ব্যাংক ক্যারিয়ার টিপস

ব্যাংক জবের জন্য ভালো প্রস্তুতি নিবেন যেভাবে

সাত্তার খানঃ ব্যাংক জব/ ক্যারিয়ার বর্তমানে তরুণ সমাজের অনেক চাওয়ার ও সাধনার জগত। মুক্তবাজার অর্থনীতির প্রভাবে দেশে ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধির সাথে সাথে গড়ে উঠেছে প্রযুক্তি নির্ভর আধুনিক ব্যাংকিং ব্যবস্থা। আজকাল পেশা হিসেবে ব্যাংকিং বিশেষভাবে কাম্য হয়ে উঠেছে চাকরি প্রার্থীদের কাছে এর বহুমুখী সুযোগ-সুবিধাগুলোর জন্য।

দেশের তরুণ প্রজন্মের কাছে ব্যাংক জব/ ক্যারিয়ার এখন অনেক বেশি আকর্ষণীয় ও গ্রহনযোগ্য। সামাজিক মান-সম্মান, আকর্ষণীয় বেতন ও ভাতা, ক্যারিয়ারে দ্রুত এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ- এ সকল কিছু গুটিকয়েক যে পেশায় মেলে, ব্যাংকিং তার মধ্যে অন্যতম একটি। সমন্বিত ৭ ব্যাংক সহ অন্যান্য ব্যাংকের পরীক্ষাগুলো খুব দ্রুত হবে- অনেক সার্কুলার রিসার্কুলেট হচ্ছে, বয়সেরও ছাড় দিচ্ছে। যারা আগে এপ্লাই করেন নি দ্রুত করে ফেলুন, একটা চান্স আছে। প্রস্তুতি ভালোভাবে নিতে থাকেন, সামনে ভালো একটা সুযোগ আছে, কাজে লাগান।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী পরিচালকসহ অন্যান্য ব্যাংক পরীক্ষার প্রস্তুতি! ভালো প্রস্তুতি নিবেন যেভাবে
সামনে বাংলাদেশ ব্যাংক সহ অনেক ব্যাংকের পরীক্ষা। আশা করা যায় পরিস্থিতি ভালো হলে বাংলাদেশ ব্যাংক এর সহকারী পরিচালকসহ (Assistant Director) অন্যান্য পরীক্ষা হতে পারে। তাই প্রস্তুতি ভালো ভাবে নিন। এখনি পড়াশোনার মোক্ষম সময়, সময়টাকে কাজে লাগান, এগিয়ে থাকবেন।

আরও দেখুন:
◾ বিভিন্ন ব্যাংকের জব সার্কুলার
◾ ব্যাংক জব ক্যারিয়ার টিপস
◾ ব্যাংকার হিসেবে ক্যারিয়ার গড়ার উপায়
◾ ব্যাংকিং পেশা দূর হতে যেন স্বপ্নিল এক আবেশ!

ব্যাংক, ব্যাংকার, ব্যাংকিং, অর্থনীতি ও ফাইন্যান্স বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ খবর, প্রতিবেদন, বিশেষ কলাম, বিনিয়োগ/ লোন, ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, ফিনটেক, ব্যাংকের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারগুলোর আপডেট পেতে আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ 'ব্যাংকিং নিউজ', ফেসবুক গ্রুপ 'ব্যাংকিং ইনফরমেশন', 'লিংকডইন', 'টেলিগ্রাম চ্যানেল', 'ইন্সটাগ্রাম', 'টুইটার', 'ইউটিউব', 'হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেল' এবং 'গুগল নিউজ'-এ যুক্ত হয়ে সাথে থাকুন।

ব্যাংকের পরীক্ষার ধরণঃ
✓ প্রিলিমিনারি (৮০-১০০ মার্ক)
✓ রিটেন/ লিখিত (২০০ মার্ক)
✓ ভাইভা (২৫ মার্ক)।

ফ্যাকাল্টি বেইজড পরীক্ষাঃ
বিগত কয়েক বছর ধরে ফ্যাকাল্টি বেইজড পরীক্ষা হচ্ছে অর্থাৎ পরীক্ষা কে নিচ্ছে তার উপর নির্ভর করে পরীক্ষার প্যাটার্ন ও ভিন্নতা। যেমন আইবিএ, আর্টস ফ্যাকাল্টি (DU), AUST যেই এক্সাম টেকার হোক না কেন, আগে তাদের বিগত সালের পরীক্ষাগুলোর প্রশ্ন সমাধান করে এনালাইসিস করতে হবে, কিছু প্রশ্ন হুবহু অপশনসহ রিপিট হয়। তাই যদি সম্ভব হয় পরীক্ষার আগেই জানা যে, এক্সাম টেকার কে এবং তাদের প্রশ্নগুলো আগেই ভালোভাবে সমাধান করলে অনেকটাই সহজ হয়ে যায়।

প্রিলিমিনারির প্রস্তুতিঃ
প্রিলিমিনারির জন্য বিগত কয়েকটি পরীক্ষা এনালাইসিস করে দেখা গেছে-
✓ এমসিকিউ (৮০-১০০ মার্ক এর হয়) – (বাংলা, ইংরেজি, গণিত, সাধারণ জ্ঞান, কম্পিউটার)।
✓ এখনকার সময়ে সাধারণত বিসিএস বাদে ব্যাংক ও অন্যান্য পরীক্ষাগুলোতে যে ধরনের প্রশ্ন আসে-
১. সেকশন A: বাংলা (১৫-১৮টি) প্রশ্ন
2. সেকশন B: ইংরেজি (১৫-১৬টি) প্রশ্ন
৩. সেকশন C: গণিত (২৫-৩৫টি প্রশ্ন)
৪. সেকশন D: সাধারণ জ্ঞান (২০-২২টি) ও
৫. কম্পিউটারে (৮-১০টি) প্রশ্ন আসে।

এমসিকিউ পার্ট এর জন্য বাংলা, ইংরেজি, গণিত, সাধারণ জ্ঞান ও কম্পিউটার এর কমন টপিকগুলো আগে পড়বেন, যদি বিসিএস বা অন্যান্য চাকরির প্রস্তুতি নিয়ে থাকেন তাহলে বাংলা ও সাধারণ জ্ঞান অনেকটাই কাভার হয়ে যাবে, না হলে গুরুত্বপূর্ন টপিকগুলো ভালো করে পড়তে থাকুন, আর গণিত ও ইংরেজির জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ন টপিক আছে যেগুলো থেকে প্রায়ই প্রশ্ন হয় সেগুলো আগে শেষ করুন, কম্পিউটার পার্টটি খুবই গুরুত্ব সহকারে পড়ুন, কারণ অন্য সাবজেক্টে খারাপ করলে কম্পিউটার থেকেই কাভার করতে পারবেন।

কোন বই- কিভাবে পড়বেন- টপ সাজেশন- বুক লিস্টঃ
বর্তমান সময়ে পরীক্ষার ধরণ অনুযায়ী প্রস্তুতি নিতে হবে তাহলেই আসবে সাফল্য। এখনকার সময়গুলোতে পরীক্ষা হচ্ছে ফ্যাকাল্টি বেইজড, আর আপনি যদি পড়তে থাকেন গতানুগতিক তাহলে যে কোন পরীক্ষার প্রিলিতেই পাশ করা অসম্ভব হয়ে যায়। তাই যে কোন পরীক্ষা দেওয়ার আগে জেনে যাবেন পরীক্ষা কে নিচ্ছে AUST, Arts Faculty অথবা IBA । ওই অনুযায়ী প্রস্তুতি নিন। কিছুদিন আগের বাংলাদেশ ব্যাংকের অফিসার জেনারেল পরীক্ষাসহ অনেক পরীক্ষায় হুবহু অপশনসহ বিগত পরীক্ষায় আসা প্রশ্ন থেকে কিছু প্রশ্ন কমন এসেছে, তাই আগে বিগত সালের ফ্যাকাল্টি বেইজড প্রশ্ন শেষ করুন তারপর গতানুগতিক ধারায় পড়তে থাকুন।

ব্যাংক প্রিলির জন্য কোন বই পড়বেনঃ
১। বাংলাঃ বাংলার জন্য জর্জ এর MP3 বা অভিযাত্রী বা অগ্রদূত বা শীখর এর বাংলাটা পড়তে পারেন। বাংলায় একটা স্ট্রং জোন তৈরি করুন, গ্রামার পার্ট ভালো করে পড়ুন। বাংলা আপনাকে এগিয়ে রাখবে।
২। ইংরেজিঃ ইংরেজি গ্রামারের জন্য Competitive Exams অথবা MASTER বা ইংলিশ টিউটর থেকে বুঝে বুঝে পড়ুন। Saifur’s এর গ্রামার ও ভোকাবুলারির বইটাও দেখতে পারেন। ইংরেজি দেখে ভয় পাবেন না, রেগুলার ইংরেজি পড়লে অনেকটাই আপনার আয়ত্তে থাকবে।
৩। গনিতঃ ফ্যাকাল্টি বেইজড কোন ম্যাথ বই পড়ুন, বেসিক ম্যাথ আগে ক্লিয়ার করুন, খাইরুলস এডভান্স ম্যাথ বা আগারওয়াল ম্যাথ বা ম্যাথ বাইবেল বা অন্য কোন বই দেখতে পারেন। গণিতটা প্রতিদিন প্যাকটিস করে নিজের আয়ত্তে নিন। রিসেন্ট জব সল্যুশন থেকে বিগত প্রশ্ন সমাধান করে যাবেন।
৪। সাধারন জ্ঞানঃ বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিকঃ জর্জ এর MP3 বা আজকের বিশ্ব। সাম্প্রতিকঃ কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স বা যে কোন সাম্প্রতিক।
৫। কম্পিউটার ও তথ্যপ্রযুক্তিঃ “Self Suggestion কম্পিউটার ও তথ্যপ্রযুক্তি” বইটি দেখতে পারেন, ফ্যাকাল্টি বেইজড প্রশ্ন AUST, Arts faculty, IBA এর সকল প্রশ্নের সমাধান দেয়া আছে, স্বল্প সময়ে প্রস্তুতি নেয়া যায়। ৪১ বিসিএসসহ গত কয়েকটি পরীক্ষায় এখান থেকে হুবহু কমন ছিল। অন্য যে কোন বিষয়ে খারাপ করলে কম্পিউটার থেকে কাভার করতে পারবেন তাই গুরুত্বসহ পড়ুন।

ব্যাংক রিটেনের জন্য কোন বই পড়বেনঃ
রিটেনে সাধারণত (২০০) মার্ক এর হয়-
✓ গনিতঃ সাধারণত ৭০-৯০ মার্কের হয় (পরীক্ষাভেদে ৭-১০ টার মত অংক থাকতে পারে, গনিতে সর্বোচ্চ ভালো করার চেষ্টা করেন।
✓ বাংলা ও ইংরেজিঃ ১১০-১৩০ মার্ক এর হয়, ট্রান্সলেশন, শর্ট প্রশ্নগুলো ভালো করে দেখতে হবে।
১। বাংলা ও ইংরেজিঃ বাংলা ও ইংরেজি এর জন্য যে কোন ফোকাস রাইটিং যেমন লতিফুর রহমান বা A2B বা ইউসুফ আলীসহ বেসিক ফোকাস রাইটিং এর যে কোন বই থেকে ধারণা নিন, পয়েন্ট, তথ্য, উক্তিগুলো আলাদা নোট করে রাখুন কাজে লাগবে। ট্রান্সলেশন, লেটার ভালো করে দেখুন।
২। গনিতঃ ফ্যাকাল্টি বেইজড কোন ম্যাথ বই, খাইরুলস এডভান্স ম্যাথ বা আগারওয়াল ম্যাথ বা ম্যাথ বাইবেল বা অন্য কোন বই দেখতে পারেন। রিটেনে গনিতে সর্বোচ্চ প্রায়রিটি দিন, গনিতেই পার্থক্য করে দেয় যে আপনি ভাইভা পর্যন্ত যাবেন কিনা।

ব্যাংক ভাইভার জন্য কোন বই পড়বেনঃ
ওরাকল ব্যাংক ভাইভা বা প্রফেসরস এর ব্যাংক ভাইভা বইটা দেখতে পারেন অনেক তথ্য আছে।

বই সিলেকশনঃ
বই সিলেকশন খুব গুরুবপূর্ন একটা বিষয়, কোন প্রকার চটি, সর্টকাট টাইপের বই না পড়ে বেসিক বই পড়ুন, ভালো করবেন। কারন এই বইটার উপর ভরসা করেই আপনি পরীক্ষার রুমে যাবেন। যেমন নিজেই যাচাই করেন, ৪১তম থেকে মিলিয়ে নেন যে বইটি পড়ছেন আসলেই কয়টা কমন ছিল সেই বই থেকে, আমরা হুজুগে বাঙালি, খালি দৌড়াই, আসলে দেখি না যে কোনটা পড়লে বেসিক কাভার হবে, পরীক্ষার ট্রেন্ড একজন অনেকটাই চেঞ্জ, অনেক এডভান্স লেভেলের প্রশ্ন হচ্ছে, তাই বর্তমান ট্রেন্ড অনুযায়ী বই ফলো করা ও পড়াশোনা করলে অনেকটাই এগিয়ে থাকা যায়।

কিভাবে পড়বেনঃ
আপনার সুযোগ, সময় এবং সাধ্যমত একটা প্লান করুন, পড়তে থাকুন। বেসিক ক্লিয়ার করে পড়ুন, জয় আপনারই হবে ইনশা আল্লাহ্‌। বেশি বই পড়ে মনে না রাখার চেয়ে, ভালো মানের অল্প বই বার বার বেসিক ক্লিয়ার করে পড়লে মেমোরাইজ জোন তৈরি হবে, মনে থাকবে বেশি। এই বইগুলো পড়লে আপনার ব্যাংক ছাড়াও অন্যান্য চাকরির জন্য সহজ হয়ে যাবে, যদি টার্গেট থাকে আপনার বাংলাদেশ ব্যাংকের AD বা ব্যাংক জব তাহলে আজকে থেকেই শুরু করুন, সাফল্য আপনার কাছে ধরা দিতে বাধ্য।

আরও দেখুন:
 বেছে নিন ব্যাংকিং পেশা
 ব্যাংকিং পেশার জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য
 প্রাইভেট ব্যাংক জবঃ নিয়োগ প্রক্রিয়া ও সুযোগ সুবিধা
 এক চান্সেই ব্যাংকে চাকরি পেতে প্রস্তুতি নেবেন যেভাবে

সাজেশনটি একান্ত আমার ব্যক্তিগত, ভালো লাগলে লেখাটি শেয়ার করবেন, না লাগলে এড়িয়ে যাবেন। সবার প্রস্তুতি ভালো হউক সেই কামনায়,”একটি ভালো বই ও পরিশ্রম বদলে দিতে পারে আপনার সম্ভবনার দুয়ার” তাই এখনি শুরু করুন।

লেখকঃ সাত্তার খান, এসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার, আইটি, সোনালী ব্যাংক লিমিটেড।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

রিলেটেড লেখা

Back to top button