বিবিধ

প্রাইজ বন্ড সম্পর্কিত কিছু সাধারন প্রশ্ন ও উত্তর

প্রাইজ বন্ড হল বাংলাদেশ সরকারের একটি সুদ বিহীন বিনিয়োগ পদ্ধতি। স্থানীয় সম্পদ সংগ্রহে ও জনগনকে সঞ্চয়ে উৎসাহী করতেই বাংলাদেশে প্রাইজ বন্ড চালু করা হয়। বাংলাদেশ সরকার ১৯৭৪ সালে প্রাইজ বন্ড ইস্যু করে। প্রাইজ বন্ড অসাধারন একটি বিনিয়োগ পদ্ধতি। ভাগ্য প্রসন্ন্য হলে আপনিও হয়ে যেতে পারেন বিজয়ীদের একজন। অথবা আপনি চাইলেই ব্যাংকে আপনার বন্ড টি হস্তান্তর করে এর টাকা ফেরত নিতে পারেন। ভাগ্য টাকে বাজিয়ে দেখুন। নইলে অর্থ ফেরত এর সুযোগ তো রয়েছেই। প্রাইজ বন্ড সম্পর্কে অনেকেরই অনেক ভ্রান্ত ধারনা রয়েছে। এই ভ্রান্ত ধারনাগুলো ভেঙে দেয়াই আমার আজকের লেখার উদ্দেশ্য। তো চলুন জেনে নেই প্রাইজ বন্ড সম্পর্কে কিছু সাধারন জিজ্ঞাসা ও এর উত্তর।

প্রশ্নঃ প্রাইজ বণ্ডের ড্র কখন হয়?
উত্তরঃ সাধারণত, প্রতি বছর ৪ বার, প্রতি তিন মাস অন্তর (৩১ জানুয়ারী, ৩০ এপ্রিল, ৩১ জুলাই ও ৩১ অক্টোবর) ‘ড্র’ অনুষ্ঠিত হয়। তবে উক্ত তারিখগুলোর কোনটিতে কোন সাপ্তাহিক ছুটি (বর্তমানে শুক্র ও শনিবার) বা সরকারি ছুটি (সাধারণ/নির্বাহী আদেশে/ঐচ্ছিক), অথবা অনিবার্য কোন কারনে প্রাইজ বন্ডের ড্র অনুষ্ঠিত হতে না পারলে পরবর্তী কার্যদিবসে তা সম্পন্ন করা হয়।

প্রশ্নঃ কত দিন পর একটি প্রাইজ বন্ড ড্র এর আওতায় আসবে?
উত্তরঃ একটি প্রাইজ বন্ডে নির্দেশিত বিক্রয় তারিখ থেকে কমপক্ষে ২ (দুই) মাস পার হলে উক্ত বন্ড ড্র’র আওতায় আসবে। বন্ড টি কবে কিনেছেন সেটি গুরুত্বপূর্ণ নয়, বন্ডে উল্লেখিত তারিখ থেকে দুই মাস পার হয়েছে কিনা সেটি লক্ষণীয় বিষয়।

প্রশ্নঃ কতদিন পর্যন্ত একটি প্রাইজ বন্ড ড্র এ প্রযোজ্য হবে?
উত্তরঃ ১০০ টাকা মূল্যমানের প্রাইজ বন্ড হলেই তা ড্র এর আওতা ভুক্ত। বিশ বা ত্রিশ বছর আগের পুরনো বন্ড হলেও তা ড্র এর জন্য প্রযোজ্য।

ব্যাংক, ব্যাংকার, ব্যাংকিং, অর্থনীতি ও ফাইন্যান্স বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ খবর, প্রতিবেদন, বিশেষ কলাম, বিনিয়োগ/ লোন, ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, ফিনটেক, ব্যাংকের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারগুলোর আপডেট পেতে আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ 'ব্যাংকিং নিউজ', ফেসবুক গ্রুপ 'ব্যাংকিং ইনফরমেশন', 'লিংকডইন', 'টেলিগ্রাম চ্যানেল', 'ইন্সটাগ্রাম', 'টুইটার', 'ইউটিউব', 'হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেল' এবং 'গুগল নিউজ'-এ যুক্ত হয়ে সাথে থাকুন।
ব্যাংকিং নিউজ বাংলাদেশ (Banking News Bangladesh. A Platform for Bankers Community.) প্রিয় পাঠকঃ ব্যাংকিং বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ খবরগুলো নিয়মিত আপডেট পেতে আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ ব্যাংকিং নিউজ বাংলাদেশ এ লাইক দিয়ে আমাদের সাথেই থাকুন।

প্রশ্নঃ ড্র তে বিজয়ী হলে কতদিন পর্যন্ত পুরস্কার দাবি করতে পারবেন?
উত্তরঃ ড্র তে বিজয়ী হলে ড্র এর তারিখ হতে ২ বছরের মধ্যে আপনি পুরস্কার দাবি করতে পারবেন।

প্রশ্নঃ কিভাবে পুরস্কার দাবি করবেন?
উত্তরঃ জেতার পর মূল বন্ডসহ নির্ধারিত ফরমে আবেদন করলে সর্বোচ্চ দুই মাসের মধ্যে বিজয়ীকে পে-অর্ডার দেওয়া হয়। পুরষ্কারের দাবী ফরম পাওয়া যাবে যে কোন জাতীয় সঞ্চয় ব্যুরো, বাংলাদেশ ব্যাংকসহ তফসিলী ব্যাংকসমূহ এবং ডাকঘর অফিসে। এ ছাড়া অনলাইনে পাওয়া যাবে বাংলাদেশ ব্যাংক এবং বাংলাদেশ ফরম এই দুই ওয়েবসাইটে। পে-অর্ডারের মাধ্যমে পুরষ্কার দেয়া হবে তাই বিজয়ীর ব্যাংক একাউন্ট থাকতে হবে। পুরস্কারের টাকার ওপর কর দিতে হয় ২০ শতাংশ। এখনে উল্লেখ্য যে, ড্র’র তারিখ থেকে পরবর্তী ২ বৎসরের মধ্যে ঐ ড্র-তে প্রাপ্ত পুরস্কারের অর্থ দাবি করা না হলে ঐ পুরস্কার বাতিল হয়ে যায় যা কোনক্রমেই আর পরিশোধ করা হয় না।

প্রশ্নঃ প্রাইজ বন্ড কে কে কিনতে পারে?
উত্তরঃ প্রাইজ বন্ড যে কোন বাংলাদেশী এমনকি একটি শিশুও কিনতে পারে। কোন বয়েস সীমা বা শর্ত প্রযোজ্য নয়।

প্রশ্নঃ প্রাইজ বন্ডের মালিক কে?
উত্তরঃ প্রাইজ বন্ড হস্তান্তর যোগ্য এবং স্থান-কাল-পাত্র নির্বিশেষে বন্ড এর ধারক-ই প্রাইজ বণ্ডের মালিক।

প্রশ্নঃ প্রাইজ বন্ড কোথায় পাওয়া যায়?
উত্তরঃ বাংলাদেশ ব্যাংকের সকল শাখা অফিস, বাণিজ্যিক ও বিশেষায়িত ব্যাংকগুলির অনুমোদিত শাখাসমূহ, জাতীয় সঞ্চয় ব্যুরো এবং দেশের যে কোন ডাকঘর থেকে প্রাইজ বন্ড সংগ্রহ করা যায়।

প্রশ্নঃ প্রাইজ বণ্ডের ড্র এর ফলাফল জানবেন কিভাবে?
উত্তরঃ জাতীয় দৈনিক পত্রিকাগুলো ড্র এর ফলাফল প্রকাশ করে। তবে পত্রিকা দেখে ড্র এর ফলাফল ও প্রাইজ বণ্ডের নাম্বার মিলিয়ে দেখা একটি যথেষ্ট সময় সাপেক্ষ ও কষ্টসাধ্য ব্যাপার। এ ক্ষেত্রে আপনি প্রাইজ বন্ড চেকার অ্যাপ ব্যবহার করে খুব সহজেই জেনে নিতে পারেন ড্র এর ফলাফল।

প্রশ্নঃ প্রাইজ বন্ড চেকার কি?
উত্তরঃ এটি একটি অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ যার মাধ্যমে পত্রিকা দেখার ঝামেলা ছাড়াই ড্র এর সাথে সাথেই সরাসরি জানতে পারবেন আপনার মোবাইল ফোনে। প্রাইজ বন্ড চেকার অ্যাপটি পেতে গুগল প্লে স্টোরে সার্চ করুন Prize Bond Checker লিখে অথবা এখানে ক্লিক করুন।

প্রশ্নঃ সর্বোচ্চ কতগুলো প্রাইজ বন্ড কিনতে পারবেন?
সাধারণত একজন ব্যক্তি সর্বোচ্চ ৪৫ লাখ টাকার সম পরিমান প্রাইজ বন্ড কিনতে পারবেন।

প্রশ্নঃ কত টাকা মূল্যের প্রাইজ বন্ড পাওয়া যায়?
উত্তরঃ বাংলাদেশে বর্তমানে ১০০ টাকা মূল্যের প্রাইজ বন্ড পাওয়া যায় যদিও পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত ও পাকিস্তানে ৮ ধরনের প্রাইজ বন্ড পাওয়া যায়। আগে বাংলাদেশে ১০ টাকা মূল্যের বন্ড পাওয়া যেত যা এখন আর প্রচলিত নেই।

প্রশ্নঃ পুরস্কার দাবি না করলে পুরস্কারের টাকা কি করা হয়?
উত্তরঃ কোন বিজয়ী যদি পুরস্কার জেতার ২ বছরের মধ্যে পুরস্কার দাবি না করেন, পুরস্কারের টাকা সরকারি কোষাগারে জমা হয়ে যায়। বাংলাদেশ ব্যাংক সরকারের এজেন্ট হিসেবে এই স্কিম পরিচালনা করে। প্রাইজ বন্ড সম্পর্কিত যেকোনো নিয়ম পরিবর্তন পরিবর্ধন করার সকল ক্ষমতা বাংলাদেশ ব্যাংকের।

আমাদের ভ্রান্ত ধারনা এবং অবহেলায় প্রাইজ বন্ড জনপ্রিয়তা হারাচ্ছে। এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে যে, সব ব্যাংকে বা ডাকঘর অফিসে প্রাইজ বন্ড সব সময় পাওয়া যাচ্ছে না। এর একমাত্র কারন গ্রাহক সংকট ও অনীহা। প্রাইজ বন্ড কিন্তু দারুন একটি সঞ্চয় পদ্ধতি যেখানে আপনার ক্ষতি হওয়ার কোন সুযোগ নেই, বরং আপনার ব্যাপক লাভের সম্ভাবনা আছে।

বাংলাদেশের প্রতিটি ঘরেই খুজলে পুরনো প্রাইজ বন্ড পাওয়া যাবে যেগুলো সময়ের অভাবে বা অবহেলায় চেক করা হয়নি। একবার ভেবে দেখেছেন কি, এই অবহেলায় পড়ে থাকা কাগজের টুকরোটি আপনার ভাগ্য খুলে দিতে পারে! এখনো সময় আছে, ভেবে দেখুন। আজই চেক করুন আপনার বাড়িতে পরে থাকা প্রাইজ বন্ডগুলো। প্রাইজ বন্ড কিনুন এবং অন্যকে উৎসাহিত করুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

রিলেটেড লেখা

Back to top button