বিশেষ কলাম

টেকসই উন্নয়ন ও শিক্ষার লক্ষ্য

দীপক আঢ্যঃ শিক্ষার সার্বজনীন উদ্দেশ্য হচেছ শান্তি আনোয়ন। কিন্তু আজ গতিশীলতার যুগে আমরা যে শিক্ষা গ্রহন করছি তাতে প্রকৃত শান্তির পথ খুজে পাওয়া দুরহ। মূলত বিধাতার ভাল গুন ও শয়তানের খারাপ গুন বিশ্লেষন করাই হচেছ শিক্ষার প্রকৃত উদ্দেশ্য। আর সকল অন্ধকারের শেষে কিছু আলোক ধারা থাকে, যে সেটাকে ধরতে পারে সেই ভাগ্যবান। মূলত শিক্ষা শান্তি এবং উন্নয়ন একটা আরেকটার সাথে ওতোপ্রতোভাবে জড়িত। আর জনগনের সুশিক্ষার উপর উন্নয়নের গতিপ্রকৃতি নির্ভর করে। বস্তুতপক্ষে যে শিক্ষা আমাদের ভিতরের আত্নসত্তাকে জাগ্রত করে না ও আত্নার উন্নয়ন ঘটায় না সে শিক্ষা কখনও শান্তি ও উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে পারে না।

সুতরাং রাষ্ট্রের টেকসই উন্নয়ন ঘটাতে হলে প্রকৃত শিক্ষা তথা গঠনমূলক শিক্ষার বিকাশ ঘটাতে হবে। যতদিন না গঠনমূলক শিক্ষার বিকাশ না ঘটছে ততদিন সে শিক্ষা কখনও রাষ্ট্রের সুষম উন্নয়ন করতে পারে না। আমরা একদিকে উন্নয়নের কথা বলছি কিন্তু যারা সমাজের উন্নয়ন তরান্বিত করবে এবং উন্নয়নকে বেগবান করবে তাদের মুষ্ঠিমেয় শ্রেণী আজ নিজেদের নিয়ে ব্যস্ত। আমরা এখন খুব এককেন্দ্রিক হয়ে গেছি। পরিবার থৈকে সমাজ তথা সকল ক্ষৈত্রে আমরা খুব ব্যস্ত। কিন্তু আমরা সময়টাকে সুষ্ঠু চিন্তায় কাজে না লাগিয়ে সৎ চিন্তা না করে অন্যের ক্ষতি করবার জন্য মরিয়া হয়ে গেছি। আর এর থৈকে বের হয়ে না অসতে পারলে কখনই প্রকৃত উন্নয়ন সম্ভব নয়। এজন্য সকলকে একসাথে কাজ করতে হবে। মনে রাখতে হবে সমাজে কোন কিছু চিরস্থায়ী নয়। সেটাই টিকে থাকে যেটা কল্যানকর।

আরও পড়ুন:
◾ চতুর্থ শিল্পবিপ্লব ও বাংলাদেশের ব্যাংক ব্যবস্থা-১

শিক্ষা শান্তি ও উন্নয়ন সম্পর্কে কতিপয় ব্যক্তির কিছু বানী তুলে ধরা হলো-
১. “The aspect of education is enriched with reason that aim at having peace which is the precondition of any kind of development both in concrete and abstract sphere of life.” (Ref: Abul Kalam Azad- India wins freedom)
২. The slogan of education peace and development is very pragmatic as the paradigm form the way to change suitable to human civilization. Ref:(st. Thomas Aquinas-The city of God)
৩. Education is the most constituent information that grows the way to peace. (Ref: B. Russell- Education and social order)

ব্যাংক, ব্যাংকার, ব্যাংকিং, অর্থনীতি ও ফাইন্যান্স বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ খবর, প্রতিবেদন, বিশেষ কলাম, বিনিয়োগ/ লোন, ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, ফিনটেক, ব্যাংকের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারগুলোর আপডেট পেতে আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ 'ব্যাংকিং নিউজ', ফেসবুক গ্রুপ 'ব্যাংকিং ইনফরমেশন', 'লিংকডইন', 'ইউটিউব', 'হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেল' এবং 'গুগল নিউজ'-এ যুক্ত হয়ে সাথে থাকুন।

সুতরাং শিক্ষা, শান্তি ও উন্নয়ন এই তিন paradigms বিশ্বকে আদিম যুগের অসভ্য যুগ থেকে সভ্যতার বিকাশে সহায়তা করেছে। শিক্ষার উদ্দেশ্য হলো পরিনামদর্শিতা, বিচক্ষনতা এবং কোন কিছুর কারন কে উৎঘাটন করা। অর্থাৎ শান্তি প্রতিষ্ঠায় শিক্ষার প্রকৃত উদ্দেশ্য। অন্যভাবে বলতে গেলে বলতে হয়- উন্নয়ন যদি শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে না পারে তবে সে উন্নয়ন বেশিদিন স্থায়ী হয় না। এক্ষেত্রে কার্লমার্ক্স এর revolution ছিল ব্যতিক্রম। এক্ষেত্রে বলা যায়- “there must have a constitutional change in the state in which dominants of peace must be given preference to get a melioration indeed peace is mandatory to have development in the state in the world.” – Karl Marx

শিক্ষা, শান্তি ও উন্নয়নের স্বাভাবিক সূত্র:
শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য যদি শান্তি বলি তবে সে শিক্ষার মাঝে অবশ্যই আনন্দের গন্ধ থাকতে হবে। তবেই সে শিক্ষা প্রকৃত শান্তি দিতে পারবে ভারতের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি এ.পি.জে আবুল কালাম বলেন-
যেখানে হদয়ে ন্যায়পরায়নতা থাকে,
সেখানে চরিত্রে মাধুর্য থাকে,
যখন চরিত্রে মাধুর্য় থাকে,
তখন গৃহে সম্প্রীতি থাকে,
আর দেশে থাকে শৃঙ্খলা,
যখন দেশে শৃখলা থাকে,
তখন বিশ্বে শান্তি বিরাজ করে।

সুতরাং শিক্ষার মূল উদ্দ্যেশ্য হচ্ছে কল্যানকর সমাজ গঠন। যেটা আমাদের সমাজব্যবস্থা থেকে দিনে দিনে হারিয়ে যেতে বসেছে। এখন যদি আমরা সমাজকে পরিবর্তন না করতে পারি তবে আমাদের সমস্ত উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড ব্যর্থ হয়ে যাবে। আর আমাদের সমাজ তথা আমাদের সংস্কৃতিকে টিকিয়ে রাখার দায়িত্ব আমাদের। আজ বিশ্বায়নের চরম পর্যায়ে এসেও আমদের রবীন্দ্রনাথের কল্যান ও যুক্তিবাদী অর্থনীতির কথা ভাবতে হবে। তবেই আমাদের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখা সম্ভব। আর তখনই শিক্ষার মূল লক্ষ্য অর্জিত হবে।

লেখকঃ দীপক আঢ্য, ব্যাংক কর্মকর্তা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

রিলেটেড লেখা

Back to top button