ব্যাংক হিসাব

লাখপতি সঞ্চয় প্রকল্প হিসাব খোলার নিয়ম

লাখপতি সঞ্চয় প্রকল্প হিসাব, মাসিক সঞ্চয় প্রকল্প হিসাব বা ডিপিএস হিসাবের মতই একটি ভিন্ন রুপ। যেখানে প্রতি মাসে নির্দিষ্ট পরিমান কিস্তি জমা দিয়ে মেয়াদ (যেমন- ৩/৫/৭/১০ বছর) শেষে এক লক্ষ টাকার মালিক হবেন।

লাখপতি সঞ্চয় প্রকল্প হিসাবের বৈশিষ্ট্য
১. নির্দিষ্ট পরিমান কিস্তির টাকা প্রতি মাসে একটি নির্দিষ্ট মেয়াদ (যেমন- ৩/৫/৭/১০ বছর) পর্যন্ত জমা দিতে হবে।
২. প্রতি মাসে একটি নির্দিষ্ট তারিখের মধ্যে কিস্তির টাকা জমা দিতে হবে।
৩. নির্দিষ্ট মেয়াদ শেষে এক লক্ষ টাকার মালিক হতে পারবেন।
৪. যদি কোনো মাসের কিস্তির টাকা জমা দিতে ব্যর্থ হন তাহলে পরবর্তী মাসে সামান্য কিছু জরিমানা সহ কিস্তির টাকা জমা দিতে পারবেন। তবে পরপর তিনটি মাসিক কিস্তি দিতে ব্যর্থ হলে, ব্যাংক আপনার হিসাব বন্ধ করে দিতে পারে। সেক্ষেত্রে আসল টাকা ফেরৎ পাবেন আর সুদ/মুনাফা পাবেন সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের পলিসি অনুসারে।
৫. একটি নির্দিষ্ট মেয়াদে কিস্তির পরিমান এবং সুদের হার ব্যাংকভেদে ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে। কোন ব্যাংকে কত কিস্তি দিয়ে কত বছরে ১ লক্ষ টাকার মালিক হবেন তা সংশ্লিষ্ট ব্যাংক থেকে জেনে নিন।
৬. সাধারনত বিশেষ প্রয়োজনে জমাকৃত টাকার ৮০%-৯০% পর্যন্ত ব্যাংক হতে ঋন/কর্জ গ্রহন করা যায়।
৭. নির্দিষ্ট মেয়াদের পূর্বেই হিসাবটি বন্ধ করা যায়, সেক্ষেত্রে ব্যাংকের পলিসি অনুযায়ী আপনাকে মুনাফা/সুদ প্রদান করা হবে।
৮. শুধুমাত্র বাংলাদেশী নাগরিকগণ এই হিসাব খুলতে পারবেন।
৯. এই হিসাব ব্যক্তি কিংবা কর্পোরেট বডি উভয়েই খুলতে পারবেন।
১০. সাধারনত যেকোনো ব্যাংকে যতটি খুশি ততটি লাখপতি সঞ্চয় প্রকল্প হিসাব খোলা যায়।
১১. নিজ নামে অথবা যৌথ নামে এই হিসাব খোলা যায়।
১২. মাসের যেকোনো কার্যদিবসে এই হিসাব খোলা যায়।

মাসিক কিস্তি জমাদানের পদ্ধতি
ক) সরাসরি নগদ টাকা একাউন্টে জমা দান করতে পারেন অথবা
খ) আপনার যদি উক্ত ব্যাংকে সঞ্চয়ী হিসাব থেকে থাকে তাহলে ব্যাংকে নির্দেশনা প্রদান করলে ব্যাংক আপনার সঞ্চয়ী হিসাব হতে প্রতি মাসে কিস্তির টাকা কেটে মাসিক সঞ্চয় হিসাবে জমা করবে। তবে সেক্ষেত্রে আপনার সঞ্চয়ী হিসাবে মাসিক কিস্তির সমপরিমান অর্থ জমা রাখতে হবে।
গ) ইন্টারনেট ব্যাংকিং বা মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে কিস্তির টাকা জমা দিতে পারবেন যদি সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের এই সুবিধা থাকে।

এই হিসাব খোলার নিয়মাবলী
ক. যে কোন ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গ এ ধরনের হিসাব খুলতে পারেন।
খ. ব্যাংক নির্ধারিত আবেদন ফরম পূরণ করতে হয়।
গ. নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা জমা দিতে হয়।
ঘ. গ্রাহকের এক কপি ছবি অন্য হিসাবধারী দ্বারা সত্যায়িত।
ঙ. জাতীয় পরিচয়পত্র/পাসপোর্ট/ড্রাইভিং লাইসেন্স এর সত্যায়িত ফটোকপি।
চ. গ্রাহক দ্বারা সত্যায়িত নমিনীর এক কপি ছবি।
ছ. নাবালকের পিতা-মাতা বা কোর্ট কর্তৃক অভিভাবকত্ব গ্রহন করে নাবালকের পক্ষে নাবালক হিসাব খুলতে পারেন। এক্ষেত্রে নাবালকের জন্ম সনদের ফটোকপি এবং আইনগত অভিভাবকের ছবি ও জাতীয় পরিচয়পত্র/ পাসপোর্ট/ড্রাইভিং লাইসেন্স এর সত্যায়িত ফটোকপি।
জ. TIN সার্টিফিকেট (যদি থাকে)।

ব্যাংক, ব্যাংকার, ব্যাংকিং, অর্থনীতি ও ফাইন্যান্স বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ খবর, প্রতিবেদন, বিশেষ কলাম, বিনিয়োগ/ লোন, ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, ফিনটেক, ব্যাংকের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারগুলোর আপডেট পেতে আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ 'ব্যাংকিং নিউজ', ফেসবুক গ্রুপ 'ব্যাংকিং ইনফরমেশন', 'লিংকডইন', 'টেলিগ্রাম চ্যানেল', 'ইন্সটাগ্রাম', 'টুইটার', 'ইউটিউব', 'হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেল' এবং 'গুগল নিউজ'-এ যুক্ত হয়ে সাথে থাকুন।

বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ
আপনি যদি আয়কর প্রদানকারী হয়ে থাকেন এবং আপনার যদি E-TIN নাম্বার থেকে থাকে এবং ব্যাংক হিসাব খোলার সময় যদি TIN সার্টিফিকেট এর ফটোকপি জমা দেন তাহলে ব্যাংক আপনাকে যে সুদ/মুনাফা প্রদান করবে তার উপর (আপনার জমাকৃত টাকার উপর নয়) ১০% হারে আয়কর কেটে নিবে অন্যথায় ব্যাংক আপনার প্রাপ্য সুদ/মুনাফার উপর ১৫% হারে আয়কর কেটে নিবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

রিলেটেড লেখা

Back to top button