বাংলাদেশ ব্যাংক

অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়ে

ব্যাংকিং নিউজ বাংলাদেশঃ বাংলাদেশ ব্যাংকের গৃহীত এই পদক্ষেপের মাধ্যমে প্রবাসী বাংলাদেশীদের এবং আউটসোর্সিং এর মাধ্যমে এ দেশীয় নাগরিকদের অর্জিত অর্থ এখন ব্যাংকের মাধ্যমে সহজেই কম খরচে কোনো রকম জটিলতা ছাড়াই payza, payoneer এর মতো আন্তর্জাতিক অর্থ প্রেরণকারী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে দেশে আসতে পারে।

অনলাইনে কেনাকাটা অথবা ব্যবসা পরিচালনার জন্যে অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়ে একটি অপরিহার্য অঙ্গ। বর্তমান সময়ে অনেকেই মার্কেটে বা শপিংমলে গিয়ে কেনাকাটার চেয়ে ঘরে বসে ইন্টারনেট কানেকটেড কম্পিউটার বা স্মার্টফোনের মাধ্যমে একটি বা দুটি বাটন টিপে তাদের পছন্দের জিনিস কেনাকাটাতেই বেশী ঝুকছেন।

যতই দিন যাচ্ছে, জ্যামিতিক হারে এই সংখ্যা বাড়ছে, আর এর পেছনে অনেকগুলো কারনের মধ্যে একটি হচ্ছে নগদ টাকা বহনের ঝামেলা। তারচেয়ে এক বাটন টিপে ঘরে বসে অনলাইন অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়ের মাধ্যমে দাম পরিশোধ করা, যা কিনা সর্বোচ্চ নিরাপদ ও সর্বপ্রকার ঝুকিমুক্ত।

 অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়ে
এই অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়ে হলো অনলাইনের মাধ্যমে টাকা পয়সা লেনদেনের এক বিশ্বস্ত ও সহজসাধ্য মাধ্যম, যা সাধারণত বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর সাথে e-Commerce ব্যাবসায়িক সাইটগুলো প্রদান করে থাকে। অনলাইন ক্রেতাদেরকে অর্থ পরিশোধের সুবিধার্থে।

ব্যাংক, ব্যাংকার, ব্যাংকিং, অর্থনীতি ও ফাইন্যান্স বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ খবর, প্রতিবেদন, বিশেষ কলাম, বিনিয়োগ/ লোন, ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, ফিনটেক, ব্যাংকের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারগুলোর আপডেট পেতে আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ 'ব্যাংকিং নিউজ', ফেসবুক গ্রুপ 'ব্যাংকিং ইনফরমেশন', 'লিংকডইন', 'টেলিগ্রাম চ্যানেল', 'ইন্সটাগ্রাম', 'টুইটার', 'ইউটিউব', 'হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেল' এবং 'গুগল নিউজ'-এ যুক্ত হয়ে সাথে থাকুন।

আর এটা হচ্ছে অত্যন্ত দ্রুত সহজসাধ্য এবং সর্বোচ্চ নিরাপদ। যা কিনা চিরায়ত ব্যাংক চেক, মানি অর্ডারস ও ব্যাংক ট্রান্সফারের এক ইলোট্রোনিক প্রতিরুপ। এটা শুধু অনলাইন ভেণ্ডর, অনলাইন নিলাম সংস্থা বা ব্যাবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলোকেই অর্থ লেনদেনের সুবিধা দেয় না বরং তৃনমূল পর্যায়ের গ্রাহকদের মাঝে লেনদেনের সুবিধা দিয়ে থাকে। এর জন্য প্রচলিত ব্যাংক রেটের চেয়ে অনেক কম চার্জ করে থাকে।

 অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়ের সুবিধাসমূহ
• ক্রেতার ক্রেডিট কার্ডের তথ্যাবলীর ভিত্তিতে অনলাইনে সর্বপ্রকার লেনদেনের টাকা পরিশোধ করে।
• খুবই কম খরচে বেশীর ভাগে ক্ষেত্রেই এক ডলারের ও কম খরচে একে অন্যের মধ্যে টাকা পয়সা লেনদেন সম্পন্ন করে থাকে।
• ক্রেতা/গ্রাহকের ব্যাংক একাউন্টে সরাসরি অর্থ জমা ও উইথড্রো করে।
• বেশীর ভাগ কোম্পানীরই নিজস্ব প্রিপেইড কার্ড আছে। তাই ক্রেতা/গ্রাহকের ব্যাংক কার্ড এমনকি ব্যাংক একাউন্ট না থাকলেও চলে।

 বিশ্বের জনপ্রিয় কিছু অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়ে
• পেপাল
• টুচেকআউট
• গুগল ওয়ালেট (গুগল চেকআউট)
• অথরাইজ.নেট
• আমাজন পেমেন্ট
• ওর্য়াল্ডপে
• স্ক্রিল (মানিবুকার্স)
• পেয়জা
• কুইক পে

অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়ে বিষয়টা অনেক বড় এবং কিছু ক্ষেত্রে বিষয়টা অনেক জটিল। আমি চেষ্টা করব যত সহজে বিষয়টি সম্পর্কে ধারনা দেয়া যায়। প্রথমে একটি কথা বলে রাখি অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়ে সাথে আপনার বিজনেস কানেক্ট থাকা মানে আপনি বিশ্ববাজারে আপনার উপস্থিতির আত্ম প্রকাশ করছেন।

 বাংলাদেশি অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়ে
বাংলাদেশ ব্যাংকের কিছু পলিসি এর কারনে বাংলাদেশের বাইরের কোন অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়েতে বাংলাদেশি কোন কার্ড কাজ করবে না। বাংলাদেশের এবং দেশের বাইরের কার্ড আপানার অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়েতে কাজ করতে হলে আপনাকে বাংলাদেশি অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়ে নিতে হবে। এবং এই টাকা সরাসরি আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জমা হবে। বাংলাদেশের অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়েতে দেশি বিদেশি সব ভিসা মাস্টার কার্ড কাজ করে।

 বাংলাদেশি অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়ে এর জন্য আবেদন
• আপনি বাংলাদেশি অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়ে নিতে হলে আপনাকে সবচেয়ে আগে যেটা প্রয়োজন সেটা হছে ট্রেড লাইসেন্স অথবা লিমিটেড কোম্পানি লাইসেন্স এবং একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট সেই লাইসেন্স এর নামে।
• দ্বিতীয় হচ্ছে আপনার ওয়েব সাইট অথবা অনলাইন সিস্টেম যেখানে গিয়ে কাস্টমার আপনাকে পেমেন্ট করবে।
• বাংলাদেশের ছোট বড় সব কোম্পানি অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়ে এর জন্য আবেদন করতে পারবেন যদি এইসব লাইসেন্স থাকে এবং সাথে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট।
• বাংলাদেশের সকল অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়ে আপনাকে সব রকম সহযোগিতা করবে আপনার সিস্টেম এর সাথে অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়ে ইন্টেগ্রেট করে দিতে।

 অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়ে থেকে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট এ টাকা ট্রান্সফার
বাংলাদেশি অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়ে গুলো আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ডেইলি, সপ্তাহে এক বার, দুই বার পেমেন্ট করে থাকে। যখন আপনি অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়ে রেজিস্টার করবেন তখন এই ব্যাপারে খোলাখুলি কথা বলে ক্লিয়ার হয়ে নিবেন অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়ে কোম্পানি গুলোর সাথে।

 বাংলাদেশি অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়ে সার্ভিস চার্জ
অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়ে এর দুই আবার কারও তিন প্রকার চার্জ থাকে এগুলা হল রেজিস্ট্রেশন ফী, প্রতি ট্রান্সজেকসানে ফী এবং মাসিক ফী। বাংলাদেশি সকল অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়ে রেজিস্ট্রেশন ফি নিয়ে থাকে সেটা ৫০০০ টাকা থেকে ২০০০০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। কেউ মাসিক ফী নিয়ে থাকে, কেউ নেয় না। যখন একটা পেমেন্ট প্রসেস হয় তখন আবার শতকরা হিসেবে একটা চার্জ থাকে সেটা ২.৭৫% থেকে ৪.০০% হয়ে থাকে। এইসব চার্জ সম্পর্কে বিস্তারিত কথা বলে নিবেন যখন আপনি অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়ে কোম্পানি এর সাথে রেজিস্টার করবেন।

 বাংলাদেশি অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়ে হিসাব নিকাশ
প্রত্যেকটি অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়ে কোম্পানি এর প্যানেল থাকে যেখানে আপনি সকল প্রকার হিসাব নিকাশ দেখতে পারবেন। এই প্যানেল না থাকলে আপনি ঠিকমতো হিসাব নিকাশ রাখতে পারবেন না। তাই এই বিষয়টা খুব গুরুত্বপূর্ণ। যার প্যানেল যত আধুনিক এবং বিস্তারিত তার সাথে হিসাব নিকাশ ততো পরিস্কার।

 বাংলাদেশি অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়ে পেমেন্ট
বাংলাদেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পেমেন্ট অপশন গুলো হল ভিসা কার্ড, মাস্টার কার্ড, ডাচ বাংলা নেক্সাস কার্ড, বিকাশ মোবাইল ব্যাংক, ইসলামি ব্যাংক মোবাইল ব্যাংকিং এমক্যাশ এবং কিউক্যাশ ইত্যাদি। আরও অনেক পেমেন্ট অপশন আছে কিন্তু সেগুলা এখান সবার কাসে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেনি। সকল প্রকার দেশি বিদেশি ভিসা এবং মাস্টার কার্ড প্রসেস হবে।

 মার্চেন্ট আইডি
আপনি যখন অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়ে রেজিস্টার করবেন তখন আপানাকে মার্চেন্ট আইডি দেয়া হবে। একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট এর সাথে আপনি অনেকগুলো মার্চেন্ট আইডি নিতে পারনে।

 অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়ে কি নিরাপদ
অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়ে মোটেও রিস্কি না যদি আপনি কিছু কমন পলিসি মাথায় রাখেন। এবার আসি আপানাকে কি কি ব্যাপার মাথায় রাখতে হবে। আপনারা দুটো জিনিস অনলাইনে বিক্রি করেন একতা প্রোডাক্ট আরেকটা সার্ভিস।

প্রথমে আসি প্রোডাক্ট এর ব্যাপারে আপনি যদি প্রোডাক্ট বিক্রি করে থাকেন তাহলে প্রোডাক্ট ডেলিভারি দেয়ার সময় অবশ্যই ডেলিভারি স্লিপে কাস্টমার এর স্বাক্ষর নিবেন এবং অনলাইনে অর্ডার দেয়ার সময় কাস্টমার যে ঠিকানা দিয়েছে সেই ঠিকানাতেই ডেলিভারি দিবেন। ক্যুরিয়ার সার্ভিস দিয়ে ডেলিভারি দিলে ক্যুরিয়ার এর স্লিপ অবশ্যই আপানার কাছে রাখবেন।

এবার আসি সার্ভিস এর ক্ষেত্রে আপনি অবশ্যই কাস্টমারের কাছে থেকে পাসপোর্ট আথবা ড্রাইভিং লাইচেন্স আথবা ন্যাশনাল আইডি কার্ড কপি আপনার কম্পানির আফিসিয়াল ইমেইল নিয়ে রাখবেন।

এই দুটো বিষয় খেয়াল রাখলে আপনি সবসময় নিরাপদ। এই ডকুমেন্ট গুলো আপনি অবশ্যই ১২০ দিন পর্যন্ত আপনার কাছে নিরাপদে রাখবেন কেননা কাস্টমার ১২০ দিন পর্যন্ত টাকা তার ব্যাংক কাছে ক্লেইম করতে পারে। এই ডকুমেন্ট আপানার কাছে থাকলে কাস্টমার ক্লেইম করলেও আপনি নিরাপদ থাকবেন। এই ধরনের ঘটনা ১০০ তে একটা হতে পারে। ব্যাংকের এই টাকা ক্লেইম করার প্রসেস রাখা হয়েছে কাস্টমার এর কার্ড দিয়ে কেও যেন প্রতারনামুলক কাজ না করতে পারে। কাস্টমার কিভাবে নিরাপদ থাকতে পারে সেই ব্যাপারে অন্য আরেকদিন বলবো।

 অনলাইন পেমেন্ট রিফান্ড
আপনি যদি কোন পেমেন্ট রিফান্ড দিতে চান তাহলে আপনার প্যানেল সেই অপশন আছে। অথবা আপনি আপানার অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়ে কোম্পানি কে ই মেইল এর মাধামে জানাতে পারেন আপনি টাকা রিফান্ড দিতে চাচ্ছেন। আপনি চাইলে পারসিয়াল রিফান্ডও করতে পারনে।

 ৩ডি সিকিওর গেটওয়ে ডকুমেন্ট
জি আপনাকে সব সময় ডকুমেন্টস সংগ্রহে রাখতে হবে কারন ৩ডি সিকিওর গেটওয়ে প্রতারনা মূলক পেমেন্ট থেকে আপনাকে দূরে রাখতে সাহায্য করে। অনেক সময় অনেক কার্ড ৩ডি সিকিওর হয় না সেক্ষেত্রে আপনি প্রতারনার শিকার হতে পারনে কিন্তু ডকুমেন্টস থাকলে আপনি নিরাপদ। উন্নত দেশে সব কোম্পানি যখন অনলাইনে বিক্রি করে তখন এই সব ডকুমেন্টস সংগ্রহে রাখে। আমাদের সকলকে এই সব জিনিস বুঝতে হবে কারন এটা হচ্ছে একটা প্রসেস।

আজ এই পর্যন্ত। আল্লাহ হাফিজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

রিলেটেড লেখা

Back to top button