ব্যাংকিং

চেকের মাধ্যমে জালিয়াতি প্রতিরোধে অধিকতর সর্তকতা অবলম্বন

বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক ইতিপূর্বে ইস্যুকৃত বিভিন্ন সার্কুলার ও গাইডলাইনের আলোকে চেকের জাল জালিয়াতি রোধে বিভিন্ন নির্দেশনা প্রদান করা সত্বেও, অত্যন্ত উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, চেক জালিয়াতির মাধ্যমে গ্রাহকের হিসাব থেকে বিরাট অংকের অর্থ আত্মসাতের ঘটনা ক্রমশ বেড়েই চলেছে। উন্নত প্রযুক্তি, অনলাইন লেনদেন, ইমেইল এর অপব্যবহার এবং গ্রাহকের সরলতার সুযোগ নিয়ে একটি সংঘবদ্ধচক্রের দ্বারা নগদ, ক্লিয়ারিং ও ট্রান্সফার চেকের মাধ্যমে গ্রাহকের অর্থ আত্মসাতের ঘটনা প্রায়ই ঘটছে।

বিশেষ করে প্রবাসী গ্রাহকের ক্ষেত্রে চেক টেম্পারিং, স্বাক্ষর জাল, ভূয়া ই-মেইলে Positive Pay Instruction (সার্কুলারটি দেখতে ক্লিক করুন এখানে) প্রেরণ, গ্রাহক পরিচয়ে ব্যাংক কর্মকর্তার সাথে মোবাইল বা ফোনে কথোপকথন এর মাধ্যমে সুপরিকল্পিতভাবে জাল জালিয়াতির ঘটনা ঘটছে। ইতিমধ্যে জালিয়াত চক্রটি দেশের বিভিন্ন ব্যাংকের বিভিন্ন শাখা থেকে বিরাট অংকের টাকা জালিয়াতির মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যাংকের ভিন্ন ভিন্ন শাখায় স্থানান্তর করেছে এবং অত্যন্ত সুকৌশলে তা উত্তোলন করেছে।

আরও দেখুন:
চেক প্রতারণা ও ডিজঅনারে করণীয়
চেক ডিজঅনার এবং ডিজঅনার চেকের প্রতিকার

এক্ষেত্রে ব্যাংকের কর্মকর্তাদের অসতর্কতায় দায়ী বলে বিভিন্ন মহল থেকে প্রশ্ন উঠছে। এক্ষেত্রে যথাযথ সর্তকতা অবলম্বন না করে জাল চেকের অর্থ প্রদানের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ হচ্ছেন, অন্যদিকে প্রকৃত আমানত গ্রাহক ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে এবং ব্যাংকের সুনাম ও ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে।

ব্যাংক, ব্যাংকার, ব্যাংকিং, অর্থনীতি ও ফাইন্যান্স বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ খবর, প্রতিবেদন, বিশেষ কলাম, বিনিয়োগ/ লোন, ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, ফিনটেক, ব্যাংকের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারগুলোর আপডেট পেতে আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ 'ব্যাংকিং নিউজ', ফেসবুক গ্রুপ 'ব্যাংকিং ইনফরমেশন', 'লিংকডইন', 'টেলিগ্রাম চ্যানেল', 'ইন্সটাগ্রাম', 'টুইটার', 'ইউটিউব', 'হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেল' এবং 'গুগল নিউজ'-এ যুক্ত হয়ে সাথে থাকুন।

অতএব জাল-জালিয়াতি রোধকল্পে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিভিন্ন সার্কুলার ও দিকনির্দেশনা যথাযথভাবে অনুসরণ সহ নিম্নবর্ণিত বিষয়গুলো পরিপালনে বাংলাদেশের সকল ব্যাংকের সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীদেরকে আরো সচেষ্ট হওয়ার পরামর্শ প্রদান করা যাচ্ছে-

✔ সকল একাউন্ট অপেনিং ফর্ম হালনাগাদ করা (TP, KYC, মোবাইল বা টেলিফোন নম্বর, ই-মেইল অ্যাড্রেস, ঠিকানা ইত্যাদি)।
✔ বিশেষ করে শাখায় বিদ্যমান সকল প্রবাসী গ্রাহকের হিসাবের তালিকা প্রস্তুত করা, হালনাগাদ করা, এ সকল হিসাবের বিপরীতে চেক বই প্রদানসহ লেনদেনের ক্ষেত্রে অধিকতর সর্তকতা অবলম্বন করা এবং মাঝে মাঝে প্রবাসী গ্রাহকের সাথে যোগাযোগের মাধ্যমে কুশলাদি বিনিময় সহ তাদের মোবাইল নম্বর নিশ্চিত করা।

✔ প্রবাসী গ্রাহকের ক্ষেত্রে Guideline for Foreign Exchange Transaction, 2009, Volume I, Chapter 14: II Subsection: 13 (II) (b) অনুযায়ী ফরম এ ৭ এর মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংক হতে গৃহীত পূর্বানুমতি ব্যতীত কোন অনিবাসী গ্রাহক কর্তৃক কোন নিবাসী গ্রাহকের নামে ইস্যুকৃত ৫ হাজার টাকার অধিক মূল্যমানের চেক এর বিপরীতে হিসাবটি ডেবিট না করা।

✔ নগদ, ক্লিয়ারিং এবং ট্রান্সফার চেক গ্রহণের সময় তা ভালোভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা (UV/Ultra Violate মেশিনে চেক করা, চেক নম্বর ও চেকের সিরিজ নম্বর টেম্পারড কি না তা যাচাই বাছাই করা, Material Alteration ও স্বাক্ষর যথাযত ভাবে দেখে নেয়া)।
✔ চেক পেমেন্টের ক্ষেত্রে ব্যাংকিং নীতিমালার যথাযথ অনুসরণ করা বিশেষ করে Positive Pay Instruction (সার্কুলারটি দেখতে ক্লিক করুন এখানে) অথবা গ্রাহকের সাথে যথাযথ যোগাযোগ করা এবং TP Violation থেকে বিরত থাকা।

✔ যেহেতু প্রবাসী গ্রাহকের হিসাবে বর্তমানে বেশি চেক জালিয়াতি হচ্ছে তাই প্রবাসী গ্রাহকদের চেক পেমেন্টের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সর্তকতা অবলম্বন করা। ব্যাংকের রেকর্ড নেই এমন কোন মোবাইল ফোন অথবা টেলিফোন অথবা ই-মেইলে গ্রাহক যোগাযোগ করলে তার সঠিকতা যাচাই করা এবং সতর্কতার সাথে নিশ্চিত হয়ে অর্থপ্রদান করা এবং প্রয়োজনে আধুনিক প্রযুক্তি Imo, Skype, Viber, Google Duo ইত্যাদি ব্যবহার করে ভিডিও কলের মাধ্যমে গ্রাহকের সাথে যোগাযোগের মাধ্যমে চেকের সত্যতা নিশ্চিত করা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

রিলেটেড লেখা

Back to top button