ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি

প্রত্যাশা পেরিয়ে চল্লিশে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড

খন্দকার হাসনাত করিমঃ প্রচলিত ব্যাংক ব্যবস্থার বিপরীত স্রোতে নতুন এক অভিনব ধারার সুদমুক্ত ও কল্যাণধর্মী ব্যাংকিং ব্যবস্থার প্রবর্তন করে ইসলামী ব্যাংক ব্যাংলাদেশ লিমিটেড ১৯৮৩ সালের ৩০ মার্চ। এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে ‘সূচিত হয়’ ইসলামী ব্যাংক ব্যবস্থার। ১৯৮৩ সালের ১৩ মার্চ রেজিস্ট্রার অব জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজ’ এর খাতায় নিবন্ধনের মধ্য দিয়ে প্রাতিষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয় এ ব্যাংকের। কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ইসলামী ব্যাংক লাইসেন্স পায় ১৯৮৩ সালের ২৭ মার্চ। কার্যত ইসলামী ব্যাংকের আনুষ্ঠানিক ব্যাংকিং যাত্রা শুরু হয় ১৯৮৩ সালের ১২ আগস্ট থেকে। তবে এই নতুন ধারার ব্যাংক প্রতিষ্ঠার বুনিয়াদ রচিত হয় তারও অনেক আগে। ১৯৭৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে অনুষ্ঠিত ‘অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কনফারেন্স (ওআইসি)’-এর দ্বিতীয় শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান। ওই সম্মেলনেই মুসলিম দেশগুলোর একটি স্বতন্ত্র আন্তর্জাতিক ব্যাংক প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

ওই বছরই ওআইসিভুক্ত দেশগুলোর অর্থমন্ত্রীদের সম্মেলনে তৎকালীন অর্থমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ ইসলামী ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (ওআইসি) সনদে স্বাক্ষর করেন। তারই ধারানুক্রমে বাংলাদেশ ব্যাংক বাংলাদেশে ইসলামী ব্যাংকিং-এর লাইসেন্স ইস্যু করে। সূচনাপর্বে ইসলামী শরিয়াহ্-সম্মত অপ্রচলিত ধারার এই ব্যাংক ব্যবস্থাপনা নিয়ে উদ্যোক্তা এবং সংশ্লিøষ্টদের মধ্যে নানা ধরনের উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বিরাজ করছিল। কারণ এ দেশে ব্যাংকিং ব্যবস্থা প্রবর্তনের প্রায় দুইশ বছর পর নতুন এক ধারা ও দর্শন কাঠামোভিত্তিক এই ব্যাংকিং ব্যবস্থার কার্যকারণ ও টেকসই রূপলাভ নিয়ে স্বভাবত নানা সংশয় দেখা দেয়। তবে সব দ্বিধা সংশয় জয় করে সাধারণ মানুষের আস্থা ও ভালোবাসায় সাফল্যের মধ্য দিয়ে স্বল্প সময়ের মধ্যেই দেশে ইসলামী ব্যাংক ব্যবস্থার অভিযাত্রা এগিয়ে চলেছে। যেন কবির প্রত্যাশাই প্রতিফলিত হয় এই নব অভিযাত্রায়: ‘নতুন পানিতে সফর এবার হে মাঝি সিন্দাবাদ!’

আরও দেখুন:
ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড

যে দক্ষ এবং অভিজ্ঞ ব্যাংকার পেশাজীবীগণ ইসলামী ব্যাংকিং ব্যবস্থার পথ প্রদর্শন করেন নিষ্ঠাবান উদ্যোক্তাগণের পাশাপাশি তাদের অবদানের কথা প্রথমেই স্মরণ করতে হয়। প্রচলিত ব্যবস্থার অর্গল ভেঙে সাহসী পদক্ষেপ নিয়ে সেদিন এই অভিনব অভিযাত্রার সতীর্থ হয়েছিলেন পূবালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম খালেদ, সোনালী ব্যাংকের স্টাফ কলেজের অধ্যক্ষ এম আযীযুল হক, বাংলাদেশ ব্যাংকের তদানীন্তন গভর্নর নুরুল ইসলাম, বিশিষ্ট প্রকাশক ও মুদ্রাকর আবদুর রাজ্জাক লস্কর, তদানীন্তন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর মোহাম্মদ খালিদ খান, চট্টগ্রামের বায়তুশ শরফের বিশিষ্ট পীর মাওলানা আবদুল জব্বার, বিশিষ্ট প্রকাশনা-উদ্যোক্তা মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন ও জাকীউদ্দিন আহমদ, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মোহাম্মদ ইউনুসসহ বেশ কয়েকজন উদ্যোগী-ব্যক্তিত্ব, চারটি প্রতিষ্ঠান, মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপের ১১টি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান, দু’জন বিশিষ্ট বিদেশী উদ্যোক্তা প্রমুখের সমন্বয়ে গড়ে ওঠা একটি সাহসী ও উদ্যমী অগ্রগামী দল। তাদের হাতে রোপিত সেই চারাই আজকের এই বিশাল মহীরুহ বাংলাদেশের শীর্ষতম বাণিজ্যিক ব্যাংক দক্ষিণ ও দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠান এবং বিশ্বের এক হাজার ব্যাংকের অন্যতম ব্যাংক -ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড।

ব্যাংক, ব্যাংকার, ব্যাংকিং, অর্থনীতি ও ফাইন্যান্স বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ খবর, প্রতিবেদন, বিশেষ কলাম, বিনিয়োগ/ লোন, ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, ফিনটেক, ব্যাংকের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারগুলোর আপডেট পেতে আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ 'ব্যাংকিং নিউজ', ফেসবুক গ্রুপ 'ব্যাংকিং ইনফরমেশন', 'লিংকডইন', 'টেলিগ্রাম চ্যানেল', 'ইন্সটাগ্রাম', 'টুইটার', 'ইউটিউব', 'হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেল' এবং 'গুগল নিউজ'-এ যুক্ত হয়ে সাথে থাকুন।

ইসলামী ব্যাংক কেবল একাই বিকশিত হয়নি। ইসলামী ব্যাংকিং ধারা প্রবর্তনের মধ্য দিয়ে ইসলামী ব্যাংকের পাশাপাশি বিকশিত হয়েছে একগুচ্ছ ইসলামী ব্যাংক এবং বিভিন্ন প্রচলিত ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠানের ইসলামী ব্যাংকিং শাখা বা উইন্ডো। এটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ যে, এ দেশের মোট ব্যাংক আমানতের ২৭.৫৪ শতাংশ রয়েছে ইসলামী ব্যাংকগুলোয়। এ ছাড়া দেশের মোট ব্যাংকিং খাতের ২৫ শতাংশ হিস্যা ইসলামী ব্যাংকগুলোর এবং এই ব্যাংকগুলোর বার্ষিক প্রবৃদ্ধির হার প্রায় ১৪ শতাংশ। বাংলদেশে ইসলামী ব্যাংক ব্যবস্থার এই সাফল্যের অগ্রপথিক ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড। সততা, জবাবদিহিতা, করপোরেট সুশাসন এবং পরিচালনগত সুনীতির যোগফলে ইসলামী ব্যাংক যেমন শীর্ষে, তেমনি শীর্ষারোহনের পথে অগ্রসরমান দেশের ইসলামী ব্যাংকগুচ্ছ।

বিশেষজ্ঞ ও বিশ্লেষকদের অভিমত প্রচলিত ব্যাংকিং ব্যবস্থার তুলনায় ইসলামী অর্থায়নে বিনিয়োগের অনুপাত বেশি এবং খেলাপি ঋণের পরিমাণ ইসলামী ব্যাংকিং খাতে কম। সক্ষমতার দিক থেকেও বাংলাদেশের ইসলামী ব্যাংকগুচ্ছ অনেক এগিয়ে। সম্পদ-পরিসম্পদের নিরিখে বাংলাদেশের ইসলামী ব্যাংক ব্যবস্থার র‌্যাংকিং বিশ্বে ১১তম অবস্থানে। বাংলাদেশের ইসলামী অর্থায়ন ইতোমধ্যেই জগতব্যাপী এক অনুকরণীয় আদর্শ (রোল মডেল) হিসেবে স্বীকৃত। সমগ্র পৃথিবীর মোট ইসলামী ব্যাংকিং কার্যক্রমের ৩৫% শতাংশ গ্রাহক এবং গোটা পৃথিবীর ইসলামী অর্থায়নের উল্লেখযোগ্য অংশীদার বাংলাদেশের ইসলামী ব্যাংক ব্যবস্থা। এটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ যে, ইসলামী ব্যাংক ব্যবস্থার টেকসই সাফল্য এবং ক্রমবর্ধমান অগ্রগতি থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে এ দেশের বেসরকারি ব্যাংকিং খাতের অনেক পুরাতন ও স্বনামধন্য ব্যাংকও প্রচলিত ব্যাংক ব্যবস্থার ধারা পরিবর্তন করে ইসলামী ব্যাংকিং শুরু করেছে এবং সফল হয়ে চলেছে। ইসলামী ব্যাংক ব্যবস্থার এই তুলনামূলক শ্রেষ্ঠত্ব এবং চাহিদা ও উপযোগিতা সৃষ্টিতে নেতৃত্ব দিয়েছে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড। তাই ইসলামী ব্যাংক থেকে উদ্বুদ্ধ হয়ে এদেশের ৬২টি ব্যাংকের মধ্যে ১০টি ব্যাংক পূর্ণাঙ্গভাবে এবং ৩৪টি প্রচলিত ধারার ব্যাংক ইসলামী ব্যাংকিং ‘উইনডো’ বা উপধারার মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের ইসলামী ব্যাংকিং সেবা (প্রোডাক্ট) বা কার্যক্রম পরিচালনা করে চলেছে।

২০২১ সালের মার্চ মাস নাগাদ দেশের ব্যাংকিং খাতে মোট আমানত ছিল ১২,৯৮,৯৭২ কোটি টাকা। এর মধ্যে ইসলামী ব্যাংকগুলোর আমানতের পরিমাণ ছিল ৩,৫৭,৭৯২ কোটি টাকা, অর্থাৎ মোট আমানতের ২৭.৫৭ শতাংশ। এত বেশি আমানত ইসলামী ব্যাংক ব্যবস্থার প্রতি সাধারণ মানুষের ক্রমবর্ধমান আস্থা ও আনুগত্যেরই প্রতিফলন। তবে এ কথা অনস্বীকার্য যে, শুধু সাধারণ মানুষের ভাবাবেগ এবং আদর্শ বা নৈতিক সমর্থনই ইসলামী ব্যাংক ব্যবস্থার এত দ্রুত ও বিপুল সম্প্রসারণের একমাত্র কারণ নয়। ইসলামী ব্যাংকব্যবস্থার বৈশিষ্ট্য এবং সততা, স্বচ্ছতা ও আইন-আনুগত্যের সাথে ব্যাংকিংয়ের আজকের এই জয়যাত্রা সম্ভব হয়েছে।

স্বচ্ছতা ও সততার সাথে ব্যাংকিং সেবা প্রদানের ফলেই সম্ভব হয়েছে ইসলামী ব্যাংক ব্যবস্থার সাফল্য। এই কারণেই ধর্ম-মত-জাতি-উপজাতি নির্বিশেষে ইসলামী ব্যাংকের গ্রহণযোগ্যতা ও আস্থা তুলনামূলকভাবে বেশি। সেবার মূল্য ইসলামী ব্যাংকে পূর্ব-নির্ধারিত নয়। এটা সবসময়ই প্রকৃত বাজার মূল্যভিত্তিক। এই কারণে ইসলামী ব্যাংকে সেবার মূল্যে ক্ষেত্র-নির্বিশেষে তারতম্য দেখা দিতে পারে। কিন্তু সেবার মান সর্বত্র এবং সব সময়ে উচ্চপর্যায়ে অবস্থান করে বা বজায় রাখা হয়। তাছাড়া ব্যাংকিং সেবার বাইরে ইসলামী ব্যাংকের রয়েছে জাতীয় পর্যায়ের এক বিশাল জনসেবা (শিক্ষা-স্বাস্থ্য-দক্ষতা-প্রশিক্ষণসহ) এবং পল্লী দারিদ্র্য বিমোচনের এক বিশাল কর্মযজ্ঞ। এই নীরব কল্যাণী কর্মোদ্যোগের প্রচার খুবই নগণ্য। অথচ এর সামাজিক প্রভাব খুব সহজেই অনুমান করা যায়।

পল্লী ক্ষুদ্র বিনিয়োগ কর্মোদ্যোগে ইসলামী ব্যাংকের অবদান ও ভূমিকা সমগ্র বিশ্বের গ্রাম উন্নয়ন উদ্যোগের আজ এক দৃষ্টান্ত, যেখানে জামানতবিহীন বিনিয়োগ এবং কল্যাণধর্মী সেবা গ্রামীণ জনগোষ্ঠী বিশেষ করে গ্রামীণ নারী জীবনে ইতোমধ্যেই এক নীরব জাগরণ ঘটাতে সক্ষম হয়েছে। লাখ লাখ মুখাপেক্ষী হাত এখন আত্মকর্মের গৌরবময় কর্মীর হাতে পরিণত হয়েছে। ব্যাংকিং সেবার সাথে জনসেবা সমন্বিত হওয়ায় সমাজে ইসলামী ব্যাংকের প্রভাব সর্বমহলে সুবিদিত হয়েছে। প্রচারণা থাকলে হয়তো এই নীরব অবদানের কথা দেশের মানুষ আরো বিশদ জানতে পারত।

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড ইসলামী ব্যাংকিংয়ে সফল দৃষ্টান্ত হিসেবে বিশ্বের বহু ব্যাংকিং ও আর্থিক অনুষদে আলোচনা এবং রেফারেন্স প্রতিষ্ঠান হিসেবে উঠে আসে। এটি লক্ষণীয় যে, প্রাচ্য দেশগুলোর তুলনায় পশ্চিমা দুনিয়ায় এখন ইসলামী ব্যাংকিং ব্যবস্থা নিয়ে বেশি গবেষণা ও পর্যালোচনা হচ্ছে। এসব আলোচনা চক্রে ইসলামী ব্যাংক ব্যবস্থার ব্যতিক্রমী দিক যেমন উঠে আসে, তেমনি উঠে আসে কাঠামোগত সীমাবদ্ধতাগুলোর কথাও। তবে সাম্প্রতিক বিশ্ব মন্দার বছরগুলোতে আর্থিক প্রতিষ্ঠান হিসাবে ইসলামী ব্যাংকগুলোর বিপর্যয়-সহনশীলতা এবং টিকে থাকার শক্তি সম্পর্কে সাধারণত যে বিষয়গুলোর কথা বেশি বলা হয়, সেগুলো হলো ইসলামী অর্থায়নে বিনিয়োগদাতা প্রতিষ্ঠান ব্যবসা বা প্রকল্পের একজন অংশীদার হওয়ায় উদ্যোগের ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা অনেকটাই কার্যকর। এ ছাড়া ইসলামী ব্যাংকিং জগতে অনুসৃত স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা, গ্রাহকের সাথে ব্যাংকের সুসম্পর্ক, ইসলামী ব্যাংকের অসাম্প্রদায়িক উদারনীতি, সম-অধিকার, জেন্ডার ভারসাম্য, মুনাফা বণ্টনের পাশাপাশি দায়-বণ্টন তথা দায়িত্ববোধ, প্রভৃতি বৈশিষ্ট্যের কথাও নানা প্রসঙ্গে ও নানা সংশ্লিষ্টতায় আলোচনার অধ্যায় হিসেবে উঠে আসে। এসব গবেষণা অনিবার্যত নিরপেক্ষ আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর তথ্য-জরিপ ও অনুসন্ধান-প্রতিবেদনের নিরিখেই অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে।

বাংলাদেশে ইসলামী ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে আহরিত হয় বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশীদের বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জনের ৩৩ শতাংশ। এর মধ্যে শুধু ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের অংশই হলো ২৭ শতাংশ। দেশে-বিদেশে, আমদানিতে, রফতানিতে শিল্প বা বাণিজ্যিক বিনিয়োগে আমানতকারী মানুষের আস্থার শীর্ষে ইসলামী ব্যাংক, যার মোট আমানতের পরিমাণ এখন এক লাখ ৪৫ হাজার কোটি টাকা, যা দেশের মোট আমানতের ১০ শতাংশেরও বেশি। ইসলামী ব্যাংকের বিনিয়োগ চলছে এক লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকা, যা দেশের মোট ব্যাংকিং ঋণ বা বিনিয়োগের ৯ শতাংশের কিছু বেশি।

দেশের প্রধান বা শীর্ষ বাণিজ্যিক ব্যাংক হিসাবে রেমিট্যান্স ও বৈদেশিক বাণিজ্যের শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে ইসলামী ব্যাংক। দেশের আমদানি ও রফতানি বাণিজ্যে ইসলামী ব্যাংকের সংশ্লিষ্টতা ব্যবসায়ীগণের প্রথম পছন্দ। বৈদিশিক মুদ্রায় ইসলামী ব্যাংকের বিনিয়োগ স্থানীয় ব্যাংকগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ। প্রবাসীদের কষ্টার্জিত উপার্জন দ্রুততা ও বিশ্বস্ততার সাথে দেশে প্রিয়জনের কাছে পৌঁছে দেবার মহতী সেবায় অগ্রদূতের ভূমিকা পালন করছে ইসলামী ব্যাংক। ২০২১ সালে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে ৫১ হাজার কোটি টাকা রেমিট্যান্স আহরিত হয়। এ ছাড়া সুবিন্যস্ত কর্মকাঠামোর মাধ্যমে দেশের ব্যবসা-বাণিজসহ সব ধরনের শিল্প-কল-কারখানা এবং উদ্যোগে অর্থায়ন করে চলেছে ইসলামী ব্যাংক। ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগের পাশাপাশি ভারী ও অবকাঠামোগত খাতে রয়েছে ইসলামী ব্যাংকের বিনিয়োগ। বিশ্বে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পের আজ যে সুখ্যাতি, এই অভিনব শিল্পের সূচনাপর্বে এক ঐতিহাসিক ও সাহসী ভূমিকা পালন করে ইসলামী ব্যাংক, যার ধারাবাহিকতা আজও অব্যাহত রয়েছে। ইসলামী ব্যাংকের এ অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে প্রয়োজন সবার আন্তরিক সহযোগিতা।

সোর্সঃ নয়া দিগন্ত

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

রিলেটেড লেখা

Back to top button