৩ বারের বেশি ঋণ পুনঃতফসিল করতে পারবে না আর্থিক প্রতিষ্ঠান
ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান এখন থেকে কোনো ঋণ আর তিনবারের বেশি পুনঃতফসিল করতে পারবে না। আর তৃতীয় দফা পুনঃতফসিলের পরও কোনো গ্রাহক ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হলে তিনি স্বভাবজাত বা ইচ্ছাকৃত খেলাপি হিসেবে বিবেচিত হবেন। এছাড়া পুনঃতফসিল করা ঋণের শুধুমাত্র যেটুকু আদায় হবে তার বিপরীতে সুদ আয় খাতে নেওয়া যাবে।
মঙ্গলবার (১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২১) আর্থিক প্রতিষ্ঠানের জন্য ঋণ পুনঃতফসিলের এমন একটি কঠোর নীতিমালা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
নীতিমালার শুরুতে বলা হয়েছে, গ্রাহকের ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা যাচাই না করেই বারবার ঋণ পুনঃতফসিল করছে বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান। পরিশোধসূচি পুনঃনির্ধারণ এবং যথাযথভাবে পুনঃতফসিল প্রক্রিয়া অনুসরণ না করায় এসব প্রতিষ্ঠানের আদায়ের প্রকৃত চিত্র প্রতিফলিত হচ্ছে না। এখন থেকে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো কেবলমাত্র বিরূপমানে শ্রেণিকৃত (নিন্মমান, সন্দেহজনক ও ক্ষতিজনক) ঋণ পুনঃতফসিল করতে পারবে। ঋণ নিয়মিত করার প্রতি পর্যায়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নির্ধারিত হারে ডাউনপেমেন্ট নিতে হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে, কোনো মেয়াদি ঋণ নিন্মমান থাকা অবস্থায় প্রথম দফায় ৪৮ মাস, দ্বিতীয় দফায় ৩৬ মাস ও তৃতীয় দফায় ২৪ মাসের জন্য পুনঃতফসিল করা যাবে। আর সন্দেহজন বা মন্দ মানে শ্রেণিকৃত অবস্থায় পুনঃতফসিলের ক্ষেত্রে প্রথম দফায় ৩৬ মাস, দ্বিতীয় দফায় ২৪ মাস ও তৃতীয় দফায় ১৮ মাসের জন্য পুনঃতফসিল করা যাবে। স্বল্প মেয়াদি ঋণের মেয়াদোত্তীর্ণ তারিখ বা সর্বশেষ কিস্তি পরিশোধের পর প্রথম দফায় সর্বোচ্চ ১২ মাসের জন্য পুনঃতফসিল করা যাবে। দ্বিতীয় ও তৃতীয় দফায় ৬ মাস করে নিয়মিত করতে পারবে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো।
ব্যাংক, ব্যাংকার, ব্যাংকিং, অর্থনীতি ও ফাইন্যান্স বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ খবর, প্রতিবেদন, বিশেষ কলাম, বিনিয়োগ/ লোন, ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, ফিনটেক, ব্যাংকের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারগুলোর আপডেট পেতে আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ 'ব্যাংকিং নিউজ', ফেসবুক গ্রুপ 'ব্যাংকিং ইনফরমেশন', 'লিংকডইন', 'টেলিগ্রাম চ্যানেল', 'ইন্সটাগ্রাম', 'টুইটার', 'ইউটিউব', 'হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেল' এবং 'গুগল নিউজ'-এ যুক্ত হয়ে সাথে থাকুন। |
ডাউনপেমেন্টের ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, প্রথম দফা ঋণ পুনঃতফসিলের ক্ষেত্রে মেয়াদি ও স্বল্প মেয়াদি উভয় ক্ষেত্রে মেয়াদোত্তীর্ণ কিস্তির ন্যূনতম ১৫ শতাংশ বা মোট বকেয়ার ১০ শতাংশের মধ্যে যা কম, সেই পরিমাণ অর্থ পরিশোধ করতে হবে। দ্বিতীয় দফায় মেয়াদোত্তীর্ণ কিস্তির ৩০ শতাংশ বা মোট বকেয়ার ২০ শতাংশের মধ্যে যা কম, তা দিতে হবে। আর তৃতীয় দফায় মেয়াদোত্তীর্ণ কিস্তির ৫০ শতাংশ বা মোট বকেয়ার ৩০ শতাংশের মধ্যে যা কম, তা পরিশোধ করতে হবে। এ উপায়ে নিয়মিত করা ঋণ মাসিক বা ত্রৈমাসিক কিস্তির মাধ্যমে পরিশোধ করা যাবে। পুন:তফসিল করা ঋণের অনাদায়ী কিস্তি ৬টি মাসিক কিস্তি বা ২টি ত্রৈমাসিক কিস্তির সমান হলে তা ক্ষতিজনক মানে শ্রেণিকরণ করতে হবে।
আরও দেখুন:
◾ বাংলাদেশ ব্যাংকের বিভিন্ন সার্কুলার
এতে আরও বলা হয়েছে, প্রতিটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানে পরিচালনা পর্ষদ অনুমোদিত ঋণ পুনঃতফসিলের একটি নীতিমালা থাকতে হবে। সেখানে এমন সব শর্ত দিতে হবে যা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই নীতিমালার চেয়ে কোনোভাবে সহজ হবে না। পুনঃতফসিলের আগে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ক্রেডিট কমিটি লিখিত প্রতিবেদনের মাধ্যমে যৌক্তিকতা ও প্রভাব তুলে ধরবে। সংশ্নিষ্ট গ্রাহকের ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা যাচাইয়ের জন্য তার নগদ প্রবাহ বিবরণী, নিরীক্ষিত স্থিতিপত্র, আয়-ব্যয় ও অন্যান্য আর্থিক বিবরণী পর্যালোচনা করতে হবে। একজন গ্রাহকের ডাউনপেমেন্টর অর্থ জমা হওয়ার এক মাসের মধ্যে পুনঃতফসিলের সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তবে কিস্তি হিসেবে জমা হওয়া অর্থ কোনোভাবেই ডাউনপেমেন্ট বাবদ জমা দেখানো যাবে না।