অর্থনীতি

ফিসক্যাল পলিসি বা রাজস্ব নীতির লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য

রাজস্ব নীতি একটি দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক কার্যাবলি পরিচালনার লক্ষ্যে রাজস্ব এবং সরকারি ব্যয়সমূহের যথাযথ ব্যবহারপ্রণালী। দেশের জনগণকে কাম্য সেবা প্রদানার্থে সম্পদ সংগ্রহ এবং সেসব সম্পদের দক্ষ অর্থনৈতিক ব্যবহার নিশ্চিত করার জন্য রাজস্ব নীতি প্রস্ত্তত করা হয়।

রাজস্ব নীতির লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য
নিম্নে Fiscal Policy (রাজস্ব নীতি) এর লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সমূহ তুলে ধরা হলো-
১. পূর্ণ কর্মসংস্থান অর্জন করা।
২. অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা অর্জন।
৩. মূল্যস্তরের স্থিতিশীলতা বজায় রাখা
৪. সম্পদের সুষম বণ্টন: ধনীদের উপর কর বসিয়ে দরিদ্র্যের কল্যাণে ব্যয়।
৫. সম্পদের কাম্য ব্যবহার: (মানব সম্পদ, প্রাকৃতিক সম্পদ, খনিজ সম্পদ, শক্তি সম্পদ)
৬. সামাজিক নিরাপত্তা: রাজস্ব নীতির মাধ্যমে বেকারভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা, বয়স্কভাতা।

ব্যাংকিং নিউজ বাংলাদেশ (Banking News Bangladesh. A Platform for Bankers Community.) প্রিয় পাঠকঃ ব্যাংকিং বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ খবরগুলো নিয়মিত আপডেট পেতে আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ ব্যাংকিং নিউজ বাংলাদেশ এ লাইক দিয়ে আমাদের সাথেই থাকুন।

রাজস্ব নীতির হাতিয়ার (Instruments of Fiscal Policy)
সরকার যে সকল নীতি উপকরণ, পদ্ধতি ও কৌশল অবলম্বনের মাধ্যমে তার আয়-ব্যয় নীতি পরিচালনা করে তাকে রাজস্ব নীতির হাতিয়ার বলে।
১. সরকারি ব্যয় (Public Expenditure):
সরকার সাধারণভাবে ও উন্নয়নের প্রয়োজনে নানা ধরনের পণ্য সামগ্রী বিপুল পরিমাণে ক্রয় করে থাকে। তাছাড়া বয়স্ক ভাতা, বেকার ভাতা, পেনশন, সরকারি ঋণের সুদ ইত্যাদি হস্তান্তরমূলক ব্যয় করতে হয়। এছাড়া বিভিন্ন অবকাঠামো, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও চিকিৎসার উন্নয়নে বিশাল অর্থ ব্যয় করতে হয়। সরকারের এসব ব্যয় দেশের উৎপাদন, আয় ও কর্মসংস্থানকে প্রভাবিত করে।
২. কর রাজস্ব (Tax Revenue):
রাজস্ব আয়ের বৃহৎ অংশ আসে কর থেকে। সরকারের কর নীতি জনসাধারণের ভোগ, সঞ্চয়, উৎপাদন, আয়, নিয়োগ সম্পদ বণ্টনের উপর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে।

৩. সরকারী ঋণ (Public Debt):
প্রয়োজনে সরকার দেশ বিদেশ থেকে ঋণ নেয়। আভ্যন্তরীন উৎস থেকে ঋণ নিলে অর্থনীতিতে আয়, নিয়োগ, উৎপাদন ও দামস্তরের উপর প্রতিকূল প্রভাব পড়ে। আর বৈদেশিক ঋণ হলে দেশের মূলধনের যোগান বৃদ্ধি হয়। ফলে অর্থনীতিতে উৎপাদন, আয়, নিয়োগ ও দামস্তরের উপর অনুকূল প্রভাব পড়ে।
৪. ভর্তুকী (Subsidy):
উৎপাদন ও ভোগের ক্ষেত্রে সরকার ভর্তুকী প্রদান করে অর্থনৈতিক উন্নয়ন করতে পারে এবং প্রয়োজনের সময় এ ধরনের ভর্তুকী প্রত্যাহার করতে পারে।
৫. বাধ্যতামূলক সঞ্চয় (Forced Saving):
সরকার প্রয়োজন মনে করলে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কর্মকর্তাও কর্মচারীদের পুরো বেতন অর্থের মাধ্যমে না দিয়ে আংশিক ঋণপত্রের মাধ্যমে দিতে পারে। অথবা কল্যাণ তহবিল, পিএফ।

ব্যাংক, ব্যাংকার, ব্যাংকিং, অর্থনীতি ও ফাইন্যান্স বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ খবর, প্রতিবেদন, বিশেষ কলাম, বিনিয়োগ/ লোন, ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, ফিনটেক, ব্যাংকের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারগুলোর আপডেট পেতে আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ 'ব্যাংকিং নিউজ', ফেসবুক গ্রুপ 'ব্যাংকিং ইনফরমেশন', 'লিংকডইন', 'টেলিগ্রাম চ্যানেল', 'ইন্সটাগ্রাম', 'টুইটার', 'ইউটিউব', 'হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেল' এবং 'গুগল নিউজ'-এ যুক্ত হয়ে সাথে থাকুন।

রাজস্ব নীতির ব্যর্থতা (Crowding Out Effect)
Crowd মানে ভীড় আর Out মানে হারিয়ে যাওয়া। ভীড়ের মাঝে হারিয়ে যাওয়া। সম্প্রসারণমূলক রাজস্বনীতির দ্বারা আয়, উৎপাদন, বিনিযোগ ও কর্মসংস্থান বাড়ার কথা। কিন্তু রাজস্ব নীতির আয়বৃদ্ধি যখন বাঁধাগ্রস্ত হয় কিংবা হারিয়ে যায় তাকে রাজস্ব নীতির ব্যর্থতা বা Crowding Out Effect বলে। অনেক সময় দেখা যায় সম্প্রসারণমূলক রাজস্ব নীতির দ্বারা আয় বা উৎপাদন যতটা বাড়ার কথা ততটা বাড়ে না (Partial Crowding effect), কিংবা মোটেও বাড়েনা (Full Crowding effect), আবার কখনও জাতীয় আয় বৃদ্ধির প্রক্রিয়া কোনরূপ বাধাগ্রস্ত না হয়ে আয় বৃদ্ধি পায় (Zero Crowding effect).

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

রিলেটেড লেখা

Back to top button