বাংলাদেশ ব্যাংক

শিডিউল অব ব্যাংক চার্জেস সংক্রান্ত মাস্টার সার্কুলার

ব্যাংকিং নিউজ বাংলাদেশঃ বাংলাদেশে কার্যরত সকল তফসিলি ব্যাংক সমূহের ব্যবস্থাপনা পরিচালক/প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাদেরকে উদ্দেশ্য করে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক জারিকৃত একটি সার্কুলার, যা হুবহু আপনাদের জন্য তুলে ধরা হলো-

প্রিয় মহোদয়,

Master Circular on Schedule of Charges

আপনারা অবহিত আছেন যে, আমানতকারী/বিনিয়োগকারী/গ্রাহকের স্বার্থ সংরক্ষনকল্পে ব্যাংকসমুহ কতৃর্ক আরোপিত অতিরিক্ত/অত্যধিক/অযৌক্তিক/অপ্রয়োজনীয় বিভিন্ন চার্জসমুহের যৌক্তিকীকরনের লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক কতৃর্ক সময়ে সময়ে বিভিন্ন নির্দেশনা জারী করা হয়। এক্ষণে, উক্ত নির্দেশনাসমূহ অর্থাৎ ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগের সেপ্টেম্বর ৩০, ২০০৮ তারিখের পত্র, বিআরপিডি সার্কুলার -১০/২০০৯, বিআরপিডি সার্কুলার -১৬/২০০৯ এবং সংশিষ্ট অন্যান্য নির্দেশনা একীভূত করে এই সমন্বিত সার্কুলার জারী করা হলো।

ব্যাংক, ব্যাংকার, ব্যাংকিং, অর্থনীতি ও ফাইন্যান্স বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ খবর, প্রতিবেদন, বিশেষ কলাম, বিনিয়োগ/ লোন, ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, ফিনটেক, ব্যাংকের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারগুলোর আপডেট পেতে আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ 'ব্যাংকিং নিউজ', ফেসবুক গ্রুপ 'ব্যাংকিং ইনফরমেশন', 'লিংকডইন', 'টেলিগ্রাম চ্যানেল', 'ইন্সটাগ্রাম', 'টুইটার', 'ইউটিউব', 'হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেল' এবং 'গুগল নিউজ'-এ যুক্ত হয়ে সাথে থাকুন।

০২। উপরোক্ত প্রেক্ষাপট বিবেচনায় ব্যাংকসমুহ কতৃর্ক চার্জ/ফি/কমিশন আরোপের ক্ষেত্রে নিম্নোক্ত নির্দেশনাবলী পালনীয় হবেঃ-

(১) সঞ্চয়ী ও চলতি হিসাবে আরোপিত মিনিমাম ব্যালেন্স ফি/ইনসিডেন্টাল চার্জ/লেজার ফি/সার্ভিস চার্জ আদায় করা যাবে না। এখন থেকে সঞ্চয়ী ও চলতি হিসাবে শুধুমাত্র একাউন্ট মেইনটেনেন্স ফি (Account Maintenance Fee) প্রযোজ্য হবে। তবে, এক্ষেত্রে প্রতি ষান্মাসিকে সঞ্চয়ী হিসাবে ৩০০/- টাকা এবং চলতি হিসাবে ৫০০/- টাকার অধিক আদায় করা যাবে না।

(২) ষান্মাসিক ও বাৎসরিক ভিত্তিতে অর্থাৎ বছরে দু’বার গ্রাহককে হিসাবের স্থিতি নিশ্চিতকরণ সনদ (Balance Confirmation Certificate) প্রদানের জন্য কোন চার্জ আদায় করা যাবে না। তবে, গ্রাহককে বছরে দু’বারের বেশী এ সনদ গ্রহন করতে হলে শুধুমাত্র সে ক্ষেত্রে ২০০/- টাকার অধিক চার্জ আদায় করা যাবে না।

(৩) বিভিন্ন মাসিক সঞ্চয়ী হিসাব বা স্কীম মেয়াদপূর্তীর পূর্বে নগদায়নের ক্ষেত্রে নগদায়ন ফি (Premature Encashment Fee) বা অনুরূপ ফি আরোপ করা যাবে না।

(৪) বিভিন্ন প্রকার সঞ্চয়ী ও চলতি হিসাব বন্ধকরণের ক্ষেত্রে হিসাব বন্ধকরণ চার্জ সঞ্চয়ী হিসাবের ক্ষেত্রে ২০০/-টাকা এবং চলতি হিসাবের ক্ষেত্রে ৩০০/-টাকার অধিক আদায় করা যাবে না।

(৫) কাউন্টার ট্রানজেকশন ফি (Counter Transaction Fee) বা অনুরূপ ফি আদায় করা যাবে না।

(৬) সাইট এলসি খোলার কমিশন প্রতি ত্রৈমাসিকে সর্বোচ্চ ০.৪০%, ডেফার্ড/ইউজান্স (usance) এলসি খোলার কমিশন প্রতি ত্রৈমাসিকে সর্বোচ্চ ০.৫০%, ১০০% নগদ মার্জিনে এলসি খোলার কমিশন প্রতি ত্রৈমাসিকে সর্বোচ্চ ০.২৫% এবং ব্যাক টু ব্যাক এলসি খোলার কমিশন প্রতি ত্রৈমাসিকে সর্বোচ্চ ০.৪০% নির্ধারিত হবে।

(৭) এলসি ট্রান্সমিশন, এলসি অ্যামেন্ডমেন্ট, কনফারমেশন, ক্যানসেলেশন, ফরেন করেসপন্ডেন্ট চার্জ এর ক্ষেত্রে মেইলিং, কুরিয়ার, টেলেক্স, সুইফট ইত্যাদি ক্ষেত্রে প্রকৃত ব্যয়ের ভিত্তিতে (At Actual) চার্জ নির্ধারিত হবে।

(৮) এলসি এডভাইসিং চার্জ, এলসি অ্যামেন্ডমেন্ট চার্জ ও এলসি ট্রান্সফার চার্জ সর্বোচ্চ ৭৫০/- টাকা, এলসি এ্যাকসেপটেন্স চার্জ প্রতি ত্রৈমাসিকে সর্বোচ্চ হার ০.৪০% এবং স্থানীয়ভাবে কনফারমেশনের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ হার ০.২০% নির্ধারিত হবে।

(৯) ফরেন করেসপন্ডেন্ট চার্জ (স্থানীয় অংশ), ডাটা ম্যাক্স, হ্যান্ডেলিং চার্জ, কপি ডকুমেন্ট এনডোর্সমেন্ট চার্জ, এলসি বাতিল কিংবা মেয়াদোত্তীর্ণ অব্যবহৃত এলসি চার্জ আদায় করা যাবে না।

(১০) রপ্তানী বিল নেগোসিয়েশন কমিশন ও রপ্তানী বিল কালেকশন কমিশন সর্বোচ্চ ০.১৫% নির্ধারিত হবে।

(১১) ব্যাক টু ব্যাক এলসি সার্টিফিকেট ইস্যুর চার্জ, সিএন্ডএফ সার্টিফিকেট ইস্যুর চার্জ, রফতানী মূল্য আদায়ের সার্টিফিকেট (Proceed Realization Certificate or PRC) ইস্যুর চার্জ ৫০০/- টাকার অধিক আদায় করা যাবে না।

(১২) বিও একাউন্ট (Beneficiary Owner’s Account) খোলার ক্ষেত্রে বিও সনদ (Beneficiary Owner’s Certificate) প্রদানের চার্জ ১০০/-টাকার অধিক আদায় করা যাবে না।

(১৩) গ্রাহক কতৃর্ক গৃহীত ঋণ নির্দিষ্ট মেয়াদের পূর্বে পরিশোধের ক্ষেত্রে বকেয়া ঋণের ২% এর অধিক Early Sattlement Fee বা অনুরূপ ফি হিসাবে আদায় করা যাবে না।

০৩। Disclosure requirement পরিপালন ও গ্রাহকের সুবিধার্থে সিডিউল অব চার্জেস এর পূর্ণ তালিকা স্ব স্ব ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় ও শাখাসমুহের দর্শনীয় স্থানে প্রদর্শন এবং ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হবে।

০৪। ঘোষিত/ প্রকাশিত তালিকা বহির্ভূত কোন চার্জ /ফি/কমিশন আরোপ করা যাবে না।

০৫। নিয়মিতভাবে ষান্মাসিক ভিত্তিতে অর্থাৎ জুন ও ডিসেম্বর ভিত্তিক চার্জ/ফি/কমিশনের তালিকা বাংলাদেশ ব্যাংকে যথাক্রমে জুলাই ৩০ ও জানুয়ারী ৩০ এর মধ্যে প্রেরণ করতে হবে।

০৬। চার্জ/ফি/কমিশনের কোন পরিবর্তন হলে আবশ্যিকভাবে ব্যাংক তার স্ব স্ব ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতঃ বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগকে অবহিত করতে হবে।

০৭। বাংলাদেশ ব্যাংক সময়ে সময়ে চার্জ/ফি/কমিশন এর হার পর্যালোচনাপূর্বক তা যৌক্তিকীকরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

আপনাদের ব্যাংক ও ব্যাংকের সকল শাখাসমুহে উপরোক্ত নির্দেশনাসমূহের অনুসরণ নিশ্চিত করার জন্য পরামর্শ দেয়া হলো। এ নির্দেশনা জানুয়ারী ০১, ২০১০ হতে কার্যকর হবে।

অনুগ্রহপূর্বক প্রাপ্তি স্বীকার করবেন।

আপনাদের বিশ্বস্ত,

(আবু হেনা মোহাঃ রাজী হাসান)
মহাব্যবস্থাপক
ফোনঃ ৭১১৭৮২৫

• সার্কুলারটি দেখতে ক্লিক করুন এখানে

সূত্রঃ ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ, বাংলাদেশ ব্যাংক
বিআরপিডি সার্কুলার নং-১৯/২০০৯, তারিখঃ ২২ ডিসেম্বর, ২০০৯

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

রিলেটেড লেখা

Back to top button