ব্যাংক ক্যারিয়ারব্যাংক ক্যারিয়ার টিপস

এক চান্সেই ব্যাংকে চাকরি পেতে প্রস্তুতি নেবেন যেভাবে

প্রথম শ্রেণির চাকরি, কম সময়ে পদোন্নতি, বছরে একাধিক ইনসেন্টিভ বোনাস, ইনক্রিমেন্ট—এসব কারণে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকে বিভিন্ন পদের চাকরি অনেকের কাছেই লোভনীয়। প্রার্থী বেশি থাকায় বাছাই পরীক্ষায়ও হয় তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতা। তাই প্রস্তুতি পর্বটাও সারতে হবে বুঝে-শুনে। পরিকল্পিত, গোছালো প্রস্তুতির জন্য শুরুতেই ঠিক করতে হবে কী কী পড়তে হবে, কতটুকু পড়তে হবে।

সাধারণত বাছাই পরীক্ষা হয় প্রিলি (এমসিকিউ) ও লিখিত পরীক্ষার মাধ্যমে। প্রিলিতে পাস করলেই লিখিত পরীক্ষা দেওয়া যাবে। প্রিলি পরীক্ষার অল্প কিছুদিন পরই হয় লিখিত পরীক্ষা। অর্থাৎ প্রিলির পর লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য খুব বেশি সময় পাওয়া যাবে না। তাই প্রিলির প্রস্তুতি নেওয়ার সময় লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতিটাও অল্প অল্প করে সারতে হবে। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি যেহেতু কিছুদিন আগে প্রকাশিত হয়েছে, তাই ধরে নেওয়া যায়—বাছাই পরীক্ষার জন্য বেশ কিছুদিন সময় পাওয়া যাবে।

গণিত (Math):
ব্যাংকের নিয়োগ পরীক্ষায় গণিতে ভালো করা মানে চাকরির পাওয়ার দৌড়ে অনেকটাই এগিয়ে থাকা। তাই প্রস্তুতির শুরু থেকেই গণিতে বাড়তি জোর দিতে হবে। একেবারে বেসিক লেভেল থেকে প্রস্তুতি শুরু করুন। এর জন্য পর্যায়ক্রমে ষষ্ঠ, সপ্তম, অষ্টম ও নবম-দশম শ্রেণির গণিত বইয়ের পরিমিতি, ত্রিকোণমিতি অংশের সব নিয়ম বা ধরনের অঙ্ক করতে হবে।

এর পর হাতে সময় থাকলে বাজারের ভালো মানের প্রকাশনীর ‘বেসিক ম্যাথ’ বই থেকে চর্চা করতে পারেন। এ ক্ষেত্রে খাইরুল’স বেসিক ম্যাথ, আরিফুর রহমান, জাফর ইকবাল আনসারি অথবা আপনার পছন্দমতো যেকোনো একটি বই অনুসরণ করতে পারেন। আর অবশ্যই গণিতের শর্টকাট পদ্ধতি এড়িয়ে চলবেন।

ব্যাংক, ব্যাংকার, ব্যাংকিং, অর্থনীতি ও ফাইন্যান্স বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ খবর, প্রতিবেদন, বিশেষ কলাম, বিনিয়োগ/ লোন, ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, ফিনটেক, ব্যাংকের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারগুলোর আপডেট পেতে আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ 'ব্যাংকিং নিউজ', ফেসবুক গ্রুপ 'ব্যাংকিং ইনফরমেশন', 'লিংকডইন', 'টেলিগ্রাম চ্যানেল', 'ইন্সটাগ্রাম', 'টুইটার', 'ইউটিউব', 'হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেল' এবং 'গুগল নিউজ'-এ যুক্ত হয়ে সাথে থাকুন।

ইংরেজি (English):
ব্যাকরণে শক্ত দখল থাকলেই ইংরেজিতে ভালো করা যাবে। সেই সঙ্গে মাথায় অনেক ভোকাবুলারি জমা রাখতে হবে। সাধারণত Synonyms, Antonyms, Analogy, Fill in the blanks, Sentence correction, Sentence convert/change ইত্যাদি টপিক থেকে প্রশ্ন থাকে। তাই ইংরেজি বিষয়ের প্রস্তুতির সময় এই টপিকগুলোর ওপর বিশেষভাবে গুরুত্বারোপ করতে হবে।

Synonyms, Antonyms, Analogy-এর প্রস্তুতির জন্য বিগত বিভিন্ন ব্যাংক পরীক্ষায় আসা এজাতীয় প্রশ্নগুলো ভালোভাবে পড়তে হবে। বেশি বেশি ইংরেজি শব্দ রপ্ত করার জন্য নিয়মিত ইংরেজি পত্রিকা, গল্পের বই কিংবা অনলাইনে আর্টিকল পড়া যেতে পারে। নতুন কিংবা অপরিচিত কোনো শব্দ চোখে পড়লেই অভিধানে অর্থ দেখে সঙ্গে সঙ্গে খাতায় নোট করে রাখতে হবে। পরে অবসরে এ শব্দগুলোতে চোখ বুলালে তখন অনেক শব্দই মনে থাকবে।

‘জবস ব্যাংক ইংলিশ’ অথবা ‘ইংলিশ ডট ব্যাংক’ বই দুটির যেকোনো একটি পড়া যেতে পারে। ব্যাকরণের জন্য সহায়ক বই হিসাবে চৌধুরী অ্যান্ড হোসাইনের ‘অ্যাডভান্স ইংলিশ গ্রামার অ্যান্ড কম্পোজিশন’ অথবা পি সি দাসের ‘অ্যাপ্লাইড ইংলিশ গ্রামার অ্যান্ড কম্পোজিশন’ বই পড়তে পারেন।

বাংলা (Bangla):
ব্যাংকের বেশির ভাগ বাছাই পরীক্ষায়ই বাংলা বিষয়ের ওপর গতানুগতিক ধারার প্রশ্ন হয়। বাংলা ব্যাকরণ ও বাংলা সাহিত্য—এই দুই অংশ থেকেই প্রশ্ন আসে। বাংলা সাহিত্যে ভালো করার জন্য বাজারের যেকোনো একটি বই অনুসরণ করা যেতে পারে। ব্যাকরণ অংশে ভালো করার জন্য নবম দশম শ্রেণির ব্যাকরণ বোর্ড বই সবচেয়ে বেশি কার্যকর। এই বইয়ের পাশাপাশি বাংলা এমপিথ্রি এবং ব্যাংকের বিগত বিভিন্ন পরীক্ষার প্রশ্নের বাংলা অংশের সমাধান পড়লে বাংলা সাহিত্য ও বাংলা ব্যাকরণে ভালো করা সম্ভব।

আইসিটি (ICT):
আইসিটি বিষয়েও গতানুগতিক ও সাধারণ প্রশ্ন থাকার সম্ভাবনা বেশি। ‘ইজি কম্পিউটার’ বই পড়ুন এবং বিভিন্ন ব্যাংকের বিগত পরীক্ষায় আসা প্রশ্নগুলো ভালোভাবে পড়ুন। আরো ভালো প্রস্তুতির জন্য এক্সামভেডা ওয়েব সাইট দেখতে পারেন।

সাধারণ জ্ঞান (General knowledge):
সাধারণ জ্ঞানে ভালো করতে হলে সমসাময়িক বিষয়গুলো জানা থাকতে হবে। কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স পড়তে হবে নিয়মিত। ফেসবুকে চাকরি সম্পর্কিত বিভিন্ন গ্রুপে নিয়মিত চোখ রাখতে হবে।

সার্বিক প্রস্তুতির জন্য (For overall preparation):
ব্যাংকের বাছাই পরীক্ষার সার্বিক প্রস্তুতির (সব বিষয়ের) জন্য ভালো মানের প্রকাশনীর ‘গভর্নমেন্ট ব্যাংক জব সলিউশন’ বই সংগ্রহ করুন। বইটি বেশ বড়; তাই সম্পূর্ণ শেষ করাটা সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। তবে একটু গুছিয়ে পরিকল্পনামাফিক পড়লে হাতে যে সময় পাওয়া যাবে তাতেই ঠিকঠাক প্রস্তুতি নেওয়া যাবে। এর জন্য আপনি বইটিকে তিন বা চার ভাগে ভাগ করে নিতে পারেন।

প্রতিটি ভাগ শেষ করার জন্য নির্দিষ্ট সময় ঠিক করে নিন। ওই সময়ের মধ্যে নির্দিষ্ট ভাগটি যেভাবেই সম্ভব শেষ করুন। প্রথমে বিভিন্ন পরীক্ষায় আসা অঙ্কগুলো করে ফেলুন। যেগুলো গুরুত্বপূর্ণ সেগুলো মার্ক করে রাখুন। আর যেগুলো বুঝতে অসুবিধা হবে সেগুলো অন্য বইয়ের সাহায্য নিয়ে সমাধান করে ফেলুন। এভাবে ইংরেজি, বাংলা, কম্পিউটার, সাধারণ জ্ঞান অংশ পড়ে ফেলুন।

প্রস্তুতি পরিকল্পনা ও রুটিন (Preparation plan and routine):
দিনভর একই বিষয় পড়তে পড়তে হয়তো বিরক্তি চলে আসতে পারে। তাই দিনের কখন কোন বিষয় পড়বেন তা রুটিন বা সূচি তৈরি করে ঠিক করুন। তবে দিনে দুটি বিষয়ের বেশি পড়া ঠিক হবে না। সুবিধা অনুযায়ী সময় ও বিষয় ভাগ করে নিন।

যেমন— সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত গণিত; দুপুরে গোসল-খাওয়া শেষে বিশ্রাম নিতে নিতে পত্রিকার খুঁটিনাটি পড়তে পারেন, যেগুলো পড়লে সাধারণ জ্ঞান বাড়বে। রাতে আপনার সুবিধা অনুযায়ী যেকোনো একটি বিষয় পড়তে পারেন এবং একটি বাংলা থেকে ইংরেজি ও একটি ইংরেজি থেকে বাংলা অনুবাদ চর্চা করতে পারেন। রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে অবশ্যই সারা দিন কী কী পড়লেন সেগুলো স্মরণ করার চেষ্টা করুন।

সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর পরই ইংরেজি শব্দার্থ পড়া শেষ করুন এবং সারা দিন অন্যান্য পড়ার ফাঁকে ফাঁকে এই শব্দার্থগুলো রিভিশন দিন। বেশি কঠিন শব্দার্থগুলো ছোট একটি হোয়াইট বোর্ড কিনে সেখানে লিখে রাখুন। বোর্ডটি এমনভাবে রাখুন, যেন সারা দিন পড়াশোনা এবং অন্য কাজের সময়ও চোখে পড়ে। এভাবে কঠিন শব্দার্থগুলো খুব সহজেই আয়ত্ত করা যাবে। প্রতিদিন আপনার সামর্থ্য অনুযায়ী দশ-বিশ বা তারও বেশি শব্দার্থ আয়ত্ত করার চেষ্টা করুন।

সোর্সঃ অনলাইন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

রিলেটেড লেখা

Back to top button