মানি-লন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধে ইসলাম, প্রযুক্তি ও সম্ভাব্য প্রাসঙ্গিকতা

ম. রাশেদুল হাসান খানঃ মানি-লন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধে ইসলাম, প্রযুক্তি ও সম্ভাব্য প্রাসঙ্গিকতা – ইসলামের মূল আদর্শই হচ্ছে সমগ্র বিশ্বে তথা দেশে ফালাহ্ বা কল্যাণ প্রতিষ্ঠা করা। ফলে, ইসলামী ব্যাংকিং ব্যবস্থাপনা ‘সম্পদ ভিত্তিক’ ক্রয়-বিক্রয় বাণিজ্য কার্যক্রমে সম্পৃক্ত থেকে সমাজের কল্যাণ বয়ে আনে, অর্থনীতিতে সম্পদের ভারসাম্য আনয়ণ করে; যা প্রকৃতপক্ষেই ইসলামী শরীয়া’তের মাকাসিদ (উদ্দেশ্য) প্রতিষ্ঠিত করার জন্য কাজ করে। শরীয়াহ্ ভিত্তিক এহেন ব্যাংকিং ব্যবস্থাপনাই হচ্ছে, ‘ইসলামী ব্যাংকিং কার্যক্রম’-এর ‘অন্তনিহিত সৌন্দর্য্য’।
ইসলাম ও সম্পৃক্ত অপরাধসমূহ:
ইসলামী শরীয়াহ্-এ নিষিদ্ধ ভিত্তিগুলো যেমন: ঘারার (প্রতারণা), ধরার (ক্ষতিকারক), মাইজার (জুয়া), রিবা (সুদ) ইত্যাদিতে যোগসূত্র সম্বলিত ব্যক্তি/সম্ভার সাথে সম্পর্ক স্থাপনে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে বলা হয়েছে। মানি-লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ (সংশোধিত ২০১৫)-এ উল্লেখকৃত ২৯ (উনত্রিশ)টি সম্পৃক্ত অপরাধের সেটের সাথে অধুনা নতুন ০২ (দুই)টি অপরাধের (সাইবার ক্রাইম ও পর্নোগ্রাফী) ইসলামের নিষিদ্ধ ঘোষিত ভিত্তিগুলোর সাদৃশ্য রয়েছে; কেবল ইসলামী ‘রিবা (সুদ)’ সম্পর্কিত ধারণা ছাড়া। তাই মানি-লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন-২০১২ (সংশোধিত ২০১৫), সন্ত্রাসী অর্থায়ন প্রতিরোধ আইন-২০০৯ (সংশোধিত ২০১৩) ও অপরাধ সম্পর্কিত বিষয়ে পারস্পরিক সহায়তা আইন ২০১২-এ ধারাসমূহ ও বিবিধ নির্দেশনা পরিপালনে সম্যক ধারনালব্ধ জ্ঞান আহরণে সচেষ্ট থাকতে হবে; যাতে দেশের প্রচলিত “মানি-লন্ডারিং ও সন্ত্রাসী কার্যে অর্থায়ন” প্রতিরোধে বিদ্যমান বর্ণিত কার্যকরী আইনী কাঠামো পরিপালনে সক্ষমতা অর্জন করা যায়। অন্যথায়, এর ব্যত্যয়ে ব্যাংক কিংবা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ব্যাপক সুনামহানি ও আইনী জটিলতার সাথে ব্যাংকের নিয়মিত স্বাভাবিক কার্যাবলী সম্পাদনে বিঘ্ন হওয়ার সম্ভাবনাও অমূলক নয়।
ঝুঁকি ও পেমেন্ট গেইটওয়ে:
“মানি-লন্ডারিং, সন্ত্রাসী কার্যে অর্থায়ন কিংবা ব্যাপক ধ্বংসাত্মক অস্ত্রের বিজ্ঞানে অর্থায়ন প্রতিরোধ” আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রণালীতে (Channel) অত্যন্ত চর্চিত ও বহুল আলোচিত বিষয়; এবং যার নেতিবাচক প্রভাব দেশের অর্থনীতি তো বটেই বহির্বিশ্বেও ব্যাপকভাবে সম্মুচ্চারিত হচ্ছে। বর্তমানে আর্থিক প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ট ঝুঁকি ব্যবস্থাপনায় (আল ইদারাতুল আল খাতার) বহুল স্বীকৃত প্রধান ০৬ (ছয়) টি ঝুঁকির (আল খাতান) মধ্যে ‘মানি-লন্ডারিং’ ও ‘তথ্য-প্রযুক্তি’ ঝুঁকি অন্যতম হিসেবে প্রাধান্য পাচ্ছে। ইত্যবসনে, এই ‘মানি-লন্ডারিং’ ও ‘তথ্য-প্রযুক্তি’ দুই ঝুঁকির সম্মিলনে অভিনব প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিকল্প পন্থায় ‘মানি-লন্ডারিং’ কিংবা ‘সন্ত্রাসী কার্যে অর্থায়ন’ আরও ‘বৈচিত্র্যে’ প্রচলিত ধারাকে পাশ কাটিয়ে আবির্ভূত হতে দেখা যাচ্ছে। তাই, “মানি-লন্ডারিং কিংবা সন্ত্রাসী কার্যে অর্থায়ন” প্রতিরোধের প্রক্রিয়ায় প্রযুক্তির ব্যবহার ব্যতিরেকে, সময়োপযোগী নিয়ন্ত্রণ বা যাচাই পদ্ধতি গ্রহণের কোন বিকল্প নেই। প্রায়শঃই দুষ্কৃতিকারীরা বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংকটে, অতিমারির প্রভাবে, ভঙ্গুর সরবরাহ ব্যবস্থাপনায়, প্রযুক্তির ফাঁকফোকরে, রাজনৈতিক বলয়ে, মৌলবাদের ব্যাপকতা, বৈদেশিক বাণিজ্যের আড়ালে ও দুর্নীতির বিস্তারের সুযোগে সম্পৃক্ত অপরাধলদ্ধ অর্থ ব্যাংকিং খাতে অনুপ্রবেশকরত: উক্ত অর্থ লন্ডারিং/বৈধতায় সদা জাগ্রত। বর্তমানে প্রযুক্তি সহজলভ্যতা ও গ্রহনযোগ্যতায়, ‘সাইবার’ অপরাধের বাড়াবাড়ির উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ট নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থাসমূহের সুপারিশক্রমে ‘সাইবার অপরাধ’ সম্পৃক্ত অপরাধ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে, তাই আমাদের সকলকে ‘সাইবার’ অপরাধের সাথে সম্পৃক্ত ক্রিপ্টোকারেন্সি, ডিজিটাল কারেন্সি, গণ অর্থায়ন (ক্রাউড ফান্ডিং), ডিজিটাল হুন্ডি, অনলাইন জুয়া, অনলাইন গেইমিং, বিভিন্ন পেমেন্ট গেইটওয়ের (Gateway) মাধ্যমে লেনদেন সম্পর্কে সচেতনতার বিকল্প নেই ও প্রতিরোধে কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তার (Artificial Intelligence) ও BigData এর প্রায়োগিকতা সময়ের দাবী। এ্যাপস্/থার্ড-পার্টি/ডেবিট/ভার্চুয়াল কার্ড, প্রি-পেইড/ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে উক্ত প্লাটফর্মের বিভিন্ন পেমেন্ট গেইটওয়ের অবৈধ লেনদেনেও সতর্কতা অবলম্বন করে তাৎক্ষনিক নজরদারিতেও আনতে হবে। Payment Service Operator (PSO) Payment Service Provider (PSP) প্লাটফর্মে লেনদেন সেবার মধ্যস্ততাকারী Third Party Payment Processor (TPP) সর্ম্পকে/সংযোজনেও স্বচ্ছ ধারনা থাকা আবশ্যক। এতদপ্রেক্ষিতে; আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্ট আকার-প্রকৃতি, গ্রাহকের শ্রেণী, ব্যাংকিং পরিষেবার বৈশিষ্ট্য, পরিষেবার মাধ্যম, পরিষেবাদানের প্লাটফর্মের ঝুঁকিকে সামগ্রিক বিবেচনায় এনে স্বয়ংক্রিয়-প্রযুক্তি-নির্ভর যাচাই ও সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণের Risk Based Approach (RBA) পদ্ধতি অবলম্বনকরত: “মানি-লন্ডারিং, সন্ত্রাসী কার্যে অর্থায়ন” প্রতিরোধ করা সম্ভবপর হবে।
Bancasurance ও পুঁজি বাজার:
অধুনা বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে ব্যাংকেও গ্রাহক বীমা গ্রহনে উৎসাহ প্রদানে ও দাবী প্রক্রিয়া স্বচ্ছতা আনয়নে “Bancasurance” নামক পরিষেবা শাখার মাধ্যমে কিছু ব্যাংক ইতিমধ্যেই প্রচলন করছে। প্রচলিত বীমা পণ্যের সাথে প্রতিযোগিতামূলক বাজারে ‘তাকাফুল’ ইসলামি বীমা সেবাও নিকট ভবিষ্যতে আত্মপ্রকাশ করবে। অপরদিকে, পুঁজি বাজারের লেনদেনের পূর্বশর্তই হচ্ছে তফশিলি ব্যাংকে গ্রাহকের হিসাব নম্বরকে Beneficial Owner (BO) হিসেবে নিবন্ধিত করা ও ব্যাংকের তারল্য সরবরাহের মাধ্যমও বটে। এই দুই মাধ্যমেও মানি-লন্ডারিং করার অপ-প্রয়াশ দেশে/বিদেশে পরিলক্ষিত হয়ে থাকে, তাই খাত-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন Redflag আমলে এনে পরিষেবা/পণ্যের বৈশিষ্ট্যকে পরিমার্জন করতে হবে।
| ব্যাংক, ব্যাংকার, ব্যাংকিং, অর্থনীতি ও ফাইন্যান্স বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ খবর, প্রতিবেদন, বিশেষ কলাম, বিনিয়োগ/ লোন, ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, ফিনটেক, ব্যাংকের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারগুলোর আপডেট পেতে আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ 'ব্যাংকিং নিউজ', ফেসবুক গ্রুপ 'ব্যাংকিং ইনফরমেশন', 'লিংকডইন', 'ইউটিউব', 'হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেল' এবং 'গুগল নিউজ'-এ যুক্ত হয়ে সাথে থাকুন। |
Bangladesh Financial Intelligence Unit (BFIU) ও আন্তর্জাতিক নিয়ন্ত্রণকারী সংগঠন বা সংস্থা:
বাংলাদেশে মানি-লন্ডারিং ও সন্ত্রাসী কার্যে অর্থায়ন প্রতিরোধের কেন্দ্রীয় পরিপালন কাঠামোর প্রধান সংস্থা হিসেবে; Bangladesh Financial Intelligence Unit (BFIU), ‘বিএফআইইউ’ এর বিভিন্ন নীতিমালা, গাইডলাইন, গাইডেন্স নোটস্, নগদ লেনদেন রিপোটিং, সন্দেহজনক রিপোটিং, তথ্য অনুসন্ধান, লেনদেন স্থগিকরণসহ ‘সিস্টেম চেক ইন্সপেকশনস্’-এর মাধ্যমে ব্যাংকগুলোকে পরামর্শ ও সহায়তা দানে ২০১২ সাল থেকেই একযোগে কাজ করে যাচ্ছে। বিএফআইইউ (BFIU)-এর নির্দেশনা মতে, “গ্রাহক নির্বাচন নীতিমালা” অনুযায়ী ব্যাংকগুলোর গ্রাহক পরিচিতি (KYC), হিসাব খোলা (ব্যক্তিক/অব্যক্তিক), গ্রাহকের ঝুঁকি নিরূপন (Risk Grading), গ্রাহকের লেনদেন পরীক্ষণ, সাবক্ষণিক লেনদেন পর্যবেক্ষণ, সন্দেহজনক লেনদেন দাখিল, নগদ লেনদেন রিপোর্ট (CTR) ও সন্দেহজনক গ্রাহকের লেনদেন (STR/SAR/SMR) দাখিল ও ক্ষেত্রমতে স্থগিকরণের প্রক্রিয়া গ্রহণ করে থাকে। এছাড়া, যে কোন হিসাব খোলা বা বৈদেশিক বাণিজ্য ভিত্তিক লেনদেন প্রক্রিয়ার প্রারম্ভেই জাতিসংঘসহ বিভিন্ন দেশী, আন্তর্জাতিক নিয়ন্ত্রণকারী সংগঠন বা সংস্থা কতৃর্ক নিষিদ্ধ ঘোষিত ও প্রদত্ত তালিকায় নিষিদ্ধ ব্যক্তি/সম্ভার (Sanctioned) তথ্য যাচাই করার নিদের্শনা আর্থিক সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানে কর্মকর্তাগণকে যথোপযুক্তভাবে পরিপালন করতে হয়। নিষিদ্ধ তালিকা ঘোষণাকারী/প্রদানকারী আন্তর্জাতিক নিয়ন্ত্রণকারী সংগঠন/সংস্থা যেমন: Fiancial Action Task Force (FATF), United Nations Security Council Resolution (UNSCR), Local Sanction List, The Office of Foreign Assets Control (OFAC) ইত্যাদির গ্রহনযোগ্য ও বহুলভাবে ব্যবহৃত নিষিদ্ধ তালিকা (Sanction list) যাচাইকালে পরিসংখ্যানিক প্রথম ভ্রান্তি (False Positive) এর তালিকা প্রযুক্তিগতভাবে সংযোজন ও সংরক্ষণ করতে হবে। এক্ষেত্রে, বর্তমানে বিএফআইইউ (BFIU) কর্তৃক মাস্টার সার্কুলার-২৬ (জুন ১৬, ২০২০ ইং) ব্যাংকগুলোর জন্য অবশ্য পালনীয় নির্দেশনাসমূহের এক বিশাল নির্দেশনার তথ্যভান্ডার।
আধুনিক ই-কেওয়াইসি (eKYC) ও ‘চতুর্থ শিল্প বিপ্লব:
Bangladesh Financial Intelligence Unit (BFIU), ‘বিএফআইইউ’ কর্তৃক নির্দেশিত আধুনিক ই-কেওয়াইসি (eKYC) প্রযুক্তি অবলম্বন করে হিসাব খোলার প্রত্রিয়া বাংলাদেশের আর্থিক সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানে ২০২০ ইং সাল থেকেই চালু করা হয়েছে, যার মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে গ্রাহকের পরিচিতিমূলক তথ্য যাচাইকরত: হিসাব খোলার ফরম পূরণ করাও সম্ভব হচ্ছে। এক্ষেত্রে, Mobile Financial Service (MFS) অগ্রণী ভূমিকায় আর্বিভূত হয়ে আর্থিক লেনদেনে Payment Ecosystem এ বিপ্লব এনেছে। প্রকৃতপক্ষে, ই-কেওয়াইসি প্রযুক্তির সম্মিলনের এহেন গ্রাহক সেবা পদ্ধতি, ব্যাংকিং শিল্পে ‘চতুর্থ শিল্প বিপ্লব’ (IR 4.0) এর বাস্তবায়নের ভিত্তিপ্রস্তর হিসেবে পরিগণিত। এ রূপরেখায়, ‘চতুর্থ শিল্প বিপ্লব’ (IR 4.0) এর ‘কৃত্রিম বুদ্ধিমন্ডা’ ও ‘যন্ত্র শিক্ষক’ (Machine Learing) প্রয়োগে “মানি-লন্ডারিং, সন্ত্রাসী কার্যে অর্থায়ন” প্রতিরোধে অর্থপ্রযুক্তি (FinTech)-এর ব্যবহার বিশেষ করে নিষিদ্ধ ব্যক্তিবর্গের তালিকা যাচাই কার্যে, লেনদেন পরিক্ষণ/যাচাই/তদারকি কার্যে এবং সোশ্যাল মিডিয়ার বিরূপ/প্রতিকূল তথ্য যাচাইয়ের ক্ষেত্রে আরও একধাপ এগিয়ে নিয়ে যাবে। উপান্ত বিজ্ঞানের (Data Science) এর উপাত্ত বিশ্লেষণ (Data Analytics) প্রক্রিয়ার মাধ্যমেও ক্ষুদ্র লোন প্রাপ্তি সম্ভব হচ্ছে।
ইসলামী মু’আমালাত ও তথ্য প্রযুক্তির কার্যকরী প্রক্রিয়া/পদ্ধতি (Tools):
ইসলামী শরীয়তে মু’আমালাত হচ্ছে; পারস্পরিক সম্মতিক্রমে, বৈধতার আলোকে ও স্বচ্ছতার মাধ্যমে লেনদেন পরিচালনা করা। মানি-লন্ডারিং ও সন্ত্রাসী কার্যে অর্থায়ন প্রতিরোধের সর্ব গ্রহণযোগ্য-কার্যকরী পদ্ধতি হচ্ছে নিয়মিতভাবে গ্রাহকগণের লেনদেন বিভিন্ন সূচকে পর্যবেক্ষণের আওতায় নিয়ে আসা। উক্ত লেনদেনগুলো সংশ্লিষ্ট গ্রাহকের আয়ের উৎস/পেশা/ব্যবসার ধরন/চাহিদা/ভৌগোলিক অবস্থানের ভিত্তিতে যাচাই করে গ্রাহকের সম্ভাব্য প্রত্যাশিত লেনদেনের ধারা (Pattern) নির্ণয় করা হয়। এই ধারা (Pattern) কিংবা একক কোন (One-Off) লেনদেন প্রত্যাশা বা স্বাভাবিকের চেয়ে যৌক্তিকভাবে ভিন্নতর হলেই ‘সন্দেহজনক’ লেনদেন (STR/SAR/SMR) হিসেবে বিবেচিত হবে। ক্ষেত্র বিশেষে, উক্ত ‘সন্দেহজনক’ লেনদেন যাচাই করত: গ্রাহক কর্তৃক প্রয়োজনীয় কাগজাদি/তথ্যাদি উপস্থাপন/সংকলন স্বাপেক্ষে ও ‘গ্রাহক-ব্যাংকার’ সন্তুষ্টির বিচেনায় প্রযোজ্য ক্ষেত্রে ‘সন্দেহজনক লেনদেন/সন্দেহজনক কর্মকান্ড’ (যদি থাকে) বিএফআইইউ (BFIU) বরাবর দাখিল করার বিষয়ে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের আইনী বাধ্যবাধকতা রয়েছে। উপাত্ত বিজ্ঞানের (Data Science) মাধ্যমে পরিসংখ্যানের গড় (Average) ও গণসংখ্যা বিশ্লেষণ (Frequency Analysis), প্রমিত বিচ্যুতি (Standard Deviation), বিভেদাংক (Coefficient of Variation) ইত্যাদি তথ্য-উপাত্ত আমলে এনে প্রযুক্তির ব্যবহারেও ‘সন্দেহজনক’ লেনদেন যাচাই কিংবা তালিকা প্রস্তুত সম্ভব। তাই, এহেন অস্বাভাবিক লেনদেন যাচাই/সনাক্ত করার নিমিত্তে “মানি-লন্ডারিং ও সন্ত্রাসী কার্যে অর্থায়ন” বিভাগ কর্তৃক বিশ্লেষণকৃত ও প্রায়োগিক বাস্তবতার আলোকে স্বয়ংক্রিয় কার্যকরী প্রক্রিয়া/পদ্ধতি (Tools) তথ্য প্রযুক্তি বিভাগের সহায়তায় ব্যাংকের CORE Banking প্লাটফর্মে সংযোজন করার বিকল্প নাই। উক্ত পদ্ধতিসমূহ (Tools) স্ব-উদ্যোগে নিয়মিতভাবে ব্যবহারে, ব্যাংকের কোন শাখা/উপ-শাখা/বিভাগ ‘মানি-লন্ডারিং ও সন্ত্রাসী অর্থায়ন প্রক্রিয়া’-এর অযাচিত ‘বাহক’ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে কিনা? তা’ চিহ্নিত করা অনেকাংশেই সম্ভবপর হবে, উক্ত পদ্ধতিসমূহ নিয়মিত বিরতিতে কিংবা প্রয়োজনমাফিক প্রাযুক্তিক পরিবর্তন/পরিমার্জন/সংশোধনের সক্ষমতা সম্পাদনে পরিপালন কর্মকর্তা/নির্বাহীদের ধারনা ও জ্ঞানের আবশ্যকতা রয়েছে।
বাণিজ্য ভিত্তিক মানি লন্ডারিং (TBML)
আর্থিক প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ট সংস্থা (বাংলাদেশ ব্যাংক, বিএফআইইউ, বিআইবিএম, বিএবি) কর্তৃক পরিচালিত অর্থমিতির (Econometrics) উপাত্ত ও সেমি নামে প্রদর্শিত তথ্য-উপাত্তে সমালোচিত হচ্ছে যে, বৈদেশিক বাণিজ্য ভিত্তিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ব্যাংকিং প্রণালী (Channel) ব্যবহারে প্রায় ৮৭% মানি-লন্ডারিং হয়ে থাকে। বিএফআইইউ ইতোমধ্যেই উক্ত তথ্য-উপাত্তের গুরুত্ব অনুধাবন করে, বিএফআইইউ সার্কুলার-২৪; ২০১৯ ইং ‘বাণিজ্য ভিত্তিক মানি-লন্ডারিং প্রতিরোধ গাইডলাইন’ নীতিমালার আলোকে প্রত্যেক ব্যাংকের নিজস্ব ‘বাণিজ্য ভিত্তিক মানি-লন্ডারিং প্রতিরোধ গাইডলাইন’ (TBML) প্রণয়নকরত: শাখা/বিভাগ পর্যায়ে সংশ্লিষ্ট নির্বাহী/কর্মকর্তাদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণের আওতায় এনেছে। নীতিমালা অনুযায়ী, ‘আন্তর্জাতিক বাণিজ্য’র ব্যবসার ক্ষেত্রে, গ্রাহকের Trade Transaction Profile (TTP) ফরম পূরণের মাধ্যমে ট্রেড সংক্রান্ত ঝুঁকি-নিরূপণ করে, CORE Banking প্লাটফর্মে সংযোজন করে ঝুঁকি ব্যবস্থাপনায় উদ্যোগী হতে হবে। শেল ব্যাংক/ব্যাংকিং এর সাথে সম্পর্ক স্থাপনে বিধিনিষেধ আরোপসহ পণ্যের/সেবার ওভার/আন্ডার ইনভয়েসিং যাচাই করে ‘বাজার-মূল্য’-এর তথ্য-ভান্ডার সংরক্ষণ করার নির্দেশনা আছে; যাতে মুদ্রা পাচার (Capital Flight) ও বাণিজ্য ভিত্তিক মানি-লন্ডারিং প্রতিরোধ করা যায়। বৈদেশিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সাথে করেসপন্ডিং সম্পর্ক স্থাপনের প্রাক্কালে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সংস্থা Financial Action Task Force (FATF)-এর Jurisdictions under Increased Monitoring (FATF Grey List) এবং High-Risk Jurisdictions subject to a Call for Action (FATF Black List) হিসেবে তালিকাভুক্ত দেশের ক্ষেত্রে কোনো ব্যক্তি বা সন্তান (আইনগত প্রতিনিধি, আর্থিক প্রতিষ্ঠানসহ যে কোনো প্রতিষ্ঠান) সাথে ব্যবসায়িক সম্পর্ক স্থাপন ও বজায় রাখা এবং লেনদেন সম্পাদনের ক্ষেত্রে অধিকতর সতর্কতামূলক ব্যবস্থা (Enhanced Due Diligence) গ্রহণ করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। আন্তর্জাতিক পেমেন্ট গেইটওয়ে SWIFT এর মাধ্যমে রেমিট্যান্স গ্রহণে/প্রেরণের ক্ষেত্রে ‘কভার পেমেন্ট’ সংযুক্ত আছে কিনা? তা’ যাচাই করতে হবে ও প্রকৃত সুবিধাভোগী চিহ্নিত করতে হবে।
ক্রেডিট ব্যাকড মানি লন্ডারিং (CBML)
অবৈধ অর্থের উৎস হতে ঋণ গ্রহণ/পূণঃ পূণঃ জটিল লেনদেনের মাধ্যমে ঋণের বৈধতা আণয়নে বা উৎস গোপন করে, ঋণ/অর্থ প্রাপ্তিকে বিনিয়োগ/ঋণ সমর্থিত মানি-লন্ডারিং (Credit Backed Money Laundering) হিসেবে সজ্ঞায়িত করা যায়। যদিও Credit Backed Money Laundering (CBML) সম্পর্কে দৃশ্যত কোন Framework নাই, তথাপি বিনিয়োগ/ঋণ ভিত্তিক মানি-লন্ডারিং প্রতিরোধের (CBML) নিমিত্তে ইসলামী বিনিয়োগ-এর বিনিয়োগ প্রশাসনের প্রচলিত নিয়মাচার পালনপূর্বক পূর্ণাঙ্গ ও সঠিক দলিলাদিসহ (আল মুসতানা দাতু আল ইসতেসমানিয়্যাহ) প্রত্যেক ‘ডিল’সহ (আল সাফাকাহ) নথিভূক্তকরন/বন্ধকীকৃত (মেহান) সম্পত্তির সঠিকতা যাচাইয়ের সাথে বিনিয়োগ/ঋণ-এর উদ্দেশ্য/লক্ষ্য অনুযায়ী ব্যবহার নিশ্চিতকরত: গ্রাহকদেরও তদারকির আওতায় আনতে হবে। বিনিয়োগের বহুল প্রচালিত ও প্রতিষ্ঠিত গ্রাহক/সন্তান 5Cs (Character, Capacity, Capital, Collateral, Condition) মূল্যায়নের মাধ্যমেও বিনিয়োগ/ঋণ সমর্থিত মানি-লন্ডারিং অনেকাংশে হ্রাস/প্রশমিত করা যায় এবং এতদপ্রসঙ্গে হিসাবে প্রকৃত সুবিধাভোগী চিহ্নিত করাও বর্তমান প্রেক্ষাপটে অতীব জরুরী। উল্লেখিত 5Cs ছাড়াও গ্রাহকের Credit Worthiness বিনিয়োগ/ঋণ গ্রহণের যোগ্যতা বিশ্লেষণের মাধ্যমেও বিনিয়োগ/ঋণ বিতরণকে অনেকাংশে ঝুঁকিমুক্ত রাখা যায়। ইসলামী ব্যাংকিং এর শরীয়াহ ও মু’য়ামালাত সমর্থিত বিনিয়োগ পদ্ধতির নিয়মাচার কার্যকরীভাবে পরিপালনের মাধ্যমে মানি-লন্ডারিং/মুদ্রা পাচার (Capital Flight) অনেকাংশে হ্রাস/প্রশমিত করা যায়।
প্রশিক্ষণ/কর্মশালা:
কার্যকরী ও প্রয়োজনানুযায়ী ‘প্রশিক্ষণ’ কিংবা ‘কর্মশালা’ যে কোন স্তরের ব্যাংকারের পেশাগত দক্ষতা/মান উন্নয়নে এবং তা কার্যক্ষেত্রে প্রয়োগের মাধ্যমে ব্যাংকের শাখা/উপশাখা/বিভাগের সংশ্লিষ্ট ঝুঁকি হ্রাস তো বটেই, বাণিজ্য প্রসারেও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে সক্ষম। উল্লিখিত প্রশিক্ষণগুলোতে শুধুই তাত্ত্বিক সম্যক ধারণা না দিয়ে, প্রযুক্তির প্রায়োগিক বিষয়ে যেমন: কৌশল/প্রক্রিয়া/পদ্ধতি (Tools) সম্পর্কে নিয়মিতভাবে আলোচনা ও প্রয়োগে গুরুত্ব দিতে হবে। প্রশিক্ষণ/কর্মশালার পূর্ণাঙ্গ সুফল পাওয়ার জন্য ব্যাংকের জেষ্ঠ্যদের অগ্রনী ভূমিকা পালন করতে হবে; তাঁদের ‘হিকমাহ’ তথা বিস্তৃত কর্ম অভিজ্ঞতা ও প্রজ্ঞাকে অপেক্ষাকৃত নবীণদের সাথে পারস্পরিকভাবে বিনিময়ের মাধ্যমে প্রযুক্তিগত পেশাদারিত্ব অর্জনে সফলকাম হতে হবে।
স্তরভিত্তিক ‘প্রতিরোধ’ কার্যক্রম:
মানি-লন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধে বিশ্বে গ্রহণযোগ্য Framework হচ্ছে; আর্থিক প্রতিষ্ঠানে কার্যকরী ‘প্রতিরোধ’ কার্যক্রম অনুসরণ করা। যেখানে, শাখা/উপশাখায়/বিভাগের কর্মকর্তারা মানি-লন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধ সংশ্লিষ্ট নীতিমালাসমূহ, নির্দেশনাসমূহ অনুসরনকরত: যাচাই করে গ্রাহক অনবোর্ড ও গ্রাহকের লেনদেন পর্যবেক্ষণ করাকে প্রথম স্তরের ‘প্রতিরোধ’; যোগ্য ও প্রযুক্তিবান্ধব প্রধান মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ পরিপালন কর্মকর্তার (CAMLCO) নেতৃত্বে ‘মানি-লন্ডারিং ও সন্ত্রাসী অর্থায়ন প্রতিরোধ’ বিভাগের মাধ্যমে প্রণয়নকৃত নীতিমালাসমূহ, নির্দেশনাসমূহ, কৌশলসমূহ, লেনদেন পর্যবেক্ষণের টুলস্, নগদ লেনদেন রিপোর্টিং, সন্দেহজনক রিপোর্ট দাখিলসহ শাখা/উপশাখায়/বিভাগে কার্যকরীভাবে প্রায়োগিক পরিপালনের প্রক্রিয়া/পদ্ধতি/কৌশল উদ্ভাবনের মাধ্যমে দ্বিতীয় স্তরের ‘প্রতিরোধ’; সর্বশেষে তৃতীয় স্তরের ‘প্রতিরোধ’ ব্যবস্থা হচ্ছে, অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা ও পরিপালন বিভাগ কিংবা স্বনামধন্য নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক স্বাধীনভাবে শাখা/উপশাখা/বিভাগ পর্যায়ে উক্ত নীতিমালাসমূহ, নির্দেশনাসমূহ, কৌশলসমূহ, লেনদেন পর্যবেক্ষণের টুলস্, নগদ লেনদেন রিপোর্টিং, সন্দেহজনক রিপোর্টের দাখিলের প্রায়োগিক বাস্তবায়ন/কার্যকারীতা যাচাইকরণ।
AML/CFT/WMD নতুন ধরনের/পদ্ধতির (Typology)
পরিপালন প্রক্রিয়া নিশ্চিত করার লক্ষ্যে, পরিপালন কর্মকর্তা/নির্বাহীদেরও প্রয়োজনানুযায়ী দক্ষতা অর্জনে প্রশিক্ষিত করতে হবে, দেশী/বিদেশী প্রশিক্ষশ কার্যক্রমে সমসাময়িকতায় প্রস্তুত রাখতে হবে, যাতে উনারা AML/CFT/WMD নতুন ধানের/পদ্ধতির (Typology) সম্পর্কে সম্যক ধারনাপ্রাপ্ত হতে পারে। যেহেতু AML/CFT/WMD এর বৈশ্বিক যোগসূত্র রয়েছে, সেহেতু আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটেরও পট-পরিবর্তনে সম্যক ধারনা রাখা আবশ্যক। আর্থিকখাত ওয়ানী Red flags আমলে এনে, প্রতিরোধের বিধি/নীতিমালা/প্রযুক্তি/পদ্ধতি প্রনয়ণে সচেষ্ট থাকতে হবে। এছাড়াও, AML/CFT/WMD ক্ষেত্র সংশ্লিষ্ট বিশেষায়িত Certified Anti-Money Laundering Specialist (CAMS) আন্তর্জাতিকভাবে সমাদৃত, গ্রহণযোগ্য ও সম্মানিত ‘সনদ’ অর্জনে পরিপালন কর্মকর্তা/নির্বাহীদের প্রেষণা প্রদান ও প্রাতিষ্ঠানিক প্রনোদনায় উজ্জীবিত করতে হবে।
প্রযুক্তিয়ান:
পরিশেষে নির্দ্বিধায় বলা যায় যে, আর্থিক খাতে “মানি-লন্ডারিং, সন্ত্রাসী কার্যে অর্থায়ন কিংবা ব্যাপক ধ্বংসাত্মক অস্ত্রের বিস্তারে অর্থায়ন প্রতিরোধ” ব্যবস্থার তাত্ত্বিক জ্ঞানলব্ধ নির্দেশনাসমূহ প্রযুক্তিতে প্রতিস্থাপন ব্যতিরেকে “প্রতিরোধ” প্রায় অসম্ভব। কিন্তু এই সংযোজন প্রক্রিয়াও নিছক কাঠামোগত পরিবর্তন হিসেবে পরিগনিত হবে, যদি প্রযুক্তির একাধিক প্রতিরোধ বলয় ব্যবহার নিশ্চিত না করা যায়। আর্থিকখাতের উচ্চ পর্যায়ের ব্যবস্থাপনাতে আর্থিক-প্রযুক্তি ও প্রযুক্তি ব্যবহারের নির্দেশনাতেও জবাবদিহিতার আওতায় আনা আবশ্যক ও তা’ নিয়মিতভাবে কাঠামোর কার্যকারীতাও স্বাধীন নিরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত করতে হবে। আর্থিকখাতে “মানি-লন্ডারিং, সন্ত্রাসী কার্যে অর্থায়ন কিংবা ব্যাপক ধ্বংসাত্মক অস্ত্রের বিস্তারে অর্থায়ন প্রতিরোধ” বিভাগ, একটি বিশেষায়িত বিভাগ: তাই এই বিভাগে প্রযুক্তিবান্ধব লোকবল পদায়নের দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার গুরুত্ব অনস্বীকার্য বিধায়-যোগ্য, চৌকস ও আন্তর্জাতিক সনদপ্রাপ্তদের অগ্রাধিকার দিতে হবে।
সর্বশেষে, আর্থিকখাতের নিয়ন্ত্রনকারী সংস্থাসমূহ কর্তৃক জারীকৃত নির্দেশনা/নীতিমালা/বিধি মোতাবেক পরিপালন প্রক্রিয়াতে ইসলামী মু’আমালাতের শরিয়াহ্-শিষ্ঠাচার ও প্রযুক্তি-বলয়ের সম্মিলনেই “মানি-লন্ডারিং, সন্ত্রাসী কার্যে অর্থায়ন কিংবা ব্যাপক ধ্বংসাত্মক অস্ত্রের বিস্তারে অর্থায়ন প্রতিরোধ” আরও বাস্তবসম্মত ও সময়োপযোগী হবে, ইনশাআল্লাহ্।
লেখকঃ ম. রাশেদুল হাসান খান, সিএএমএস, স্নাতকোত্তর (তথ্য-প্রযুক্তি), এমবিএ (ব্যাংকিং ও বীমা), স্নাতকোত্তর (পরিসংখ্যান), গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক পিএলসি, মানি-লন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধ বিভাগ, হেড অফিস, ঢাকা






