ব্যাংক হিসাব

ডরমেন্ট একাউন্ট কি? ডরমেন্ট একাউন্ট চালু করার নিয়ম

একটি ব্যাংক হিসাবে দীর্ঘদিন ধরে লেনদেন না হলে সেই হিসাবটি একটি নির্দিষ্ট সময় পর ইনঅপারেটিভ (Inoperative) হওয়ার পর নিস্ক্রিয় বা সুপ্ত হিসাব (Dormant Account) হিসেবে চিহ্নিত হয়। এই হিসাবে চাইলেই লেনদেন করা যায় না। কিছু নিয়ম মেনে এই হিসাবে লেনদেন করতে হয়।

ডরমেন্ট (Dormant) একাউন্ট কি?
ব্যাংকের কোন হিসাব যদি গ্রাহক একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত লেনদেনবিহীন (জমা এবং উত্তোলন) অবস্থায় রাখেন, তাকে নিস্ক্রিয় বা সুপ্ত হিসাব (Dormant Account) বলা হয়। L.R Chowdhury তার A Dictionary of Banking and Finance এ বলে- Dormant Account which has not been operated by the customer for a long period. অর্থাৎ নিস্ক্রিয় বা সুপ্ত অ্যাকাউন্ট যা গ্রাহক দীর্ঘকাল ধরে পরিচালনা করে না। আইনি বিধান সাধারণত সুপ্ত বা নিস্ক্রিয় অ্যাকাউন্টগুলোতে প্রয়োগ হয় না এবং এই হিসাবে জমাকৃত অর্থ গ্রাহক বা সুবিধাভোগী যে কোনও সময় দাবি করতে পারে।

নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত লেনদেনবিহীন এসব হিসাবের বেলায় একাউন্ট ওপেনিং ফরমের গায়ে “সাবধান, নিষ্ক্রিয় হিসাব” লিখে রাখতে হবে। এছাড়া কম্পিউটারাইজড কোর ব্যাংকিং সফটওয়ারের অ্যাকাউন্ট মডিউলে নোট দিয়ে রাখতে হবে যে, এই হিসাবটি নিস্ক্রিয় বা সুপ্ত হিসাব (Dormant Account)। শাখা ব্যবস্থাপকের অনুমতি ব্যতিরেকে এই হিসাব থেকে টাকা উঠানো যায় না। কেবলমাত্র আবেদন করে গ্রাহক তার হিসাব পুনরায় চালু করতে পারেন।

কখন একটি হিসাব ডরমেন্ট হয়?
● সাধারণভাবে কারেন্ট অ্যাকাউন্ট বা চলতি হিসাবে ১২ মাসের বেশি এবং সেভিংস অ্যাকাউন্ট বা সঞ্চয়ী হিসাবে ২৪ মাসের বেশি লেনদেন না হলে অ্যাকাউন্টটি Dormant (নিস্ক্রিয় বা সুপ্ত) হয়।
● তাছাড়া রাষ্ট্র এবং অ্যাকাউন্টের ধরণ অনুসারে সুপ্তাবস্থার সময়কাল পরিবর্তিত হয়ে থাকে।
● সুপ্তাবস্থার পরে সুপ্ত অ্যাকাউন্ট তামাদি (Unclaimed) হিসাবে পরিণত হওয়ার পর রাষ্ট্রের দাবীবিহীন সম্পত্তি হয়ে যায়।
● যে সকল অ্যাকাউন্ট সুপ্ত হতে পারেঃ চলতি অ্যাকাউন্ট, সঞ্চয়ী অ্যাকাউন্ট, এছাড়াও সকল ধরণের চেক বেয়ারিং অ্যাকাউন্ট।

ব্যাংক, ব্যাংকার, ব্যাংকিং, অর্থনীতি ও ফাইন্যান্স বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ খবর, প্রতিবেদন, বিশেষ কলাম, বিনিয়োগ/ লোন, ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, ফিনটেক, ব্যাংকের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারগুলোর আপডেট পেতে আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ 'ব্যাংকিং নিউজ', ফেসবুক গ্রুপ 'ব্যাংকিং ইনফরমেশন', 'লিংকডইন', 'টেলিগ্রাম চ্যানেল', 'ইন্সটাগ্রাম', 'টুইটার', 'ইউটিউব', 'হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেল' এবং 'গুগল নিউজ'-এ যুক্ত হয়ে সাথে থাকুন।

ডরমেন্ট একাউন্ট চালু করার নিয়ম
অনেক দিন লেনদেন না করে থাকলে একটি আবেদন দিয়ে এই হিসাবে টাকা জমা বা উত্তোলন করে এই হিসাব রেগুলার করা যায়। তবে এক্ষেত্রে কিছু নিয়ম রয়েছে-
১) গ্রাহকের সাথে যোগাযোগঃ সাম্প্রতিক যোগাযোগের তথ্য ব্যবহার করে ব্যাংকগুলো রাষ্ট্রীয় আইন মেনে সুপ্ত অ্যাকাউন্ট হোল্ডারদের সাথে যোগাযোগ করা।
২) কোনও স্ট্যান্ডার্ড পদ্ধতি নেইঃ নিষ্ক্রিয় অ্যাকাউন্টগুলো রেগুলার করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যাংকগুলোকে নির্দেশ দিয়ে থাকে। পুনরায় সক্রিয়করণের প্রক্রিয়াটি এক ব্যাংক থেকে অন্য ব্যাংক ভিন্নভাবে করতে পারে।
৩) লিখিত আবেদনঃ অ্যাকাউন্টটি পুনরায় চালু করার জন্য ব্যাংক অ্যাকাউন্ট হোল্ডারের স্বাক্ষরিত লিখিত আবেদনের জন্য অনুরোধ করবে। এক্ষেত্রে ব্যাংক আবেদনকারীর স্বাক্ষর ভালোভাবে যাচাই বাছাই করে হিসাবটি পুনরায় চালু করবে।
৪) কেওয়াইসি হালনাগাদঃ এক্ষেত্রে গ্রাহকের কেওয়াইসি (KYC) হালনাগাদ করে নিতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে নির্ধারিত ফর্ম পূরণ এবং সাথে NID/ ভোটার আইডি কার্ড বা অন্যান্য ছবি-সহ আইডি কার্ড ও ইউটিলিটি বিল জমা দিয়ে ঠিকানা এবং আবাসনের প্রমাণ নেয়া।
৫) কার্ড এবং চেক বইঃ অ্যাকাউন্টধারীর এটিএম কার্ড প্রদর্শন বা জমা করে নতুন কার্ড দেওয়ার জন্য এবং চেক বই চেক করা যেতে পারে। এটি বাধ্যতামূলক নাও হতে পারে।
৬) ব্যাংককে ডিউ ডিলিজেন্স হতে হবেঃ সুপ্ত অ্যাকাউন্ট পুনরায় সক্রিয়করণ করতে একটি নতুন অ্যাকাউন্ট খোলার মত সুচারুভাবে দেখতে হবে, যাতে পরবর্তীতে কোন ঝামেলা না হতে পারে।
৭) সক্রিয়করণের জন্য কেবল একটি লেনদেন দরকারঃ এই অ্যাকাউন্টটি সক্রিয়করণের জন্য কেবল একটি লেনদেন (জমা বা উত্তোলন) দরকার হয়ে থাকে।
8) চার্জঃ সুপ্ত ব্যাংক অ্যাকাউন্ট পুনরায় সক্রিয় করার জন্য কোনও চার্জ নেই। যদি আপনার (গ্রাহক) ব্যাংক কোনও চার্জ আরোপ করে, তবে বাংলাদেশ ব্যাংককে রিপোর্ট করুন।

একটি মন্তব্য

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

রিলেটেড লেখা

Back to top button