এজেন্ট ব্যাংকিং

এজেন্ট ব্যাংকিং সম্পর্কে কিছু কথা

আধুনিক ব্যাংকিং সেবা জনগনের দোড়গোড়ায় পৌছে দিতে এজেন্ট ব্যাংকিং ধারণার উদ্ভব। যেখানে ব্যাংকের শাখা খোলা সম্ভব নয়, সে সব স্থানে বেসিক ব্যাংকি সেবা সমূহ সরবরাহের জন্য বিভিন্ন ব্যাংক তাদের এজেন্ট নিয়োগের মাধ্যমে সেবা সরবরাহ করছে। জনগনের সুবিধার জন্য হলে যে কোন কাজ বা সেবাই সমর্থনযোগ্য। কিন্তু যেখানে অন্যান্য ব্যাংকের একাধিক শাখা থাকা সত্বেও কতিপয় ব্যক্তির ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে এজেন্ট ব্যাংকিং চালু করে জনগনকে কি সেবা দিতে চাইছে?

বিশাল আকৃতির সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের সাইনবোর্ড লাগিয়ে তার নিচের কর্ণারে অতিমাত্রায় ক্ষুদ্রাকার “এজেন্ট ব্যাংকিং” শব্দটি বড়ই অবহেলিত! এর মানে কি? জনগনকে বোকা বানানোর কোন কৌশল নয়তো? আপনি এজেন্ট ব্যাংকিং সেবা দিবেন, সেটা জনগনকে দেখাতে বা বলতে সমস্যা কোথায়? এজেন্ট ব্যাংকিং মানে এজেন্ট ব্যাংকিং, সেটা সাইনবোর্ডে বড় করে লিখছেন না কেনো? এটাতো সাধারণ জনগণের বোধগম্য হওয়া উচিৎ কোনটা “ব্যাংক” আর কোনটা “এজেন্ট”।

কারো এজেন্ট ব্যাংকিং এ সেবার দরকার হলে সে সেখানে যাবে, আর যার ব্যাংকের শাখায় যাওয়ার দরকার, সে শাখায়ই যাবে। সব কিছু এক করে দিয়ে কাদেরকে বেনিফিটেড করা হচ্ছে। জনগণ প্রতারিত হচ্ছে কিনা জানি না, তবে ধোকা খাচ্ছে।

সাধারণত মেধাবীরাই ব্যাংক কর্মকর্তা হয়ে থাকেন। ইদানিং যে ভাবে গ্রামে-গঞ্জে এজেন্ট ব্যাংকিং চালু হচ্ছে, অলিল, খলিল, জলিল খুব সহজেই ব্যাংক কর্মকর্তা হয়ে যাচ্ছে। যে ব্যক্তি পাঁচ বারের চেষ্টায় মেট্রিক পাশ করতে পারেনি, সে আজ ব্যাংকের মালিক! আবার তার ইচ্ছে মতো কর্মচারী নিয়োগ দিয়ে তাদের ব্যাংক কর্মকর্তা বানিয়ে দিচ্ছে। বিষয়টি খুব সহজ হচ্ছে কেবল সাইনবোর্ডের কারনে।

ব্যাংক, ব্যাংকার, ব্যাংকিং, অর্থনীতি ও ফাইন্যান্স বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ খবর, প্রতিবেদন, বিশেষ কলাম, বিনিয়োগ/ লোন, ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, ফিনটেক, ব্যাংকের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারগুলোর আপডেট পেতে আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ 'ব্যাংকিং নিউজ', ফেসবুক গ্রুপ 'ব্যাংকিং ইনফরমেশন', 'লিংকডইন', 'টেলিগ্রাম চ্যানেল', 'ইন্সটাগ্রাম', 'টুইটার', 'ইউটিউব', 'হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেল' এবং 'গুগল নিউজ'-এ যুক্ত হয়ে সাথে থাকুন।

কোন কার্যালয়ের বাইরে যদি স্বীকৃত প্রতিষ্ঠানের বিশাল সাইনবোর্ড থাকে, তবে তার ভিতরে যারা কর্মরত তারা জনগণের দৃষ্টিতে সেই প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারী। যদি সাইনবোর্ডের সাহায্যে ব্যাংক কর্মকর্তা হওয়া যায়, তবে এক সময় মেধাবীরা ব্যাংকিং সেক্টরে আসতে ষোলবার চিন্তা করবে, এটা নিশ্চিৎ।

আমি এজেন্ট ব্যাংকিং এর বিপক্ষে নই। যেখানে কোন ব্যাংকের শাখা নেই, সেখানে এজেন্ট ব্যাংকিং এর মাধ্যমে হলেও ব্যাংকিং সেবা পৌছে দেয়া দরকার। সকল জনগণকে ব্যাংকি চ্যানেলের মধ্যে নিয়ে আসতে গেলে এজেন্ট ব্যাংকিং একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। তাই বলে যেখানে অজস্র ব্যাংকের শাখা থাকা সত্ত্বেও কেউ চাইলো আর আপনার ব্যাংকের সাইনবোর্ডটি লাগিয়ে নিলো, তা কি করে হয়? মুনাফাখোরীর একটা সীমা থাকা দরকার। দিন দিন ব্যাংকিং কালচার মূল্যবোধের দিক দিয়ে কেবল নিম্নগামী হচ্ছে।

লেখকঃ মোহাম্মদ জসীম উদ্দীন
ব্যবস্থাপক, জনতা ব্যাংক লিমিটেড, বাতাকান্দি শাখা, কুমিল্লা উত্তর।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

রিলেটেড লেখা

Back to top button