বাংলাদেশ ব্যাংক সার্কুলার

পারস্পরিক লেনদেন হবে বিকাশ, এমক্যাশ, নগদ, রকেট ও ইউক্যাশে

চালু হল মোবাইলে আর্থিক সেবাদাতা (এমএফএস) প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ইন্টারঅপারেবিলিটি বা পারস্পরিক লেনদেন সুবিধা। ফলে এখন থেকে বিকাশ, এমক্যাশ, রকেট, এম ক্যাশ ও ইউক্যাশের মতো এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলো নিজেদের মধ্যে লেনদেন করতে পারবে।

শুধু তাই নয়, যে কোনো মোবাইল ব্যাংক থেকে যে কোনো মূল ব্যাংকের সঙ্গেও লেনদেন করা যাবে। বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংক এ সংক্রান্ত নির্দেশনা দিয়েছে। তাতে এই সেবার মাশুলও নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। তবে গ্রাহক পর্যায়ে এখনই নতুন করে কোনো মাশুল চাপবে না। তবে টাকা উত্তোলনের খরচ থাকছে আগের মতোই।

এ বিষয়ে দেশের সবচেয়ে বড় মোবাইল আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান বিকাশের কমিউনিকেশনস বিভাগের প্রধান শামসুদ্দিন হায়দার ডালিম বলেন, “এর মধ্য দিয়ে দেশে ডিজিটাল ব্যাংকিং সেবায় আরেক ধাপ যুক্ত হল। “আমরা অনেক দিন ধরেই প্রস্তুত আছি। এখন আনুষ্ঠানিক কাজ শুরু করব।

সব ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো সার্কুলারে বলা হয়েছে, সফলভাবে পাইলট টেস্টিং সম্পন্নকারী ব্যাংক ও এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে আগামী ২৭ অক্টোবর মঙ্গলবার থেকে ইন্টার-অপারেবিলিটি বা পারস্পরিক (লাইভ) লেনদেন সুবিধা চালু করা হবে। যে সব ব্যাংক ও এমএফএস এখনও ইন্টার-অপারেবিলিটি সংক্রান্ত প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে পারেনি, তাদের আগামী বছরের ৩১ মার্চের মধ্যে প্রস্তুতি সম্পন্ন করে পারস্পরিক লেনদেনের সুবিধা চালু করতে হবে।

ব্যাংক, ব্যাংকার, ব্যাংকিং, অর্থনীতি ও ফাইন্যান্স বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ খবর, প্রতিবেদন, বিশেষ কলাম, বিনিয়োগ/ লোন, ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, ফিনটেক, ব্যাংকের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারগুলোর আপডেট পেতে আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ 'ব্যাংকিং নিউজ', ফেসবুক গ্রুপ 'ব্যাংকিং ইনফরমেশন', 'লিংকডইন', 'টেলিগ্রাম চ্যানেল', 'ইন্সটাগ্রাম', 'টুইটার', 'ইউটিউব', 'হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেল' এবং 'গুগল নিউজ'-এ যুক্ত হয়ে সাথে থাকুন।

বর্তমানে এক ব্যাংক থেকে অন্য ব্যাংকে টাকা পাঠানো যায়। কিন্তু এক এমএফএস থেকে অন্য এমএফএসে টাকা পাঠানো যায় না। অর্থাৎ বিকাশ গ্রাহকরা নগদে কিংবা রকেটে, নগদ গ্রাহকরা বিকাশ কিংবা রকেটে, রকেট গ্রাহকরা বিকাশ কিংবা নগদে টাকা পাঠাতে পারতেন না। এখন তা পাঠাতে পারবেন।

এজন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উদ্যোগে ন্যাশনাল পেমেন্ট সুইচ বাংলাদেশের (এনপিএসবি) মাধ্যমে নতুন সেবাটি চালু করা হচ্ছে। অবশ্য বিকাশ, রকেট ও নগদ ইতোমধ্যে নিজেরাই ব্যাংক থেকে টাকা গ্রহণের সুবিধা চালু করেছে। আর বিকাশ থেকে বেসরকারি সিটি, ব্র্যাক ও অগ্রণী ব্যাংকে টাকা পাঠানো যাচ্ছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, এক এমএফএস প্রোভাইডারের হিসাব থেকে অন্য এমএফএস প্রোভাইডারের (পি-টু-পি) হিসাবে অর্থ স্থানান্তরের ক্ষেত্রে প্রাপক এমএফএস প্রোভাইডার প্রেরক এমএফএস প্রোভাইডারকে সাকুল্যে লেনদেন করা অর্থের শূন্য দশমিক ৮০ শতাংশ ফি দেবে। এছাড়া ব্যাংক হিসাব থেকে এমএফএস হিসাবে এবং এমএফএস হিসাব থেকে ব্যাংক হিসাবে অর্থ স্থানান্তর, উভয় ক্ষেত্রেই সংশ্লিষ্ট এমএফএস প্রোভাইডার সংশ্লিষ্ট ব্যাংককে সাকুল্যে লেনদেনকৃত অর্থের শূন্য দশমিক ৪৫ শতাংশ দেবে।

পারস্পরিক লেনদেনের জন্য অংশগ্রহণকারী ব্যাংক ও এমএফএস গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যমান লেনদেন ফির অতিরিক্ত কোনও মাশুল নিতে পারবে না। পারস্পরিক ব্যবস্থায় লেনদেনের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক/এমএফএস হিসাবের প্রকরণ অনুসারে নির্ধারিত লেনদেন সীমা প্রযোজ্য হবে।

করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে এমএফএস প্রতিষ্ঠানের উপর মানুষের নির্ভরশীলতা অনেক বেড়ে গেছে। এখন ঘরে বসেই এসব সেবার হিসাব খোলা যাচ্ছে। টাকাও আনা যাচ্ছে ব্যাংক হিসাব থেকে। আর কেনাকাটা, পরিষেবা বিল পরিশোধ, মোবাইল রিচার্জসহ বিভিন্ন সুবিধা মিলছে ঘরে বসেই।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত আগস্ট শেষে এমএফএসের গ্রাহক ৯ কোটি ২৯ লাখে উঠেছে, আর এজেন্ট ১০ লাখ ছাড়িয়েছে। আগস্টে লেনদেন হয়েছে ৪১ হাজার কোটি টাকা। আগস্টে এমএফএসের মাধ্যমে ১০৪ কোটি টাকা প্রবাসী আয় বিতরণ হয়েছে, বেতন-ভাতা পরিশোধ হয়েছে ১ হাজার ৬৩ কোটি টাকা। কেনাকাটা হয়েছে ১ হাজার ৬০ কোটি টাকা। গ্যাস-বিদ্যুতের মতো পরিষেবা বিল পরিশোধ হয়েছে ৯০৮ কোটি টাকা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

রিলেটেড লেখা

Back to top button