মার্কেটিং

বাংলায় মার্কেটিং চর্চা!

মো. আব্দুল হামিদঃ বছর পঁচিশ আগের কথা। তখন মার্কেটিং পড়তে গিয়ে একটা সংকট তীব্রভাবে অনুভব করতাম। সেটা হলো আমাদের দেশীয় প্রেক্ষাপটে মার্কেটিং-সংশ্লিষ্ট পাঠ্য-উপকরণের অভাব। বিবিএ প্রথম ব্যাচের শিক্ষার্থী হওয়ায় গ্রেডিং, সেমিস্টার সিস্টেম, ইংরেজি বইপত্র প্রভৃতি নিয়েই ব্যস্ত থাকতে হতো। তাছাড়া সোশ্যাল মিডিয়া, বিশেষায়িত ম্যাগাজিন বা সংবাদপত্র না থাকায় ভরসা ছিল সেমিনার ও সেন্ট্রাল লাইব্রেরি। তাছাড়া সিনিয়রদের সঙ্গে আলাপচারিতা রিয়েল ইনসাইট পাওয়ার ভালো উপায় ছিল। কিন্তু তখন তো মোবাইল ফোনও ছিল না। ফলে কালেভদ্রে তেমন সুযোগ মিলত।

মার্কেটিংয়ের মূল বিষয়গুলো শেখার জন্য তখন কটলার, স্ট্যানটন ও মেকার্থিদের বই পড়া হতো। ইংরেজি টেক্সট বইগুলোতে অসংখ্য কেস, বাস্তব উদাহরণ, সাম্প্রতিক তথ্য, প্রাসঙ্গিক ছবি, গ্রাফ ইত্যাদি থাকত। ফলে একটু চেষ্টা করলে সেগুলো পড়ে বোঝা যেত। পাশাপাশি বাংলা ভাষায় ড. আব্দুল্লাহ ফারুক, আসগর আলী তালুকদার, মুহাম্মদ ইউনুস আলী, ড. মীজানুর রহমান, বেলায়েত হোসেন, আব্দুল কুদ্দুস, শহীদুল ইসলাম ও আবু সালেহ স্যারদের বই পড়তাম। তবে সেগুলোর অধিকাংশই ইংরেজি বইয়ের বাংলায়ন বা ক্ষেত্রবিশেষে গাইড বই বলে মনে হতো।

তখন মনে প্রশ্ন জাগত: দেশীয় লেখকেরা এত এত ইংরেজি বই পড়ার পরও বাংলায় লেখার সময় সেই কাঠামো বা স্টাইল অনুসরণ করতে পারেন না কেন? শুধু তত্ত্বকথা আর ইউরোপ-আমেরিকার উদাহরণে বাংলা বইগুলো ভরপুর থাকত। স্থানীয় জ্ঞান সৃষ্টির চেষ্টা খুব একটা পরিলক্ষিত হতো না। আর সে কারণেই যাদের ইংরেজি বই পড়ে বোঝার সামর্থ্য থাকত, তারা সাধারণত বাংলায় মার্কেটিং খুব একটা পড়ত না।

দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যবসায় তথ্যে প্রবেশাধিকার না থাকা এমনটা হওয়ার পেছনে বড় কারণ ছিল। তাছাড়া আন্তর্জাতিকভাবে খ্যাতিমান লেখকরা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কনসালট্যান্সি করার মাধ্যমে যে অভিজ্ঞতা হয়, বইপত্রে সেগুলো তুলে ধরেন। কিন্তু আমাদের দেশে শিক্ষকদের বাস্তব কাজে সংশ্লিষ্ট হওয়ার সুযোগ একেবারেই সীমিত। তাছাড়া ইনফরমাল চ্যানেলে প্রাপ্ত তথ্যগুলো ‘পাবলিক’ করলে আবার সংশ্লিষ্টরা অসন্তুষ্ট হওয়ার ভয় থাকে। হয়তো এসব কারণেই দেশীয় লেখকরা বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর দৃষ্টান্ত দিতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করতেন।

ব্যাংক, ব্যাংকার, ব্যাংকিং, অর্থনীতি ও ফাইন্যান্স বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ খবর, প্রতিবেদন, বিশেষ কলাম, বিনিয়োগ/ লোন, ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, ফিনটেক, ব্যাংকের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারগুলোর আপডেট পেতে আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ 'ব্যাংকিং নিউজ', ফেসবুক গ্রুপ 'ব্যাংকিং ইনফরমেশন', 'লিংকডইন', 'টেলিগ্রাম চ্যানেল', 'ইন্সটাগ্রাম', 'টুইটার', 'ইউটিউব', 'হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেল' এবং 'গুগল নিউজ'-এ যুক্ত হয়ে সাথে থাকুন।

এতে শিক্ষার্থীদের মনোজগতেও এক ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়ত। পড়ালেখা শেষ করলেই বুঝি তেমন প্রতিষ্ঠানে কাজ করার সুযোগ পাওয়া যাবে—অনেকের তেমন ধারণা জন্মাত! ফলে অনেকের নাক উঁচু মনোভাবের লক্ষণ প্রকাশ পেত। কিন্তু চারপাশে প্রতিনিয়ত ঘটমান মার্কেটিং চর্চাগুলো থাকত বিবেচনার বাইরে। এমনকি চলমান ক্যাম্পেইন বা প্রমোশন নিয়েও খুব একটা কথাবার্তা হতো না। খুব সীমিতসংখ্যক সহপাঠীই এই অভাব বোধ করতাম। কারণ আমাদের দেশে পড়ালেখা করাই হয় পরীক্ষায় উচ্চতর গ্রেড পাওয়ার জন্য। বাস্তবে সেগুলো প্রয়োগ করার মতো দক্ষতাসম্পন্ন হওয়ার আকাঙ্ক্ষা বেশ দুর্লভ!

সম্প্রতি সেই ধারায় ব্যাপক পরিবর্তন লক্ষ করছি। বিশেষত ফেসবুক সহজলভ্য হওয়ায় নানা কর্নার থেকে মার্কেটিং বিষয়ক কনটেন্ট প্রডিউস হচ্ছে। আমাদের দেশীয় প্রতিষ্ঠানের সিক্রেট কোনোভাবেই মুখে আনা যাবে না—এমন ট্যাবুও ভাঙতে শুরু করেছে। দীর্ঘদিন মার্কেটিং পেশায় থাকা ব্যক্তিরা এখন বাংলা ভাষায় অনেক বেশি কনটেন্ট তৈরি করছেন। সংশ্লিষ্ট গ্রুপগুলোতে এমন পোস্টের বিপরীতে প্রাণবন্ত আলোচনা আনুষ্ঠানিক মার্কেটিং পাঠের অংশীজন হিসেবে আমাকে আপ্লুত করে। বর্তমান মার্কেটিং শিক্ষার্থীরা নিঃসন্দেহে ভাগ্যবান। থিওরির পাশাপাশি তারা চেনাজানা প্রেক্ষাপটের অসংখ্য তথ্য ও বিশ্লেষণ পাচ্ছে।

ইদানীং এ-সংক্রান্ত বই প্রকাশের ধারাও বেশ লক্ষণীয়। বলাই বাহুল্য, গত্বাঁধা ধাঁচে মার্কেটিং পাঠের পদ্ধতি ভেঙেচুরে অনেকেই গল্পচ্ছলে মার্কেটিং বিষয়ে লিখছেন। বিগত তিন-চার বছরে মার্কেটিং শিরোনামে অসংখ্য বই প্রকাশিত হয়েছে। পাঠক সেগুলো গাঁটের পয়সা খরচ করে ভালোই কিনছে। তার প্রমাণ হলো প্রকাশকরা এমন বিষয়ের পাণ্ডুলিপি ডিমান্ড করছেন। বই বণ্টনে যুক্তদের সঙ্গে আলাপচারিতায় তেমনটাই ইঙ্গিত মেলে। হয়তো সেই বিষয়টা মাথায় রেখে অনেকেই মার্কেটিং বিষয়ক বই লিখতে আগ্রহী হচ্ছেন।

তবে এখানে উদ্বেগের বিষয় হলো অনেক বই নেড়েচেড়ে বেশ হতাশ হতে হয়! তাদের প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই বলছি, মার্কেটিংয়ের মতো সর্বব্যাপী একটা ডিসিপ্লিনকে অনেকে অন্ধের হাতি দেখার মতো এক বা দুটো আঙ্গিকে উপস্থাপন করছেন। যেমন ক’দিন আগে বইবিষয়ক এক আলোচনার শিরোনামে ‘মার্কেটিং’ শব্দ থাকায় সেটা দেখতে চেষ্টা করলাম। ঘণ্টা দেড়েক আলোচনা শোনার পর আমার কেন যেন মনে হলো উপস্থাপক ও দুই আলোচকের কেউই প্রকৃতপক্ষে ‘মার্কেটিং জিনিসটা কী’ তা কখনো নির্ভরযোগ্য উৎস থেকে বোঝার চেষ্টা করেননি। কারণ তাদের দীর্ঘ আলোচনা প্রমোশনাল ইস্যুটাকেও ঠিকমতো কাভার করেনি। অথচ শিরোনামে এমন একটা ধারণা দেয়া হয়েছে যে বইয়ের ‘মার্কেটিং কৌশল’ নিয়ে কথা হচ্ছে। মার্কেটিং মানে যে শুধু ফেসবুকে বুস্টিং নয় তা উপলব্ধি করা দরকার।

এখানে খুব ইন্টারেস্টিং এক অবজারভেশন হলো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে যা পড়ানো হয় আর ইউটিউবে ‘মার্কেটিং’ লিখে সার্চ দিলে যেসব কনটেন্ট আসে তাতে আকাশ-পাতাল পার্থক্য! বিষয়টা আমাকে বেশ ভাবাচ্ছে। থিওরি ও প্র্যাকটিসের মধ্যে পার্থক্য থাকবে। বিশেষত আমাদের দেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো কখনো প্রো-অ্যাকটিভ রোল নিতে পারে না। অতীতের ঘটনাগুলো থেকে আমরা কী শিখতে পারি—এটাই হলো লার্নিং স্ট্রাকচার। খুব ব্যতিক্রম ছাড়া ব্যাকডেটেড বিষয়গুলো নিয়ে কথা হবে, সেটাও মোটামুটি স্বীকৃত। তাই বলে এতটা পার্থক্য?

তত্ত্বের সঙ্গে প্র্যাকটিশনারদের মেলবন্ধন ঘটা খুব জরুরি। তাতে উভয় পক্ষের সমৃদ্ধ হওয়ার সুযোগ ঘটে। পাবলিক ইউনিভার্সিটিগুলোয় বরফ সহজে গলবে না। তবে কিছু প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় সেটা সীমিত পরিসরে শুরু করেছে। প্র্যাকটিশনারদের তারা কিছু কোর্স পড়ানোর আহ্বানও জানাচ্ছে। কিন্তু এক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছে শিক্ষার্থীরা তাদের অভিজ্ঞতা ও কর্মজীবনের গল্পগুলো খুব উপভোগ করে, মজা পায়। কিন্তু কোর্স শেষে বিপদে পড়ে যায়। কারণ প্রচলিত ধারায় পরীক্ষা দিতে গিয়ে খাতায় তিন ঘণ্টা কী লিখবে—তা আর খুঁজে পায় না।

শিক্ষার্থীরা একদিকে বলে তাদের ক্লাস খুবই উপভোগ্য, অনেক কিছু শেখা যায়। অন্যদিকে, পরীক্ষার আগে তারা অসহায় বোধ করে। অর্থাৎ প্র্যাকটিশনারদের অনেকেই প্রায়োগিক দিকের সঙ্গে তত্ত্বকে মেলাতে পারেন না অথবা প্রয়োজন বোধ করেন না। কিন্তু পরীক্ষার ভাবনা শিক্ষার্থীদের উদ্বিগ্ন করে তোলে। ফলে যেসব শিক্ষক অধ্যায় অনুযায়ী তত্ত্বকথা ব্যাখ্যা করেন, তাদেরই শেষমেশ পছন্দ করে। কারণ তা ‘প্রত্যাশিত গ্রেড’ পাওয়ার জন্য সহায়ক। হয়তো সে কারণেই ইন্ডাস্ট্রি ও একাডেমিয়ার মেলবন্ধনের পথ প্রসারিত হওয়ার পরিবর্তে সংকুচিত হচ্ছে!

অন্যদিকে আনুষ্ঠানিক শিক্ষায় নিয়োজিতদের বড় সমস্যা হলো বাস্তবে কী ঘটছে তা জানার সুযোগ একেবারেই কম। ব্যক্তি পর্যায়ের সম্পর্ক থেকে কিছু তথ্য জানা যায়। কিন্তু তাতে সামগ্রিক চিত্র থাকে অনুপস্থিত। তাছাড়া তত্ত্বকথা যতই জানি না কেন, ফুটপাতের সবজিবিক্রেতা কীভাবে মার্কেটিং চর্চা করে—তা কখনো বোঝার চেষ্টা করি না। অধিকাংশই তার প্রয়োজনীয়তাও অনুভব করি না। ফলে ক্লাসরুমের আলোচনায় শুধু ভিনদেশী কোম্পানির উদাহরণ চলে আসে। কিন্তু আমাদের শিক্ষার্থীরা যে ভৌগোলিক এলাকায় কাজ করবে সেখানকার বিষয়ে প্রায় অন্ধকারে থাকে। এতে গ্র্যাজুয়েটদের আত্মবিশ্বাসে ঘাটতি রয়ে যায় তা বলাই বাহুল্য।

আরেকটা বিষয় বেশ উদ্বেগজনক। সেটা হলো দেশের প্রায় সব ভার্সিটির মৌলিক মার্কেটিং শিক্ষা একজন ব্যক্তিনির্ভর! নলেজ সেক্টরে মার্কিন আধিপত্যের এর চেয়ে ভালো দৃষ্টান্ত বুঝি আর হতে পারে না। মাঝেমধ্যে বিস্ময় জাগে, জ্ঞানের বিপুল বিস্তারের যুগেও একজন ব্যক্তির বইকে ধ্যান-জ্ঞান-সাধনা গণ্য করা কি আমাদের দেউলিয়াত্ব প্রকাশ করে না? কোনো কারণে আজ যদি দেশে ফিলিপ কটলারের কনটেন্ট নিষিদ্ধ হয়, আমার ধারণা বহু শিক্ষক ক্লাসে বলার মতো কথা খুঁজে পাবেন না! অথচ নেট দুনিয়ায় অসংখ্য বিকল্প বইয়ের সন্ধান মেলে। কিন্তু কেন যেন এ ব্যাপারে বিশেষ উদাসীনতা রয়েছে।

মাঝেমধ্যে ভাবি, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রতিষ্ঠানের লোকেরা যদি একই (কটলারীয়) জ্ঞান নিয়ে প্রতিযোগিতায় নামে, তবে হার-জিত নির্ধারিত হবে কেমন করে? মার্কেটিংয়ের মতো এত গতিশীল একটা বিষয়ে এমন একক উৎসের প্রতি নির্ভরতার ব্যাপারে আশা করি সংশ্লিষ্টরা ভাববেন। বিলিয়ন বিলিয়ন তথ্য নিয়ে হাজির গুগল-ইউটিউব-ফেসবুকে পাওয়া তথ্যগুলোকে ইগনোর করার মাধ্যমে আমরা শিক্ষার্থীদের ভিন্নপথে চলতে উৎসাহিত করছি না তো? তীব্র প্রতিযোগিতায় টেকার স্বার্থেই তারা বিকল্প উৎসের সন্ধান করবে—বিষয়টা ভাবা দরকার।

তাছাড়া প্র্যাকটিশনারদের উৎপাদিত বিপুল পরিমাণ কনটেন্টের বিপরীতে মার্কেটিংয়ের আনুষ্ঠানিক শিক্ষার ধারক-বাহকদের নীরবতা কেমন যেন অস্বস্তি বাড়াচ্ছে। ড. মীজানুর রহমান ও সৈয়দ ফারহাত আনোয়ার স্যার ছাড়া একাডেমিশিয়ানদের প্রতিনিধিত্ব সেভাবে চোখে পড়ছে না! মার্কেটিং বিষয়ক আলোচনায় হাজির থাকার ঘটনা খুব একটা দৃশ্যমান হচ্ছে না। ব্লগ, সংবাদপত্র, ইউটিউব, টক শোতেও একই অবস্থা। কিছু ওয়েবিনারে দেখা যায়। কিন্তু সেটা তো সিলেকটিভ অডিয়েন্সের জন্য।

দেশের শতাধিক বিজনেস স্কুলে হাজারের ওপর মার্কেটিং বিষয়ের শিক্ষক রয়েছেন। তাদের অনেকেই ক্লাসরুমে মুগ্ধতা ছড়ান। এখনো প্রসঙ্গক্রমে আমরা বহু স্যারের কথা শ্রদ্ধাভরে উল্লেখ করি। কিন্তু বিভিন্ন মাধ্যমে তাদের অনুপস্থিতির বিষয়টি পীড়া দিচ্ছে। বলতে পারেন, তারা তো খ্যাতিমান একাডেমিক জার্নালে লিখছেন, বুক চ্যাপ্টার প্রকাশ করছেন! তা ঠিক আছে। কিন্তু চারপাশে অনেকেই আমাদের অধীত বিষয়ে মতামত দিচ্ছে অথচ সে বিষয়ে আমাদের কোনো কথা থাকবে না—বিষয়টা বিস্ময়কর!

প্রশ্ন জাগতে পারে, কেন সেটা দরকার? কারণটা শুরুতে বলেছি। হাজারো কনটেন্টের মাঝে অসম্পূর্ণ ও ভুলভাবে উপস্থাপিত উপাদান কম নয়। সেক্ষেত্রে মার্কেটিংয়ে আনুষ্ঠানিক পড়ালেখা করা ব্যক্তিরা অবদান রাখলে এক ধরনের ব্যালান্স হওয়ার সুযোগ ঘটে। না হলে পাঠকদের বিপুল আগ্রহ ভিন্ন খাতে প্রবাহিত হতে পারে। সঠিক তথ্যের বিপরীতে ভুলে ভরা কনটেন্ট ডমিনেট করতে পারে! কারণ পাঠকদের উল্লেখযোগ্য অংশের ইংরেজি ভাষার মূল কনটেন্টে প্রবেশের সক্ষমতা নেই।

তাছাড়া অন্যান্য ব্যাকগ্রাউন্ডের অনেকেই মার্কেটিং নিয়ে কথা বলছেন, এমনকি বইও লিখছেন। সেগুলো সম্পর্কে নিজেদের মতামত তুলে ধরা জরুরি। এভাবে একাডেমিয়ার প্রতিনিধিরা চুপ থাকা দীর্ঘমেয়াদে নিজেদের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। কারণ বর্তমান শিক্ষার্থীদের দ্বার অনেক বেশি উন্মুক্ত। তারা যেখানেই ভালো কিছু পাবে তা নির্দ্বিধায় গ্রহণ করবে। আর সেগুলোর মানদণ্ডে ভবিষ্যতে আমাদের মাপতে শুরু করবে! তখন মুখরক্ষা হবে তো?

সর্বোপরি কথা হলো নিত্যনতুন কনটেন্টে প্রতিনিয়ত নেট দুনিয়া সয়লাব হচ্ছে। আগ্রহীরা নানা উৎস থেকে শিখছে, সমৃদ্ধ হচ্ছে, অন্যদের সঙ্গে সেগুলো নিয়ে কথা বলছে। তাই জ্ঞানের সর্বসাম্প্রতিক ধারার সঙ্গে যুক্ত থাকা অনিবার্য হয়ে উঠেছে। নিজের বেসিক জ্ঞানগুলোও মাঝেমধ্যে ঝালিয়ে নেয়া দরকার হচ্ছে। ফলে আজীবন শেখার চর্চাটা অপরিহার্য হয়ে উঠছে। আর সেটা চেনাজানা ঘটনা দিয়ে হলে তার শেকড় যে অনেক গভীরে প্রোথিত হয় তা বলা নিষ্প্রয়োজন। মায়ের ভাষায় মার্কেটিং চর্চা আরো বিকশিত হোক!

লেখকঃ মো. আব্দুল হামিদঃ শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের শিক্ষক ও ‘মার্কেটিংয়ের সহজপাঠ’ বইয়ের লেখক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button