শেয়ার বাজার

শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ শরয়ী বিধান

বর্তমান শেয়ার বাজারে সেকেন্ডারী মার্কেট থেকে কোনো শেয়ার ক্রয় বা তাতে ইনভেষ্ট করার আগে গুরুত্বপূর্ণ ৬টি ইস্যূ লক্ষ্য রাখতে হবে। প্রতিটি ইস্যূর উপর দীর্ঘ কথা রয়েছে। এখানে সংক্ষেপে শুধু ইস্যূগুলোর তালিকা দেয়া হল। ইস্যূগুলো হলো-

১. শেয়ার ও কোম্পানীর মাঝে সম্পর্ক থাকা
শরঈ দৃষ্টিতে প্রতিটি শেয়ার মূলত সংশ্লিষ্ট কোম্পানীর সকল সম্পত্তিতে আনুপাতিক মালিকানাকে বুঝায়। এই মালিকানার ভিত্তিই সেকেন্ডারী মার্কেটে শেয়ারের ক্রয়-বিক্রয় বৈধ হওয়ার মৌল ধাপ। জেট ক্যাটাগরির শেয়ার যদি লেনদেন হয় এ ক্যাটাগরির মত তাহলে প্রশ্ন উঠে-শেয়ার স্বতন্ত্র পণ্য হয়ে গেল কি না, কোম্পানীর সাথে এর সম্পর্ক ক্ষীণ হয়ে যাচ্ছে কি না। যার পরিণতি টাকার সাথে স্রেফ অতিরিক্ত টাকার লেনদেন, যা সুদ।

২. কোম্পানীর Tangible asset এর পরিমাণ
কোম্পানীর Tangible asset এর পরিমাণ পুরোটাই যদি তরল হয়, বা Tangible asset পরিমাণ ৩০% এর কম হয় (এ্যাওফির বক্তব্য মতে) বা ৫০% এর কম হয় (ইসলামিক ফিকহ একাডেমী জিদ্দাহর বক্তব্য মতে) তাহলে সেক্ষেত্রে সেকেন্ডারী মার্কেটে এর লেনদেন শরঈভাবে প্রশ্নবিদ্ধ হবে।

৩. কোম্পানীর সুদ ভিত্তিক লোন গ্রহণ
কোম্পানী সুদ লোন গ্রহণ করলে তার শেয়ার ক্রয় না জায়েয (ইসলামিক ফিকহ একাডেমী জিদ্দাহর বক্তব্য মতে)। অথবা এর হার ৩০% এর কম হতে হবে (এ্যাওফির বক্তব্য মতে)।

ব্যাংক, ব্যাংকার, ব্যাংকিং, অর্থনীতি ও ফাইন্যান্স বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ খবর, প্রতিবেদন, বিশেষ কলাম, বিনিয়োগ/ লোন, ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, ফিনটেক, ব্যাংকের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারগুলোর আপডেট পেতে আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ 'ব্যাংকিং নিউজ', ফেসবুক গ্রুপ 'ব্যাংকিং ইনফরমেশন', 'লিংকডইন', 'টেলিগ্রাম চ্যানেল', 'ইন্সটাগ্রাম', 'টুইটার', 'ইউটিউব', 'হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেল' এবং 'গুগল নিউজ'-এ যুক্ত হয়ে সাথে থাকুন।

৪. কোম্পানীর সুদী ইনকাম
কোম্পানী সুদ গ্রহণ করলে তার শেয়ার ক্রয় না জায়েয (ইসলামিক ফিকহ একাডেমী জিদ্দাহর বক্তব্য মতে)। অথবা এর হার কোম্পানীর মোট ইনকামের ৫% এর কম হতে হবে (এ্যাওফির বক্তব্য মতে)। যদিও সুদ ১%ও হারাম।

৫. কোম্পানীর প্রডাক্ট হালাল হওয়া
শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করার পূর্বে আপনাকে জানতে হবে যে কোম্পানীর শেয়ার কিনছেন সেই কোম্পানীর প্রডাক্ট হালাল কিনা তা নিশ্চিত হওয়া।

৬. কোম্পানীর ব্যবসায়িক কার্যক্রম শরীয়াহভাবে পরিচালিত হওয়া
শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করার পূর্বে আপনাকে জানতে হবে যে কোম্পানীর শেয়ার কিনছেন সেই কোম্পানীর ব্যবসায়িক কার্যক্রম শরীয়াহ মোতাবেক পরিচালিত হয় কিনা?

সুতরাং আমরা যারা শেয়ার বাজারে ইনভেষ্ট করছি, তারা কি উপরোক্ত শরঈ ইস্যূগুলো বিবেচনায় এনেছি? এখানে উল্লেখ্য যে, আমাদের ডিএসই ও সিএসই প্রত্যেকটির আলাদা শরীয়াহ ইনডেক্স আছে। তবে প্রত্যেকটির Methodology সম্পূর্ণ ভিন্ন ভিন্ন। ডিএসই এর টা ডিজাইন করেছে S & P Dow Jones Indices আর সিএসই এর টা ডিজাইন করেছেন TASIS ।

মজার ব্যাপার হল-দুটির শরীয়াহ গাইড লাইনে অনেক পার্থক্য রয়েছে। তাসিস বলছে মাত্র ১০% ফিক্সড এ্যাসেট থাকলেই হবে। অপর দিকে S & P বলছে তরল এ্যাসেট ৩৩% পর্যন্ত থাকতে পারে। এ দুটি শরীয়াহ্ ইনডেক্স বাংলাদেশের কোন শরীয়াহ্ বোর্ড অনুমোদন করেছে? এসবে দেয়া গাইড লাইনস যথাযথ ফলো হচ্ছে কি না, তা কি যাচাই করা হয়? এসবের কোনো সঠিক উত্তর জানা নেই। আমাদের দেশের শেয়ার বাজারের জন্য বাস্তব ভিত্তিক একটি শরীয়াহ ইনডেক্স প্রস্তুত করার জন্য কী কী করা যায়- এ বিষয়ে একটি আলোচনা হতে পারে।

কার্টেসিঃ আব্দুল্লাহ মাসুম

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

রিলেটেড লেখা

Back to top button