ব্যাংক

সেবা, সৌন্দর্য এবং সততাই সরকারী ব্যাংকের আর্থিক সূচকগুলো বদলে দিতে পারে

ডিপোজিট যদি ব্যাংকের ব্লাড হয়, তবে সেবা এবং সৌন্দর্য হচ্ছে তার ধমণী। ধমনী যেমনী শরীরের সমস্ত রক্তকে আগলে রেখে পরিবহনে সাহায্য করে, শাখা পর্যায়ে “গ্রাহক বান্ধব সেবা ও ব্যাংকের মনোরম পরিবেশ” তেমনী ডিপোজিট সংগ্রহ এবং তা ধরে রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। আর এ কারনেই আধুনিক ব্যাংক ব্যবসায় শাখার সৌন্দর্য বর্ধন এবং সেবার মানের ক্ষেত্রে নতুন নতুন উদ্যোগ গৃহীত হচ্ছে।

প্রথমে সেবার কথায় আসা যাক
যেহেতু ব্যাংক একটি সেবা মূলক প্রতিষ্ঠান, সেবাই হচ্ছে তার পণ্য। আর এই পণ্যই যদি হয়ে যায় নগন্য! তবে ব্যবসা আর টিকে কিসে? এ ক্ষেত্রে সেবার মানটি হওয়া উচিৎ স্বল্প ব্যয়ী, ত্বরিৎ, যুগোপযোগী এবং সহজলভ্য। তবেই না সেবা পণ্যের কাটতি বাড়বে। আর সেবা প্রদানকারীকে অবশ্যই সেবকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে হয়। সেবা গ্রহণকারীর জায়গায় দাড়িয়ে তার কাঙ্খিত সেবাটি স্বল্প সময়ে প্রদান করতে পারলেই নতুন আরেক জন সেবা গ্রহীতার স্বাচ্ছন্দ্যে আবির্ভাব ঘটে। বিপরীত দিকে, একজন গ্রাহকের অসন্তুষ্টির ফলে কমপক্ষে দশ জন গ্রাহকের অনাগ্রহ সৃষ্টি হয় এবং তারা বিকল্প খুঁজতে শুরু করে। এর ফল কী হতে পারে, যেখানে আমাদের সরকারী ব্যাংকের পাশাপাশি বেসরকারী ব্যাংকের শাখা আছে সে সব শাখার কর্মকর্তারাই ভালো বলতে পারবে।

এবার আসা যাক সৌন্দর্যের কথায়
সৌন্দর্য হচ্ছে মানুষকে মূগ্ধ করার সব চেয়ে ধারালো অস্ত্র। এই অস্ত্রে ঘায়েল হয়নি পৃথীবিতে এমন লোক একজনও খুঁজে পাওয়া যাবে না। এ কারনে পৃথিবীর সৌন্দর্য মন্ডিত জায়গাগুলোই কোটি মানুষের তীর্থস্থাণ।
সুতরাং সেবার পরিবেশটি মনোরম ও পরিপাটি হলে সেবা গ্রহীতার বাড়তি একটু তৃপ্তি যোগ হয় এবং ভবিষ্যতে সেবা পেতে আকৃষ্ট করে। এজন্য বেশি খরচ সত্বেও একজন বেসরকারী ব্যাংকের গ্রাহককে সরকারী ব্যাংকে টেনে আনা যায় না। উল্টো দিকে কোন মতে আমাদের একজন গ্রাহককে তারা এক কাপ চা খাওয়াতে পারলেই গ্রাহক আমাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়।

বর্তমানে প্রাইভেট ব্যাংকগুলো যেখানে প্রতিনিয়ত পরিবর্তনশীল চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলা করতে নানাবিধ নতুন নতুন ইনোভেটিভ উদ্যোগ গ্রহণ করে চলছে,সেখানে আমরা এখনো মান্ধাতার আমলের সেবা এবং মোগলী আমলের পরিবেশে সাতার কাটছি!

ব্যাংক, ব্যাংকার, ব্যাংকিং, অর্থনীতি ও ফাইন্যান্স বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ খবর, প্রতিবেদন, বিশেষ কলাম, বিনিয়োগ/ লোন, ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, ফিনটেক, ব্যাংকের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারগুলোর আপডেট পেতে আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ 'ব্যাংকিং নিউজ', ফেসবুক গ্রুপ 'ব্যাংকিং ইনফরমেশন', 'লিংকডইন', 'টেলিগ্রাম চ্যানেল', 'ইন্সটাগ্রাম', 'টুইটার', 'ইউটিউব', 'হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেল' এবং 'গুগল নিউজ'-এ যুক্ত হয়ে সাথে থাকুন।

এবার আসা যাক সততার কথায়
যদিও সততা একটি আপেক্ষিক বিষয়, ব্যাংকারের জন্য এটি অলংকার স্বরূপ। অন্যান্য পেশাজীবিদের চেয়ে ব্যাংকাররা তাদের কর্মক্ষেত্রে প্রতিনিয়ত সততার প্রশ্নে সবল থাকবে এটাই সবাই আশা করে। মাঝে-মধ্যে দু’এক জন অসৎ কর্মকর্তার জন্য সমগ্র ব্যাংকারগনের উপর নেতিবাচক প্রভাব পরে। এ ক্ষেত্রে নৈতিকতা ও শুদ্ধাচারমূলক কর্মশালার মাধ্যমে কর্মকর্তাদের সচেতন করে তুলতে পারলে ব্যাংকি সেক্টরে আর কোন অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটবে না। অবশ্য সততার বিষয়টি সরকারী এবং বেসরকারী উভয় ব্যাংকের কর্মকর্তাদের জন্য সমানভাবে জরুরী।

সময় এসেছে নতুন করে ভাবার। সেবার মান, শাখার পরিবেশ এবং সততার মনোভাব বৃদ্ধিতে সরকারী ব্যাংকগুলোকে আরো মনোযোগী হওয়া বাঞ্চনীয়।

কার্টেসিঃ মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন
ব্যবস্থাপক, জনতা ব্যাংক লিমিটেড
বাতাকান্দি শাখা, কুমিল্লা উত্তর।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

রিলেটেড লেখা

Back to top button