‘ভয়ংকর’ ম্যানেজারের কতিপয় লক্ষণ
কি শিরোনাম দেখে চমকে উঠলেন? এটাই সত্যি এবং বাস্তব৷ অনলাইন ভিত্তিক একটি ওয়েবসাইট জানিয়েছে, ৩২ শতাংশ চাকরিজীবী তাদের অফিসের বস বা ম্যানেজারকে ক্ষতিকারক বলে মনে করে থাকে। কর্মক্ষেত্রে বস বা ম্যানেজার যদি সুবিধার না হয় তাহলে ক্যারিয়ারে এগােনাে যায় বলে মনে করেন ন্যাশনাল ওয়ার্কপ্লেসের এক্সপার্ট লিন টেইলর।
সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম) গবেষণায় পাওয়া তথ্য অনুযায়ী এক-তৃতীয়াংশের বেশি ব্যাংক কর্মী তীব্র মানসিক চাপে ভোগেন। গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বেশকিছু কারণে চাপে ভোগেন ব্যাংক কর্মীরা। এর মধ্যে চাকরির অনিরাপত্তা, ঊর্ধ্বতনের বাড়তি চাপ ও সহায়তার অভাব, সময়ের চাপ, ঊর্ধ্বতনের সঙ্গে অস্বস্তিকর সম্পর্ক, অন্যের সঙ্গে তুলনায় বৈষম্য ও হীনমন্যতার বোধ অন্যতম।
তরুণ কর্মীদের (৩৫ থেকে ৪৪ বছর) মধ্যেও ৩৫ শতাংশ তীব্র চাপে ও ২৫ শতাংশ বিপজ্জনক চাপে ভোগেন বলে বিআইবিএমের গবেষণায় উল্লেখ করা হয়েছে। নতুন যোগ দেয়া কর্মীরাও চাপমুক্ত থাকতে পারেন না। তাদের ১৩ শতাংশ বিপজ্জনক চাপে ভোগেন। এর অন্যতম প্রধান কারণ হলো ম্যানেজারের বাড়তি চাপ প্রয়োগ, অসহযোগিতা ও খারাপ আচরন। চলুন জেনে নেই ক্ষতিকর ম্যানেজারের কিছু লক্ষণের কথা৷
১. অতিরিক্ত প্রতিশ্রুতি দেন
যে ম্যানেজার বেশি বেশি প্রতিশ্রুতি দেন তাঁর ওপর ভরসা করা যায় না। এমনও হয়, প্রমােশনের জন্য আপনাকেই সবচেয়ে বেশি এসিআর দিয়েছি এবার আপনার প্রমোশন হবেই হবে। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয় না, প্রমোশনের দেখাই নেই।
ব্যাংক, ব্যাংকার, ব্যাংকিং, অর্থনীতি ও ফাইন্যান্স বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ খবর, প্রতিবেদন, বিশেষ কলাম, বিনিয়োগ/ লোন, ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, ফিনটেক, ব্যাংকের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারগুলোর আপডেট পেতে আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ 'ব্যাংকিং নিউজ', ফেসবুক গ্রুপ 'ব্যাংকিং ইনফরমেশন', 'লিংকডইন', 'টেলিগ্রাম চ্যানেল', 'ইন্সটাগ্রাম', 'টুইটার', 'ইউটিউব', 'হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেল' এবং 'গুগল নিউজ'-এ যুক্ত হয়ে সাথে থাকুন। |
২. দোষ খুঁজতে পারদর্শী
এই ধরনের ম্যানেজাররা খুব সহজেই কর্মীদের দোষ তুলে ধরেন। এটা বারবারই ঘটতে থাকে। কিন্তু ভালাে কাজের জন্য প্রশংসা কোনােভাবেই করতে পারেন না। এমনকি কর্মীর কোনাে দোষ না থাকলেও নিজের সুবিধার জন্য তাকে দোষী বানিয়ে দিতে ওস্তাদ এমন ম্যানেজার।
৩. মিথ্যার আশ্রয় নেন
এ ধরনের ম্যানেজারের সঙ্গে উৎপাদনশীল সম্পর্ক গড়ে ওঠে না কর্মীদের। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তারা অন্যের দিকে আঙুল তুলতে মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে থাকেন।
৪. কর্মীদের নিজের মতো চান
যে সকল কর্মীরা ঠিক ম্যানেজারের মতাে চলাফেরা করে বা অনুকরণ করে, তাদের বেশ পছন্দ করেন এ ধরনের ম্যানেজার। কারণ তিনি সবাইকে নিজের মতাে করে দেখতে চান।
৫. ছুটির দিনেও কাজের কথা বলেন
সপ্তাহের প্রতিটা ছুটির দিনেও এ ধরনের ম্যানেজার কাজের জন্য ফোন করে বসেন। অর্থাৎ মানসিক চাপ থেকে বেরিয়ে আসতে পারছেন না আপনি।
৬. অন্যের মতামত জানতে চান না
অফিসের যেকোনাে বিষয়ে ভালাে আইডিয়া যে কারাে মাথা থেকে বেরিয়ে আসতে পারে। কিন্তু এমন ম্যানেজার কখনােই কর্মীদের মতামত বা আইডিয়া জানতে চান না। অথবা তিনি সবারটা শুনে একটা পরিকল্পনা তৈরি করেন ঠিকই কিন্তু সেটি নিজের বলে চালিয়ে দেন।
৭. কৃতিত্ব একাই নেন
কোনাে কাজের সফলতা বয়ানে আপনার ম্যানেজার কি কেবল “আমি” শব্দটা ব্যবহার করেন? তাহলে বুঝবেন তিনি সব কৃতিত্ব নিজেই নিতে চান। টিমওয়ার্কের সফলতা তিনি মানেন না।
৮. সুযােগ দেন না
এ সকল ম্যানেজার কর্মীদের সামান্য ভুলের ক্ষেত্রে কোনাে সুযােগ দেন না। তিনি আবার কর্মীদের একটু এগিয়ে যেতেও কোনাে সুযােগ দিতে নারাজ। তার কাছে ছাড় বলে কোনাে কথা নেই।
৯. আগ্রাসী
মাঝে মধ্যে বা প্রায়ই কর্মীদের প্রতি দারুণ আগ্রাসী হয়ে ওঠেন এ ধরনের ম্যানেজার। অনেক সময় দারুণ নেতিবাচক আচরণ করে থাকেন। কখনো কখনো বাজে ব্যবহার বা খিস্তি-খেউড় এগুলাে প্রকাশ পায়।
১০. কর্মীর ভবিষ্যৎ দেখেন না
দেখবেন, আপনার ভালাে বা ভবিষ্যৎ নিয়ে ম্যানেজার কখনাে আলাপ করেন না। এমনকি আপনি এসব কথা তুললেও তিনি বিরক্তির সঙ্গে তা এড়িয়ে যান।
১১. আত্মকেন্দ্রিক
এমন ম্যানেজার মনে করেন, তাকে কেন্দ্র করেই গােটা অফিস ঘুরছে। তিনিই এখানকার মধ্যমণি। তাই এ সকল ম্যানেজার দারুণভাবে আত্মকেন্দ্রিক হয়ে ওঠেন। তারা কেবল নিজেদের বিষয় নিয়েই কথা বলতে থাকেন।