খেলাপি ঋণ

খেলাপি ঋণ নিয়ন্ত্রণে সঠিক পথে হাঁটছে কি বাংলাদেশ

দেশের ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ কমাতে পুনঃতফসিলের বিশেষ নীতিমালা জারি করা হয়েছে। বাড়ানো হয়েছে ঋণ শ্রেণীকরণের সময়ও। মন্দ ঋণ আদায়ে ঘোষণা দেয়া হয়েছে অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি গঠনের। আর দুর্বল ব্যাংক একীভূতকরণের কথা বলা হচ্ছে অনেক দিন ধরেই। যদিও খেলাপি ঋণ হ্রাসে এসবের প্রভাব নেই। ধারাবাহিকভাবে বেড়ে চলতি বছরের সেপ্টেম্বর শেষে খেলাপি ঋণের হার দাঁড়িয়েছে প্রায় ১২ শতাংশে।

বাংলাদেশে খেলাপি ঋণের এ উচ্চহার ব্যাংকের ঋণ প্রদানের ক্ষমতা কমিয়ে দেয়ার পাশাপাশি বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত করছে বলে মনে করছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। বাংলাদেশের খেলাপি ঋণ ব্যবস্থাপনা নিয়ে চলতি বছরের নভেম্বরে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সংস্থাটি। প্রতিবেদনে খেলাপি ঋণের হার কমিয়ে আনার ক্ষেত্রে সফল বিভিন্ন দেশের উদাহরণ তুলে ধরে এডিবি বলেছে, বাংলাদেশে খেলাপি ঋণের বোঝা যাতে না বাড়ে, সেজন্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ঋণ প্রদান প্রক্রিয়ায় নিয়মনীতির যথাযথ অনুসরণ ও ঋণ আদায় কার্যক্রমে গুরুত্ব দিতে হবে। একীভূতকরণের মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকের সংখ্যা কমিয়ে আনা যেতে পারে। বিদ্যমান দেউলিয়াত্ব আইনে সংশোধনী আনা যেতে পারে, যাতে এ-সংক্রান্ত বিষয় একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নিষ্পত্তি হয়। পাশাপাশি একটি সরকারি অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি গঠন করা যেতে পারে, যা বিদ্যমান খেলাপি ঋণের সমস্যা সমাধানে কাজ করবে।

এসব পদ্ধতির মাধ্যমে খেলাপি ঋণের হার কমিয়ে আনায় সাফল্য পেয়েছে এমন কিছু দেশের প্রসঙ্গও উল্লেখ করেছে এডিবি। সংস্থাটির তথ্য অনুযায়ী, ২০০৮ সালে চীনে খেলাপি ঋণের হার ছিল ২ দশমিক ৪ শতাংশ। এক দশক পর দেশটি খেলাপি ঋণের হার ২ শতাংশের নিচে নামিয়ে এনেছে। খেলাপি ঋণের হার অর্ধেক কমিয়ে এনেছে থাইল্যান্ডও। ২০০৮ সালে দেশটির খেলাপি ঋণের হার ৫ দশমিক ৬ থাকলেও তা ৩ শতাংশে নেমে এসেছে। খেলাপি ঋণ নিয়ন্ত্রণে বিপুল সাফল্য পেয়েছে মালয়েশিয়া। ২০০৮ সালে দেশটির খেলাপি ঋণের হার ছিল ৪ দশমিক ৮ শতাংশ। চলতি বছর তা ১ দশমিক ৬ শতাংশে নামিয়ে আনতে পেরেছে দেশটি।

ব্যাংক খাতকে সঠিক পথে আনতে হলে ২০০১ সালের আইনকানুনে ফিরে যেতে হবে বলে মনে করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন। বণিক বার্তাকে তিনি বলেন, ২০০১ সালে দেশের ব্যাংক খাতে যেসব আইনকানুন ছিল, সেখানে ফিরে গেলে সমস্যা অনেকাংশেই কমে আসবে। ১৯৯৬ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংক ঋণখেলাপিদের একটি তালিকা তৈরি করত। তখন তালিকার শুরুর দিকে ঘুরেফিরে কিছু নামই উঠে আসত। ২০০৯ সালে এসে সরকার এ পদ্ধতিতে পরিবর্তন এনে উদার নীতি প্রণয়ন শুরু করে। এতে খেলাপিরা নতুন করে ঋণ নেয়ার সুযোগ পায়। আমার পর্যবেক্ষণ বলে, খেলাপি ঋণ কমানোর জন্য খেলাপিদের পক্ষে কোনো পদক্ষেপ নিলে সেটি ভালো ফল বয়ে আনে না।

ব্যাংক, ব্যাংকার, ব্যাংকিং, অর্থনীতি ও ফাইন্যান্স বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ খবর, প্রতিবেদন, বিশেষ কলাম, বিনিয়োগ/ লোন, ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, ফিনটেক, ব্যাংকের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারগুলোর আপডেট পেতে আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ 'ব্যাংকিং নিউজ', ফেসবুক গ্রুপ 'ব্যাংকিং ইনফরমেশন', 'লিংকডইন', 'টেলিগ্রাম চ্যানেল', 'ইন্সটাগ্রাম', 'টুইটার', 'ইউটিউব', 'হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেল' এবং 'গুগল নিউজ'-এ যুক্ত হয়ে সাথে থাকুন।

ড. ফরাসউদ্দিন বলেন, গত কয়েক বছরে ঋণ পুনঃতফসিলের গ্রামারই পরিবর্তন করে দেয়া হয়েছে। ব্যাংক খাতে সুদ মওকুফের যে নীতি চালু হয়েছে, সেটির ফলাফলও ভালো হয়নি। ৪৬ হাজার কোটি টাকার ঋণ ব্যাংকগুলো অবলোপন করেছে, এ ঋণ ফেরত আসবে না। খেলাপি ঋণের পরিমাণও ১ লাখ ১৬ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। এখনো সময় আছে, দেশের ব্যাংক খাতকে ঢেলে সাজানোর। এজন্য প্রয়োজন কঠোর সিদ্ধান্ত।

১৯৯৭ সালে এশিয়ার অর্থনৈতিক মন্দায় এ অঞ্চলের অনেক দেশের ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ বেড়ে যায়। সময়োপযোগী পদক্ষেপের মাধ্যমে এ থেকে বেরিয়েও আসে তারা। এসব দেশের অন্যতম থাইল্যান্ড। খেলাপি ঋণ কমিয়ে আনার প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে দেউলিয়া হয়ে পড়া আর্থিক প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয় দেশটির সরকার। একীভূতকরণের মাধ্যমে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা লক্ষণীয় মাত্রায় কমিয়ে আনে তারা। প্রযুক্তিগত উত্কর্ষের প্রয়োজনে দেশের আর্থিক খাতে বিদেশী ব্যাংকের অংশগ্রহণের সুযোগ করে দেয়ার পাশাপাশি স্থানীয় ব্যাংকের শেয়ার ক্রয়ের অনুমতিও দেয়া হয়। এর মধ্য দিয়ে থাইল্যান্ডের আর্থিক খাতে বিদেশী ব্যাংকের উল্লেখযোগ্য দখল প্রতিষ্ঠিত হয়। এরপর খেলাপি ঋণ কমাতে গঠন করা হয় রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন দুটি সংস্থা। ২০০১ সালে প্রতিষ্ঠিত থাই অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট করপোরেশনকে (টিএএমসি) দেয়া হয় ঋণের শর্তে পরিবর্তন ও গ্রহীতার সম্পদ দখলে নেয়ার ক্ষমতা। করপোরেট ডেট রিস্ট্রাকচারিং অ্যাডভাইজরি কমিটি দায়িত্ব পায় খেলাপি ঋণ আদায়ের বিষয়টি আদালতের বাইরে মীমাংসার। খেলাপি ঋণ কমিয়ে আনার ক্ষেত্রে উভয় প্রতিষ্ঠানই সাফল্য পেলেও টিএএমসির অর্জন লক্ষণীয়। প্রফিট শেয়ারিং পদ্ধতি টিএএমসির খেলাপি ঋণ আদায়ের গতি বাড়িয়ে দেয়। চলতি বছরের জুলাই শেষে থাইল্যান্ডের ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের হার দাঁড়িয়েছে মাত্র ৩ শতাংশ।

খেলাপি ঋণ হ্রাস ও ব্যাংকের পরিচালন দক্ষতা বৃদ্ধিতে একগুচ্ছ সংস্কার পদক্ষেপ নেয় চীন। নতুন অ্যাকাউন্টিং ব্যবস্থা কার্যকরের পাশাপাশি ব্যাংক খাতের তদারকি ও নিয়ন্ত্রণ কঠোর করে দেশটি। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোয় পুনঃঅর্থায়নের উদ্যোগও নেয়া হয়। দেশটির শীর্ষ চার বাণিজ্যিক ব্যাংকের খেলাপি ঋণ কিনে নেয়ার লক্ষ্যে ১৯৯৯ সালে চারটি সম্পদ ব্যবস্থাপনা কোম্পানি গঠন করা হয়। ২০০১ সাল থেকে সুনির্দিষ্ট বিদেশী প্রতিষ্ঠানের জন্যও প্রতিযোগিতামূলক মূল্যে সম্পদ ব্যবস্থাপনা কোম্পানির কাছ থেকে খেলাপি ঋণ কেনার সুযোগ রাখা হয়েছে। আর সাম্প্রতিক বিধান হলো দেশটির ঋণখেলাপিদের জন্য কঠোর শাস্তি। সুপ্রিম পিপলস কোর্ট এরই মধ্যে ৬৭ লাখ ঋণখেলাপিকে কালো তালিকাভুক্ত করেছেন। নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হয়েছে তাদের হাইস্পিড ট্রেন ও আকাশপথে চলাচল, ঋণ ও ক্রেডিট কার্ডের জন্য আবেদন এবং পদোন্নতির ক্ষেত্রে। এ পন্থায় খেলাপি ঋণ কমিয়ে এনেছে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ অর্থনীতিটি। চলতি বছরের জুন শেষে চীনের ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে ১ দশমিক ৮ শতাংশ।

১৯৯৭ সালের আর্থিক সংকট-পরবর্তী পরিস্থিতিতে দক্ষিণ কোরিয়ার অনেক ব্যাংক ও ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ব্যালান্সশিটে খেলাপি ঋণের অংক বাড়তে থাকে। সামগ্রিক মন্দ ঋণের প্রভাবে ক্রমাগত লোকসান হতে থাকায় প্রায় দেউলিয়া হতে বসে প্রতিষ্ঠানগুলো। দেশটির আর্থিক ব্যবস্থার স্থিতিশীলতাকে হুমকির মুখে ফেলে দেয় এটি, যা সার্বিকভাবে অর্থনীতির জন্যও ঝুঁকির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে কোরীয় সরকার স্বল্পতম সময়ে পুরো আর্থিক খাতের সংস্কারের উদ্যোগ নেয়। নির্ধারিত ন্যূনতম মূলধন নেই, এমন দুর্বল আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর লাইসেন্স বাতিল করা হয়; পাশাপাশি বন্ধ হয় সেগুলোর কার্যক্রম। একীভূতকরণের মাধ্যমে বড় ব্যাংক গঠন করা হয়, যাতে ব্যাংকের সংখ্যাও তুলনামূলকভাবে কমে আসে। আর পুনর্গঠিত এসব ব্যাংককে সরকারি সম্পদ কাজে লাগিয়ে করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোকে পুনর্গঠনের দায়িত্ব দেয়া হয়। উল্লেখযোগ্য ছাড়ে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর খেলাপি ঋণ কেনে কোরিয়া অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট করপোরেশন (কামকো)। এরপর মুনাফায় সেগুলো বিক্রি করে সংস্থাটি। দুর্বল ব্যাংকগুলোর মধ্যে যেগুলো তুলনামূলক ভালো ব্যাংক অধিগ্রহণ করেছে, সেগুলোয় কোরিয়া ডিপোজিট ইন্স্যুরেন্স করপোরেশনের ইস্যু করা পাবলিক বন্ডের মাধ্যমে তহবিল জোগান দেয়া হয়। সুদের ব্যয় মেটাতে গ্যারান্টার হয় দেশটির সরকার। আগ্রাসী এ সংস্কার কার্যক্রমের প্রভাবে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কার্যক্রম আগের চেয়ে আরো স্বচ্ছ ও শক্তিশালী হয়। দেশী-বিদেশী বিনিয়োগকারীদের আস্থার অনেকটাই ফিরে আসে। আর এতে খেলাপি ঋণের অনুপাত কমে যায়। দক্ষিণ কোরিয়ার তুলনামূলকভাবে পূর্ণাঙ্গ আইনি পরিকাঠামো ও দেউলিয়া আইনের সংস্কার ও নিরাপত্তা নিশ্চিতের ফলেই কামকো সফল হয়।

কোরিয়া সরকার ব্যাংক খাত সংস্কারে যে ধরনের উদ্যোগ নিয়েছিল, বাংলাদেশ তার ধারেকাছেও যেতে পারেনি বলে মনে করেন ব্র্যাক ব্যাংকের চেয়ারম্যান ড. আহসান এইচ মনসুর। পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) এ নির্বাহী পরিচালক বলেন, ১৯৯৭ সালে কোরিয়া সরকার ব্যাংক খাত সংস্কারে যেসব উদ্যোগ নিয়েছিল, সেগুলো ছিল তৃতীয় প্রজন্মের সংস্কার। আমরা এখনো প্রথম প্রজন্মের সংস্কারের বৃত্তে ঘোরাফেরা করছি। নীতি প্রণয়ন করে কোরিয়া সরকার বাস্তবায়ন করতে পেরেছিল। কিন্তু দুর্ভাগ্য হলো আমরা পারিনি।

মালয়েশিয়ার আর্থিক খাতের ওপরও বড় ধরনের প্রভাব ফেলে এশিয়ার ওই আর্থিক সংকট। এতে দেশটির মুদ্রামানের বড় ধরনের পতন ঘটে। মূলত দেশের বাইরে মূলধন চলে যাওয়া, সুদের হার বেড়ে যাওয়া ও অর্থনীতিতে মন্দাবস্থা দেখা দেয়াই ছিল যার কারণ। এর ধারাবাহিকতায় ভোক্তা ও স্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে ঋণসেবা পেতে জটিলতার মুখোমুখি হতে হয়। ফলে খেলাপি ঋণের হার বেড়ে যায় ব্যাপক হারে। এ সমস্যা সমাধানে মালয়েশীয় সরকার প্রথমেই সাধারণ মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেয়। আমানতকারীর তহবিল ফেরত দেয়ার পাশাপাশি সমস্যাগ্রস্ত প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এজন্য ১৯৯৮ সালে তিনটি নতুন সরকারি সংস্থা গড়ে তোলা হয়। পুনর্মূলধন জোগান, পুনর্গঠন ও অসচ্ছল আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম নজরদারিতে গড়ে তোলা হয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবসিডিয়ারি প্রতিষ্ঠান ডানামোডাল। দায় পুনর্গঠনের অংশ হিসেবে ঋণদাতা ও গ্রহীতাদের জন্য করপোরেট ডেট রিস্ট্রাকচারিং কমিটি গঠন করা হয়। খেলাপি ঋণ ও সম্পদ ব্যবস্থাপনায় ডানাহার্টা নামে অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি গঠন করে মালয়েশিয়া সরকার। এসব প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রমের মাধ্যমে আর্থিক খাতের সুশাসন ফিরিয়ে আনা হয়। এতে খেলাপি ঋণের হার প্রত্যাশার চেয়েও কমে আসে।

এর বিপরীত চিত্র বাংলাদেশের। দেশের ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের হার না কমে উল্টো বাড়ছে। খেলাপি ঋণের উচ্চহার বিদ্যমান ভারতের ব্যাংক খাতেও। ২০০৮ সালে ভারতে খেলাপি ঋণের হার ছিল ২ দশমিক ৩ শতাংশ। ২০১৮ সাল শেষে প্রতিবেশী দেশটির খেলাপি ঋণের হার ১১ শতাংশ ছাড়িয়েছে। আর ২০১১ সাল শেষে দেশের ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের হার ৬ দশমিক ১ থাকলেও চলতি বছরের সেপ্টেম্বর শেষে তা ১১ দশমিক ৯৯ শতাংশে গিয়ে ঠেকেছে।

তবে দেশের ব্যাংক খাত খুব বেশি খারাপ পরিস্থিতিতে আছে বলে মনে করেন না বেসরকারি ব্যাংক উদ্যোক্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্সের (বিএবি) চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলাম মজুমদার। তিনি বলেন, খারাপ পরিস্থিতিতে থাকা কোনো ব্যাংকের কর্মকর্তা বেতন পাচ্ছেন না, এমন কথা শুনিনি। চেক ডিজঅনার হচ্ছে, এমন ঘটনার কথাও আমার জানা নেই। বেসরকারি খাতের সব ব্যাংকের আমানত ও বিনিয়োগের হার ১০ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি হয়েছে। তাহলে ব্যাংক খাত খুব খারাপ পরিস্থিতিতে আছে, এটি কীভাবে বলব। ব্যাংকের ওপর যদি আস্থাই না থাকত, তাহলে মানুষ ব্যাংকে টাকা রাখছে কেন? এটি ঠিক, ব্যাংকগুলোকে আরো সতর্কতা ও স্বচ্ছতার সঙ্গে পথচলা উচিত। বর্তমান অর্থমন্ত্রী শুধু দক্ষ হিসাব ব্যবস্থাপকই নন, তিনি একজন অর্থনীতিবিদও। তার পরামর্শ ও নেতৃত্বে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ব্যাংক খাতের সুদহার ৯ শতাংশে নামিয়ে আনতে সক্ষম হবেন বলেই আমার বিশ্বাস।

লেখকঃ হাছান আদনান
সোর্সঃ বণিক বার্তা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

রিলেটেড লেখা

Back to top button