ইসলামী ব্যাংকের মূল্যায়ন পরীক্ষা বর্জন করে বিড়ম্বনায় বিদ্রোহীরা

ইসলামী ব্যাংকের মূল্যায়ন পরীক্ষা বর্জন করে বিড়ম্বনায় বিদ্রোহীরা – ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির বিশেষ যোগ্যতা মূল্যায়ন পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে শনিবার। পরীক্ষায় অংশ নেন কয়েকশ কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং তারা রোববার নিয়মিত অফিসও করেছেন। তবে যারা পরীক্ষায় অংশ না নিয়ে পরদিন কর্মস্থলে উপস্থিত হন, তাদের কাজ থেকে বিরত রাখা হয়েছে। এতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের মধ্যে বিড়ম্বনা তৈরি হয়েছে বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছে।
সূত্র জানায়, পতিত আওয়ামী সরকারের আমলে এস আলম গ্রুপ প্রভাব খাটিয়ে ইসলামী ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ নেয় এবং বিশেষ ব্যবস্থায় কর্মকর্তাদের নিয়োগ দেয়। পরীক্ষা ছাড়া নিয়োগ পাওয়া এসব কর্মকর্তার কর্মদক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন থাকায় গত আগস্টে নতুন পর্ষদ গঠনের পর বিশেষ যোগ্যতা যাচাই পরীক্ষার উদ্যোগ নেওয়া হয়। এ প্রক্রিয়া ঘিরে হাইকোর্টে রিট হয়।
আদালতের নির্দেশনার পর বাংলাদেশ ব্যাংকের চিঠির আলোকে শনিবার বিকেল সাড়ে ৩টায় পরীক্ষা শুরু হয়। নির্ধারিত সময়ে পরীক্ষা সম্পন্নও হয়। তবে পরীক্ষায় অংশ নেওয়া বাধ্যতামূলক করে ২২ সেপ্টেম্বর যে নোটিশ জারি করেছিল ইসলামী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ, তা অমান্য করে একাংশ পরীক্ষা বর্জন করে প্রতিবাদ সমাবেশ ও সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। ব্যাংকটির নীতিমালা অনুযায়ী এটি চাকরিচ্যুতির প্রক্রিয়া হিসেবে গণ্য হতে পারে।
ইসলামী ব্যাংকের লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, কর্মকর্তাদের যোগ্যতা যাচাইয়ে বিশেষ পরীক্ষা গ্রহণের উদ্যোগ নেওয়ার পর কয়েকজন কর্মকর্তা হাইকোর্টে রিট করেছিলেন। হাইকোর্ট বাংলাদেশ ব্যাংককে বিষয়টি নিষ্পত্তির নির্দেশ দেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ বিষয়টি নিষ্পত্তি করে উভয় পক্ষকে অবহিত করে, যার ভিত্তিতে শনিবার পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
| ব্যাংক, ব্যাংকার, ব্যাংকিং, অর্থনীতি ও ফাইন্যান্স বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ খবর, প্রতিবেদন, বিশেষ কলাম, বিনিয়োগ/ লোন, ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, ফিনটেক, ব্যাংকের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারগুলোর আপডেট পেতে আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ 'ব্যাংকিং নিউজ', ফেসবুক গ্রুপ 'ব্যাংকিং ইনফরমেশন', 'লিংকডইন', 'ইউটিউব', 'হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেল' এবং 'গুগল নিউজ'-এ যুক্ত হয়ে সাথে থাকুন। |
বাংলাদেশ ব্যাংকের চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, ইসলামী ব্যাংক একটি বেসরকারি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান। তাই এর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চাকরি, কর্মদক্ষতা ও নিয়োগ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত ব্যাংকের নিজস্ব এখতিয়ারভুক্ত, তবে তা দেশের প্রচলিত আইন ও বিধিবিধানের মধ্যে থাকতে হবে।
অন্যদিকে পরীক্ষা বর্জনকারী কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইস্কান্দার সুজন, এস এম এমদাদ হোসাইন, মোহাম্মদ ইকবাল, দিলরুবা আক্তার, শারমিন আক্তার ও নাসরিন জান্নাত অভিযোগ করেছেন— এক মাস আগে তাদের রিটের পর হাইকোর্ট পরীক্ষা প্রক্রিয়া স্থগিত করে নিয়মিত প্রোমোশনাল পরীক্ষা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল। বাংলাদেশ ব্যাংককে যথাযথ ব্যবস্থা নিতেও আদালত বলেছিল। কিন্তু সেই আদেশ উপেক্ষা করে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ পুনরায় পরীক্ষা আয়োজন করেছে।
জানা গেছে, গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বাংলাদেশ ব্যাংক ইসলামী ব্যাংককে এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণমুক্ত করে নতুন পর্ষদ নিয়োগ দেয়। এরপর প্রায় পাঁচ হাজার কর্মকর্তার বিশেষ সক্ষমতা যাচাইয়ের উদ্যোগ নেয় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। সিনিয়র অফিসার থেকে শুরু করে অ্যাসিস্ট্যান্ট অফিসার (ক্যাশ) পর্যায়ের কর্মকর্তারা এই পরীক্ষার আওতায় আছেন।
ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানায়, এস আলম গ্রুপ বিভিন্ন কৌশলে নামে-বেনামে ইসলামী ব্যাংক থেকে প্রায় ১ লাখ ৩১ হাজার কোটি টাকা লুট করেছে। এতে ব্যাংকটি গভীর সংকটে পড়ে। সেই সংকট কাটাতে এবং অযোগ্য কর্মীদের ছেঁটে ফেলার জন্য বিশেষ যোগ্যতা মূল্যায়ন পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে। তবে এখন পর্যন্ত কাউকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।







