খেলাপি ঋণবিনিয়োগ ও লোন

সরকারী সেবার ক্ষেত্রে ঋণখেলাপীকে না বলুন

ব্যাংকিং সেক্টরে খেলাপী ঋণের পরিমান দিন দিন বেড়েই চলছে। আর এ কারনে ব্যাংকগুলোকে পড়তে হচ্ছে মূলধন ঝুঁকিতে। কোন ভাবেই এ অবস্থা থেকে বের হওয়া যাচ্ছে না। খেলাপী ঋণের কারনে নির্দিষ্ট হারে প্রভিশন রাখতে গিয়ে লাভের পরিমান কমে যাচ্ছে। আবার এডিআর রেশিও বেড়ে যাওয়ার ফলে নতুন করে ঋণ দিতে হিমসিম খেতে হচ্ছে ব্যাংকগুলোকে।

খেলাপী ঋণের বেশির ভাগ ক্ষেত্রে আমাদের ঋণ নিয়ে তা ফেরৎ না দেয়ার মানষিকতাকে দায়ী করছেন জনতা ব্যাংক লিমিটেড, বাতাকান্দি শাখার নতুন প্রজন্মের এই ব্যবস্থাপক।

তিনি কিভাবে এই অবস্থা থেকে ব্যাংকিং সেক্টরকে বাচানো যায় তাই নিয়ে নতুন একটি ধারণা ব্যাখ্যা করেছেন। তার ধারণাটি ইনোভেটিভ আইডিয়া হিসেবে মন্ত্রনালয়ে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন জনাব মোহাম্মদ জসিম উদ্দীন। যার সার সংক্ষেপ নিচে তুলে ধরা হলো-

আমাদের দেশে এটি কমন চিত্র যে, নির্বাচন আসলে আমাদের ব্যাংকগুলোর বিপুল পরিমান খেলাপী ঋণ আদায় হয়ে থাকে। আর এর প্রধান কারন হলো, মনোনয়পত্র বাছাই এ ঋণখেলাপীর প্রার্থীতা বাতিল হয়ে যায়। এ কারনে খেলাপী প্রার্থীরা মনোনয়ন পত্র বাছাইয়ের পূর্বেই তাদের বকেয়া দায় পরিশোধ করে দিতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে।

ব্যাংক, ব্যাংকার, ব্যাংকিং, অর্থনীতি ও ফাইন্যান্স বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ খবর, প্রতিবেদন, বিশেষ কলাম, বিনিয়োগ/ লোন, ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, ফিনটেক, ব্যাংকের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারগুলোর আপডেট পেতে আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ 'ব্যাংকিং নিউজ', ফেসবুক গ্রুপ 'ব্যাংকিং ইনফরমেশন', 'লিংকডইন', 'টেলিগ্রাম চ্যানেল', 'ইন্সটাগ্রাম', 'টুইটার', 'ইউটিউব', 'হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেল' এবং 'গুগল নিউজ'-এ যুক্ত হয়ে সাথে থাকুন।

যদি নির্বাচনের মত করে সরকারের অন্যান্য যে কোন সেবা পেতে ঋণখেলাপীকে অযোগ্য ঘোষণা হয়, তবে খেলাপী ঋণের পরিমান অনেকটা কমে আসবে। সহসা কেউ খেলাপী হতে চাইবে না।

যেমন- ভূমি রেজিস্ট্রি, পাসপোর্ট তৈরি, ইউটিলিটিস সংযোগ, নিবন্ধন, মামলা-মোকদ্দমা, স্বাক্ষী হওয়া, পরিচালক হিসেবে নিয়োগ, চাকরি, গাড়ি ক্রয়, লাইসেন্স এমনকি বিবাহ নিবন্ধনসহ যে কোন সরকারী সেবা পেতে যদি ঋণ খেলাপীকে সেবার অযোগ্য ঘোষণা করা হয়, তবেই কেবল এ দেশে খেলাপী ঋণের পরিমান কমিয়ে আনা যাবে।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে সরকারের সেবাদানকারী ঐ সকল প্রান্তীক প্রতিষ্ঠানগুলো কিভাবে যাচাই করবে যে, সেবা প্রার্থী ঋণ খেলাপী কিনা?

উত্তরটি একদম সহজ, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একটি কমন ওয়েব পোর্টাল থাকবে,যেখানে সব ব্যাংকের খেলাপীদের তথ্য তাদের এনআইডি নম্বর অনুসারে সংরক্ষণ করা হবে। যদি তাই করা হয়, তবে সরকারী সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো এক নিমেষেই সেই পোর্টালে ঢুকে সেবা প্রার্থীর এনআইডি নম্বর দিয়ে সার্চ দিলেই থলের বিড়াল বেরিয়ে আসবে।

যে ভাবে আমরা “মাদককে না” বলতে শিখেছি, ঠিক তেমনী ভাবে “ঋণ খেলাপীকে না” বলা শিখতে হবে। তবেই ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে তা ফেরৎ না দেয়ার মানষিকতা পরিবর্তন হবে।

তরূন ব্যবস্থাপকের চিন্তার সাথে কোটি মানুষের চিন্তার মিল রয়েছে বলে মনে হয়। নতুন প্রজন্ম নতুন এক বাংলাদেশ চায়, সুখী সমৃদ্ধ বাংলাদেশ। আশা করছি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী বিষয়টি বিবেচনায় আনবেন।

শাখা ব্যবস্থাপকের এমন ধারণাটি বাস্তবায়ন হলে, বদলে যেতে পারে ব্যাংকের খেলাপী ঋণের চিত্র।

লেখকঃ মোহাম্মদ জসিম উদ্দীন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

রিলেটেড লেখা

Back to top button