', ফেসবুক গ্রুপ 'ব্যাংকিং ইনফরমেশন', 'লিংকডইন', 'টেলিগ্রাম চ্যানেল', 'ইন্সটাগ্রাম', 'টুইটার', 'ইউটিউব', 'হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেল' এবং 'গুগল নিউজ'-এ যুক্ত হয়ে সাথে থাকুন।

কিছু ব্যাংকের মুনাফায় অস্বাভাবিক প্রবৃদ্ধির কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে দেখা গেছে, হাতে নগদ তারল্য বেশি থাকা ব্যাংকগুলোই মুনাফার দিক থেকে সবচেয়ে বেশি ভালো করেছে। এক্ষেত্রে ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগের প্রধান খাত ছিল সরকারি ট্রেজারি বিল-বন্ড। ৫-৬ শতাংশ সুদে সংগৃহীত আমানত ১২-১৩ শতাংশ সুদের বিল-বন্ডে বিনিয়োগ করা হয়েছে। পর্ষদ ভেঙে দেয়া ব্যাংকগুলো থেকে বের হয়ে যাওয়া আমানত স্বল্প সুদে টেনে নিয়েছে সবল ব্যাংকগুলো। বিল-বন্ডের পাশাপাশি স্বল্প সুদে সংগৃহীত এ আমানত থেকে ১৫-১৬ শতাংশে সুদে ঋণ বিতরণ করা হয়েছে। এ উচ্চ স্প্রেডের (ঋণ ও আমানতের সুদহারের ব্যবধান) প্রভাবেই সবল ব্যাংকগুলোর পরিচালন মুনাফায় অস্বাভাবিক প্রবৃদ্ধি হয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

রিলেটেড লেখা

Back to top button