বাংলাদেশ ব্যাংক সার্কুলার

ঋণ পরিশোধের সময়সীমা আরও বাড়লো

করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় খেলাপি ঋণের ক্ষেত্রে আরও একদফা ছাড় দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত শর্ত সাপেক্ষে ঋণ পরিশোধ করার সুযোগ পাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। অর্থাৎ কিস্তি পরিশোধ না করলে চলতি মাসের (আগস্ট) মধ্যে খেলাপি হতো এমন ঋণ পরিশোধের মেয়াদ শর্ত সাপেক্ষে ছয় মাস বাড়িয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

ঋণ পরিশোধের এই সীমা আরও ছয় মাস বাড়িয়ে (২৬ আগস্ট, ২০২১) একটি সার্কুলার জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। নতুন সময়সীমা অনুযায়ী এই বছরের ১ জানুয়ারি থেকে আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে এমন কিস্তিগুলোর ২৫ শতাংশ অর্থ পরিশোধ করা হলে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ওই ঋণ খেলাপি করা যাবে না।

আরও দেখুন:
◾ ক্রেডিট কার্ডের বিল পরিশোধে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা
◾ ফেসবুক-গুগল-অ্যামাজনের ভ্যাট আদায়ের তথ্য দাখিলের নির্দেশ

বৃহস্পতিবার (২৬ আগস্ট, ২০২১) বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার (বিআরপিডি সার্কুলার নং- ১৯) জারি করে বাংলাদেশে কার্যরত তফসিলি ব্যাংকসমূহের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী (সিইও) কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো হয়েছে।

ব্যাংক, ব্যাংকার, ব্যাংকিং, অর্থনীতি ও ফাইন্যান্স বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ খবর, প্রতিবেদন, বিশেষ কলাম, বিনিয়োগ/ লোন, ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, ফিনটেক, ব্যাংকের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারগুলোর আপডেট পেতে আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ 'ব্যাংকিং নিউজ', ফেসবুক গ্রুপ 'ব্যাংকিং ইনফরমেশন', 'লিংকডইন', 'টেলিগ্রাম চ্যানেল', 'ইন্সটাগ্রাম', 'টুইটার', 'ইউটিউব', 'হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেল' এবং 'গুগল নিউজ'-এ যুক্ত হয়ে সাথে থাকুন।

উক্ত সার্কুলারে বলা হয়েছে, শিরোনামোক্ত বিষয়ে ৩১ জানুয়ারি ২০২১ তারিখে জারিকৃত বিআরপিডি সার্কুলার নং-০৩, ২৪ মার্চ ২০২১ তারিখে জারিকৃত বিআরপিডি সার্কুলার নং-০৫ এবং ২৭ জুন ২০২১ তারিখে জারিকৃত বিআরপিডি সার্কুলার নং-১৩ এর প্রতি ব্যাংকগুলোর দৃষ্টি আকর্ষণ করতে বলা হয়েছে।

বিআরপিডি সার্কুলার নং-১৩/২০২১ এর মাধ্যমে এই মর্মে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছিল যে, বিআরপিডি সার্কুলার নং০৩/২০২১ এবং বিআরপিডি সার্কুলার নং-০৫/২০২১ এর মাধ্যমে প্রদত্ত সুবিধার আওতায় ঋণ/ বিনিয়োগ পরিশোধের ক্ষেত্রে জুন/২০২১ পর্যন্ত প্রদেয় কিস্তিসমূহের ন্যূনতম ২০(বিশ) শতাংশ ব্যাংকার-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে ৩১ আগষ্ট ২০২১ তারিখের মধ্যে পরিশোধ করা হলে উক্ত সময়ে ঋণ/ বিনিয়োগসমূহ বিরূপমানে শ্রেণিকরণ করা যাবে না। এক্ষেত্রে জুন/২০২১ পর্যন্ত প্রদেয় কিস্তির অবশিষ্টাংশ সংশ্লিষ্ট সার্কুলার এর নির্দেশনা অনুযায়ী সর্বশেষ কিস্তির সাথে প্রদেয় হবে। এছাড়া অন্যান্য কিস্তি যথাসময়ে পরিশোধ করতে হবে।

এমতাবস্থায়, কোভিড-১৯ এর দ্বিতীয় ঢেউয়ের নেতিবাচক প্রভাব প্রলম্বিত হওয়ায় চলমান অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের গতিশীলতা বজায় রাখা এবং বেসরকারী খাতে ঋণ/বিনিয়োগ প্রবাহের গতিধারা স্বাভাবিক রাখার মাধ্যমে কাংখিত বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান ও রপ্তানি বাণিজ্য সমুন্নত রাখার লক্ষ্যে এই মর্মে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে যে, সূত্রোল্লিখিত সার্কুলারসমূহের মাধ্যমে প্রদত্ত সুবিধার আওতায় ঋণ/ বিনিয়োগ পরিশোধের ক্ষেত্রে জানুয়ারি/২১ হতে ডিসেম্বর/২১ পর্যন্ত প্রদেয় কিস্তিসমূহের ন্যূনতম ২৫(পঁচিশ) শতাংশ ডিসেম্বর/২১ মাসের শেষ কর্মদিবসের মধ্যে পরিশোধ করা হলে উক্ত সময়ে ঋণ/ বিনিয়োগসমূহ বিরূপমানে শ্রেণিকরণ করা যাবে না। এক্ষেত্রে, ডিসেম্বর/২১ পর্যন্ত প্রদেয় কিস্তির অবশিষ্টাংশ বিদ্যমান মেয়াদ শেষ হওয়ার পরবর্তী ০১(এক) বছরের মধ্যে প্রদেয় হবে। এছাড়া অন্যান্য কিস্তি যথাসময়ে পরিশোধ করতে হবে।

বিআরপিডি সার্কুলার নং-১৩/২০২১ এর মাধ্যমে প্রদত্ত নির্দেশনা অনুযায়ী ঋণ/ বিনিয়োগের বিপরীতে ইতোমধ্যে আদায়কৃত/ পরিশোধিত অর্থ এ সার্কুলারের নির্দেশনা পরিপালনের ক্ষেত্রেও আদায় হিসেবে বিবেচনা করা যাবে।

সূত্রোল্লিখিত সার্কুলারসমূহের আওতায় সুবিধাপ্রাপ্ত ঋণ/ বিনিয়োগের উপর আরোপিত সুদ আয়খাতে স্থানান্তরকরণ এবং উক্ত ঋণের বিপরীতে প্রভিশন সংরক্ষণের বিষয়ে পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করবে বাংলাদেশ ব্যাংক।

এছাড়া উক্ত সার্কুলারে বলা হয়েছে, ব্যাংক কোম্পানী আইন, ১৯৯১ এর ৪৫ ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে এ নির্দেশনা জারি করা হলো। এই নির্দেশনা অবিলম্বে ব্যাংকগুলোকে কার্যকর করতে বলা হয়েছে। এই সার্কুলার জারির ফলে ইতোপূর্বে জারিকৃত এতদ্সংক্রান্ত সকল অন্যান্য নির্দেশনা অপরিবর্তিত থাকবে।

অর্থাৎ করোনার সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের নেতিবাচক প্রভাব প্রলম্বিত হওয়ায় চলমান অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের গতিশীলতা বজায় রাখা এবং বেসরকারি খাতে ঋণপ্রবাহের গতিধারা স্বাভাবিক রাখার মাধ্যমে কাঙ্ক্ষিত বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান ও রফতানি বাণিজ্য সমুন্নত রাখার লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

নতুন সার্কুলারে গ্রাহকদের উদ্দেশে বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ঋণের কিস্তির ২৫ শতাংশ জমা দেওয়ার পর বাকি ৭৫ শতাংশ পরবর্তী এক বছরের মধ্যে জমা দিতে হবে। এছাড়া অন্যান্য কিস্তি যথাসময়ে পরিশোধ করতে হবে। এর আগে ৩০ জুন পর্যন্ত শর্ত সাপেক্ষে ঋণ পরিশোধের সীমা বেঁধে দিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক।

তখন বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছিল, ঋণ বা ঋণের যেসব কিস্তি ৩০ জুনের মধ্যে বকেয়া হবে সেসব ঋণ বা ঋণের কিস্তির কমপক্ষে ২০ শতাংশ আগামী ৩১ আগস্টের মধ্যে পরিশোধ করা হলে ওইসব ঋণ খেলাপি হিসেবে চিহ্নিত করা যাবে না। তবে ৩০ জুন পর্যন্ত ঋণ বা ঋণের কিস্তির বকেয়া অংশ সর্বশেষ কিস্তির সঙ্গে পরিশোধ করতে হবে।

তার আগে গত ১ জানুয়ারি পর্যন্ত নিয়মিত যেসব ঋণের কিস্তি গত মার্চ পর্যন্ত বকেয়া ছিল, সেগুলো ৩০ জুনের মধ্যে ব্যাংক-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে পরিশোধ করলে ওইসব ঋণ খেলাপি করা যেত না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

রিলেটেড লেখা

Back to top button