বাংলাদেশের স্মারক কয়েনের ইতিহাস
স্মরণ থেকেই স্মারক শব্দের উৎপত্তি। জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত প্রাপ্ত কোন ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান, স্থান ও ঘটনাসমূহকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য কোন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক যে প্রতিকী মুদ্রা প্রকাশ করে থাকে তাই স্মারক মুদ্রা। নিম্নে স্মারক মুদ্রার ইতিহাস তুলে ধরা হলো-
স্মারক মুদ্রা
সাধারণের ব্যবহারের পাশাপাশি দেশ ও বিদেশের সংগ্রাহকদের আগ্রহের প্রতি লক্ষ্য রেখে এবং দেশের ও বিদেশের বিভিন্ন উল্লেখযোগ্য ঘটনা, বিষয় ও ব্যক্তিত্বকে স্মরণ করে বাংলাদেশ ডাক বিভাগ ও বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংক বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন মুদ্রা প্রকাশ করে থাকে। বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক এসব প্রকাশ করা মুদ্রাকে স্মারক মুদ্রা বলা হয়।
স্মারক মুদ্রা বিক্রয়
জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত প্রাপ্ত কোন ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান, স্থান ও ঘটনাসমূহকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিপার্টমেন্ট অব কারেন্সী ম্যানেজমেন্ট কর্তৃক বিভিন্ন সময়ে নিম্নে বর্ণিত স্মারক মুদ্রা ও ফোল্ডার দেশীয় ও বিদেশীয়ভাবে মুদ্রণ করা হয়েছে, যা বাংলাদেশ ব্যাংক, মতিঝিল অফিসসহ বাংলাদেশ ব্যাংকের অন্যান্য শাখা অফিসের ক্যাশ বিভাগের নির্দিষ্ট কাউন্টার ও বাণিজ্যিক ব্যাংকের শাখা হতে সর্বসাধারণের নিকট নগদে বিক্রয় করা হয়ে থাকে। এ সকল স্মারক মুদ্রা কোনক্রমে বিনিময়যোগ্য নয়। বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক মুদ্রিত স্মারক মুদ্রার বিবরণ-
২০তম বিজয় দিবস-১৯৯১
বিজয়ের ২০ বছর, ১৯৯১ উপলক্ষ্যে ১ টাকার (ফাইন সিলভার) স্মারক মুদ্রা বাংলাদেশ ব্যাংক চালু করে। এর মূখ্য পিঠে রয়েছে সাত বীরশ্রেষ্ঠ এবং গৌন পিঠে রয়েছে জাতীয় স্মৃতি সৌধ। এর ফেইস ভ্যালু ১ টাকা এটির বিক্রয় মূল্য ৩,৩০০ টাকা।
ব্যাংক, ব্যাংকার, ব্যাংকিং, অর্থনীতি ও ফাইন্যান্স বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ খবর, প্রতিবেদন, বিশেষ কলাম, বিনিয়োগ/ লোন, ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, ফিনটেক, ব্যাংকের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারগুলোর আপডেট পেতে আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ 'ব্যাংকিং নিউজ', ফেসবুক গ্রুপ 'ব্যাংকিং ইনফরমেশন', 'লিংকডইন', 'টেলিগ্রাম চ্যানেল', 'ইন্সটাগ্রাম', 'টুইটার', 'ইউটিউব', 'হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেল' এবং 'গুগল নিউজ'-এ যুক্ত হয়ে সাথে থাকুন। |
২৫তম বিশ্ব ওলিম্পিক গেমস্-১৯৯২
২৫তম বিশ্ব ওলিম্পিক গেমস্-১৯৯২ উপলক্ষ্যে ১ টাকার (ফাইন সিলভার) স্মারক মুদ্রা বাংলাদেশ ব্যাংক চালু করে। এর মূখ্য পিঠে রয়েছে দুইজন অ্যথলেট অলেম্পিক মশাল নিয়ে দৌড়াচ্ছেন এবং গৌন পিঠে রয়েছে জাতীয় প্রতীক। এর ফেইস ভ্যালু ১ টাকা। এটি সংগ্রহ করতে লাগবে ৩,৩০০ টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংক রজত জয়ন্তী-১৯৯৬
বাংলাদেশ ব্যাংকের ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে ১০ টাকার (ফাইন সিলভার) স্মারক মুদ্রা বাংলাদেশ ব্যাংক চালু করে। এর মূখ্য পিঠে রয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় এবং গৌন পিঠে রয়েছে জাতীয় প্রতীক। এর ফেইস ভ্যালু ১০ টাকা। এটি সংগ্রহ করতে খরচ হবে ৩,৩০০ টাকা।
স্বাধীনতার রজত জয়ন্তী-১৯৯৬
বাংলাদেশের স্বাধীনতার রজত জয়ন্তী ১৯৯৬ উপলক্ষ্যে ১০ টাকার (ফাইন সিলভার) স্মারক মুদ্রা বাংলাদেশ ব্যাংক চালু করে। এর মূখ্য পিঠে রয়েছে শেখ মুজিবুর রহমানের পোট্রেইট এবং গৌন পিঠে রয়েছে জাতীয় স্মৃতি সৌধ। এর ফেইস ভ্যালু ১০ টাকা এবং এটি ক্রয় করতে লাগবে ৩,৩০০ টাকা।
বঙ্গবন্ধু যমুনা বহুমুখী সেতু-১৯৯৮
যমুনা ব্রিজের উদ্বোধন জুন ১৯৯৮ উপলক্ষ্যে ২০ টাকার (৯০% ফাইন সিলভার ও ১০% নিকেল) স্মারক মুদ্রা বাংলাদেশ ব্যাংক চালু করে। এর মূখ্য পিঠে রয়েছে যমুনা ব্রীজের ছবি এবং গৌন পিঠে রয়েছে শেখ মুজিবুর রহমানের পোট্রেট। এর ফেইস ভ্যালু ২০ টাকা। এটি সংগ্রহ করতে লাগবে ৩,০০০ টাকা। এটি নিকেল ও সিলভারের সমন্বেয়ে তৈরি।
বঙ্গবন্ধু যমুনা বহুমুখী সেতু-১৯৯৮
যমুনা ব্রিজের উদ্বোধন অক্টোবর ১৯৯৮ উপলক্ষ্যে ১০ টাকার (১০০% নিকেল) স্মারক মুদ্রা বাংলাদেশ ব্যাংক চালু করে। এর মূখ্য পিঠে রয়েছে যমুনা ব্রিজের প্রতিকৃতি এবং গৌন পিঠে রয়েছে অপরাজেয় বাংলা ভাস্কর্য। এর ফেইস ভ্যালু ১০ টাকা এবং এটি ক্রয় করতে লাগবে ৯০০ টাকা। এটি সম্পূর্ণ নিকেলের তৈরি।
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস-২০০০
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষ্যে ২০ টাকার (২২ ক্যারেট স্বর্ণ) স্মারক মুদ্রা বাংলাদেশ ব্যাংক চালু করে। এর মূখ্য পিঠে রয়েছে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের ছবি এবং গৌণ পিঠে রয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের মনোগ্রাম। এর ফেইস ভ্যালু ২০ টাকা। কিন্তু এটি সংগ্রহ করতে লাগবে ৫০,০০০ টাকা (একটি মুদ্রা বক্স সহ) ১,০০,০০০ টাকা (দুইটি মুদ্রা বক্স সহ)।
বিজয় দিবসের ৪০ বৎসর পূর্তি-স্মারক মুদ্রা-২০১১
২০১১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৪০ বছর পূর্তি উপলক্ষে ১০ টাকার স্মারক মুদ্রা বের করে। এই নোটের মূখ্য পিঠে রয়েছে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি এবং গৌন পিঠে রয়েছে ছয়জন মুক্তিযোদ্ধার প্রতিকৃতি। এর ফেইস ভ্যালু ১০ টাকা হলেও সংগ্রহ করতে লাগবে ৩,৫০০ টাকা। এটি ইস্যু করা হয় ২৬ ডিসেম্বার ২০১১ সালে।
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৫০তম জম্ম জয়ন্তী-২০১১
২০১১ সালে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৫০তম জন্মদিন উপলক্ষ্যে ১০ টাকার (ফাইন সিলভার) স্মারক মুদ্রা বাংলাদেশ ব্যাংক চালু করে। এর মূখ্য পিঠে রয়েছে রবিঠাকুরের প্রতিকৃতি এবং গৌন পিঠে রবিঠাকুরের একটি উদৃতি। এর ফেইস ভ্যালু ১০ টাকা ক্রয় করতে লাগবে ৩,৫০০ টাকা।
জাতীয় কবি কাজী নজরম্নল ইসলাম রচিত বিদ্রোহী কবিতার ৯০ বৎসর পূর্তি-২০১১
জাতীয় কবি কাজী নজরম্নল ইসলাম রচিত বিদ্রোহী কবিতার ৯০ বৎসর পূর্তি উপলক্ষ্যে ২০১১ সালে ১০ টাকার (ফাইন সিলভার) স্মারক মুদ্রা বাংলাদেশ ব্যাংক চালু করে। এই মুদ্রার মূখ্য পিঠে রয়েছে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ছবি এবং গৌন পিঠে রয়েছে বিদ্রোহী কবিতা থেকে উদ্ধৃতি। এর ফেইস ভ্যালু ১০ টাকা সংগ্রহ করতে লাগবে ৩,৫০০ টাকা। এটি ইস্যু করা হয় ২৬ ডিসেম্বর ২০১১ সালে।
আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপ-২০১১
আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপ-২০১১ উপলক্ষ্যে ১০ টাকার (ফাইন সিলভার) স্মারক মুদ্রা বাংলাদেশ ব্যাংক চালু করে। এর মূখ্য পিঠে রয়েছে ক্রিকেট বিশ্বকাপ-২০১১ এর লোগো এবং গৌন পিঠে রয়েছে বিশ্বকাপ ট্রফি। এর ফেইস ভ্যালু ১০ টাকা এবং ক্রয়মূল ৩,৫০০ টাকা। এটি ইস্যু করা হয় ৮ই ফেব্রুয়ারী ২০১১ সালে।
জাতীয় জাদুঘরের ১০০ বছর-২০১৩
মূখ্য পিঠে রয়েছে ১৮ শতকের একটি টেরাকোটার ফলক যাতে দেখানো হয়েছে ঘোড়ায় চড়া একজন মানুষের প্রতিকৃতি এবং গৌন পিঠে রয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের মনোগ্রাম। এর ফেইস ভ্যালু ১০০ টাকা হলেও এটি কিনতে লাগবে ৩৫০০ টাকা। এটি ইস্যু করা হয়েছে ৫ই জুলাই ২০১৩ সালে।