আয়কর

টিআইএন থাকলেই আয়কর রিটার্ন দিতে হবে

আয়করের ব্যাপ্তি প্রতিনিয়ত বাড়ছে মাকড়সার জালের মতন। বর্তমানে ৬০ লাখের ওপরে টিআইএন, দুই লাখ টাকার ওপরে সঞ্চয়পত্র কিনতে এবং ডাকঘর সঞ্চয়পত্রের হিসাব খুলতে টিআইএন প্রয়োজন পরে। এরূপ ৩৭টি ক্ষেত্রে টিআইএন বাধ্যতামূলক। এখন টিআইএন থাকলেই আপনার করযোগ্য আয় থাকুক না–থাকুক আপনাকে আয়কর রিটার্ন দিতে হবে। দু–তিনটি ব্যতিক্রম ছাড়া জেনে নিন কাদের আয়কর রিটার্ন দিতে হবে এবং দিতে হবে না।

যাঁদের করযোগ্য আয় রয়েছে
১. কোনো ব্যক্তি করদাতার আয় যদি বছরে ৩,০০,০০০ টাকার বেশি হয়।
২. তৃতীয় লিঙ্গের করদাতা মহিলা এবং ৬৫ বছর বা তদূর্ধ্ব বয়সের পুরুষ করদাতার আয় যদি বছরে ৩,৫০,০০০ টাকার বেশি হয়।
৩. গেজেটভুক্ত যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা করদাতার আয় যদি বছরে ৪,৭৫,০০০ টাকার বেশি হয়।
৪. প্রতিবন্ধী করদাতার আয় যদি বছরে ৪,৫০,০০০ টাকার বেশি হয়।

আরও দেখুন:
করযোগ্য আয় বের করবেন যেভাবে
টিন থাকলেই কি রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক?

যাঁদের আবশ্যিকভাবে আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে হবে
১. যিনি ১২ ডিজিটের টিআইএন গ্রহণ করেছেন।
২. যদি আয় বছরে করদাতার মোট আয় করমুক্ত সীমা অতিক্রম করে।
৩. আয় বছরের পূর্ববর্তী তিন বছরের যেকোনো বছর করদাতার কর নির্ধারণ হয়ে থাকে তার রিটার্ন।
৪. কোনো কোম্পানির শেয়ারহোল্ডার পরিচালক বা শেয়ারহোল্ডার এমপ্লয়ি হন।
৫. কোনো ফার্মের অংশীদার হন।
৬. সরকার অথবা সরকারের কোনো কর্তৃপক্ষ, করপোরেশন, সত্তা বা ইউনিটের বা প্রচলিত কোনো আইন, আদেশ বা দলিলের মাধ্যমে গঠিত কোনো কর্তৃপক্ষ, করপোরেশন, সত্তা বা ইউনিটের কর্মচারী হয়ে আয় বছরের যেকোনো সময় ১৬,০০০ টাকা তদূর্ধ্ব পরিমাণ মূল বেতন আহরণ করে থাকেন।

ব্যাংক, ব্যাংকার, ব্যাংকিং, অর্থনীতি ও ফাইন্যান্স বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ খবর, প্রতিবেদন, বিশেষ কলাম, বিনিয়োগ/ লোন, ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, ফিনটেক, ব্যাংকের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারগুলোর আপডেট পেতে আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ 'ব্যাংকিং নিউজ', ফেসবুক গ্রুপ 'ব্যাংকিং ইনফরমেশন', 'লিংকডইন', 'টেলিগ্রাম চ্যানেল', 'ইন্সটাগ্রাম', 'টুইটার', 'ইউটিউব', 'হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেল' এবং 'গুগল নিউজ'-এ যুক্ত হয়ে সাথে থাকুন।

৭. কোনো ব্যবসায় বা পেশায় নির্বাহী বা ব্যবস্থাপনা পদে (যে নামেই অভিহিত হোক না কেন) বেতনভোগী কর্মী হন।
৮. আয় বছরে করদাতার আয়কর অব্যাহতি প্রাপ্ত বা হ্রাসকৃত হারে করযোগ্য হয়ে থাকে।
৯. মোটর গাড়ির মালিকানা থাকা (মোটর গাড়ি বলতে জিপ বা মাইক্রোবাসকেও বোঝাবে)।
১০. মূল্য সংযোজন কর আইনের অধীন নিবন্ধিত কোনো ক্লাবের সদস্যপদ থাকা।
১১. কোনো সিটি করপোরেশন, পৌরসভা অথবা ইউনিয়ন পরিষদ হতে ট্রেড লাইসেন্স গ্রহণ করে কোনো ব্যবসা বা পেশা পরিচালনা।
১২. চিকিৎসক, দন্তচিকিৎসক, আইনজীবী, চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট, কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্ট, প্রকৌশলী, স্থপতি, সার্ভেয়ার অথবা সমজাতীয় পেশাজীবী হিসেবে কোনো স্বীকৃত পেশাজীবী সংস্থার নিবন্ধন থাকা।
১৩. আয়কর পেশাজীবী হিসেবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের নিবন্ধন থাকা।
১৪. কোনো বণিক বা শিল্পবিষয়ক চেম্বার বা ব্যবসায়িক সংঘ বা সংস্থার সদস্যপদ থাকা।

১৫. কোনো পৌরসভা, সিটি করপোরেশনের কোনো পদে বা সংসদ সদস্য পদে প্রার্থী হওয়া।
১৬. কোনো সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা বা কোনো স্থানীয় সরকারের কোনো টেন্ডারে অংশগ্রহণ করা।
১৭. কোনো কোম্পানির বা কোনো গ্রুপ অব কোম্পানিজের পরিচালনা পর্ষদে থাকা।
১৮. মোটরযান, স্থান, আবাসন বা অন্য কোনো সম্পদের মাধ্যমে কোনো অংশভাগী অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণকারী।
১৯. লাইসেন্সধারী অস্ত্রের মালিক।
২০. সঞ্চয়পত্র ক্রয়ে মোট বিনিয়োগ দুই লাখ টাকা অতিক্রম করলে।
২১. দুই লাখ টাকার অধিক পোস্টাল সঞ্চয় হিসাব খুলতে। এবং
২২. সমবায় সমিতির রেজিস্ট্রেশনে।

তবে নিম্নরূপ ব্যক্তি করদাতাদের রিটার্ন দাখিল করতে হবে না
১. বাংলাদেশে ফিক্সড বেজ নেই এমন অনিবাসীকে।
২. জমি বিক্রয়ের জন্য ১২ ডিজিটের টিআইএন গ্রহণ করেছেন, কিন্তু করযোগ্য আয় নেই।
৩. ক্রেডিট কার্ড গ্রহণের জন্য ১২ ডিজিটের টিআইএন গ্রহণ করেছেন, কিন্তু করযোগ্য আয় নেই।

লেখক: আয়কর আইনজীবী, নির্বাহী পরিচালক, গোল্ডেন বাংলাদেশ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

রিলেটেড লেখা

Back to top button