ব্যাংকার

চাকরিচ্যুত ব্যাংককর্মীদের পুনর্বহাল করা হোক

মহামারি কভিড সংক্রমণের কারণে ২০২০ সালে যখন সাধারণ ছুটি চলছিল, তখনও ব্যাংকগুলো খোলা ছিল। ওই সময়ে অনেক ব্যাংকার ‘স্বেচ্ছায়’ চাকরি ছেড়ে দেন। একই সময়ে ব্যাংকারদের বেতনও কমিয়ে দেয় অনেক ব্যাংক। চাকরিহারানো ক্ষতিগ্রস্ত অনেক ব্যাংকার নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাছে প্রতিকার চেয়ে আবেদনও করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ছয়টি ব্যাংকে বিশেষ পরিদর্শন করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে উঠে আসে, নথিপত্রে ‘স্বেচ্ছায়’ পদত্যাগ উল্লেখ থাকলেও বেশিরভাগ কর্মকর্তাকে চাকরি ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে ‘শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া’র ক্ষেত্রে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়নি। কোথাও কোথাও কারণ দর্শানোর নোটিস বা আত্মপক্ষ সমর্থনের ন্যূনতম সুযোগও দেয়া হয়নি।

ব্যাংকারদের চাকরিচ্যুত করার যৌক্তিক কারণ খুঁজে না পাওয়ায় ব্যাংক কর্মকর্তাদের চাকরির সুরক্ষা দেয়ার উদ্যোগ নেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। নিয়ন্ত্রক সংস্থা কয়েকটি নির্দেশনা দেয়। এর মধ্যে রয়েছে সুনির্দিষ্ট ও প্রমাণিত অভিযোগ না থাকলে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চাকরিচ্যুত করা যাবে না; শুধু লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যর্থতা বা অদক্ষতার কারণ দেখিয়ে চাকরিচ্যুত অথবা পদত্যাগে বাধ্য করা যাবে না; যারা সুনির্দিষ্ট ও প্রমাণিত কোনো অভিযোগ না থাকা সত্ত্বেও চাকরিচ্যুত হয়েছেন কিংবা চাকরি থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন, তাদের (আবেদনপ্রাপ্তি সাপেক্ষে) বিধিমোতাবেক চাকরিতে বহাল করার বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে হবে।

আরও দেখুন:
◾ কেন্দ্রীয় ব্যাংক ব্যাংকারদের বেতন ও ছাঁটাই ইস্যুতে অনড়

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওই নির্দেশনায় আশ্বস্ত হয়েছেন চাকরিহারানো ব্যাংকাররা। কেউ চাকরি পেয়েছেনও। তবে এ সংখ্যা অতি নগণ্য। চাকরিচ্যুত ব্যাংকারদের পুনর্বহালে নিয়ন্ত্রক সংস্থার নির্দেশনা উপেক্ষিত মর্মে শেয়ার বিজে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, নির্দেশনার সাড়ে চার মাসেও কোনো উদ্যোগ নেয়নি কয়েকটি ব্যাংক। নিয়ন্ত্রক সংস্থা বলেছে, নির্দেশনা না মানলে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।

ব্যাংক, ব্যাংকার, ব্যাংকিং, অর্থনীতি ও ফাইন্যান্স বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ খবর, প্রতিবেদন, বিশেষ কলাম, বিনিয়োগ/ লোন, ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, ফিনটেক, ব্যাংকের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারগুলোর আপডেট পেতে আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ 'ব্যাংকিং নিউজ', ফেসবুক গ্রুপ 'ব্যাংকিং ইনফরমেশন', 'লিংকডইন', 'টেলিগ্রাম চ্যানেল', 'ইন্সটাগ্রাম', 'টুইটার', 'ইউটিউব', 'হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেল' এবং 'গুগল নিউজ'-এ যুক্ত হয়ে সাথে থাকুন।

আমরা মনে করি, নিয়ন্ত্রক সংস্থার নির্দেশনা পরিপালনে কঠোর হওয়া উচিত। অবশ্য দুর্নীতির দায়ে চাকরিচ্যুত ব্যাংকাররাও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনার সুযোগ নিতে চাচ্ছে বলে দাবি ব্যাংক কর্তৃপক্ষের। কিন্তু সবাই তো আর দুর্নীতির দায়ে চাকরিচ্যুত হননি। ব্যয় কমানোর কথা বলে যাদের চাকরি থেকে সারিয়ে দেয়া হয়েছে, তাদের সবাইকে যথারীতি পুনর্বহাল নিশ্চিত করতে হবে। নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে পরিদর্শন ও তদন্তপূর্বক নির্দেশনা মানতে ব্যর্থ ব্যাংকগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।

সম্মুখ সারির যোদ্ধা হিসেবে ব্যাংক কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নিরবচ্ছিন্নভাবে সর্বোচ্চ ঝুঁঁকি নিয়ে সাধারণ মানুষকে ব্যাংকিং সেবা দিয়েছেন। কভিডকালে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক ব্যাংক কর্মকর্তা-কর্মচারী আক্রান্ত হয়েছেন এবং প্রাণহানি হয়েছে অনেকের। কভিডকালে ব্যাংককর্মীদের চাকরি হারানো নিঃসন্দেহে দুঃখজনক। চাকরিচ্যুত বা পদত্যাগী সব ব্যাংকারের তথ্য রয়েছে ব্যাংকিং রেগুলেশন অ্যান্ড পলিসি ডিপার্টমেন্ট (বিআরপিডি)। সংস্থাটিও যাচাই করে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যাংকারদের চাকরিতে পুনর্বহালে ভূমিকা রাখতে পারে। যৌক্তিক কারণ ছাড়া একজন কর্মীও যেন চাকরিচ্যুত না হন।

সোর্সঃ সম্পাদকীয়, শেয়ার বিজ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

রিলেটেড লেখা

Back to top button