ব্যাংকার

আমি এক ভন্ড (ব্যাংকার)

আমি একটি প্রাইভেট ব্যাংকে চাকরি করি। ব্যাংকে বিশেষ করে প্রাইভেট ব্যাংকে ঘুষ নেওয়া বা কোন দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে রাঘব বোয়াল বনে যাওয়া বড়ই দুষ্কর। তাইতো আমি বড় বিপদে আছি। আমি যে স্বভাবসুলভ ভন্ড! আমাকে তো ভন্ডামি করতেই হবে। অন্যথায় আমার পেটের ভাত যে হজম হবে না। পেটের ভাত হজম করার লক্ষ্যে আমি কিছু ভন্ডামির আশ্রয় নেই। যেমন-

১) বস শুধু শুধু কাজ চাপিয়ে দেন। আমি খুঁজতে থাকি কাজ না করার অযুহাত। পেয়েও যাই। হঠাৎ রোড অ্যাক্সিডেন্টে আমার পায়ে ও হাতে কিছুটা চোট পাই। খুড়িয়ে খুড়িয়ে হাটি। বস আর কাজের জন্য পিড়াপিড়ি করেন না। আমার সামর্থ্য থাকলেও চিকিৎসা করাই না। কারণ- আমার ভাঙা পা সেরে উঠলে আমি তো আর ফাকিবাজি করতে পারবো না।

২) সিনিয়র কোন ভাই ডিল সেটগুলো পূরণ করতে বললে আমি বলি- আমার হাতে ব্যথা! অথচ স্মার্টফোনে ফেসবুকে ঘাটাঘাটি করতে আমার হাতে ব্যথা লাগে না বরং মজা লাগে।

৩) আমি আমার কলিগদের জমি কিনে দিতে চাই। নিজেও কিনতে চাই। সাথে যদি কিছু দালালিও পাই! মন্দ কিসে? তাইতো ওয়ার্কিং আওয়ারে মাঠে ঘাটে ঘুরি ওভারডিউ কালেকশনের নাম করে। নিজেকে স্বান্তনা দেই- এটা ফাকিবাজি নয়। এটাও ব্যাংকের কাজ। কারণ জমি একটা কিনতে পারলে তো ব্যাংকেরই ইনভেস্টমেন্ট বাড়বে! সুন্দর যুক্তি নয় কি?

ব্যাংক, ব্যাংকার, ব্যাংকিং, অর্থনীতি ও ফাইন্যান্স বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ খবর, প্রতিবেদন, বিশেষ কলাম, বিনিয়োগ/ লোন, ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, ফিনটেক, ব্যাংকের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারগুলোর আপডেট পেতে আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ 'ব্যাংকিং নিউজ', ফেসবুক গ্রুপ 'ব্যাংকিং ইনফরমেশন', 'লিংকডইন', 'টেলিগ্রাম চ্যানেল', 'ইন্সটাগ্রাম', 'টুইটার', 'ইউটিউব', 'হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেল' এবং 'গুগল নিউজ'-এ যুক্ত হয়ে সাথে থাকুন।

৪) ওয়ার্কিং আওয়ারে গ্রাহককে দাঁড় করিয়ে ডিপ্লোমা গাইড পড়ি। ডিপ্লোমাটা তো ব্যাংকের জন্যই করতে হয়। অতএব এটাও ব্যাংকের কাজ। তাই ওয়ার্কিং আওয়ারে ডিপ্লোমা গাইড পড়ার অধিকার আমার অবশ্যই আছে।

৫) আমি কবিতা লেখি। ছাগলে আমার কবিতা খাক বা না খাক। কাউন্টারে গ্রাহক দাড়িয়ে। তাতে আমার কি? মাথায় একটা ছন্দ ঢুকলেই শুরু করি কম্পিউটারে কবিতা লেখা। কৃত্রিমভাবে ভীড় তৈরি করে ফেলি। বস বাধ্য হয়ে অন্য ডিপার্টমেন্ট থেকে ক্যাশিয়ার নিয়ে আসে। কি মজা! আমি আনন্দে উদ্বেলিত হই।

৬) গ্রাহকের প্রচন্ড ভীড়। তাতে কি? দুপুরে লাঞ্চের পর স্টোর রুমে আলতো ঢুকে হালকা একটু ঘুম দিয়ে নেই। শরীর ও মন সতেজ লাগে। আর দুপুরে লাঞ্চের পর কাইলুলা করা তো সুন্নত। মুসলমান হিসেবে তো সেটা করতেই পারি।

৭) আমি সারাদিন আমার কলিগদের অর্ধেক কাজ না করলেও বসকে তেল মেরে বলি- স্যার! কেমন আছেন স্যার! স্যার আপনার ঠান্ডা লেগেছে নাকি স্যার? স্যার, স্যার, আপনাকে হেব্বি লাগছে স্যার! স্যার, স্যার আজকে এটা করেছি, ওটা করেছি, অমুক ভাই কিন্তু এটা করতেই চায় না! কেন যে সে এতো ফাকিবাজি করে! বস তো খুশিতে বাকবাক!

কিন্তু বস ঠিকই বোঝে আমার ফাকিবাজি ও ভন্ডামি যা আমি বুঝি না।
কার্টেসিঃ বেলাল হোসেন ফকির

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

রিলেটেড লেখা

Back to top button