ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি

সাফল্যের শীর্ষে ইসলামী ব্যাংক

বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দাভাব থাকলেও বাংলাদেশ ২০২১ সালে ৫.৪৭ শতাংশ জিডিপির প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে পেরেছে। IMF এবং ADB বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি যথাক্রমে ৬.৫০ শতাংশ এবং ৬.৮০ শতাংশ প্রাক্কলন করেছে। মাথাপিছু আয় ২,৫৫৪ মার্কিন ডলার। বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪৬ বিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশ এখন বিশ্বের ৪১তম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ। CEBR এর হিসাব মতে বাংলাদেশ ২০৩৬ সালে বিশ্বের ২৪তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশে পরিণত হবে।

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড শুরু থেকেই সরকারের অভীষ্ট লক্ষ্য অর্জনে এবং দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক উন্নয়নকে বেগবান করার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। ফলে দেশের ক্রমবর্ধমান প্রবৃদ্ধির সাথে বিভিন্ন সূচকে ইসলামী ব্যাংকের ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। যে সকল কারনে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড সাফল্যের শীর্ষে এসেছে নিম্নে তা তুলে ধরা হলো-

আরও দেখুন:
ইসলামী ব্যাংক সেলফিন

আমানত সংগ্রহ
২০২১ সালে দেশের ব্যাংকিং সেক্টরে আমানতের প্রবৃদ্ধি ১০.৯৫ শতাংশের বিপরীতে আমাদের ব্যাংকের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৭.২৬ শতাংশ। ২০২১ সালে কস্ট ফ্রি ডিপোজিটে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২৮ শতাংশ, যা বিগত বছর ছিল ২০ শতাংশ। এ বছর ইসলামী ব্যাংকের ডিপোজিট পোর্টফোলিওতে নতুন করে ২০ হাজার কোটি টাকা যুক্ত হয়েছে। ফলে ২০২১ সালের প্রাক্কলিত লক্ষ্যমাত্রার ১০২ শতাংশ অর্জন করে ব্যাংকের মোট আমানতের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ লক্ষ ৩৮ হাজার কোটি টাকায়।

ব্যাংক, ব্যাংকার, ব্যাংকিং, অর্থনীতি ও ফাইন্যান্স বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ খবর, প্রতিবেদন, বিশেষ কলাম, বিনিয়োগ/ লোন, ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, ফিনটেক, ব্যাংকের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারগুলোর আপডেট পেতে আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ 'ব্যাংকিং নিউজ', ফেসবুক গ্রুপ 'ব্যাংকিং ইনফরমেশন', 'লিংকডইন', 'ইউটিউব', 'হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেল' এবং 'গুগল নিউজ'-এ যুক্ত হয়ে সাথে থাকুন।

বিনিয়োগ ব্যবস্থাপনা
ইসলামী ব্যাংক সরকার ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজের অর্থ দ্রুততম সময়ে ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগ গ্রাহকদের নিকট বিতরণ করেছে এবং দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে সব ধরণের বিনিয়োগ বিতরণ অব্যাহত রেখেছে। ফলে দেশের বেসরকারী ব্যাংক খাতের ঋণের প্রবৃদ্ধি ৮.৭৭ শতাংশ হলেও ইসলামী ব্যাংকের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৬ শতাংশেরও বেশী। বর্তমানে ইসলামী ব্যাংক দেশের ব্যাংকিং সেক্টরে সর্বোচ্চ বিনিয়োগ বিতরণকারী ব্যাংক, যার পরিমাণ প্রায় ১ লক্ষ ১৮ হাজার কোটি টাকা।

বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় ও বাণিজ্য পরিচালনা
বৈশ্বিক মহামারি সত্ত্বেও ইসলামী ব্যাংক আমদানি বাণিজ্যে ১৪০ শতাংশ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করেছে। আমদানিতে দেশের ৩৩.২৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধির বিপরীতে ইসলামী ব্যাংকের অর্জন হয়েছে প্রায় ৫৪ শতাংশ এবং মার্কেট শেয়ার ১১.৩০ শতাংশ। অন্যদিকে রপ্তানি খাতে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে ১৩৭ শতাংশ। রপ্তানীতে দেশের ৩১.৭৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধির বিপরীতে ইসলামী ব্যাংকের হয়েছে প্রায় ৩৪.১৪ শতাংশ এবং মার্কেট শেয়ার ৮.০৩ শতাংশ। ইসলামী ব্যাংক অফশোর ব্যাংকিং পরিচালনায়ও দেশের শীর্ষস্থানে, যার বর্তমান মার্কেট শেয়ার ৯ শতাংশের বেশি। গত বছরের তুলনায় প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৫ শতাংশ।

চলমান বৈশ্বিক মহামারিতেও ইসলামী ব্যাংক দেশের ব্যাংকিং খাতে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স আহরণ করেছে, যার পরিমাণ ৫০ হাজার কোটি টাকার উপরে। দেশের ১.৭২ শতাংশ প্রবৃদ্ধির বিপরীতে ইসলামী ব্যাংকের প্রবৃদ্ধি হয়েছে প্রায় ৪ শতাংশ এবং মার্কেট শেয়ার ২৭ শতাংশ। উল্লেখ্য ২০২১ সালে ইসলামী ব্যাংক ১৮ বিলিয়ন ডলারের বেশী বৈদেশিক মুদ্রা ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্য পরিচালনা করেছে।

ট্রেজারী অপারেশন ও ফান্ড ম্যানেজমেন্ট
২০২১ সালে বিশ্বব্যাপী বৈদেশিক মুদ্রা ও পণ্য বাজার নিয়ত পরিবর্তনশীলতার মাঝেও ইসলামী ব্যাংকের ট্রেজারী কার্যক্রমের আয় ছিল উর্দ্ধমূখী। ২০২১ সালে Exchange Income হয়েছে ২৩৪ কোটি টাকা, যা গত বছরের তুলনায় ৪.৩০ শতাংশের বেশী। বৈদেশিক মুদ্রা সরবরাহে আন্ত:ব্যাংক বাজার ব্যবস্থাপনায় ইসলামী ব্যাংকের ট্রেজারী অপারেশন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। এ বছর ইসলামী ব্যাংক ৩.৬৩ বিলিয়ন ডলার দেশের আন্ত:ব্যাংক বাজারে বিক্রি করেছে।

বছরজুড়ে তারল্য ব্যবস্থাপনায় ইসলামী ব্যাংক যথেষ্ট দক্ষতার পরিচয় দিয়েছে। বছরের শেষ দিকে ব্যাংকিং সেক্টরে কিছুটা তারল্য সংকট দেখা দিলেও ইসলামী ব্যাংকের অবস্থান ছিল সুদৃঢ়। সমাপ্ত বছরে বিভিন্ন ব্যাংকে তারল্য সহায়তার জন্য প্লেসমেন্ট করা, BGIIB-তে বিনিয়োগ বাড়ানো এবং প্রথমবারের মত প্রবর্তিত “বাংলাদেশ সরকার বিনিয়োগ সুকুক (BGIS)” বন্ড-এ দুই ধাপে ১,৫০০ কোটি টাকারও বেশি বিনিয়োগ করেছে।

ইসলামী ব্যাংক বিগত বছরের শুরুতে ২০২১ সালের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ৫টি খাতকে অগ্রাধিকার দিয়ে সূচকেই ভাল করতে পেরেছে। অগ্রাধিকার দেয়া এসব খাতে ইসলামী ব্যাংকের সাফল্য অর্জনের একটি চিত্র নিম্নে তুলে ধরা হলো:

০১. সম্পদমানের সুরক্ষা
দেশের ব্যবসা বাণিজ্য সচল রাখার জন্য ২০২১ সাল জুড়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিনিয়োগ পরিশোধে বিভিন্ন নীতি ছাড়ের কারণে পুরো ব্যাংকিং সেক্টরে অনেকটা আদায় স্থবিরতা বিরাজ করলেও দেয় (Due) বিনিয়োগের বিপরীতে ইসলামী ব্যাংকের নগদ আদায় ছিল সন্তোষজনক। ২০২১ সালে ইসলামী ব্যাংকের দেয় বিনিয়োগের বিপরীতে নগদ আদায়ের হার প্রায় ৮২ শতাংশেরও বেশি।

০২. ডিপোজিট মিক্স
২০২১ সালে ইসলামী ব্যাংকের মোট কস্ট ফ্রি ডিপোজিট বৃদ্ধি পেয়েছে ৩,০৪১ কোটি টাকা, গত বছর অর্থাৎ ২০২০ সালে যার পরিমাণ ছিল ১,৮৪৬ কোটি টাকা। আল-ওয়াদিয়াহ চলতি হিসাবের স্থিতির পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে ১,৮৬৬ কোটি টাকা, যা গত বছর (২০২০) ছিল ১,১৬২ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে এ বছর (২০২১) কস্ট ফ্রি ডিপোজিটে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২৮ শতাংশ, যা গত বছর ছিল ২০ শতাংশ। অন্যদিকে মুদারাবা ডিপোজিটের প্রবৃদ্ধি গত বছরের তুলনায় কমেছে, বিগত বছরের ২৫ শতাংশের বিপরীতে এ বছর হয়েছে ১৬ শতাংশ। যা আমানতের বিপরীতে ব্যয় (PPD) ব্যবস্থাপনার দক্ষতারই বহি:প্রকাশ।

০৩. ফিনটেক প্রোডাক্টস
“Going Everywhere, Exploring FinTech” এই শ্লোগানকে উপজীব্য করে ২০২১ সালে ব্যাংকের ফিনটেক প্রোডাক্টস প্রসারে ইসলামী ব্যাংকের নিরন্তর প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছিল। ফলে ফিনটেক প্রোডাক্টস এবং সেবার বিপরীতে ব্যাংক আশানুরুপ প্রবৃদ্ধি ও সাফল্য অর্জন করতে পেরেছে। ই-কমার্স ট্রানজেকশনে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২৪১ শতাংশ। ADC অপারেশনের বিপরীতে আয় বৃদ্ধি পেয়েছে ৪১ শতাংশ। এখন থেকে ইসলামী ব্যাংকের Flagship FinTech প্রোডাক্ট CellFin এর মাধ্যমে ঘরে বসেই একাউন্ট খোলা এবং লেনদেন করা যাচ্ছে।

০৪. ব্যয় ব্যবস্থাপনা
২০২১ সালে ব্যয় ব্যবস্থাপনায় পরিমিতিবোধ নয়, বরং যথেষ্ট দক্ষতার প্রমাণ রাখা সম্ভব করতে পেরেছে ইসলামী ব্যাংক। এ বছর Income Generating Approach থেকে ইসলামী ব্যাংক ব্যয় ব্যবস্থাপনা করেছে। ২০২০ সালে পরিচালন ব্যয়ের প্রবৃদ্ধি ছিল ১৮.১২ শতাংশ, অন্যদিকে ২০২১ সালে পরিচালন ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে মাত্র ৮.৮০ শতাংশ।

০৫. বিনিয়োগ বহির্ভূত আয়
কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিনিয়োগের মুনাফার হার সর্বোচ্চ ৯ শতাংশ নির্ধারণ করায় ২০২১ সালের শুরু থেকেই ইসলামী ব্যাংক Fee Based Income বাড়ানোর প্রতি গুরুত্ব দিয়েছিল। ফলে বছর শেষে Non-Investment Income এর প্রবৃদ্ধি হয়েছে প্রায় ৪১ শতাংশ, যা গত বছর ছিল ঋণাত্মক ৪.৫৫ শতাংশ।

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মুহাম্মদ মুনিরুল মওলা বলেন- আর্থিক অন্তর্ভুক্তির কৌশল হিসেবে ২০২১ সালে আমরা ব্যবসা প্রসারের নিমিত্তে ব্যাংকের নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণে কাজ করেছি। এ বছর ১১টি নতুন শাখা, ৫৯টি নতুন উপশাখা, ৪০৩টি নতুন এজেন্ট আউটলেট, ৫৬৬টি নতুন এটিএম/ সিআরএম মেশিন, ২৫৪৬টি POS মেশিন, ৪০টি নতুন RMA স্থাপনের মাধ্যমে দেশে-বিদেশে আমাদের নেটওয়ার্ক ১২ হাজারের অধিক পরিমাণ বিস্তৃত হয়েছে। ফলে দেশের অধিকাংশ মানুষকে আমরা শরীয়াহ ভিত্তিক ব্যাংকিং এ সম্পৃক্ত করতে পেরেছি।

তিনি আরো বলেন- আমরা ২০২১ সালে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সাথে কৌশলগত অংশীদারিত্বের সম্পর্ক স্থাপন করেছি। ফলে ব্যাংকের প্লাটফরম ব্যবহার করে গ্রাহকগণ প্রয়োজনীয় পরিষেবা যেমন গ্যাস-বিদ্যুৎ- পানি সহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি সেবার ফি জমা দিতে পারছেন। এসব মাধ্যম ব্যবহার করে ২০২১ সালে আমরা প্রায় ৪০০ কোটি টাকার কস্ট ফ্রি ও লো কস্ট ডিপোজিট সংগ্রহ করতে সমর্থ হয়েছি। অটোমেটেড চালান (এ-চালান) এর মাধ্যমে আমরা এ বছর ৭৭৬ কোটি টাকার রাজস্ব সরকারি কোষাগারে জমা করে ব্যাংকিং সেক্টরে ৫ম স্থানে অবস্থান করছি।

আইবিবিএল গোড়া থেকেই জাতি, ধর্ম, পেশা নির্বিশেষে সকল মানুষের জন্য কাজ করছে। গ্রামীণ দারিদ্র্য দূরীকরণে আইবিবিএল ১৯৯৫ সাল থেকে “পল্লী উন্নয়ন প্রকল্প (RDS)” এর মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি, কৃষি ও কৃষিভিত্তিক শিল্প প্রতিষ্ঠায় কাজ করছে। পল্লী উন্নয়নের পাশাপাশি ব্যাংক নগর দারিদ্র্য উন্নয়নের জন্য ২০১২ সালে বস্তিবাসীর উন্নয়নে “নগর দারিদ্র্য উন্নয়ন প্রকল্প” (UPDS) কার্যক্রম শুরু করে। যা বাংলাদেশের বাণিজ্যিক ব্যাংকিং এর অনুষঙ্গে অনুপম দৃষ্টান্ত। ব্যাংকের পল্লী-উন্নয়ন কার্যক্রম (RDS) দেশের ২৮,৯২১টি গ্রামে সম্প্রসারণ করেছে, যেখানে গ্রাহক সংখ্যা প্রায় ১৫ লক্ষ, যার ৯২ শতাংশই নারী। এ খাতে বিনিয়োগের বিপরীতে আদায়ের হার প্রায় ৯৯ শতাংশ। ২০২১ সালে আইবিবিএল এজেন্ট আউটলেটের মাধ্যমে পল্লী উন্নয়ন কার্যক্রম (RDS) এর বিনিয়োগ কার্যক্রম শুরু করেছে।

মুহাম্মদ মুনিরুল মওলা বলেন- আন্তর্জাতিক মানদন্ড অনুসরণ করে ব্যাংকের মূলধন ভিত্তিকে মজবুত রাখার জন্য আইবিবিএল বাংলাদেশে প্রথম মুদারাবা পারপেচুয়াল বন্ড (IBBLPBOND) ইস্যু করে। এরই ধারাবাহিকতায় আমরা সময়ে সময়ে বাংলাদেশ ব্যাংক ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন কর্তৃক অনুমোদিত ইনস্ট্রুমেন্ট ইস্যু করে পর্যাপ্ত মূলধন সংরক্ষণ করতে সক্ষম হয়েছি। যা ব্যাংকের আর্থিক কাঠামো শক্তিশালী করার পাশাপাশি পুঁজিবাজার বিকাশেও অবদান রেখেছে।

দক্ষিণপূর্ব এশিয়ায় শরীয়াহ ভিত্তিক ব্যাংকিং এর পুরোধা হিসেবে আইবিবিএল সবসময় প্রাতিষ্ঠানিক সুশাসনের মান বজায় রাখতে বদ্ধ পরিকর। ইসলামী ব্যাংকের প্রাতিষ্ঠানিক সুশাসনের উদ্দেশ্যই হলো দক্ষতা, স্বচ্ছতা, পেশাদারিত্ব এবং পরিবেশ, সমাজ ও অংশীজনদের নিকট জবাবদিহিতা। ইসলামী ব্যাংক প্রতিটি ব্যাংকিং কার্যক্রম প্রচলিত সকল আইন, বিধান ও সময়ে সময়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থার জারীকৃত নির্দেশনা পরিপালন করেই পরিচালনা করে আসছে। একটি পরিপূর্ণ Compliance Culture গড়ে তোলার জন্য ইসলামী ব্যাংকের নিরন্তর প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট ও প্রযুক্তিগত disruption বিবেচনায় ইসলামী ব্যাংক মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধে আন্তর্জাতিক মানদন্ড বজায় রাখার এবং সাইবার সিকিউরিটি ঝুঁকি মোকাবেলায় প্রযুক্তিগত উৎকর্ষ অর্জনের জন্য কাজ করছে।

এছাড়াও ব্যাংকিং ব্যবসায় শরীয়া’হর নীতি পরিপালনের মাধ্যমে আর্থিক সেবা প্রদানই ইসলামী ব্যাংকের সকল অর্জনের ভিত্তিমূল হিসেবে কাজ করেছে। ২০২১ সালে বিনিয়োগ কার্যক্রমে সন্দেহজনক আয়ের পরিমাণ মাত্র ০.৫৩ শতাংশ, যা বিগত বছর ছিল ১.১০ শতাংশ। এ বছর ইসলামী ব্যাংক বিনিয়োগসহ ব্যাংকের সকল কর্মকান্ডে শরীয়াহ পরিপালনের বিষয়ে সকলের (কর্মকর্তা-কর্মচারী ও গ্রাহক) দৃঢ় অঙ্গীকার প্রত্যাশা করে।

ইসলামী ব্যাংক দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে যে, একটি ভাল ব্যবসায়িক পরিবেশের পূর্বশর্ত হলো একটি দরদী সমাজ। আর এজন্য সিএসআরকে ব্যাংকের অন্যতম মূল্যবোধ হিসেবে মনে করা হয়। আইবিবিএল মানুষের জীবনমান উন্নয়নে জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এসডিজি) আলোকে মানুষ ও পৃথিবীর জন্য সামাজিক দায়বদ্ধতার আওতায় দুস্থ, অভাবী মানুষের পুনর্বাসন, মেধাবী-দরিদ্রদের মাঝে এককালিন আর্থিক সুবিধা প্রদান, শীতবস্ত্র বিতরণ এবং জাতীয় দুর্যোগে সরকারের আহবানে সাড়া দিয়ে অনন্য নজির স্থাপন করেছে। ২০২১ সালে ইসলামী ব্যাংক ৩ লক্ষ উপকারভোগির মাঝে ১৬০ কোটি টাকা বিতরণ করেছে। এ পর্যন্ত ব্যাংকের সামাজিক দায়বদ্ধতার আওতায় খরচ হয়ছে ১২৩৫ কোটি টাকারও বেশি এবং মোট উপকারভোগির সংখ্যা ১ কোটি ৭৫ লাখেরও অধিক।

বিভিন্ন পুরষ্কার প্রাপ্তি ও স্বীকৃতি অর্জন ব্যাংকিং ব্যবসা পরিচালনায় ইসলামী ব্যাংকের অর্জনেরই বহি:প্রকাশ। অন্যান্য বছরের ন্যায় ২০২১ সালেও আইবিবিএল জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) কর্তৃক ব্যাংকিং সেক্টরে “সর্বোচ্চ করদাতা” পুরষ্কারসহ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিভিন্ন পুরষ্কার ও স্বীকৃতি পেয়েছে। আইবিবিএল বাংলাদেশের একমাত্র ব্যাংক যা একাধারে বিগত ১০ বছর যুক্তরাজ্য ভিত্তিক বিশ্ববিখ্যাত ম্যাগাজিন “দি ব্যাংকার” কর্তৃক বিশ্বসেরা ১০০০ ব্যাংকের তালিকায় স্থান লাভ করে আসছে। এ বছর আইবিবিএল বেসরকারী বাণিজ্যিক ব্যাংকিং (ইসলামিক অপারেশন) ক্যাটাগরিতে ICMAB কর্তৃক “ICMAB Best Corporate Award”, ICSB কর্তৃক “ICSB National Award” অর্জন করেছে।

আরও দেখুন:
ইসলামী ব্যাংক ডুয়েল কারেন্সি ‘গোল্ড ডেবিট কার্ড’

এছাড়াও ইসলামিক ব্যাংকিং এ অসাধারণ অবদান রাখার জন্য The Global Islamic Finance Award (GIFA) কর্তৃক “Award for the Most Outstanding Islamic Bank 2021” এবং Cambridge IFA, UK কর্তৃক “The Strongest Islamic Retail Bank in Asia 2021” ও “The Bank in Strongest Islamic Retail Bangladesh 2021” পুরস্কার পেয়েছে। একইভাবে Best Retail Islamic Bank in Bangladesh ক্যাটাগরিতে The Asian Banker কর্তৃক “Excellence in Retail Financial Services Awards 2021” পুরস্কার পেয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

রিলেটেড লেখা

Back to top button