বিবিধ

ভূমি জরিপ: CS, RS, PS, BS কী জেনে নিন?

জমি সংক্রান্ত বিষয়টি খুব স্পর্শকাতর৷ বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ থেকে উচ্চ বিত্ত কিংবা উচ্চ শিক্ষিত মানুষও ব্যক্তিগতভাবে নিজেদের জমির উপর তাদের স্বত্ব আছে কিনা কত পরিমাণ স্বত্ব আছে সেই হিসাব বুঝে নেয়ার জন্য সব সময়ই সজাগ৷ কোন নির্দিষ্ট জনপদে একটি নির্ধারিত হারে রাজস্ব সংগ্রহের উদ্দেশ্যে জমির অবস্থান, তার প্রমিত পরিমাপ ও মালিকানা নির্ণয়ের জন্য পরিচালিত জরিপ। সুলতান শেরশাহের (১৫৪০-৪৫) শাসনামলে প্রথমবারের মতো উপমহাদেশে ভূমি জরিপের গুরুত্ব সবিশেষ মনোযোগ লাভ করে।

ভূমি কাকে বলে?
ভূমি বা Land এর আইনী সংজ্ঞা রয়েছে। The State Acquisition and Tenancy Act, 1950-এর ২(১৬)- ধারা মতে- “ভূমি (land) বলতে আবাদি, অনাবাদি অথবা বছরের যেকোন সময় পানিতে ভরা থাকে এবং ভূমি হতে প্রাপ্ত সুফল, ঘরবাড়ি বা দালান কোঠা বা মাটির সঙ্গে সংযুক্ত অন্যান্য দ্রব্য অথবা স্হায়ীভাবে সংযুক্ত দ্রব্য এর অন্তর্ভুক্ত বুঝাবে।”

ভূমি জরিপ/রেকর্ড
ভূমি জরিপ হচ্ছে ভূমির মালিকানা সম্বলিত ইতিহাসের সরেজমিন ইতিবৃত্ত। আইনী সংজ্ঞা হচ্ছে- The Survey Act, 1875 এবং সংশ্লিষ্ট বিধিমালা অনুযায়ী সরকারের জরিপ বিভাগ সরেজমিন জরিপ করে ভূমির মালিকানার যে বিবরণ এবং নকশা তৈরী করে তাই রেকর্ড বা জরিপ। অর্থাৎ রেকর্ড বা জরিপ হচ্ছে মালিকানার বিরবণ এবং নকশার সমন্বয়।

একটি ভূমির মালিক কে এবং তার সীমানা কতটুকু এটা ভূমি জরিপের মাধ্যমে নকশা/ম্যাপ নির্ণয় করা হয়। এই নকশা এবং ম্যাপ অনুসারে মালিকানা সম্পর্কিত তখ্য যেমন ভূমিটি কোন মৌজায় অবস্থিত, এর খতিয়ান নাম্বার, ভূমির দাগ নাম্বার, মালিক ও দখলদারের বিবরণ ইত্যাদি প্রকাশিত হয় যাকে খতিয়ান বলে। রেকর্ড বা জরিপ প্রচলিতভাবে খতিয়ান বা স্বত্ত্বলিপি বা Record of Rights (RoR) নামেও পরিচিত। রেকর্ড বা জরিপের ভিত্তিতে ভূমি মালিকানা সম্বলিত বিবরণ খতিয়ান হিসেবে পরিচিত, যেমন CS খতিয়ান, RS খতিয়ান, ইত্যাদি।

ব্যাংক, ব্যাংকার, ব্যাংকিং, অর্থনীতি ও ফাইন্যান্স বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ খবর, প্রতিবেদন, বিশেষ কলাম, বিনিয়োগ/ লোন, ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, ফিনটেক, ব্যাংকের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারগুলোর আপডেট পেতে আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ 'ব্যাংকিং নিউজ', ফেসবুক গ্রুপ 'ব্যাংকিং ইনফরমেশন', 'লিংকডইন', 'টেলিগ্রাম চ্যানেল', 'ইন্সটাগ্রাম', 'টুইটার', 'ইউটিউব', 'হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেল' এবং 'গুগল নিউজ'-এ যুক্ত হয়ে সাথে থাকুন।

আমাদের দেশে পরিচালিত ভূমি জরিপ বা রেকর্ড গুলো হচ্ছে-
১. CS- Cadastral Survey (1888)
২. SA- (1956)
৩. RS- Revitionel Survey
৪. PS– Pakistan Survey
৫. BS- Bangladesh Survey (1990)
৬. সিটি জরিপ
৭. দিয়ারা জরিপ
৮. সিলেট জরিপ।

ব্যাংকিং নিউজ বাংলাদেশ (Banking News Bangladesh. A Platform for Bankers Community.) প্রিয় পাঠকঃ ব্যাংকিং বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ খবরগুলো নিয়মিত আপডেট পেতে আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ ব্যাংকিং নিউজ বাংলাদেশ এ লাইক দিয়ে আমাদের সাথেই থাকুন।

১) সিএস জরিপ/রেকর্ড (Cadastral Survey)
“সিএস” হলো Cadastral Survey (CS) এর সংক্ষিপ্ত রূপ। একে ভারত উপমহাদেশের প্রথম জরিপ বলা হয় যা ১৮৮৮ (ভূমি মন্ত্রণালয় অুনসারে ১৮৮৭) সাল হতে ১৯৪০ সালের মধ্যে পরিচালিত হয়। এই জরিপ ১৮৮৫ সালের বঙ্গীয় প্রজাতন্ত্র আইনের ১০ম পরিচ্ছেদে অনুসারে সিলেট ও পার্বত্য জেলা ব্যতীত সারা দেশে পরিচালিত হয়। উক্ত জরিপের মাধ্যমে জমির বিস্তারিত মৌজা নকশা (ম্যাপ) প্রস্তুত করা হয় এবং প্রত্যেক মালিকের জন্য দাগ নম্বর উল্লেখপুর্বক ভূমির বাস্তব অবস্থা, আয়তন, শ্রেণী, পরিমাণ, খাজনার পরিমাণ ইত্যাদি উল্লেখপূর্বক খতিয়ান প্রস্তুত করা হয়। এ জরিপ পি-৭০ সীটে কিস্তোয়ারের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়।

সিএস জরিপ ১৮৮৮ সালে কক্সবাজারের রামু থানা হতে আরম্ভ হয় এবং ১৯৪০ সালে দিনাজপুর জেলায় শেষ হয়। সে সময়ে সিলেট জেলা আসাম প্রদেশের অধীন থাকায় সিলেট জেলায় সিএস জরিপ হয়নি। তবে জরুরী বিবেচনায় ১৯৩৬ সালের সিলেট প্রজাস্বত্ব আইনের (Sylhet tenancy Act) আওতায় সিলেট জেলার ক্যাডাষ্ট্রাল সার্ভে ১৯৫০ সালে আরম্ভ করা হয় এবং পরবর্তীতে রাষ্ট্রীয় অধিগ্রহন ও প্রজাস্বত্ব আইন ১৯৫০ এর অধীনে ঐ জরিপ ১৯৬৩ সালে শেষ হয়।

সিএস জরিপে সময় প্রস্তুতকৃত খতিয়ানে জমিদারগণের নাম খতিয়ানের উপরিভাগে এবং দখলকার রায়তের নাম খতিয়ানের নিচে লেখা হত। সে সময় জমিদারগণ সরকার পক্ষে জমির মালিক ছিলেন এবং রায়তগণ প্রজা হিসেবে শুধুমাত্র ভোগ দখলকার ছিলেন। প্রথম জরিপ এই জরিপ এবং প্রস্তুতকৃত নকশা ও খতিয়ান খুবই নিখুঁত ও নির্ভরযোগ্য হিসেবে এখনো গ্রহণীয়। মামলার বা ভূমির জটিলতা নিরসনের ক্ষেত্রে এই জরিপকে বেস হিসেবে অনেক সময় গণ্য করা হয়।

সিএস খতিয়ান চেনার কৌশল
সিএস খতিয়ান দেখতে উপর-নীচ লম্বালম্বী হয়। দেখতে অনেকটা লিগ্যাল সাইজের কাগজের মত। এই খতিয়ান উভয় পৃষ্ঠায় সম্বলিত। যেহেতু বৃটিশ আমলে পরগণা ছিল, তাই সিএস খতিয়ানের প্রথম পৃষ্ঠায় উপরে পরগণা কথা লেখা থাকবে এবং অপর পৃষ্ঠায় দাগ ও জমির পরিমান, জমির রকম কলামের পাশেই উত্তর সীমানার মালিকের পরিচয় উল্লেখ থাকবে। খতিয়ানের প্রথম পৃষ্ঠায় দুইটি ভাগ আছে, উপরের অংশে জমিদারের এবং নীচের অংশে প্রজা বা রায়তের নাম ঠিকানা ও হিস্যা উল্লেখ থাকে, যা অন্য কোন জরিপে থাকে না।

২) এসএ জরিপ (State Acquisition Survey)
১৯৫০ সালে জমিদারী অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ব আইন পাশ হওয়ার পর সরকার ১৯৫৬ সালে সমগ্র পূর্ববঙ্গ প্রদেশে জমিদারী অধিগ্রহনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। ২/৪/১৯৫৬ তারিখে এই আইনের ৩ ধারার আওতাধীন বিজ্ঞপ্তির মূলে সরকার কর্তৃক সকল জমিদারি দখল নেয়ার পর উক্ত এ্যাক্টের ১৭ ধারা মোতাবেক যে খতিয়ান প্রস্তুত করা হয় তা এসএ খতিয়ান বলে পরিচিত।

মূলত, জমিদারী ও মধ্যস্বত্ব বিলোপ করে জমিদারগণকে প্রদেয় ক্ষতিপূরণ তালিকা প্রণয়ন এবং ভূমি মালিকগণকে/রায়তকে সরকারের সরাসরি নিয়ন্ত্রণে আনয়ন করার লক্ষ্যে সে সময় একটি সংক্ষিপ্ত জরিপ ও রেকর্ড সংশোধনী কার্যক্রম পরিচালিত হয় যা পরবর্তীতে এসএ খতিয়ান বলে পরিচিত পায়। ১৯৫৬ হতে ১৯৬২ পর্যন্ত এই জরিপ পরিচালিত হয়। জরিপে ভূমি মালিকের নাম ও জমির বিবরণাদি সম্বলিত হাতেলেখা রেকর্ড/খতিয়ান প্রস্তুত করা হয়। সে সময় এই রেকর্ড মোট তিন কপি প্রস্তুত করা হয় যার মধ্যে একটি জেলা রেকর্ড রুমে, এক কপি তহশলি (ইউনিয়ন ভূমি অফিস) অফিসে এবং অন্যটি সার্কেল পরিদর্শক (উপজেলা রাজস্ব) অফিসে প্রদান করা হয়। জরুরী তাগিদে জমিদারগন হইতে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে এই জরিপ বা খাতিয়ান প্রণয়ন কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছিল।

এসএ খতিয়ান চেনার কৌশল
এসএ খতিয়ান এক পৃষ্ঠার ল্যান্ডস্কেপ বা ডানে-বামে আড়াআড়ি হয়। এই খতিয়ানের অধিকাংশই হস্তলিখিত, তবে ঢাকাসহ পার্শ্ববর্তী কিছু এলাকায় প্রিন্টেড এসএ খতিয়ান পাওয়া যায়। এই পর্চায় বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অংশীদারদের ষোল আনা অংশ প্রাপকদের মাঝে পৃথকভাবে উল্লেখ করা হয়নি। উপরের বাম পার্শ্বে সাবেক এবং এর নিচে হাল লিখে খতিয়ান নম্বর লিখা থাকতে পারে কিংবা শুধু সাবেক লিখা থাকতে পারে। সর্বশেষে মন্তব্য কলাম ও তার পার্শ্বে রাজস্ব কলাম অবস্থান করে।

৩) আরএস জরিপ (Revisional Survey)
সিএস জরিপ সম্পন্ন হওয়ার সুদীর্ঘ ৫০ বছর পর এই জরিপ পরিচালিত হয়। জমির অবস্থা, প্রকৃতি, মালিক, দখলদার ইত্যাদি হালনাগাদ করার লক্ষ্যে এ জরিপ সম্পন্ন করা হয়। এসএ জরিপের সময় সরেজমিনে তদন্ত বা জরিপ কার্যক্রম পরিচালনা হয়নি। জমিদারদের থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে এসএ জরিপ বা খাতিয়ান প্রস্তুত করা হয়েছিল যার কারণে অনেক ত্রুটি-বিচ্যুতি থেকে যায়। এই ত্রুটি-বিচ্যুতি দূর করার জন্য সরকার দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরেজমিনে ভূমি জরিপ করার সিদ্ধান্ত নেয় যা আরএস বা Revisional Survey জরিপ হিসেবে পরিচিত। এই জরিপে প্রস্তুতকৃত নকশা (ম্যাপ) এবং খতিয়ান নির্ভূল হিসেবে গ্রহণীয়।

আরএস খতিয়ান চেনার কৌশল
আরএস খতিয়ান সর্বত্রই প্রিন্টেড এবং এটি দেখতে ল্যান্ডস্কেপ হলে এক পৃষ্ঠায় হবে, আর উপর-নিচ হলে দুই পৃষ্ঠা সম্বলিত উভয় প্রকারই হতে পারে। এই খতিয়ানে অংশ কলামে ষোলআনা অংশ মালিকদের নামে আলাদা আলাদা বণ্টন করে উল্লেখ করা থাকবে। এতে অংশ কলাম ও রাজস্ব কলাম পাশাপাশি অবস্থান করে। ১৯৮২ সনের পরের আরএস খতিয়ানে থানা কথাটির পার্শ্বে উপজেলা শব্দটি লিখা থাকবে।

৪) পিএস জরিপ (Pakistan Survey)
এসএ জরিপকেই পিএস জরিপ বলে। ১৯৫৬ হতে ১৯৬২ পর্যন্ত এই জরিপ পরিচালিত হয়।

৫) বিএস জরিপ (Bangladesh Survey)
বিএস জরিপ হলো মূলত বাংলাদেশ সার্ভে এর সংক্ষিপ্ত রূপ। ১৯৫০ সালের জমিদারি অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ব আইন অনুযায়ী এই জরিপ কার্য পরিচালিত হয়। ১৯৯৮-৯৯ সাল হতে বর্তমানে চলমান জরিপকে বিএস খতিয়ান বা সিটি জরিপ বলা হয়। যাহা এখনও সারা দেশে চলমান। শুধুমাত্র ঢাকা মহানগরীতে বিএস খতিয়াকে সিটি জরিপ বলা হয়। এই সিটি জরিপের আরেক নাম ঢাকা মহানগর জরিপ। আরএস জরিপের পর বাংলাদেশ সরকার ১৯৯৮ সাল থেকে এ জরিপের উদ্যোগ নেয়। এ যাবৎকালে এটিই হলো আধুনিক ও সর্বশেষ বিজ্ঞানসম্মত জরিপ বলা হয়।

বিএস খতিয়ান চেনার কৌশল
বিএস খতিয়ান বা সিটি জরিপ এক পৃষ্ঠার ল্যান্ডস্কেপ বা ডানে-বামে আড়াআড়ি হবে এবং জরিপের পর্চা শতভাগ কম্পিউটার প্রিন্টেড হবে। এই খতিয়ানে জমির ধরণ যেমন নালা, পুকুর ইত্যাদি উল্লেখ থাকবে। খতিয়ানটিতে মোট ১২টি কলাম থাকবে। বিএস খতিয়ান বা সিটি জরিপ দেখতে অনেকটাই একই রকম। সিটি জরিপ শুধুমাত্র ঢাকা মহানগরের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। এই খতিয়ানের উপরে বিএস খতিয়ান বা সিটি জরিপ কম্পিউটারে টাইপকৃত থাকবে।

৬) সিটি জরিপ (City Survey)
সিটি জরিপ এর আর এক নাম ঢাকা মহানগর জরিপ। আরএস জরিপ এর পর বাংলাদেশ সরকার কর্তিক অনুমতি ক্রমে এ জরিপ ১৯৯৯ থেকে ২০০০ সালের মধ্যে সম্পন্ন করা হয়। এযাবৎ কালে সর্বশেষ ও আধুনিক জরিপ এটি। এ জরিপের পরচা কম্পিউটার প্রিন্টে প্রকাশিত হয়।

সিটি জরিপ চেনার কৌশল
সিটি জরিপ এক পৃষ্ঠার ল্যান্ডস্কেপ বা ডানে-বামে আড়াআড়ি হবে এবং জরিপের পর্চা শতভাগ কম্পিউটার প্রিন্টেড হবে। এই খতিয়ানে জমির ধরণ যেমন নালা, পুকুর ইত্যাদি উল্লেখ থাকবে। খতিয়ানটিতে মোট ১২টি কলাম থাকবে। বিএস খতিয়ান বা সিটি জরিপ দেখতে অনেকটাই একই রকম। সিটি জরিপ শুধুমাত্র ঢাকা মহানগরের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। এই খতিয়ানের উপরে বিএস খতিয়ান বা সিটি জরিপ কম্পিউটারে টাইপকৃত থাকবে।

৭) দিয়ারা জরিপ কি?
দিয়ারা জরিপ হলো দরিয়া সম্পর্কিত জরিপ। জেগে উঠা নতুন ভূখন্ড (চর) জেলা প্রশাসকের চাহিদার ভিত্তিতে সিকস্তি পয়স্তির কারণে ভৌগলিক সীমারেখা ও স্বত্বের পরিবর্তন হলে নদী ও সমুদ্র তীরবর্তী এলাকায় নতুন জরিপ করা হয়। এ সমস্ত জরিপে নকশা ও রেকর্ড প্রস্তুত করা হয়। এটি অতি পুরাতন জরিপ। ক্যাডাস্ট্রাল জরিপ আরম্ভ হয় ১৮৮৮ সালে, পক্ষান্তরে দিয়ারা জরিপ আরম্ভ হয় ১৮৬২ সালে। দিয়ারা জরিপে সাধারন জরিপের জন্য প্রযোজ্য সকল স্তর অনুসরন করে পয়স্তি ভূমির(চর) নক্সা ও রেকর্ড প্রস্তুত করা হয় দিয়ারা সেটেলমেন্ট অফিসারের নেতৃত্বে ৪টি (রাজশাহী, নরসিংদী, চট্রগ্রাম ও বরিশাল) বেশ কয়েকটি আঞ্চলিক অফিস ও ক্যাম্পের মাধ্যমে সারাদেশের সুনির্দির্ষ্ট কিছু মৌজায় এ জরিপ কাজ পরিচালিত হয়।

৮) সিলেট জরিপ (Sylhet Survey)
সম্রাট আকবরের আমলে ভূমি জরিপ কাজ শেষ হবার পরে ১৭৮৭ সালে মিঃ লিন্ডসে সিলেট অঞ্চলে জরিপ করেন এবং খাজনা পুনঃনির্ধারণ করেন। ১৮৮৫ সালে বঙ্গীয় প্রজাস্বত্ব আইন জারি কালে সিলেট তার অর্ন্তভূক্ত ছিল না। তাই সিলেট জেলা সিএস জরিপ কার্যক্রমের আওতাভূক্ত হয়নি। জমিদারী অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ব আইন জারি হওয়ার পূর্বে প্রজাস্বত্ব আইন ১৯৩৬ এর ১১৭ধারা মোতাবেক ৭ জুন ১৯৫০ সালের আরএস ৩৬১৫ নং বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সিলেট জেলায় প্রথমবারের মত ক্যাডাস্ট্রাল জরিপের মাধ্যমে রেকর্ড তৈরির কাজ শুরু হয়। ১৯৫৬ সালে আরএস ৪৫১১ নং বিজ্ঞপ্তি জারি করে এই জরিপ কার্যক্রমকে ১৯৫০ সালের জমিদারি অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ব আইনের অধীনে এসএ জরিপ কার্যক্রমে অর্ন্তভূক্ত করা হয়। ফলে সিলেট জেলায় এসএ জরিপটি ছিল একটি নিয়মিত ক্যাডাস্ট্রাল জরিপ।

কার্টেসিঃ সংগৃহীত

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

রিলেটেড লেখা

Back to top button